জোক বুক
সর্দার খুশবন্ত সিং এ দেশের বিখ্যাততম এবং প্রাচীনতম সাংবাদিকদের একজন। তাঁর বয়েস এখন পঁচাশি। সাংবাদিকতার জন্যে যতটা নয় তার চেয়ে খুশবন্ত সিং অনেক বেশি বিখ্যাত (অথবা কুখ্যাত) তাঁর গোলমেলে কথাবার্তা এবং আচরণের জন্যে। এ ব্যাপারে তিনি শিল্পী মকবুল ফিদা হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী।
সম্প্রতি খুশবন্ত আর একটি গোলমাল করেছেন। যেটি আন্তর্জাতিক কেলেঙ্কারিতে পরিণত হয়েছে। দিল্লিতে একটি নৈশ আসরে খুশবন্ত সাহেব পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের কন্যাকে একটি চুম্বন করেছেন, প্রকাশ্যে সর্বজন সমক্ষে।
এই সংবাদে কট্টর সংরক্ষণশীল পাকিস্তানে তুমুল আলোড়ন দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানি বিদেশ মন্ত্রক তাদের রাষ্ট্রদূতকে পরোয়ানা পাঠিয়েছে, কেন সে এমন পার্টিতে যায় যেখানে তার কন্যার পবিত্রতা রক্ষা পায় না। আশঙ্কা করা হচ্ছে রাষ্ট্রদূতের চাকরিটি যাবে এবং তার চেয়েও কঠিন শাস্তি হতে পারে।
সে যা হোক সর্দার খুশবন্ত সিংহকে আমরা আপাতত স্মরণ করছি তাঁর পাঁচ নম্বর জোক বুকটির জন্যে।
বছর দশেক আগে আমি এক নম্বর জোক বুকটি কিনেছিলাম হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে দশ টাকা দিয়ে। তারপরেই দুই, তিন এবং চার নম্বর বই, সবগুলি আমি যথাসময়ে ওই হাওড়া প্ল্যাটফর্মেই কিনেছি। সম্প্রতি পঞ্চম জোক বুক বেরিয়েছে। এখন দাম হয়েছে চল্লিশ টাকা। এ বইটাও হাওড়া স্টেশনেই কিনলাম।
সর্দার খুশবন্ত সিং হিন্দুস্থান টাইমস এবং ট্রিবিউন পত্রিকায় সপ্তাহান্তিক কলম লেখেন। সেই কলমের শেষাংশে গঙ্গারামের মতো, একটা হাসিখুশির টেইল পিস থাকে।
এই টেইল পিসগুলি পাঠকদের অবদান। তাঁরা পত্রযোগে, খুশবন্তের কলমে প্রকাশিত হওয়ার জন্যে, নানারকম রঙ্গ-রসিকতা, কৌতুকী প্রেরণ করেন। তিনি তার থেকে বেছে নিয়ে সম্পাদনা করে তাঁর কলমে প্রকাশ করেন। খুশবন্তের রসবোধ খারাপ নয়, বাছাই মোটামুটি। তবে সপ্তাহে সপ্তাহে নতুন রসিকতা অনুসন্ধান করে সংগ্রহ করা, সে এক বিড়ম্বনা। আমি ভুক্তভোগী, আমি জানি এটা কত কঠিন কাজ।
খুশবন্ত সিং-এর জোক বুক (৫) থেকে একটি অপরিচিত কৌতুকী পাঠকদের উপহার দিচ্ছি।
রসিকতাটি সাদাসিধে।
এক নববিবাহিতা তার বান্ধবীকে বলছে, ‘আমার বর বলেছে, আমি নাকি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতমা।’
বান্ধবী প্রশ্ন করল, ‘তাতে তুই কী বললি?’
নববিবাহিতা বলল, ‘আমি বললাম, বাকি ছয় আশ্চর্যকে আমি মুখোমুখি দেখতে চাই।’