ভৃগুপুত্র ঋচীক ও কান্যকুব্জের রাজা গাধির কন্যা সত্যবতীর পুত্র। জমদগ্নির পত্নী ছিলেন রাজা প্রসেনজিতের কন্যা রেণুকা। ওদের পাঁচ পুত্র ছিল। রেণুকা একদিন স্নান করতে গিয়ে দেখলেন যে, মার্তিকাবত দেশের রাজা চিত্ররথ তাঁর পত্নীদের সঙ্গে জলক্রীড়া করছেন। তাই দেখে তাঁর চিত্তবিকার হল এবং ত্রস্ত হয়ে আদ্র্রদেহে তিনি আশ্রমে প্রত্যাবর্তন করলেন। পত্নীর বিহবল ও অধীর অবস্থা দেখে জমদগ্নি ভর্ৎসনা করলেন এবং পুত্রদের আদেশ দিলেন চিত্তবিকারগ্রস্থ মাতাকে হত্যা করতে। আশ্রমে যে চারপুত্র ছিলেন তাঁরা কেউ সেই আদেশ পালন করতে সন্মত না হওয়ায় জমদগ্নি তাঁদের অভিশাপ দিলেন। কনিষ্ঠ পুত্র পরশুরাম আশ্রমে আসতেই জমদগ্নি তাঁকে বললেন দুশ্চরিত্রা মাতাকে বধ করতে। পরশুরাম সঙ্গে সঙ্গে কুঠার দিয়ে তাঁর মাতার শিরচ্ছেদ করলেন। জমদগ্নি তখন প্রীত হয়ে পরশুরামকে বর দিতে চাইলে পরশুরাম বললেন,তাঁর মাতা যেন পুনর্জীবিত হন আর এই হত্যার স্মৃতি যেন তাঁর না থাকে। পরশুরামের অনুরোধে জমদগ্নি ওঁর পুত্রদের প্রতি দেওয়া অভিশাপ প্রত্যাহার করলেন, পরশুরামকে মাতৃহত্যার পাপ থেকে মুক্ত করলেন এবং পরশুরাম দীর্ঘায়ু ও যুদ্ধে অদ্বিতীয় হবেন বলে আশীর্বাদ করলেন। এর কিছুকাল পরে পরশুরাম যখম আশ্রমের বাইরে, হৈহয়রাজ সহস্রবাহু কার্তবীর্য জমদগ্নির আশ্রমে এসে হোমধেনুর বৎস হরণ করলেন। পরশুরাম ফিরে এসে সব কিছু শুনে কার্তবীর্যের সহস্র বাহু ছেদন করে তাঁকে বধ করলেন। তার প্রতিশোধ নিতে কার্তবীর্যের পুত্ররা যখন আশ্রমে এলেন, তখন পরশুরাম সেখানে ছিলেন না। জমদগ্নি নিজে বলশালী হয়েও তাঁদের বাধা দিলেন না। তাঁদের হাতেই তপস্যারত অবস্থায় নিহত হলেন।