জাগো সৈনিক-আত্মা

জাগো সৈনিক-আত্মা

জাগো সৈনিক-আত্মা! জাগো রে দুর্দম যৌবন!
আকাশ পৃথিবী আলোড়ি আসিছে ভয়াল প্রভঞ্জন।
রক্ত রসনা বিস্ফারি আসে করাল ভয়ংকর!
অগ্নি উগারি ওড়ে আগ্নেয়ী জুড়িয়া নীলাম্বর।
এখনও তন্দ্রা নিদ্রা জড়তা ক্লৈব্য গেল না তোর?
ব্রজ দমকে দামিনী চমকে, এল ঘনঘটা ঘোর!
এখনও ঘুমাবে হে অমর মানবাত্মা অন্ধকারে
পরি দৈন্যের শৃঙ্খল হায় পাতালের কারাগারে!
গরজে কামান, তোপ, গোলাগুলি ছুটিছে দিগ্‌বিদিকে,
জড়াইয়া ধরে প্রিয়া-সম সৈনিক সেই বহ্নিকে।
গুলি ও গোলারে প্রিয়ার বুকের মালার ফুলের মতো
লইতেছে তুলি আজ জগতের বীর সৈনিক যত।
জাগো জাগো এদেশের দুর্বার দুরন্ত যৌবন!
আগুনের ফুল-সুরভি এনেছে চৈতালি সমীরণ।
সেই সুরভির নেশায় জেগেছে অঙ্গে অঙ্গে তেজ,
রক্তের রঙে রাঙায় ভুবন ভৈরব রংরেজ!
জাগো অনিদ্র অভয় মুক্ত মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাণ,
তোমাদের পদধ্বনি শুনি হোক অভিনব উত্থান
পরাধীন শৃঙ্খল-কবলিত পতিত এ ভারতের!
এসো যৌবন রণ-রস-ঘন হাতে লয়ে শমশের!
মৃত্যুর নয় – অমৃতের উৎসবের আমন্ত্রণ
আসিতেছে ওই রক্ত-রঙিন লিপি লয়ে যে মরণ–
বরণ করিয়া চলো সেই উৎসব-অভিযান-পথে,
মহাশক্তির তুষার গলিয়া ছুটুক প্রবল স্রোতে!
দঙ্গল বাঁধি এসো ময়দানে করিয়া কুচকাওয়াজ,
গর্জি উঠুক বক্ষে রণোন্মত্ত গোলন্দাজ!
রক্তে রক্তে এ কোন রুদ্র নটরাজ নাচে নাচে রে!
মৃত্যুরে খুঁজি মধুমাছি, মৃত্যুর মধু কোথা আছে রে!
সাইক্লোন নাচে শিরায় শিরায় মন সেথা চলে ছুটে
কোথায় বোমার ধূপদানি হতে বারুদের ধোঁয়া উঠে?
চলো জাগ্রত মানবাত্মা সামরিক সেনাদল,
যথা প্রাণ ঝরে-ঝরে পড়ে যেন বাদলের ফুলদল!
মাদল বাজিছে কামানের ওই শোনো মহা-আহ্বান!
জীবনের পথে চলো আর চলো – ‘অভিযান, অভিযান’!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *