জাগো রে জাগো রে চিত্ত জাগো রে

জাগো রে জাগো রে চিত্ত জাগো রে,
জোয়ার এসেছে অশ্রু-সাগরে।
কূল তার নাহি জানে,
বাঁধ আর নাহি মানে,
তাহারি গর্জনগানে জাগো রে।
তরী তোর নাচে অশ্রু-সাগরে।
আজি এ ঊষার পুণ্য লগনে
উঠেছে নবীন সূর্য গগনে।
দিশাহারা বাতাসেই
বাজে মহামন্ত্র সেই।
অজানা যাত্রার এই লগনে
দিক হতে দিগন্তের গগনে।
জানি না উদার শুভ্র আকাশে
কী জাগে অরুণদীপ্ত আভাসে।
জানি না কিসের লাগি
অতল উঠেছে জাগি,
বাহু তোলে কারে মাগি আকাশে–
পাগল কাহার দীপ্ত আভাসে।
শূন্য মরুময় সিন্ধু-বেলাতে
বন্যা মাতিয়াছে রুদ্র খেলাতে।
হেথায় জাগ্রত দিন
বিহঙ্গের গীতহীন,
শূন্য এ বালুকালীন বেলাতে,
এই ফেন তরঙ্গের খেলাতে।
দুলে রে দুলে রে অশ্রু দুলে রে
আঘাত করিয়া বক্ষ-কূলে রে।
সম্মুখে অনন্ত লোক,
যেতে হবে যেথা হোক–
অকূল আকুল শোক দুলে রে,
ধায় কোন্‌ দূর স্বর্ণ-কূলে রে।
আঁকড়ি থেকো না অন্ধ ধরণী,
খুলে দে খুলে দে বন্ধ তরণী।
অশান্ত পালের ‘পরে
বায়ু লাগে হাহা ক’রে
দূরে তোর থাক্‌ পড়ে ধরণী।
আর না রাখিস রুদ্ধ তরণী।

১১ পৌষ, ১৩০৯

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *