4 of 8

জনগণের জোক!

জনগণের জোক!

জনগণের জোক!

জনগণের কৌতুক!

জনগণ? এই বিংশ শতকের শেষ বেলায় এসে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখছি জনগণ শব্দটার সর্বনাশ হয়ে গেছে। জনগণের নামে এই শতাব্দীতে দেশে দেশে কয়েকজন মুষ্টিমেয় মানুষ হাজার হাজার মানুষের সর্বনাশ করেছে, অন্যায় অত্যাচার করেছে।

এই নিবন্ধে সেসব বিষয় আলোচ্য নয়।

অবশ্য নামকরণ দেখে কারও মনে হতে পারে আমি হয়তো সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে একটি রাজনৈতিক আলোচনা করতে যাচ্ছি।

কিন্তু রাজনীতি আমার বিষয় নয়। রাজনীতি আমার আসে না।

সে যাই হোক, জনগণের কৌতুক নিয়ে বলার আগে জনগণ বিষয়ে একটা ঘটনা মনে পড়ছে।

উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত এক মহকুমা শহরে সাহিত্যসভায় গিয়েছিলাম। শীতকাল, বউবাজার থেকে বড় এক বাক্স জয়নগরের মোয়া নিয়ে গিয়েছিলাম। সাহিত্যসভার কর্মকর্তা স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা। ভদ্রলোক জয়নগরের মোয়ার কথা বা নাম আগে কখনও শোনেননি।

তাঁর হাতে মোয়ার বাক্সটা তুলে দিয়ে বললাম, ‘জয়নগরের মোয়া। আপনাদের জন্যে এনেছি।’

বললাম, ‘জয়নগরের মোয়া’, ভদ্রলোক শুনলেন, ‘জনগণের মোয়া।’

‘জনগণের মোয়া!’ এই বলে তিনি বাক্স খুলে একটার পর একটা মোয়া খেতে লাগলেন। প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে চব্বিশটি মোয়া একাই খেয়ে ফেললেন।

সে যা হোক, এবার প্রকৃত জনগণের জোকে আসছি।

হাওড়ার প্ল্যাটফর্ম থেকে খুশবন্ত সিং-এর পঞ্চম জোকবুক কিনেছিলাম চল্লিশ টাকা দিয়ে, ট্রেনে উঠে বাংলা জোকবুক পেয়ে গেলাম। গোপাল ভাঁড়ের আধুনিক সংস্করণ বটতলার চটি বই, দাম লেখা আছে দশ টাকা। রেলযাত্রী ‘সুরসিক প্যাসেঞ্জার ভাই বোনেদের জন্যে পাঁচ টাকা মাত্র’। কামরার মাঝখানে দাঁড়িয়ে বিক্রেতা ভদ্রলোক গড়গড় করে একটার পর একটা মজার গল্প মুখস্থ বলে যাচ্ছেন। জনগণ সেসব শুনে যে খুব হাসছেন তা নয়।

আমার কিন্তু বইটা পড়তে খারাপ লাগল না। দু’-চারটে জলো ও মেঠো রসিকতা আছে, সে তো খুশবন্ত সিং-এর বইতেও আছে। এ বইতে দু’-চারটে নতুন কৌতুকী পেয়ে গেলাম।

উদাহরণ—

(১) একজন নেতা নির্বাচনী ভাষণ দিয়ে বাড়ি ফিরে এসে চাকরকে বললেন, এই হাবু, আমার হাত-পা একটু টিপে দে তো। বড্ড ব্যথা করছে।

হাবু বলল, বাবু চেঁচিয়ে তো আপনার গলা বেশি ক্লান্ত। আপনার গলাটাই আগে টিপে দিই।

(২) একটা ছেলের জামায় আগুন লাগতে সে ছুটে পুকুরে ঝাঁপ দিতে যাচ্ছে, এমন সময় এক বিড়িখোর বলল, ‘একটু দাঁড়াও ভাই। আমি বিড়িটা একটু ধরিয়ে নিই।’

(৩) এক ভদ্রমহিলাকে পতি হত্যার ব্যাপারে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ জিজ্ঞাসা করল, আপনার তো পিস্তল রয়েছে, আপনি কষ্ট করে আপনার স্বামীকে ছুরি দিয়ে হত্যা করতে গেলেন কেন?

ভদ্রমহিলা বললেন, আমি আমার ছেলেমেয়েদের ঘুম ভাঙাতে চাইনি। তারা ঘুমিয়ে ছিল, পিস্তলের গুলির শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যেত যে।

এই রসিকতাটিও চমৎকার।

বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের ক্লাসে মাধ্যাকর্ষণ বোঝাচ্ছেন দিদিমণি। সেই নিউটন ও আপেলের গল্প।

দিদিমণি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা বলো তো, আপেল গাছ থেকে মাটিতে পড়ে কেন? ওপরেও তো উঠতে পারে।’

একটি মেয়ে হাত তুলল। দিদিমণি বললেন, ‘ভেরি গুড, তুমি বলো।’

মেয়েটি বলল, ‘আপেল ওপর দিকে উঠে গেলে লাভ কী? নীচে পড়লেই তো মানুষ খাবে, তাই নীচে পড়ে।’

পুনশ্চ:

এই জোকবুকের শ্রেষ্ঠ জোক।

সিনেমা দেখতে দেখতে স্বামী-স্ত্রী খুব বকবক করছিল। পাশে বসে থাকা এক দর্শক বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘মশাই আমি তো কিছু শুনতে পাচ্ছি না।’ ভদ্রলোক বললেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর কথা আপনি শুনবেন কেন?’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *