জঙ্গলরোমিও – নভেলা – মলয় রায়চৌধুরী
–কেন-কিঁ কেন-কিঁ কেন-কিঁ কবি লেখক নাট্যকার চিত্রকর অভিনেতা ভাস্কর স্হপতি এরা সবাই অসামাজিক গাধা…
–আরে…এই মিশকালো নিনড় ভদ্রলোক বলেন কি… ছ’ফিটের হবেন বোধহয়…তাই বলে…
–নট মি…ইটস দি বার্ড’স সঙ…
–কথাগুলা উনার নয়…বাইঞ্চোত আমাগো টিয়াপাখির…উনি টিয়াপাখির কাছ থিকা শিখসেন…
–আপনি ওয়াঁকে নিগ্রো নিগার ব্ল্যাক মুলাট্টো যা ইচ্ছে বলতে পারেন…ওয়াঁর খারাপ লাগবে না…টু বি প্রিসাইজ…উনি আমেরিকান নন…আফ্রিকান…ওয়াঁর মা আফ্রিকা থেকে ইটালিতে গিয়েছিলেন…ওয়াঁর নামটা বিটকেল…ব্যঞ্জনবর্ণ দিয়ে শুরু… ওয়াঁর মতন জিভ মুচড়ে উচ্চারণ করতে হলে…বিদ্যাসাগর মশায়কে তৃতীয়ভাগ লিখতে হতো…উনি কালু শুনতে অভ্যস্ত…জেলহাজতে ওয়ার্ডেনরা ওয়াঁকে কালু নামেই পেটাতো…আমরা ওয়াঁকে কালু না বলে শিস দিয়ে ডাকি…কালো মানে যে কয়লাটে তা উনি জানেন…অন্যদের জীবনের পাঁক তুলতে-তুলতে এদেশে এসে পৌঁছেচেন…ঠিকই… ওয়াঁর উচ্চতা সাড়ে ছ’ফিট…ব্লাডি ফাকিং হাইট…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম… মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–বাংলা জানেন ?
–নাহ…টু বি প্রিসাইজ…ভাঙা-ভাঙা বাংলা…বাকিটা বোবামি দিয়ে বুঝিয়ে দেন…আপনি আমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে ব্লাডি ফাকিং ইউজড টু হয়ে যাবেন…আপনি ওয়াঁর মুখে এক্ষুনি যা শুনলেন…টু বি প্রিসাইজ…তা উনি শিখেছেন আমাদের টিয়াপাখির কাছে…টিয়াপাখিটা প্রতিদিন সকালে ওই কথাগুলো কপচে-কপচে আমাদের ঘুম চটকায়…জঙ্গলের এফ এম রেডিও বলতে পারেন…
–এখানে ডুয়ার্সের গভীর জঙ্গলে এসে জুটলেন কী করে…টিয়াপাখি আর কেলো দুজনেই ? টিয়াপাখি তো শুনেছি বাজার থেকে কিনে খাঁচায় না পুরলে মানুষের মাতৃভাষায় কথা বলেন না…জঙ্গল থেকে ধরে এনে সরাসরি কথা বলানো কঠিন…মানে…যায়ই না বলানো…কথা বলানোর জন্য খাঁচায় পোরা বা পায়ে শেকল বাঁধা জরুরি…দ্যাখেন না…কাকাতুয়াদের পায়ে শেকল বেঁধে তারপর কথা বলানো হয়…উচ্চমাধ্যমিকে পড়েছিলুম…মানুষ হোমিনিড থেকে হোমোসেপিয়েন হতে পারতেন না…যদি না তাঁরা খাঁচা বা কারাগার আবিষ্কার করতেন…খাঁচা আবিষ্কার করে তাতে মানুষকে পোরবার পরই মানুষ গোঙাতে-গোঙাতে আমাকে ছেড়ে দাও… আমাকে যেতে দাও…আমি কিচ্ছু করিনি…ধরণের তোতলামি আওড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন… লজ্জাস্হানে অশথ্থপাতা বাঁধা বা কোমরে ঝাউপাতা ঝোলাবার প্রথা তারপর ঘটেছিল…
–টু বি প্রিসাইজ…যেভাবে আপনি এখানে এসে জুটলেন… আমি এসে জুটেছি…উনি সেভাবেই এসে জুটেছেন…তবে ব্লাডি ফাকিং টিয়াপাখিটা একজন নেপোপ্রেমী চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট কোম্পানির ঘ্যামচাঁদ মালিকের বাড়ি থেকে চুরি করে আনা…চোদ্দো হাজার কারখানা লাটে উঠে ওই একরকম কারখানাই তো টিকে আছে ধর্ষণমাতৃক দেশে…শ্বেতশুভ্র চিৎফাঁদ পাঁজির টয়লেট রোল…নেপোপ্রেমী…দুটো টিয়াপাখি আমরা ওয়াঁর বাড়ি থেকে চুরি করে এনেছিলাম…অন্যটাকে গত বছর শেয়ালে বা কোনো জংলি জানোয়ারে পালকসুদ্দু খেয়ে ফেলেছে বলে মনে হয়…সেই পাখি অসামাজিক গাধার বদলে বলতেন সামাজিক চুতিয়া…
–মানে…কেন-কিঁ কেন-কিঁ কেন-কিঁ কবি লেখক নাট্যকার চিত্রকর অভিনেতা ভাস্কর স্হপতি এরা সবাই সামাজিক চুতিয়া ? তার মানে মরা পাখিটা জীবন্ত পাখিটার চেয়ে উচ্চশিক্ষিত ছিলেন বলে অনুমান করতে পারা যায়…আই অ্যাম শিওর…তাঁকে নেপোপ্রেমী চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট কোম্পানির বাড়িতে ওপরের খোপের খাঁচায় বেশিদিন থাকতে হয়েছে…
–চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট কোম্পানির নেপোপ্রেমী চৌখাম্বা মালিক প্রতি বছর যে খয়রাত দিতেন আর খাইখরচ… খোরপোষের সুপারিশ করতেন…তার জন্য পাখি দুটো পুষেছিলেন…পাখিদুটোর সামনে নাম লেখা গ্রিটিং কার্ড ফেলে দিতেন…টু বি প্রিসাইজ…যে পাখিটা চুতিয়া কপচে গান শোনাতেন…সেই পাখিটা যাঁর নামের কার্ড তুলতেন তাঁকে দশ গুণ…আর অন্য পাখিটা তুললে চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট কোম্পানির দশরঙা ক্যালেণ্ডারে তাঁদের ছবি ছাপিয়ে দিতেন…কাঁধে সিল্কের চাদর-গামছা দিয়ে…ঠাণ্ডা-মার্বোনাইটের দিওয়ানে-খাসে…সেসব ঐতিহ্যের কাহিনি ওনার চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট নেপোপ্রেমী রোলেই নজরে পড়েছিল এককালে…আমরা যখন ওয়াঁর বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়েছিলাম…সেদিনকেই চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট রোলে ছেপে বেরিয়েছিল…কী অসাধারণ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উনি খয়রাত-খোরপোষ অনুদান প্রকল্প আবিষ্কার করেছেন…আমরা টয়লেট বা টিশ্যু ব্যবহার করার সুযোগ নমাসে-ছমাসে পাই… ওই যখন ব্লাডি ফাকিং ছোটো-ছোটো ঘটনা ঘটাতে বেরোই তখন সেদিনকার চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট রোলগুলো কোনো ঠেক থেকে দুষ্টুমি করে তুলে নিই…যাতে প্রতিভাশালী গরুপাচারকারী আর সৃষ্টিশীল গাছ-মাছ-ঠিকেদার কত্তাদের খবরাখবর পাওয়া যায়…আর ডাকাতি করার নাব্যতা আছে এমন চিৎফাঁদ টয়লেট পাঁজি মালিকটালিকের নামসাকিন ঘাঁতঘোঁত জানা যায়…নয়তো ডুয়ার্সের এই গভীর জঙ্গলে বসবাস করে কী করেই বা জানা যাবে কারা কারা ব্লাডি ফাকিং ঘাপটি মেরে এদিক-ওদিক হাত ঢোকাচ্ছে…পাখিদুটোর সামনে কেলো টয়লেট পেপারের টুকরো রেখে রেখে ওয়াঁদের এফ-এম বুকনির বদভ্যাসকে নিয়মিত করে ফেলেছিলেন…কার সঙ্গেই বা উনি কথা বলবেন বলুন…হয় পাখিদুটোর সঙ্গে…নয়তো নিজের প্রেমিকার সঙ্গে…ভালোই ফোঁড়তুলুনি প্রেমিকা পেয়েছেন…কথা আদান-প্রদানের অসুবিধা হয় না…
–খাঁচা থেকে কী করে খেলো জংলি জানোয়ার…আপনারা তো খাঁচাসুদ্দুই তুলে এনেছিলেন…নাকি ?
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–আমরা খাঁচাসুদ্দু চুরি করে এনেছিলাম বটে…কিন্তু টু বি প্রিসাইজ…জঙ্গলে উড়িয়ে দেবার পরও ব্লাডি ফাকিং পাখিদুটো পালালেন না…থেকে গেলেন আমাদের সঙ্গে…বোধহয় মানুষদের সঙ্গে থাকার বদভ্যাস হয়ে গিয়েছে ওনাদের…ওই যে আপনি বললেন…একবার খাঁচায় ঢুকিয়ে বুলি শিখিয়ে দিলেই তিনি হোমিনিড থেকে হোমোসেপিয়েনের রাস্তায় সরসরিয়ে নামতে শুরু করেন…লাল-গলা পাখিটাকেই খেয়ে ফেললেন কোনো নোলা-সকসকে জংলি জানোয়ার…সেই থেকে বেঁচে-থাকা সবুজগলা পাখিটা রাতের বেলায় যাঁর ঘরে উড়ে গিয়ে বসেন ইউজুয়ালি সেই ঘরেই থাকেন রাতভর…মানুষ-ন্যাওটা হয়ে গেছেন পাখিটা…কুরুচকুনে টিয়া…
–যাক…জঙ্গলে আপনাদেরও টাইম পাস…ফুটপাতিয়া বাংলায় গালাগাল-গুঞ্জরিত এফ এম সঙ্গীত শোনেন…নয়তো…যা দেখছি…এখানে টিভি মোবাইল বা ওই ধরণের আমুদে গ্যাজেট জিইয়ে রাখার কোনো পরিষেবা নেই…এই সমস্ত ভেবেই আমি সন্ন্যাস নিয়ে হিমালয়ের কোনো গুহার জাঙালভিটে অ্যাডপ্ট করতে যাচ্ছিলুম…মরবার জন্য কারণ চাই তো…জেলে উদ্দেশ্যহীন ঘানি ঘোরাবার চেয়ে…
–আজকাল তো সন্ন্যাসীরাও ল্যাপটপ-পেন ড্রাইভ আর মোবাইল ফোন…টু বি প্রিসাইজ…স্মার্ট ফোন রাখছেন… কুম্ভমেলায় হোমের আগুন জ্বেলে…ছিলিমে টান দিয়ে…ফোনে মিউজিকাল আশীর্বাদ দিচ্ছেন শিষ্যদের…মোবাইল টাওয়ারের আওতায় সন্ন্যাস নিলেই হল…টাওয়ারগুলো তো দিনকেদিন গ্রামগঞ্জের… শানপুকুরের…মঠের…বাউলদের…শ্মশানের…চিড়িয়াখানার কাছেপিঠে চলে যাচ্ছে…
–আইলেন কী কইরা বাইঞ্চোত এত দূর…ডুয়ার্সের জঙ্গলে…এত ভিতরে…ট্যুরিস্ট রুট ছাইড়া…ফেডেড জিন্স…সবুজ টিশার্ট…স্পোর্টস জুতা…মুক্তাছাগু দাড়ি…
–আমি তো আইনের চোখে আবির দিয়ে পালাচ্ছিলুম…ভেবেছিলুম হিমালয়ে কোনও পাথুরে আড়ালে ঠাঁই নিয়ে সন্ন্যাসীর জীবন কাটাবো…দমদম বিমান বন্দর থেকে ভুটানের পারো বিমানবন্দর…তারপর লোকাল বাসে করে গেলেফু…পারো থেকে গেলেফুও বিমানে আসতে পারতুম…পুলিশে ম্যানিফেস্ট দেখে তা থেকে ফলো করবে আঁচ করে লোকাল বাসে চাপলুম…গেলেফু থেকে হাঁটতে হাঁটতে বর্ডার পার করে শিলিগুড়ির দিকে না গিয়ে ডুয়ার্সের জঙ্গলে ঢুকলুম…তিন দিন হেঁটেছি…কী করব ভেবে পাচ্ছিলুম না…তারপর আড়াল থেকে আপনাদের চারজনকে দেখতে পেলুম…মাটির গর্তে কিছু করছেন…মনে হল আমার বয়সী একজন লোককে তাতে শুইয়ে দিয়ে মাটি ছড়িয়ে দিলেন… এরকম ঘন জঙ্গলে একজনের শবে মাটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন দেখে মনে আশা জাগল যে হয়তো আপনারাও আমার মতন সামাজিক গাড্ডায় পড়ে গিয়ে থাকবেন…
[স্কাউন্ড্রেলগুলোর সঙ্গে ঠিকমতো কথা চালিয়ে যেতে পারছি মনে হয়…যা বলছে এরা…বেশ বিপজ্জনক লোকজন…পিওর ক্রিমিনাল না সন্ত্রাসবাদী যাচাই করে দেখা যাক…বেশ ঘাঁটি গেড়ে বসেছে জঙ্গলের ভেতরে…তবে রিপোর্ট ছিল কেবল একজনের উপস্হিতির…এরা তো একটা গ্যাঙ…]
–টু বি প্রিসাইজ…হয়তো ব্লাডি ফাকিং গাড্ডা…কিন্তু সব গর্ত একই রকম হয় না…আপনার ব্লাডি ফাকিং গাড্ডার কথা বলুন…তারপর আমাদের গাড্ডার কথা শুনবেন…তবে…টু বি প্রিসাইজ…ব্যক্তিগত সাম্প্রতিকের কথাই কেবল বলবেন…আমাদের পারিবারিক বা সামাজিক অতীত নেই…বুদ্ধ বলে গেছেন… অতীত নিয়ে চিন্তা কোরো না…ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর হয়ো না…নিজের মনকে বর্তমান মুহূর্তের দিকে একাগ্র করো…বাই বুদ্ধ আই মিন গৌতম বুদ্ধ হু লেফ্ট হিজ ফ্যামিলি…নট দ্য ওয়ান হু ইজ লেফ্ট বাই দি লেফ্ট ফ্যামিলি…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–যাঁর ওপর মাটি ছড়িয়ে দিলেন তিনি আপনাদের কে ছিলেন… আত্মীয়… বন্ধু… বহিরাগত… চুকলিখোচর…দেহরক্ষী…
–না…না…তিনি আমাদের পঞ্চমজন…ভুল বলেছি…ষষ্ঠজন…ব্লাডি ফাকিং আত্মহত্যা করেছিলেন..টু বি প্রিসাইজ…নাম আমরা ব্যবহার করি না…পুরুষ মানুষের জীবনে সবচেয়ে ক্ষতিকর হল তার পোশাক আর নাম…আমরা নামহীন পুরুষদের নিয়ে পোশাকহীন সমাজ গড়ার পক্ষে…কেবল কোল-প্রেমিকাদের নাম থাকবে…আমাদের প্রেমিকাদের একটি করে নাম আছে…জঙ্গলে এসে আমরা বদলাইনি…জঙ্গলকেই বদলে দিয়েছি…সবাই মিলে যদি উলঙ্গ সমাজ গড়েন তাহলে ভয় শোক মায়া লজ্জা অপমান ঘেন্না অমর্যাদা সংশয় থেকে ছাড়ান পেয়ে যাবেন…প্রেমিকারা আমাদের মরমিয়া উদ্ধার…
–এখানে জঙ্গলে এসে আত্মহত্যা…স্ট্রেঞ্জ…সমাজ সংসার ছেড়ে এসেও আত্মহত্যার কারণ থাকে নাকি…
–এঁড়ে নেকুপুসু জিদ…ওয়াঁর প্রেমিকার বিশ্বাসঘাতকতা সহ্য করতে পারেননি উনি…যে প্রেমিকা ওয়াঁর ছিল…তাঁকে উনি বলতেন চাঁদবদনী…লিগালি ব্লণ্ড…
–ওঃ…প্রেমিকার জন্য বিবাগী হয়ে চলে এসেছিলেন…তা সে তো ওনার বয়ঃসন্ধির রসকশের দিনকালে ঘটে থাকবে…যদিও দূর থেকে আবছা দেখে মনে হল আমার-আপনার চেয়ে কচিনধর মানুষ…
–আমরা জঙ্গলে নিজের-নিজের সোহাগী প্রেমিকার সঙ্গেই বসবাস করি…ওয়াঁর প্রেমিকাও এখানেই থাকেন…
–প্রেমিকা…বিয়ে-শাদি-নিকা না করে সবাই লিভটুগেদার করছেন নাকি…চুল দাড়িও কামান না…আঁচড়ান না…সবাই…গায়ের দুর্গন্ধে মহিলারা অবজেক্ট করেন না ? সকলে এভাবে বাসি নোংরা লুঙ্গি পরেই কাটিয়ে দেন…খালি পায়ে…দাঁত মাজেন না…চোখে পিচুটি…নখে ময়লা…
[ প্রেমিকা…ডুয়ার্সের গভীর জঙ্গলে প্রেমিকা…তারা কারা…এদের মতোই নোংরা…এদের দলের মহিলা সদস্য…নাকি জোর করে তুলে এনেছে…বলছে লিগালি ব্লণ্ড…বিদেশিনী হবে…আরও খুঁচিয়ে এদের কাণ্ডকারখানা জানবার চেষ্টা করি…]
–না…কেন অবজেক্ট করবেন…ওয়াঁদের থেকেই আমাদের গায়ে…আপনি যাকে বলছেন দুর্গন্ধ…আর আমরা বলি সুগন্ধ…তা ছড়িয়ে পড়ে…মন দেয়া-নেয়ার ঢঙে গন্ধ দেয়া-নেয়া…দরকার পড়লে কেলো চুল দাড়ি কেটে দ্যান…ওয়াঁর কাছে খুর আছে ব্লাডি ফাকিং সেল্ফ ডিফেন্সের জন্য…মুর্গি-খরগোশ-বাদুড় কাটার জন্য অবশ্য ছুরি-চপার আছে…সেই খুর ব্যবহার করে সবাই নমাসে-ছমাসে গোঁপদাড়িভুরুবগলকুঁচকি কামিয়ে চুলহীন হয়ে যাই…চুলের কোষাগারে জমা থাকে…পাথরে ঘষে খুরে শান দিয়ে রাখেন…কাঁচিও আছে…যদি দরকার পড়ে…আমরা কারোর জন্য স্মৃতি ছেড়ে যেতে চাই না…চুল ছাড়া…নাম থাকলেই স্মৃতির ঝুঠঝামেলা… ইতিহাস-ফিতিহাস…আমাদের প্রেমিকাদের মন আর হৃদয় টাইপের ফালতু ব্যাপারের ঝঞ্ঝাট নেই…কেননা ওনাদের রয়েছে পবিত্র প্রবৃত্তি…বিশুদ্ধ প্রেম…
— সব সময় সবাই খালি গায়ে এই চাককাটা লুঙ্গি পরেই থাকেন…নাকি প্যান্ট-শার্টও পরেন ?
–না…বাইঞ্চোত সাধারণত আমরা সবাই নাঙ্গা পোঙায় থাকি…নাঙ্গা চুকিতকিত খেলি…গাছের ডালে-ডালে নাঙ্গা চোর-পুলিশ খেলি…দোলনচেয়ারে নাঙ্গা দোল খাই…ছিলিমে পাতা ফুঁকি…নাঙ্গা দাবা খেলি…নাঙ্গা তাস খেলি…নাঙ্গা লুডো খেলি…আইজকা উনি মারা গ্যালেন বইলা সন্মান জানাইতে লুঙ্গি পইরতে হইল…জঙ্গলের প্রাণীগো পোশাক পরনের প্রয়োজন নাই…
–আপনি বাঙাল নাকি ?
–হ্যাঁ..উনি রায়টের পরের বাঙাল…রায়টের আগের হলে ওয়াঁর মুখে শুদ্ধ বাঙালেবুলি শুনতেন… বাবুয়ানি দেখতেন…
–আচ্ছা…
–টু বি প্রিসাইজ…আমরা জানি যে পুরুষের পক্ষে পোশাক ব্যাপারটা ক্ষতিকর…শুধু শীতকালে ঠাণ্ডায় ব্লাডি ফাকিং প্যান্ট-শার্ট-সোয়েটার-কোট-জুতোমোজা না পরলেই নয়…বর্ষায় রেইনকোট…সিসিটিভি থেকে মুখ আড়াল করার ছাতা…যিনি মারা গেছেন তিনি টাকমাথা ছিলেন…ভাবুক ছিলেন তো…পাদতেন আর বলতেন সরি…কম বয়সে টাক পড়ে গিয়েছিল…শীতের সময় টুপি পরতেন…আর জঙ্গলের বাইরে ডাকাতি করতে যেতে হয়…যখন যেমন ডাকাতি তার তেমন পোশাক…আমরা টুকরো-টুকরো ঘটনা দিয়ে গড়া…গন্ধ তো হবেই… থাকতে-থাকতে আপনারও অভ্যাস হয়ে যাবে…ডোন্ট ওয়রি…অভ্যাস আমাদের দাস…যিনি মারা গেলেন তিনি ডাকাতিতে অংশ নিতেন না…সংসার পাহারা দিতেন…চাবির থোলো হ্যাণ্ডল করতেন… এক-তরকারি… দু-তরকারি ভাত রেঁধে রাখতেন…আপনাকে আপাতত ওয়াঁর ডিউটি দেয়া হবে…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–আমার যা ঘেমো প্যাচপ্যাচে হাল…আজকেই চুলহীন হয়ে গেলে ভালো হতো…তিন-চার দিনের খোঁচা দাড়িও খচখচ করছে…
–এক্ষুনি হবার দরকার নেই…সবাই যেদিন হবো…আপনিও হবেন…তাড়াহুড়োর কী আছে…টু বি প্রিসাইজ…চুলহীন হওয়াকেও উৎসব বলে মনে করুন না…তা হলেই তো হল…চুলহীন দেহে সবাই মিলে উলঙ্গ নাচার আনন্দই আলাদা…সেদিন যদি বৃষ্টি পড়ে তো কথাই নেই…এই বয়সে নাচানাচি করেছেন কখনও…না প্রাইমারি স্কুলেতেই ঠ্যাঙের পাঁই-পাঁই ফুরিয়ে গেছে…উচ্ছৃঙ্খল না হলে নাচতে পারবেন না…
–শহরে এই বয়সে কি আর নিজে-নিজে নাচার অবসর থাকে…নানা রকমের সরকারি আর দলীয় বাঁশ নাগরিককে নাচাতে থাকে…নিজে উলঙ্গ হতে হয় না…ওনারাই খুলে নেন…
–তাহলে এখানে আমাদের সঙ্গে চুলহীন গায়ে…ব্লাডি ফাকিং বিনা বাঁশের ফ্রিস্টাইল নাঙ্গা নাচ নাচতে পারবেন… লকিং পপিং শিমিং বামিং…আর যা ইং ইং নাচ হয়…
–ব্যায়াম করেন না আপনারা ?
–করি…করি…সক্কালবেলায় সবাই আচ্ছা-করে কেজেল একসারসাইজ করি…প্রেম করার জন্য খুবই জরুরি…স্বাদের তার পাওয়া যায়…
–ওই যে দেখা যাচ্ছে…দূরে…সবাই মিলে ওই একটা পুরোনো তিনতলা বাড়িতেই থাকেন ? নাকি রেড- ইনডিয়ান স্টাইলে প্রত্যেকে কুটির-টুটির ঝোপড়ি-টোপড়ি তৈরি করে তাতে প্রেমিকাদের সঙ্গে থাকেন ? চলেই বা কী করে ? জনপদ থেকে তো বেশ দূরে…গভীর জঙ্গলে…দোকান-বাজার…
–টু বি প্রিসাইজ…বলেছি তো…ব্লাডি ফাকিং চুরি-ডাকাতি করে…সাধারণত চিৎফাঁদ পাঁজি টয়লেট নেপোপ্রেমী শীর্ষকত্তা কিংবা ভুঁড়োকাত্তিক গাছ-মাছ-ঠিকেদার ছাতুদাদা-লাটুদাদাদের বাড়ি বা অফিসে ডাকাতি করি আমরা… ব্যাঙ্ক-ট্যাঙ্কের গেঁও হাই-তোলা ছলঘুমন্ত কেরানিদের অফিসেও ডাকাতি করি…আমাদের একজন গিয়ে ঢুঁ মেরে দেখে আসে কারা কারা শীর্ষকত্তা হয়েছে বা মাছ-গাছ-ঠিকেদারিতে পেল্লাই…সিঁধ কাটা বা হামলে পড়া যাবে…অপরিচিত শহর হলে সেখানের পথের কোনো ষাঁড়ের পিছুপিছু একজন যান পুরুত সেজে…ষাঁড়েরা ধনীদের বাড়ির খবর রাখে…দামি ফলটা-আশটা পায়…বড়সড় দাঁও মারতে পারলে ভালো…নয়তো ফলটল…মুর্গি-টুর্গি রেঁধে-পুড়িয়ে খেয়ে উলঙ্গ কাটিয়ে দিই যত দিন পারা যায়…তবে আমাদের প্রেমিকাদের খাওয়াবার দায়িত্ব প্রত্যেক প্রেমিক নিজে নেন…তাঁদের আমরা অভুক্ত রাখি না কখনও…তাঁদের ডিপ্রেশানে ভুগতে দিতে পারি না…প্রেম অবিনশ্বর…আট হাজার বছর আগের গুহার দেয়ালেও আঁকা পাবেন…
–তার মানে এই জঙ্গলেও পার্টিবাজি…কোন দল…এনি কালার হেটরেড…
–আমরা কাউকে অচ্ছ্যুৎ অস্পৃশ্য মনে করি না…টু বি প্রিসাইজ…আমাদের চোখে সবাই ব্লাডি ফাকিং ব্ল্যাক…চুলের মতন…
–দুর্যোধনের বাল…নট চুল…
–কালু ভদ্রলোক যা তাগড়া… ডাকাতিতে গাজোয়ারি বা ভয় দেখাতে সুবিধাই হয় ওনার সাহায্য নিয়ে…আফ্রিকার মানুষদের টেসটোসটেরনের মাত্রা বেশি…তাই তো ওনারা সব রকমের দৌড়ঝাঁপে এগিয়ে… কোন আফ্রিকার লোক ? আজকাল আফ্রিকা তো নানারকম…অবশ্য আফ্রিকার লোকেদের দেখে কে যে কোন আফ্রিকার বোঝা কঠিন…ডাকাতি ব্যাপারটা প্রকৃতিও মেনে নিয়েছে…এই তো জঙ্গলে যে গাছ যতো উঁচুতে ওঠে সে তার শেকড়কে তত তলায় নামাতে থাকে…ওপরে উঠতে হলে শোষণের জন্য নিচে নামতেই হবে…গোড়ার কাছে কাউকে মাথা তুলতে দেয়া হয় না…প্রকৃতির রাজনৈতিক নিয়ম…
–টেসটোসটেরনের মাত্রা আমাগো কারোরই কম নয় দাদা…আমাগো প্রেমিকাদের সঙ্গে আলাপ হইলে জাইনতে পারবেন…কে কতটা ল্যাঞ্জাধারী…উনাদের হইলেই হইল…অরগ্যাজমের চাহিদা নাই…ইনফ্যাচুয়েশানের দুর্ভোগ নাই…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–নিউকামার মোসাই…ওসব শোষণ-শাসনের ইশতাহারি বক্তিমেবাজি ছাড়ুন…বলেছি তো…আমাদের ব্লাডি ফাকিং পারিবারিক সামাজিক অতীত নেই…মানে আমাদের ওপরে ওঠা আর নিচে নামার সুচিন্তা বা দুশ্চিন্তা নেই… কেলোর কোনো দেশ নেই…ছিল এককালে…এদেশে যেদিন ঢুকেছেন সেদিনই উনি নিজের ব্লাডি ফাকিং পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন…টু বি প্রিসাইজ…ধরা পড়ার পর…আদালতে কয়েকবার তোলা হয়েছিল ওয়াঁকে…তুললে বলতেন যে উনি এদেশেরই লোক…সরকার প্রতিবার হিমসিম খেতো প্রমাণ করার জন্য যে উনি এদেশের নাগরিক নন…যারা ব্লাডি ফাকিং এদেশের নাগরিক তারা গুচ্ছের কাগজপত্র যোগাড় করতে হাল্লাক হয়ে যায় নিজেদের নাগরিক প্রমাণ করার জন্য…যারা নাগরিক নয় তারা যে সত্যিই নাগরিক নয় তা প্রমাণ করার জন্য সরকারকে হন্যে হয়ে ব্লাডি ফাকিং প্রমাণপত্র খুঁজে মরতে হয়…গায়ের রঙ দেখে তো আর দেশ বোঝা যায় না…
–আপনাদের সঙ্গে পরিচয় হল কী ভবে…
–যেভাবে আপনার সঙ্গে হল…চোখাচুখি…টু বি প্রিসাইজ…আমরা একই ব্লাডি ফাকিং কারাগারে বিচারাধীন কয়েদি ছিলাম…আদালতে নিয়ে যাবার পথে কন্সটেবলদের পেঁদিয়ে পালাই…কেলোই সাহায্য করেছিলেন…আমি এই অঞ্চলের লোক হওয়ায় ডুয়ার্সের ঘাঁতঘোঁত ছোটোবেলা থেকে চিনি…তাই সবাইকে নিয়ে ভুটানের সীমায় এই গভীর জঙ্গলে চলে এলাম…এটা রিজার্ভ ফরেস্টের প্রায় নো ম্যানস ল্যান্ড…পর্যটকরা ল্যাংচাতে-ল্যাংচাতে এখান পর্যন্ত পৌঁছোতে পারেন না…আট বছর হয়ে গেল…বললাম তো…আমরা আমাদের পারিবারিক সামাজিক অতীত ডিলিট করে দিয়েছি…পরিবার হলো অতীতের পরানো আপনার পায়ের মরচেপড়া বেড়ি…আর ভবিষ্যত হল আপনার সামনে লোভের সরকারি সেতু…মানুষের মতন মানুষ হয়ে বাঁচতে হলে…বেড়ি আর সেতু দুটো থেকেই ছাড়ান পেতে হবে…স্মৃতিকে ডিলিট করে ফেলুন…অতীতকে ক্ষমা করলেই ডিলিট করে দিতে পারবেন… আমরা অতীতহীন…কবে যে স্মৃতিহীন হবো জানি না…আপনার নাম আমরা জানতে চাই না…আমাদেরও কারোর কোনো নাম নেই…আপনিও আপনার নাম-পদবি টুসকি বাজিয়ে ভুলে যান…
–হ্যাঁ…বাজালুম…ছেলেবেলায় আমায় ডাকনামে ডাকা হতো…তারপর ডাকনামটা একটু-একটু করে উবে গেল… ডাকনামে ডাকার লোকেরাও উবে যেতে লাগল…তারপর তাঁরা সবাই হাপিশ…ঠিকই বলেছেন…অতীত নিয়ে গর্ব করার মানে হয় না…তা নিজের হোক বা নিজেদের বা পরের…অতীত বললেই কেমন যেন একটা স্যাঁতসেঁতে প্যাচপেচে গন্ধ নাকে এসে লাগে…বিলডারে নিতে পারেনি…কাঙালিরা জবরদখল করতে পারেনি…এরকম… বনেদি কলকাতার নোনা ইঁটের ঝুরঝুরে কোম্পানি আমলের বাড়ি…
–আপনার সঙ্গে ব্লাডি ফাকিং অন্যদের পরিচয় করিয়ে দিই…ইনি…ইনি…ইনি… আর আমি…কেলোকে তো নিজেই চিনে নিয়েছেন…আর যিনি মারা গেছেন তিনি ওইখানে কবরে শুয়ে ঘুমোচ্ছেন…আই মিন চিরনিদ্রায়…
–আপনিই নেতা ? আপনিই শুধু কথা চালিয়ে যাচ্ছেন…বুলির থান-থিত্তি ভালো…অথচ সকলের চেয়ে আপনিই বোধহয় বেঁটে… বেশ সখিমুখো আর ফর্সা…উকিলি ছিরিছাঁদও আছে…গাঁট্টাগোট্টা নেপোলিয়ানিক মুশকো জোয়ান…সিক্স প্যাক বুকপেট করে নিতে পারতেন…
–আমাগো বাইঞ্চোত ফ্যামিলি প্যাক গোদলা তলপেটই কাজে দেয়…আমরা কুস্তি-প্রেম…নখরা-প্রেম করি না…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম মনে থাকেন যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–টু বি প্রিসাইজ…আমার হাইট চার ফিট সাত ইঞ্চি…আপনি তো আমার মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে চলেছেন…তাই ব্লাডি ফাকিং উত্তরও আমিই দিচ্ছি…সবাইকে পথ দেখিয়ে গভীর জঙ্গলে এনেছি…সবাই আমায় অনুসরণ করেছে…সুতরাং আমিই আমাদের স্বরাষ্ট্র আর খুনোখুনির কর্ণধার…ইনি যানবাহন আর ছিনতাই… ইনি অর্থ আর চুরিডাকাতি…যিনি মারা গেলেন তিনি সংস্কৃতি আর রান্নাবান্না…ইনি…
–এবার তাহলে ওনাকে জিগ্যেস করি…উনি আমার মতনই তামাটে আর মাঝারি…তবে টিঙটিঙে রোগা…আর ট্যারা চোখ… কোঁকড়া চুলও আছে আমার মতন…স্যার…আপনি আমাকে মারতে চাইছিলেন কেন…গুলি চালালেন আমাকে লক্ষ্য করে…ভাগ্যিস টিপ ফসকে গিয়েছিল…নয়তো মারা পড়তুম…রাইফেলটা নামিয়ে রাখুন…প্লিজ…
–টিপ ফসকায় নাই…আপনারে বাইঞ্চোত সতর্ক করার জন্য গুলি চালাইয়াসিলাম…তাছাড়া বুইঝলেন কিনা… আপনে বন্দুক তাক করা হতেসে দেইখা দুইহাত উপরে তুইলা হ্যাণ্ডস আপ কায়দায় স্হির হয়্যা দাঁড়াইয়া পড়সিলেন… বুইঝতে পারলাম যে আপনে বাইঞ্চোত ট্রেসপাসার নন…কুনো ভিতু-ছাপ পথভুলা ট্যুরিস্ট বা ভুলাক্কড় বনবিজ্ঞানী…আপনের কাঁধে বইমেলার কবি টাইপের এই ঝোলা সাড়া আর কিসু নাই দেইখাও আস্বস্ত হইসি… বাইঞ্চোত ঝোলা সার্চ কইরা কেবল আখরোট কাগজি বাদামের প্যাকেট জলের বোতল আর দুটা পেনসিল টর্চ… বুইঝলেন কিনা…সুতরাং আপনে পুলিসের টিকটিকি কিংবা বনবিভাগের গিরগিটি নন বইলা অনুমান করতে পারলাম…মিনারাল ওয়াটারের বোতল নিয়া সন্ন্যাসজীবন বাইছা নিয়াসেন…
–জামা-প্যান্ট সার্চ করার সময় কাতুকুতু দিচ্ছিলেন কেন…
–আপনের বেবি-কচ্ছপ চেক কইরা নিতে হইল… যে আপনে ব্যাটাছেলে না মেয়্যাছেলে…আর কুঁচকির ভাঁজে ছোরা-পিস্তল লুকায়ে রাখসেন কিনা তাও যাচাই করা বাইঞ্চোত জরুরি আছিল…
–রাতে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটার সময় আওয়াজ শুনলেই টর্চ দুটো দুহাতে নিয়ে জ্বেলেছি…যাতে জংলি জীবজন্তুও আমাকে কোনো জানোয়ার মনে করে পালায়…দিনের বেলায় একটা হিজল গাছের তলায় ঘুমিয়ে নিয়েছিলুম…ওই যে নিচের দিকে জলের সোঁতামতন আছে…সেখানে…
–দূর থেগে আবনাগে হারামি বলেই মনে হচ্ছিল…
–হ্যাঁ…ওনার লক্ষ্য অব্যর্থ…আর্মি সেপাই ছিলেন তো…আর্মির ব্লাডি ফাকিং ডেজার্টার…
–রোজরোজ বাইঞ্চোত লেফট রাইট ভালো লাগত না আমার…বুইঝলেন কিনা…সৈন্যবাহিনীর কাজ যুদ্ধ করা…বেয়নেট দিয়া খোঁচানো…বিপদের ঝুঁকি ছাড়া বেঁচে থাকার কুনো মানে নাই…তা নয় আজ বইন্যা তো কাল ভূমিকম্প তো পরশু দাঙ্গা তার পরের দিন ট্রেন দুর্ঘটনা…এই সব কাজে লাগাইয়া জীবনটারে নষ্ট কইরা দিতে আছিল…তাতে গাঁইগুঁই কইরবার ফলে…বুইঝলেন কিনা…আমারে একজন কর্নেলের বাড়ির চাকর কইরা দিলে… ব্যাটম্যান…আজকাল যারে কয় সহায়ক…সায়েবের জুতার গু-গোবর পরিষ্কার করা থিকা ম্যাডামের ঝুলঝাড়া পর্যন্ত সবই কইরতে হইত…একদিন পুরা বোতল ব্র্যাণ্ডি-টানা বেহেড ম্যাডাম আর কেইলে-পড়া কর্নেলের ঢলে পড়ার সুযোগে…উনার রিভলভার…রাইফেল আর বেশ কিছু কার্তুজ নিয়া বুইঝলেন কিনা… বাইঞ্চোত সটকে পইড়লাম…মিলিটারি পুলিস ধইরতে পারে নাই…ধইরলে কলকাতার পুলিস…রিভলভারটারে বিক্রি করার সময়ে…শালা যে গুণ্ডারে বিক্রি করতে গেলাম সে বাইঞ্চোতই পুলিসের ফাঁদ পাইতা ধরাইয়া দিলে…বাইঞ্চোত খোচর ছিল কী কইরাই বা জানুম…আইজকাল ভোটার-নাগরিকের চাইতা খোচর-ভোটারের সংখ্যা বেশি তা জাইনতাম না…তারপর তো শুইনলেন… কেলোদের সঙ্গে একই প্রিজন ভ্যানে যাইবার সময়ে…বুইঝলেন কিনা…আমরা প্যাঁচ কইষা নিয়াসিলাম যে কন্সটেবলগুলারে পিটাইয়া পলাইমু… পলাইলাম…আর উনার ডুয়ার্সের অভিজ্ঞতার পিছন-পিছন…বুইঝলেন কিনা…নানা পথে বাইঞ্চোত পৌঁসাইলাম এই জঙ্গলে…সেসব আট বৎসর আগের গল্প…আপনে তো আমাদের ঘটনা শুনতে ব্যস্ত…নিজেরটা বলেন… কী কাজ কইরা পলাইতে আছিলেন…
–ডাক্তারি করতুম…নার্সিং হোম খুলেছিলুম…যা হয় নার্সিং হোমে…অ্যাবরশানের কেস আসত…প্রথম দিকে আইনি গর্ভপাত করতুম…ক্রমে বেআইনি অ্যাবরশানও করতে আরম্ভ করলুম…তা বেশি রোজগারের লোভে মেয়ে পাচার দলের পাল্লায় পড়ে গেলুম…মেয়ে পাচারে সরাসরি যুক্ত ছিলুম না…পাচারকারীরা যেসব মেয়েদের ধরে আনত তাদের অপারেট করে ফ্যালোপিয়ান টিউব বাদ দিয়ে দিতুম যাতে ব্যবসায় নেমে পেটে বাচ্চা না আসে…কারোর ভালো করার দিনকাল আর নেই…আমি তো মেয়েগুলোর ভালোর জন্যই কাজটা করছিলুম…কোথায় অন্য রাজ্যের রেডলাইট এলাকায় বা আরব দেশ-টেশে গিয়ে যাতে বিপদে না পড়ে… হরিয়ানায় বিয়ে করার মতন মেয়ের সংখ্যা কমে যাবার ফলে পাচার বেড়ে গেছে…একই পরিবারে বাবা-কাকা-দাদা-ভাই-ছেলে-ভাইপো সবাই মিলে একটা মেয়ে কিনে পারাপারি করে কাজ চালাচ্ছে…কেনার আগে ওদের শিওর হতে হয় যে ফ্যালোপিয়ান টিউব কেটে বাদ দেয়া আছে কিনা…
[ যাক…স্কাউন্ড্রেলগুলোর কাছে বিশ্বাসযোগ্য গল্প নিজের সম্পর্কে বানিয়ে ফেলতে পেরেছি…নিজেকে ফেরারি অপরাধী না বললে এদের সন্দেহ হতে পারে…দেখা যাক…সাবধানে কথা বলতে হবে যাতে না বেফাঁস কিছু বলে ফেলি…ইনটেলিজেন্সের রিপোর্ট ছিল যে হেলিকপ্টার থেকে এই জঙ্গলে কেবল একজনকেই টার্গেট প্র্যাকটিস করতে দেখা গেছে…লঙ্গিচুড-ল্যাটিচুড ক্যালকুলেট করে লোকেট করেছিল ডিপার্টমেন্ট…বাড়িটা গাছে ঘেরা বলে বোধহয় দেখতে পায়নি…পাঁচ-ছয়জন রয়েছে জানা থাকলে সম্পূর্ণ টিম নিয়ে আসা যেত…আট বছরের পুরোনো ফেরারি বলেই হয়ত এদের ফাইলগুলোয় ধুলো জমেছে…কেস ডরম্যান্ট হয়ে আছে… ]
–তা করতে গিয়ে ব্লাডি ফাকিং মেরেও ফেলেছেন হয়তো…কোথায় আপনার নার্সিং হোম…কোন পাড়ায়…কত নম্বর বিল্ডিং…
–হ্যাঁ…একটা মেয়ে মরে গেল…তার পেটে আগেই বাচ্চার জেলি তৈরি হওয়া আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল…হাওড়ার ভোজপুরি মিউজিক রোডে…পাবলিক আমার নার্সিং হোম ভাঙচুর করলে…ঘুষের টাকা খেয়েও কন্সটেবলরা হাজতে ঠ্যাঙালে… জামিনে ছাড়া পেয়ে…ব্যাস…ভাবলাম সন্ন্যাসী হয়ে যাব হিমালয়ে গিয়ে…নয়তো জেল খাটতে হত…
–দুর্যোধনের বাল…চলুন…আমাদের জাঙাল-বাড়িতে যাওয়া যাগ…বুজে ফেলেচেন নিশ্চই যে আমাদের সঙ্গে আবনাগে থাগতিই হবে…পালাবার চেষ্টা করবিন না…নো এগজিট…পালাবার চেষ্টা করলিই পকাৎপঙ…
–বুইঝলেন কিনা…আমরা কেউই পলাইবার চেষ্টা করি না…একসঙ্গে থাইকবার বাইঞ্চোত শর্ত হইল যে কেউ যদি পলাইয়া যাইবার চেষ্টা করে…আর যদি সে ধরা পইড়া যায়…তাইলে অন্যেরা সালিসি সভা ডাইকা তার বিচারের নাটক কইরা…সামারি এগজিকিউশান করবে…মইরা যাইবার পরে যেইহানে তারে গোর দিয়া হইবে সে জায়গাটা তারে দিয়া আগে থিকা খুঁড়াইয়া রাইখা হইবে…মেজরিটি ডিসিশান ইজ ফাইনাল…ফলে কেউ কারোর নজরদারি করি না…তবে…বুইঝলেন কিনা…বাইঞ্চোত একটা ঘটনা ঘইটা যাইবার পর প্রতিরাতে একজন জাইগা পাহারা দেই…কেননা পুলিস বা পোচার বা ফরেস্টের পাহারাদার এখানে পৌঁছে গ্যালেই ক্যাওড়া…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–আর কোথাও পালাবার জায়গা নেই দাদা…ভেবেছিলুম নেপাল-ভুটানের জঙ্গলে একাই কাটিয়ে দেব… ভাগ্য ভালো যে আপনাদেরও পেয়ে গেলুম…নজরদারির কথাটা তুলে ভালো করলেন…পশ্চিমবঙ্গের শহরে থাকুন বা গাঁয়ে…আসেপাশের মানুষ সব সময় আপনাকে নজরে-নজরে রেখেছে…পাড়ায় পাড়ায়…দুই দলের দুটো করে ডোসিয়ার তৈরি হয়ে গেছে আপনাকে নিয়ে…কোথায় যাচ্ছেন…কার সঙ্গে মিশছেন…কোথায় চাকরি করেন… কত টাকা রোজগার করেন…কোন ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট…পোস্ট অফিসে কত টাকা আছে…নিজের বাড়ি না ভাড়া…কত ভাড়া দেন…কার কাছে সবজি কেনেন…কোন মাছ কেনেন জিওল না কাটাপোনা…বাঙাল ছিলেন না ঘটি…জবরদখল না নিজের জমি…মলে-মালটিপ্লেক্সে যান কিনা…পিওন কার চিঠি এনে দিল…কাকে চিঠি লিখছেন…কাগজের সম্পাদকদের নালিশ-চিঠি লিখছেন কিনা…কার বাড়ির দিকে তাকিয়ে বেশি দ্যাখেন… কোন দিকের জানলা খুলে রাখেন…কোন টয়লেট রোল পড়েন… ইত্যাদি…কত্তাবাবা বা কত্তামা নয়… চুনোটেঁটিয়ারা নজরে নজরে রেখেছেন…সবাইকে…কত্তাবাবা বা কত্তামা নজরে রাখেন চুনোটেঁটিয়াদের…
–তা যা বলেচেন…আমাদের জাঙালে অমন বাবা-মা সিস্টিম নেইকো…দুর্যোধনের বাল…আবনাগে পেয়ে…আমরাও মরা সহখুনির জায়গায় আরেগজন সহখুনি পেয়ে গেলুম…ওনার শোবার ঘর আর জিনিসপত্তর আবনার কাজে লাগবি…যদিও উনি আমাদের সঙ্গে জাঙালের বাইরে যেতিন না…মুর্গি খুন…খরগোশ খুন…এই কাজগুনোর ভার নিয়েছিলিন…রান্নাবান্না…সংসার…দেকাশোনা…ফ্লিট মারা…সদর দরোজা বন্দ করা…রোদলন্ঠন রোদে রাখা…
–সহখুনি…আপনারা সবাইই কি খুন করেছেন নাকি…আমি তো বেশ ডিজেক্টেড ফিল করছিলুম যে সমাজের একটা আউটকাস্ট ক্যাটগরিতে চলে যেতে হল…ওই যাকে বলে অমরতা…অমর হয়ে ওঠা…লোকের মুখে-মুখে নাম হয়ে ঘোরা…মিডিয়ায় হেডলাইন…সম্পাদকীয়…টিভি-আলোচনার রসেড়া…যাক…আপনারাও খুনি হয়ে উঠেছেন…
–বাইঞ্চোত…আপনে নামহীন হইলে সে সমস্যায় পড়তেন না…
–টু বি প্রিসাইজ…আপনাকে তো একটু আগে উনি বললেন যে আমরা ডাকাতি করে জীবন চালাই… আই মিন অতিবাহিত করি…তাই করতে গিয়ে সকলেই খুনি হয়ে উঠেছি…এই হয়ে ওঠা ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিতে হবে…তবে যাদের যাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছি তারা ব্লাডি ফাকিং মরে গেল কি না…তা চেক করার জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করিনি কখনও…অনুমান করা যায় যে বুকে বা মাথায় গুলি মারার পর ওয়াঁদের বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ…দেশের স্বাস্হ্য ব্যবস্হার প্রতি আমাদের আস্হা আছে…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–এর পর আর হয়ে ওঠা নেই…এটাই হয়ে ওঠার শেষ ধাপ…খুন করা…মানুষকে খুন করা…আমার হাতে মেয়েটা যখন মরে গেল তখন এই কথাই উপলব্ধি করলুম…যে হত্যাই হল মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অভিমুখ…যত হত্যা…তত উন্নতি…গণহত্যা হলে তো কথাই নেই…তবে আরেকটা কথাও মনে হয়েছিল… বুঝলেন…
–কী ? তাও বাইঞ্চোত উপলব্ধি ?
–নারী আর পুরুষের সম্পর্ক নষ্ট করে দ্যায় তাদের শরীরের ডিসগাসটিং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-রস-রসায়ন…
–তার ব্লাডি ফাকিং মানে…
–ওই যেমন ফ্যালোপিয়ান টিউব…তেমনই জরায়ু… ওভুলেশান… বীর্য… টেসটোসটেরন… প্রজেস্টেরন…হরমোন… টেসটিকাল্স… আড্রেনালিন… অ্যান্ড্রোজেন…এসট্রোজেন…ফলিকল… ইউরেথরা…ফেরোমোন…অরগ্যাজম…এটসেটরা এটসেটরা…কত মানুষ যে এগুলোর জন্য খুন হয়…হেরে যায়…ভেস্তে যায়…নিজেই নিজের জীবন নষ্ট করে ফ্যালে…তার ইয়ত্তা নেই…নারী-পুরুষে প্রেমের পথে প্রধান বাধা হলো এই সমস্ত রস-রসায়ন-অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ…প্রেমকে সাংস্কৃতিক ব্যাপার করে ফ্যালে…পদ্যমদ্যখাদ্যবাদ্য…
[ স্কাউন্ড্রেলদের সঙ্গে কথা চালিয়ে যাবার অপমানজনক দুর্গতি হল নিজেকেও স্কাউন্ড্রেলের স্তরে নামিয়ে নিয়ে যেতে হয়…জীবনে কতবার যে এভাবে নামতে হয়েছে…সেসব স্কাউন্ড্রেলরা নিজেদের কেউকেটা প্রমাণ করতে চাইলে আরও ঝামেলা…মানসিক অশান্তি…এই স্কাউন্ড্রেলটার মুণ্ডু গিরগিটির মতন ঘুরতে থাকে…কেলো লোকটা যেন চৌমাথায় কাকে-হাগা নিশ্চল মূর্তি…]
–কথাগুনো সত্যি…আমরা আমাদের প্রেমিকার সঙ্গে নারী-পুরুষ নোংরা মিশনারি প্রেম করি না…অন্য উপায় আবিষ্কার করে ফেলতে বাধ্য হয়েছি…পবিত্র প্রবৃত্তি…বিশুদ্ধ…লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট…গোইং স্টেডি… প্রেমিকারা আমাদের সোল মেট…মর্ম বিনিময় করি…
–কেন-কিঁ কেন-কিঁ কেন-কিঁ কবি লেখক নাট্যকার চিত্রকার অভিনেতা ভাস্কর স্হপতি এরা সবাই অসামাজিক গাধা…
–ওঃ কেলো…প্লিজ স্টপ রিপিটিং দি প্যারট’স সঙ…
–দেন হোয়াই দিস স্ট্রেঞ্জার ইজ নট টকিং টু মি…
–টু বি প্রিসাইজ…লেট আস ফার্স্ট গেট এ ফিল অফ ইচ আদার দেন ইউ মে ব্লাডি ফাকিং টক টু হিম… হি ইজ টেলিং আস অ্যাবাউট হিমসেল্ফ…উই আর টেলিং হিম অ্যাবাউট আওয়ারসেল্ভস…হোয়েন ইওর টার্ন কামস ইউ টক অ্যাবাউট ইওরসেল্ফ…
–ওকিপোকি…
–কালোর কন্ঠস্বর বেশ খসখসে…ভারিক্কি বাঁশড়া…
–ব্লাডি ফাকিং কী কথা হচ্ছিল যেন..
–হত্যা করা নিয়ে কথা হচ্ছিল…মানুষ খুন করাই মানব সভ্যতার উত্তরণ…আর তা-ই হল প্রথম আর শেষ রাজনীতি…
–ইউ আর রাইট…মাই মম সেড সো…
–তা যা বলেছেন…তাছাড়া নৈতিকতা আর কী…
–একজন মানুষ খেতে পাচ্ছে না…ফুটপাথে দুমড়ে পড়ে আছে…অথচ আশেপাশে সবাই খেয়েদেয়ে ঢেঁকুর তুলতে তুলতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে সূর্যোদয়ের দিকে মিছিল করে এগিয়ে যাচ্ছে…মুখে গান…হাতে পতাকা পতপতাচ্ছে…রাতের বেলা হলে হাতে চর্বিজ্বালা মশাল…যেতে যেতে তাদের ভুঁড়ি ক্রমশ ঢাউস হয়ে চলেছে…গাল ফুলে মোদো গোলাপি…দ্যাট ইজ দি আলটিমেট অ্যাচিভমেন্ট…
–তা যা কইসেন…বাইঞ্চোত…খাইতে না পাইলে দুমড়াইয়া পইড়া থাকা সালা উপায় নাই…
–ইউ আর রাইট…মাই মম সেড সো…
–আপনারা সিগারেট-টিগারেট লুটে-কিনে আনেন না ? আমার কাছে কয়েকটা বিড়ি আছে…অনুমতি দেন তো ফুঁকে নিই…একটু ফুঁকে নিলে পেটটা হালকা করতে পারব…আখরোটের মোচড় দিচ্ছে মাঝে-মাঝে…
–ফুঁকুন…কিন্তু দেশলাই কাটি নষ্ট করবিন না…আমাদের জাঙাল-সমবায়ে ওটি বেশ জরুরি… এখেনে কারোর কোনো কিচুর অনুমতি নিতি হয় না…প্রেমিকার ব্যাপার ছাড়া…আমরা কেউই চা-কফি সিগারেট-বিড়ি খাই না…শুদু গ্যাঁজা ফুঁকি…এবার ডাগাতি করতি বেরোলি আবনি আবনার দরকারি বিড়ি-সিগারেট-দেসলাই কিনি কিংবা তুলি নিবেন…বা যদি সঙ্গি না যান থালে আমরাই নিয়ে আসব…কোন ব্র্যাণ্ডের বিড়ি ফোঁকেন ? আমরা যে যার প্রেওজনের জিনিস ডাগাতির সময়ে ব্র্যাণ্ড মিলিয়ে তুলি নিই…নয়তো বেশ দূরে-দূরে গিয়ে কিনতি হয়…পাশের রাজ্যে…চাদ্দিকে আজগাল সিসিটিভির ঝুটঝামেলা…আমার মতন উনিও মদ খেতে ভালোবাসেন বলে মাজে-সাজে বেসবল ক্যাপ পরে মাঝরাতে মদের দোগানে গ্রিল ভেঙি ঢুঁ মারতি হয়…
–চলুন আস্তানার দিকে হাঁটা যাক…আপনাকে আপনার ব্লাডি ফাকিং ঘরটা দেখিয়ে দিই…ঘরটা তিনতলায়…সিঁড়িটা ঘোরানো…আগেকার কালের…সামলে-সুমলে ওঠানামা করতে হয়…রাতের বেলায় বেশ রিস্কি…রোদলন্ঠন আছে অবশ্য…কনেলন্ঠন…
–তার চেয়ে বরং একটু জিরিয়ে নেয়া যাক এখানে বসে…সেই তিন দিন থেকে হাঁটছি… আপনারাও তো গোর দেবার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করে ক্লান্ত হয়ে গেছেন বলে মনে হচ্ছে…দূরে ওই গুঁড়িটার ওপর বসে গ্যাঁজানো যাক… কী বলেন…ছায়ায়…
–হ্যাঁ…কি বলে গিয়ে…ভোঁসড়ির ছ্যানা আমি বেশ ক্লান্ত হয়ে গেছি…
–আপনি কি ছোটোবেলা থেকেই এরকম গৌরবর্ণ-খ্যাংরাটে…কন্ঠস্বরও বেশ মিহি ধরণের…জাপানিদের মতন দেখতে অনেকটা…চিন-জাপানে ছিলেন নাকি…
–কি বলে গিয়ে…আমি বাগবাজারের বনেদি পরিবারের…ভোঁসড়ির ছ্যানা কেন যে অমন তিরিক্ষি স্বর তা জানি না…প্রথম থেকেই রোগাটে ছিলাম না…বসে কথা বলি…কী বলেন…আসুন…সবাই এখানেই বসি…আপনি এদিকে মুখ করে বসুন তাহলে কথা কইতে সুবিধে হবে…তা…হ্যাঁ…বাবা ব্যাঙ্গালোরে চাকরি করতেন…আমি স্কুলে পড়ার সময় মোটাসোটা ছিলাম…কি বলে গিয়ে…স্কুল থেকেই ঘোড়দৌড়ে আকৃষ্ট ছিলাম…বাংগালোরে বাড়ির কাছেই হর্স ব্রিডারের ফার্ম ছিল…ভোঁসড়ির ছ্যানা… হ্যাণ্ডলারদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয়ের ফলে ঘোড়ায় চড়া শিখে ফেললাম…ঘোড়ার জাত…কোন ঘোড়া কেমন দৌড়োয়…সব শিখতে শিখতে জকি হবার শখ হল…জকি হবার জন্য ট্রেনিং নিতে হয়…বাংগালোরে যে ব্রিডিং সেন্টারে ট্রেনিং নিচ্ছিলাম তার মালিক সাফারিওয়ালা আমায় একদিন ঘোড়া হ্যাণ্ডলিং করতে দেখে ট্রেনারের কাজে লাগিয়ে দিলেন…ইলেকট্রিকাল ইনজিনিয়ারিং পড়া ভোঁসড়ির ছ্যানা লাটে উঠে গেল…ঘোড়ার ট্রেনারের পাশাপাশি জকির ট্রেনিংও নিতে লাগলাম…উনি আমাকে একটা ঘোড়া দিয়ে বললেন যে তাকে দুবছরের মধ্যে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে আগামী রেসে ভালো ফল করে…কি বলে গিয়ে…দুবছর পরে ভোঁসড়ির ছ্যানা ঘোড়াটা সত্যিই ভালো ফল করল…দৌড়ে প্রথম হল না…কিন্তু দ্বিতীয় হল…
— মেয়ে-ঘোড়া না ছেলে ঘোড়া ?
–মেয়ে-ঘোড়া…মেয়ে-ঘোড়া…ছেলে-ঘোড়ারা সামলে-সুমলে দোলাতে-দোলাতে তেমন ছুটতে পারে না…ঘোড়াদের তো আর ল্যাঙোট পরানো যায় না…তা ঘোড়াকে জেতানোর বিশেষ একটা ট্রিক আবিষ্কার করে ফেলেছিলাম আমি…পরের বছর কিন্তু ঘোড়াটা সবকটা রেস জিতে সাফারিওয়ালাকে এত খ্যাতি আর টাকাকড়ি এনে দিলে যে উনি ভোঁসড়ির ছ্যানা আমাকে ওনার চিফ ট্রেনার করে নিলেন…বেশ চলছিল…হুসেইনি কাওয়াসজিরা ওদের স্টাডফার্মে আমাকে ট্রেনার হিসাবে নেবার জন্য চারগুণ মাইনে দিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে…সে একেবারে টানাহেঁচড়া…আমি রাজি হইনি…আমার ঘোড়ার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা কেন করব… বলুন… কাওয়াসজিরা আমার কয়েকজন হ্যাণ্ডলারকে হাত করে একদিন আমার রেসের ব্লু আইড গার্ল নামের ঘোড়াকে লুকিয়ে বোলডেনোন আর স্ট্যানোজোলল অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ঠুঁসে দিলে…কলকাতায় রেস হয়েছিল…ঘোড়দৌড়ে ভোঁসড়ির ছ্যানা কেমিকাল দুটো নিষিদ্ধ…কি বলে গিয়ে অ্যাথালিটদের যেমন স্টেরয়েড অচল তেমন ঘোড়ার দৌড়েও নানা স্টেরয়েড নিষিদ্ধ…
–স্টেরয়েড ?
–অ্যাথালিটদের মতনই…দৌড়ের আগে ঘোড়াদের রক্ত কালেক্ট করে পরীক্ষা করা হয় যে তাকে নিষিদ্ধ স্টেরয়েড দেয়া হয়েছে কি না…কিন্তু শালারা আমাকে ফাঁসাবার জন্য ঘোড়ার পেচ্ছাপও চেক করেছিল…পেচ্ছাপে স্টেরয়েড পাবার পর ভোঁসড়ির ছ্যানা চারজনের অনুসন্ধান কমিটি গড়া হয়েছিল…কিন্তু ল্যাবরেটরির প্যাথলজিস্ট সান্তনমের সঙ্গে আমার খাতির ছিল…সে আমাকে বললে যে ঘোড়ার পেচ্ছাপে আরও এক্সট্রানিয়াস এলিমেন্ট পাওয়া গেছে…আমি বুঝতে পারলাম কী এলিমেন্ট…কেননা সেই রসায়নেই জিতে যেত আমার ঘোড়া…নিষিদ্ধ স্টেরয়েড ব্যবহার করার জন্য আমি প্রথমে সাসপেন্ড আর তার কয়েকদিন পর অ্যারেস্ট হলাম…জানতাম…ভোঁসড়ির ছ্যানা যে এলিমেন্ট পাওয়া গেছে তা জানাজানি হলে অনেক বছরের জেল খাটতে হবে…আদালতে যেদিন নিয়ে যাচ্ছিল সেদিন আমাদের সঙ্গে পুলিশের গাড়িতে কেলো… ইনি… ইনি… ইনি… ইনি…আর যিনি মারা গেছেন তিনি ছিলেন…যিনি মারা গেছেন মানে আমাদের যে সঙ্গী ভোঁসড়ির ছ্যানা আত্মহত্যা করে নিলেন…কেলো মারামারি আরম্ভ করতেই ওনারাও মারামারি আরম্ভ করে দিলেন… কন্সটেবলগুলো মার খেয়ে অন্যমনস্ক আর আধথেঁতলা হতেই সবায়ের সঙ্গে আমিও পালালাম…ওনারা না থাকলে পালাতে পারতাম না…আমাকে দেখছেন তো ভোঁসড়ির ছ্যানা একেবারে প্যাংলা টিঙটিঙে…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–এলিমেন্ট বলছিলেন…কী এলিমেন্ট…ভেটেরিনারি ডাক্তার নই…তবু কিছুটা আইডিয়া করতে পারব…
–কি বলে গিয়ে…ভোঁসড়ির ছ্যানা সে আরেকদিন শুনবেন না হয়…
–নিউকামারবাবু…উনার কথাগুলা আমিই বলতেসি…বুইঝলেন কিনা…না শুইনা আপনের মন বাইঞ্চোত খচখচ কইরবে…তার চাইতা এখনই শুইনা নেয়া ভালো…উনি রেসের আগের দিন বাছাই ঘোড়ার সঙ্গে বাইঞ্চোত একাত্ম হইতেন…
–হোয়াট ডু ইউ মিন বাই একাত্ম…দ্যাট অলসো উইথ এ ফিলি…মানুষের আত্মা হয় বলে শুনেছি… যাদের প্ল্যানচেট করে ডেকে আনা যায়…ঘোড়ার আত্মার কথা তো শুনিনি মশায়…অশ্বমেধ যজ্ঞের জন্য যে ঘোড়া ছাড়া হতো তাদেরও আত্মা হতো বলে পড়িনি…মানে গল্প-টল্পতে পড়িনি…অনেক বড়ো পেনিসের শাদা ধবধবে ঘোড়া বাছাই হতো তা শুনেছি বটে…
–ব্লাডি ফাকিং…শাদা ঘোড়ার শাদা পেনিস হয় না…পুরাণলেখকদের এত ক্ষমতা ছিল…শাদা করে দিলেই পারতেন…
–ছোটোদের পুরাণ বইতে কিন্তু যে ছবি আঁকা ছিল তাতে পেনিস শাদা রঙের ছিল…মনে আছে…সেই কবে পড়েছিলুম…
–মানুষ যতই ফর্সা হোউক পেনিস বাইঞ্চোত কালো হয়…যতই আপনে ফেয়ার অ্যাণ্ড লাভলি লাগান…
–উনি আকস্মিক ভাবে আবিষ্কার করেছিলেন এলিমেন্ট প্রয়োগ করার ব্যাপারটা…এই ব্যাপারে উনি পথ প্রদর্শক…ওয়াঁর কাছ থেকেই আমরা শিখলাম…এলিমেন্ট প্রয়োগ করার কৌশল…আপনিও শিখে ফেলবেন…একবার শিখে ফেললে আর অভ্যাস ছাড়তে পারবেন না…জঙ্গল ছেড়ে বেরোতে ইচ্ছে করবে না…বাইরে বেরিয়ে পৃথিবীকে মনে হবে আনসিভিলাইজড…বর্বর…প্রাগৈতিহাসিক…অশিক্ষিত…
–এলিমেন্টকে আপনি উপাদানও বলতে পারেন…রেসে ব্লাডি ফাকিং ঘোড়াদের জিতিয়ে আনার ট্রিক…
–কি বলে গিয়ে…উপাদান বলতে ভোঁসড়ির ছ্যানা যা বোঝায় আরকি…ও আপনি আমাদের সঙ্গে থাকতে-থাকতে জেনে যাবেন…উপাদান প্রয়োগ করতে শিখে যাবেন…
–অন্য কোনো রসায়ন ?
–নিউগামার স্যার…আবনি এত ইনগুইজিটিভ কেন…এত তাড়াতাড়ি…এই তো সবি এস্চেন…এখুনও তো আমাদের আস্তানায় ঢুকি অতিথি তগমাও পাননি…আবনাকে বিশ্বাস করব তবি তো…
–বিশ্বাস ব্যাপারটাকে কেউ আর বিশ্বাস করে না…ভোটাররাও করে না…পুরুতদের কথা না তোলাই ভাল…
–ভোঁসড়ির ছ্যানা রেসের আগের দিন সন্ধ্যায়…অন্য হ্যাণ্ডলারদের সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দিতাম… তারপর যে ঘোড়া রেসে যাবে সেই ঘোড়াকে ওই ট্রিকটায় বশীভূত করে নিতাম…
–কী করতেন ?
–বশীভূত করে ফেলতাম…হিপনোটাইজ…সন্মোহন…
–ঘোটকীকে বশীভূত ? ঘোড়ার তো আঙুলও হয় না যে বেণিমাধব শীলের পাঁজি দেখে বশীকরণের আঙটি কিনে পরাবেন…অ্যাবসার্ড…
–চোখ বুইজা বাইঞ্চোত কল্পনাজগতের পিঠে দুইহাত রাইখা কিছুক্ষণ শান্তিতে কাটানোর চাইতা অ্যানজেলিক স্হিতি আর কী-ই বা হইতে পারে…বাইঞ্চোত ইউ ফিল ইউ আর গডস বায়োলজিকাল ফাদার…
–মারহাবা…ভোঁসড়ির ছ্যানা…ঘোড়া আমার..ফিল করছেন উনি…
–মশায় আমি তো গডই জানি না…তার বাপকে কি করে জানব…কিন্তু ঘোটকীর মসৃণ পিঠে হাত বোলাবার অভিজ্ঞতা ফিল করতে পারি…স্মুথ…সিলকি…লিসাম…ডিলিরিয়াস…
–আমরা বাইঞ্চোত যে যার প্রেমিকাগো আগাপাশ হাত বুলাই…তার জন্য চরিত্রের ভিতরে নাইমা পড়তে হয়…টুপ…ঝুপুস…আলোকিত হয়্যা উঠবেন আপনে…
–কেলোর একটা গড আছে…তার নাম ভোদুন…উনি তো অ্যানিমিস্ট…ওনাদের ট্রাইবটা ইসলাম বা খ্রিশ্চিয়ানিটিতে কনভার্ট হয়নি…ওয়াঁর গডের কাছে হ্যাঁ বললে যা বোঝায়…না বলতেও তা-ই বোঝায়…
–এখানেও সেই গডকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নাকি উনি…আপনারা সবাই অ্যানিমিস্ট হয়ে গেছেন ?
–না…আমরা ফাকড বাই গড…
–ভগবানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার…
–আপনার ভয়েসটা বেশ স্টিরিওফোনিক…
–হ্যাঁ…আমি চেঁচিয়ে ভগবানের অন্ধকার কালা কানও খুলে দিতে পারি…কেউ এদিক-ওদিক চলে গেলে আমিই বাইসন ষাঁড়ের হাম্বা পাড়ি…মুশকিল হল হাম্বা শুনে অনেক সময়ে ঋতুমতি মাদি বাইসন চলে আসে…আমরা পারভার্ট হতে পারি…লম্পট নই…ষাঁড়ের মতন একপন্হী…ওয়ান অ্যাট এ টাইম…ফলো টু দি এন্ড অব দি আর্থ টু লাভ ইওর প্রেমিকা…শাশ্বত প্রেম…নিঃস্বার্থ ভালোবাসা…
—পার্ভারসান ইজ এ ফর্ম অফ আর্ট…নেপোপ্রেমী চিৎফাঁদ টয়লেট কোম্পানির টিয়াপাখিটা ঘুরিয়ে সে কথাই বলে বলে টিকে গেল…অথচ অন্যটাকে জংলি বেরাল-শেয়াল-ভাম খেয়ে ফেললে…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–অমন অ্যানোরেকসিক আঁকালো বাঁশ চেহারা নিয়েও এখানে এসে নতুন প্রেমিকা যোগাড় করে নিতে পারলেন ?
–হ্যাঁ…পারব না কেন…প্রেম ছাড়া তো ভোঁসড়ির ছ্যানা গুহার দেয়ালে আঁকাই সম্ভব ছিল না…আমি আমার প্রেমিকার সঙ্গে রোমান্টিক রিলেশানশিপে আছি…আপনাকেও পাইয়ে দেব…সুইট অ্যান্ড সালট্রি… কচিকচি…ভেজা ভেজা…ধারা চারশো আটানব্বুই এ-র ভয়ভাবনা নেই…
–আপনারা বলছেন আপনারা ডাকাত আর খুনি…একই সঙ্গে প্রেমেরও খোল-করতাল বাজাচ্ছেন… পারভারসানকে বলছেন আর্ট…আধুনিক সমাজে থাকলেই তো হতো…যেমন হাফ-অপরাধীরা আর মহাঅপরাধীরা থাকেন…সামাজিক লোকজন তো এই ধরণেরই কথাবার্তা সভা-সমাবেশে মাঠে-ময়দানে র্যালির্যালায় বলেন…
–টু বি প্রিসাইজ…আমরা ব্লাডি ফাকিং কমিটেড সোলস…নিদার গুড নর ইভিল…আমরা দায়বদ্ধ… আপোষহীন…আমরা উইকেড…ইন লাভ অ্যান্ড লুট…
[ কতগুলো যুবতীকে কিডন্যাপ করে এনেছে এরা…কোথায় লুকিয়ে রেখেছে…ক্রীতদাসী হিসেবে কোথাও বন্ধ করে রেখেছে…সেসব তো কিছুই বলতে চাইছে না…কেবল প্রেমিকা-প্রেমিকা ভেঁজে চলেছে…একা না এসে পুরো টিম নিয়ে আসা উচিত ছিল…]
–নাঃ…কিছুই মাথায় ঢুকছে না…আপনারা বেশ শিক্ষিত সংস্কৃতিমান মজাজীবি বলেই তো মনে হচ্ছে…আমি নিছক ফিকে ছিঁচকে…এই জঙ্গলে কি করেই বা সাসটেন করেন…জ্ঞানের জন্য তো শহরে থাকা জরুরি…নয়কি…বই…সংবাদপত্র…টিভি…স্মার্টফোন…ইনটারনেট…চায়ের টেবিল…কফি… কলম-ডায়েরি… মদের বোতল-টাকনা…পরচর্চা…অক্কাদেমি…সম্বর্ধনা…বক্তৃতা…বিতর্ক…বিদেশি ফিল্ম…পিঠচুলকানি…এসব ছাড়া জ্ঞানের অ্যালঝিমার হবার চান্স বেশি…
–ওই যে তিনতলা পুরোনো বাড়িটা দেখছেন…ভেতরে দেয়ালগুলোয় বার্মিজ টিক উডের প্যানেলিং…যে বাড়িতে আমরা আজ প্রায় আট বছর আছি…ওটা কখনও কোনো ব্রিটিশ চা বাগান বা চটকল মালিকের ব্লাডি ফাকিং আস্তানা ছিল…সিপিয়া হয়ে যাওয়া মহিলাদের ফোটো আছে…মহিলারা শুয়ে…হেলান দিয়ে..নানা খেলা খেলছেন… পেরেকে-পেরেকে…ওপরের ঘরে…যে ঘরটা…যিনি মারা গেলেন তাঁর ছিল…আর এখন আপনাকে অ্যালট করা হচ্ছে…ওয়াঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইপত্র আছে…কয়েকজন প্রিন্সলি স্টেটের রাজারাজড়ার জাঁকজমকদার ফোটো আছে…টু বি প্রিসাইজ…বহু পুরানো বইপত্র…ঘাঁটলে হাঁচি পায় এমন বই…হেঁচে নাক দিয়ে জল পড়ে এমন বই…তাঁমাদি শতকের বইও আছে…হাতে লেখা বই… কাঠখোদাই করা বই…নেগলেক্ট…পোকা… আর সময়ের ধুলোয় অবশ্য অনেক বই নষ্ট হয়ে গেছে…যখন আমরা জঙ্গলে ঢুকি তার প্রায় মাস চারেক পরে ঘোরাঘুরি করতে-করতে ব্লাডি ফাকিং বাড়িটা আবিষ্কার করি… ওই যে গাছগুলো দেখছেন…বাড়িটাকে ঘিরে রয়েছে…লক্ষ্য করে দেখুন…ওগুলো এই জঙ্গলের গাছ থেকে আলাদা…ডুয়ার্সে এলম পপলার সিলভার-বার্চ ওক উইলো অ্যালডার হয় না…ওই গাছটা দেখছেন…লাল রঙের ফুল ওটা রোয়ানে…তার থেকে দূরে বাঁদিকে ওই গাছটা হথর্ন ওর ফলন থই-থই ফলগুলো পাকা লিচু বলে মনে হতে পারে…তা থেকে আরও পেছনে কয়েকটা গাছ দেখা যাচ্ছে…ডালে ডালে লাল রঙের ফুল…ওগুলো পলাশ নয়…রেড মেপল…ওই মানে ইয়ে…ব্লাডি ফাকিং ইংরেজরা পপলার গাছে মিসলটো পরগাছা লাগায়…সেই মিসলটো রয়েছে দেখুন পপলার গাছে…উনি অনেক ফুলের গাছও পুঁতেছিলেন…অনাদরে সেগুলোর বীজ পড়ে-পড়ে শীতের পর ফুটতে শুরু করে…ওয়াইল্ড রানঅ্যাওয়ে ফ্লাওয়ার্স…
–ইংরাজরা আসবার আগে থেকেই বাঙালিরা পরগাছাপ্রেমী…নেপোপ্রেমী…মোসায়েবপ্রেমী…
–গাছপালা ফুলফলের বিশেষজ্ঞ ছিলেন নাকি স্যার…আপনার গলার স্বরও দালের মেহদির মতন রোমান্টিক…গানও গান বা গাইতেন নিশ্চয়ই… এত ভালো গলাকে অপচয় করে বুড়িয়ে দেবার মানে হয় না… বাকচালাক নেতা নেপোলিয়ানের কন্ঠস্বরও নাকি গমগমে ছিল…
–হ্যাঁ…বুইঝলেন কিনা…ওয়ান্স ইন এ হোয়াইল উনি বাইঞ্চোত ভাঙা গলায় গান গাইয়া শোনান আমাদেরকে…যিনি মারা গ্যালেন তিনি গিটার বাজাইয়া ভাটিয়ালি গান গাইতেন…দালের মেহদি কি স্কচ ভাষার গান করেন…তুরুত্তু তুরু তুরু গানটা স্কচ…আইজকাল অবশ্য বাঙালি গায়ক-গায়িকারাও বাংলা ফিল্মে স্কচ গান প্লেব্যাক কইরা শোনান…চিৎফাঁদ বানাইল তোরে…তুরুত্তু তুরু তুরু…কেন-কিঁ তুরু তুরু…কেন-কিঁ তুরু তুরু…
–ভালোই হল…আমিও গিটার বাজাতুম…তবে বাংলায় গাইতে পারি না…যে ঘরটা অ্যালট করলেন সেখানেই আছে গিটারটা তো…নাকি…
–হ্যাঁ…যিনি মরি গেলেন…তাঁর ঘরিই রাকা আচে…আবনি মনের সুখে ড়িং ড়াং টিং টাং কত্তে পারবেন…আমরা যখুন আমাদের প্রেমিকার সঙ্গে প্রেম করব…তখুন বাজাবেন…বেশ প্রেম-প্রেম আবহাওয়া গড়ে উটবে… টেসটোসটেরনে টইটুম্বুর…চকাচক…জাঙাল জবজবে…
–আগে চলুন…কি বলে গিয়ে…ভোঁসড়ির ছ্যানা ফুলের গাছগুলো দেখিয়ে দিই…আপনাকে…ফুলের বাগান নয়…আমরা ওদের জীবনে পদক্ষেপ করিনি…জঙ্গলে ওরাও জংলি হয়েই থাকুক…আমাদের মতন…কিন্তু সবাই মিলে খেয়াল রাখি যাতে পোকা-মাকড় না লাগে…মাঝেসাঝে ফুলের মালা গড়ে প্রেমিকাদের পরাই…পেছন দিকে ফলের গাছও আছে…রান্নাবান্না না হলে যা খেয়ে আমরা টিকে থাকি…মানে যখন চুরি-ডাকাতি করতে যেতে ভালো লাগে না…ভোঁসড়ির ছ্যানা আরও অনেক ব্যবস্হা করেছিলেন সায়েব…
–টু বি প্রিসাইজ…সবুজ আপেল…লাল নাসপাতি…ফলসাগাছ বা ব্লুবেরি…স্ট্রবেরির ঝোপ…টেঁপারি ঝোপের মতন লাল আর সোনালি রাস্পবেরি…কালো আঙুরের মতন দেখতে প্রুণ…ব্লাডি ফাকিং অনেক ফলের গাছ আছে…জংলি টোমাটো আর ঢেঁড়স ঝোপও আছে…
–এরকম ঘন জঙ্গলে কাঠের প্যানেল দেয়া বাড়ি বাগান ফুল-ফল করলেন কেন তা জানতে পেরেছেন…
–না…বুইঝলেন কিনা…বাইঞ্চোত কোনোরকম লিখাজোখা সূত্র নাই….বাড়িটা বাইরে থিকা চুণসুরকির…ভিতরে বার্মিজ টিক উডের প্যানেল…চুসকিমার ধনী আছিলেন নিশ্চয়ই…বর্মা থিকা সেগুনকাঠ আনাইয়া ডুয়ার্সের জঙ্গলে রেস্ট হাউস তৈরি কইরাছিলেন মানেই অঢেল ফরফরানো ট্যাকা…নীলকর-টিলকর বিজনেস আছিল বোধ হয়…দেয়ালে একটা কম্পাস আছে..কোন দিকে ইংল্যাণ্ড… ভুটান… বাংলাদেশ… বিহার…হদিশ পাইবেন…
–লোগটা বইটইতে নিজের নাম… লিকি যাননি…আমরা অবশ্যি সব বই ঘাঁটিনি…এতো ধুলো…আচে হয়তো একধটায়…যিনি মরি গেলেন তিনি ঘাঁটতেন…আর হাঁচতেন…ক্লাসিক বই হলি মানুষেরা হাঁচে…যদি না হাঁচেন থালে ক্লাসিক নয়…হাঁচির সঙ্গে নাক থেকি জল পড়লি বুজবেন তা কালোত্তীর্ণ…ইংরেজরা যা পেতো সেখানিই নিজের নাম খোদাই করে দিত…মরি যাবার পরি কবরে…অবৈধ বাচ্চাদের পদবিতে…কিনেকেটে পাওয়া চাগর-চাগরানির নামি…
–হ্যাঁ…তা যা বলেছেন…অনেকটা কুকুরদের পেচ্ছাপ করে এলাকা দেগে দেয়ার মতন…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
–বা…কি বলে গিয়ে…ভোঁসড়ির ছ্যানা পাড়ার দেয়াল দখলের মতন…
–এগুলো কী মশায়…যেন মাটিতে চাপড়া-কবর দিয়ে জায়গাটাকে দেগে রাখা হয়েছে…একটা একটু উঁচু…ফুল ছড়ানো…
–যেটা উঁচু…ভোঁসড়ির ছ্যানা সেটা আমাদের প্রথম প্রেমিকার সমাধি…তখন আমরা একজন প্রেমিকাকেই সবাই মিলে শেয়ার করতাম…উনি মারা গেলেন…তার পর থেকে সকলে আলাদা প্রেমিকার সঙ্গে প্রেম করি…
–ওহ..মনটা ভার হয়ে গেল শুনে…আর এই দুটো…
–উই দুটা…বুইঝলেন কিনা…বাইঞ্চোত সত্যই কবর…একটা সম্ভবত পোচার আর অন্যজন তার সঙ্গী…বোধহয় ফরেস্ট গার্ড…ইদিকে আইসা পইড়াসিল…তাদিগে আমরা গুলি কইরা মাইরা ফেলতে বাধ্য হই…তারা তো আপনের-আমার মতো সমাজ-খ্যাদানে আছিল না…তাদিগে মাইরা ফেলার পর বাইঞ্চোত গোর দেয়া হইসিল…ত্যাখন অভিজ্ঞতা আছিল না বইলা বেশি গভীরে কবর দেয়া হয় নাই…পরের দিন সকালে উইঠা দেখি বাইঞ্চোত জংলি জানোয়াররা মাটি খুঁইড়া লাশ বের কইরা মাংস খাইসে…হাড়গোড়গুলা আবার নতুন কইরা গোর দিয়া অনেকটা মাটি চাপা দিতে হইসিল…তাদিগের সঙ্গে যে মোবাইল আছিল তা পাথর দিয়া গুঁড়াইয়া ফেলসি…রেঞ্জারের ডায়েরিটারে বাইঞ্চোত পুড়াইয়া দেয়া হইসিল…সেই ঘটনার পর থিকা আমরা রাতে একজন জাইগা পাহারা দেই…দিনের বেলাতেও একজনের হাতে বন্দুক থাকে…
–বন্দুক তাক করতেই ভোঁসড়ির ছ্যানা ঝুঁঝকো দুটো পালাতে আরম্ভ করল…তখনই আমাদের সন্দেহ হল যে ব্যাটারা নিশ্চয়ই টিকটিকি…কিছুটা ধাওয়া করে দুটোকেই পায়ে গুলি করে কাবু করে দিই…মুখ খুলতে ওদের নাম-সাকিন বেরিয়ে পড়ল…একবার এখানে এসে পড়ার পর…আমাদের দেখে ফেলার পর…আর তো ফেরত যেতে দেয়া যায় না…ফেরত গিয়ে ভোঁসড়ির ছ্যানা আমাদের ডেরার কথা ফাঁস করে দিত আর আমরা…আবার জেলে ঢুকতুম…ধরে এনে সেদিনকেই নিকেশ করে দিতে হয়েছিল…কেননা এত কান্নাকাটি করছিল আর পায়ে পড়ছিল যে শেষে ভোঁসড়ির ছ্যানা আমাদের মধ্যে কারোর মনে দয়ামায়া উঁকি দিলেই হয়েছিল আরকি…যিনি মারা গেলেন তাঁর বড্ডো দয়ার শরীর ছিল…বলছিলেন যে পায়ে গেঁদাপাতা থেঁতো মাখিয়ে পেছনের জেলগারদে বন্ধ করে রেখে দেয়া হোক…সারাজীবন জেলেই থাকুক যাবজ্জীবন কয়েদির মতন…উঁকিঝুকি মেরে আমরা অ্যামিউজমেন্টের মজা নেবো…খাবার জিনিস ছুঁড়ে-ছুঁড়ে দেবো…
–রেঞ্জারটা বাঙালি ?
–ব্যানার্জি আছিল …গায়ে পৈতাও আছিল বাইঞ্চোত…পৈতাসুদ্ধু ওরে গোর দিয়াসিলাম আমরা…বেচারা ব্রাহ্মণবাচ্চা…জন্তুজানোয়ারগুলা মাংস খুবলাইয়া খাইবার পর পৈতাটাও খাইয়া থাকবে…পুলিস ওই মোটা ডায়েরিটারে পাইলে বাইঞ্চোত কয়েকজন ঘোড়েলঘাগুর নামধাম জাইনতে পারত…
–বন্দুক-পিস্তল কোথা থেকে জোগাড় করলেন…বেশ করিৎকর্মা লোক আপনারা…
–সরকার জেল-হাজতে পাঠাইয়া বাইঞ্চোত আমাগো জীবনে অনেক সুযোগ-সুবিধা কইরা দিসে…কত মানুষের সঙ্গে মেলামেশা আলাপ-পরিচয় কইরতে পারসি…এই পাশের রাজ্যের ল্যাঞ্জাধারীদের আর উই পাশের রাষ্ট্রের কেল্লাছাগুদের সঙ্গেও যোগসাজস কইরা দিসে…তাদিগের ঘাঁটিতে আগাম টাকা আর তালিকা দিয়া আসি…পরে কেউ গিয়া নিয়া আসি…তারা ভাবে আমরা লেখাপড়া-শিখা মানুষ…নিশ্চয়ই বিপ্লব করি…ওরা তো জানে না যে আকাট না হইলে আইজকার দিনে নেতাগিরিতে মাথা গলানো মুসকিল…হিঁঃ হিঁঃ…
–ওপাশের রাষ্ট্রের ছাগুদের কাছ থেকে পেন ড্রাইভও আনি…গানের…ফিল্মের…কাঁচাছাগুরা শারুখ খান সালমান খান আমির খান ফারহা খান ইরফান খান ইমরান খান সাজিদ খান সইফ আলি খানদের পছন্দ করেন…পাকাছাগুরা সেই ইউসুফ খানেই আটকে গেছেন…অনেক সময়ে ফিল্মের পেন ড্রাইভ এনে দেখি ভুল করে ওয়াঁরা আফগানি ছাগু…পাকিস্তানি ছাগু…আরব ছাগুর চামসানি বোমাকেত্তন দিয়ে ফেলেছেন…মুখে কালো মোজা পরে আলজিভ নেড়ে ভুজুংভড়কি…
[ স্কাউন্ড্রেলগুলো ভেতরের সব কথা বলে দিচ্ছে…হয়তো আমাকে খুন করার ষড় কষছে…যা জানতে চাইছি সবই তো বলে দিচ্ছে…শুধু প্রেমিকাদের আড়াল করে রেখেছে…হয়তো ভাবছে আমি কোনো তরুণীকে চিনে ফেলতে পারি…]
–ওহো…এই ফুলগুলোর কথা বলছিলেন…কয়েকটা ফুল তো কলকাতার বাজারে পাওয়া যায়…
–ড্যাফোডিলস ফুল দেখেছেন ? ছোটোবেলায় ওয়র্ডসওয়র্থের কবিতা পড়ার সময় যে ফুল কল্পনা করে নিতে হতো…এই যে দেখুন…এইটেই ব্লাডি ফাকিং ড্যাফোডিল্স…ডুয়ার্সের জঙ্গলে এসে কান্তি নষ্ট হয়ে গেছে… বাঙালিত্ব পেয়ে বসেছে ফুলটাকে…ছিৎরে আদেখলা…
–ওঃ…আমি ভাবছিলুম লিলিফুল…বেঁজিও রয়েছে…যাক সাপখোপের ভয় নেই…
–আমরাই তো শঙ্খ লাগি…লাগাই…সাপের আবার কি দরকার…
–দেখুন…শাদা সামার স্নোফ্লেক…গোলাপি ফক্সগ্লোভ…নীল স্প্রিং জেনেশিয়ান…বেগুনি জেকবস ল্যাডার…হলুদ প্রিমরোজ…গোলাপি ডরসেথ হিথ…শালুকের মতন উড অ্যানামোন…হলুদ মাঙ্কি ফ্লাওয়ার…
–স্যার…আপনি ইংল্যাণ্ডের গাছপালা ফুলফল সম্পর্কে এত কথা জানেন…ইংল্যাণ্ডে ছিলেন নাকি… আসলে জানতে ইচ্ছা হল…যদিও অতীতের কথা তুলতে নিষেধ করেছেন…
–হ্যাঁ…ইংল্যাণ্ডে ছিলাম…টু বি প্রিসাইজ স্কটল্যাণ্ডে…উচ্চমাধ্যমিক করে গ্ল্যাসগো গিয়ে কেমিকাল ইনজিনিয়ারিং নিয়ে পড়েছিলাম…চাকরিও পেয়েছিলাম ভালো…অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয় এই কাঠের বাড়ি যিনি তৈরি করেছিলেন তিনি স্কটল্যাণ্ডের লোক…আমরা এসে একটা বিশেষ ব্র্যাণ্ডের ব্লাডি ফাকিং সিংগল মল্টের বোতল পেয়েছি…বাজারে বিক্রি করলে অত পুরোনো মল্টের দাম অন্তত লাখখানেক কি লাখদুয়েক টাকা হতো…বইয়ের সংগ্রহে স্কটল্যান্ড সম্পর্কে আর স্কটদের সম্পর্কে লেখা বইয়ের সংখ্যাই বেশি…হাঁচির ভয়ে একদুটোই দেখেছিলাম…রবার্ট বার্নসের স্কটিশ ডায়ালেক্ট পোয়েমস…জর্জ ম্যাকডোনাল্ডের এ ফেয়ারি রোমান্স অফ মেন অ্যন্ড উওমেন আর দি প্রিন্সেস অ্যান্ড দি গবলিন…এই সব বইয়ের মলাট দেখেছি…স্কটল্যাণ্ডে একটা সিংগল মল্ট ডিসটিলারিতে বিশেষজ্ঞের কাজ করতাম…মদ খাবার অভ্যাস হয়ে গেল…ডিসটিলারির সেলারে রাখা তিনশ বছরের একটা বোতল দেখে লোভ সামলাতে পারিনি… সেলারে দাঁড়িয়েই ঢকঢকিয়ে মেরে দিয়েছিলাম…মিস্টার ম্যাকফেল্টেন…মানে ডিসটিলারির মালিক…এমন বাপ-মা তুলে অপমান করেছিল যে রাগের মাথায় ওই বোতলের পোঁদ ভেঙেই খুন করে দিলাম…খচাখচ…খচাখচ…পেটের নাড়িভুঁড়ি বাইরে…রক্তারক্তি…তারপর সেদিনকেই ব্যাক টু ইনডিয়া…ইনডিয়ায় পালিয়ে আসার পর ভেবেছিলাম যে সব চাপা পড়ে গেল…তা হয়নি…ব্লাডি ফাকিং ইংল্যান্ডের পুলিশ ভারত সরকারকে লেটার রোগেটারি লিখে আমার অনুসন্ধানে লাগিয়ে দিলে…ধরা পড়ে গেলাম… অবধারিত এক্সট্রাডিশান থেকে বাঁচার জন্য কেলোর সাহায্য নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আমিও পালালাম…সবাই মিলে ভাগলবা…
[ আবার স্কাউন্ড্রেলসুলভ কথা চালাচালি করি…কতক্ষণ নিজেকে স্কাউন্ড্রেলের অভিনয় করতে হবে কে জানে…কি করে এদের জালে তুলব…মহিলাদের উদ্ধার করব…মহিলারা যেতে চাইবেন কি না তাও অজানা…একজন বিদেশিনীও আছেন বোধহয়…তাঁরাও হয়ত এদের দলের সদস্য…অন্য প্রসঙ্গে যাই…যৌনতার প্রসঙ্গে… ]
–আপনি ওদেশে বিদেশিনীদের সঙ্গে শুয়েছেন ? নাকি ওদেশে গিয়েও ভার্জিন রয়ে গেলেন ? ওখানে তো শুনেছি মেয়েদের সঙ্গে শোবার দেদার সুযোগ পাওয়া যায়…না…মানে আপনার হাইটের জন্য প্রশ্নটা মনে এলো…
–না না…ব্লাডি ফাকিং ফ্রি ফর অল নয়…বেশ্যালয়ে পাওয়া যায়…
–যাননি একদিনও ?
–বাঃ অগো যাইবে না আবার…বাইঞ্চোত মেম পাইলে কে সাড়ে…দুধ-আলতা দুটা ঢাউস-ঢাউস বুক…
–যেতাম…যাবার জন্য আমার ব্লাডি ফাকিং ডিসটিলারি থেকে বেশ দূরে যেতে হতো…ট্রেনে করে এডিনবরা কিংবা গ্ল্যাসগো…বেশিরভাগ বেশ্যাই ছিল পূর্ব ইউরোপের…ভাঙা কমিউনিস্ট দেশগুলোর ব্লাডি ফাকিং মেয়ে…সকলেই আমার চেয়ে ঢ্যাঙা আর চওড়া…আমি ফাকিং-সাকিং করতাম না…জাস্ট বুকের ওপর শুয়ে ঢাউস দুটো গোলাপি মাইতে মাথা গুঁজে থাকতাম…বুকে মাথা গুঁজেই বুঝতে পারতাম কেন কম্যুনিস্ট দেশগুলো টিকলনা…আপনি কারোর ভালো করতে চেয়েছেন কি টিকবেন না…ব্লাডি ফাকিং কী হল শেষ পর্যন্ত ? মেয়েগুলোকে বেশ্যাগিরি করতে হচ্ছে…নিজেদের দেশগাঁ থেকে পালিয়ে…যে যুবতীর ঘরে যেতাম তাকে আগে থেকেই বলে দিতাম যে আমি কিসিংও করব না…ফাকিংও করব না…জাস্ট বুকের ওপর শুয়ে থাকব…দেহের গরম-গরম আমেজ নেবো…ডুবে থাকব হারিয়ে যাওয়া সাম্যবাদের স্বপ্নে…ঘুমিয়ে পড়লে জাগিয়ে দিও…আর পুরো সময়ের বিল বানিয়ে পেমেন্ট নিয়ে নিও…মেয়েগুলো কিন্তু সৎ…একবার তো ট্রেন জার্নি করে ক্লান্তিতে বুকের ওপর শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম… ঘুম ভাঙতে মেয়েটা বললে যে আরেকজন বাঁধা খদ্দের এসে গিয়েছিল বলে আমাকে না জাগিয়ে আমার তলা থেকে বেরিয়ে খদ্দেরের আশ মিটিয়ে…পোঁছাপুঁছি করে…আবার আমার তলায় এসে আমায় জড়িয়ে শুয়ে পড়েছে…সেই বাবদ ডিসকাউন্ট দিয়ে দিলে…
–তা কেন ? ফাক আর সাক করতে অসুবিধা কোথায় ? ডিসফাংশানের সমস্যা আছে নাকি…
–আমার ব্লাডি ফাকিং যৌনরোগের ভয় আছে…কমিউনিস্টদের নাকি যে প্রেমরোগ ধরে তা সহজে ছাড়ে না… আমাদের দেশেই দেখুন না…কমিউনিস্টরা চলে গেলেন…কিন্তু ওয়াঁদের দেয়া ভালোবাসার গণরোগ যেমনকার তেমন রয়ে গেছে… দগদগে…ছাতাপড়া…ও রোগ সারতে সময় লাগে…অনেকসময় অবশ্য ব্লাডি ফাকিং ইউটোপিয়ার স্বপ্নে আপনা থেকেই ঘুমের মধ্যে ইজাকুলেশানের টুরুর-টুরুর হয়ে যেত…উত্তেজনা হলেও আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতাম…নিজেকে বোঝাতাম…লিটল গাই…ডু নট গো ইনসাইড…কাম ডাউন…কাম ডাউন…ডু নট বিহেভ লাইক এ কমিসার…
–দেশে ফিরে আর বেশ্যালয়ে যান না যান না…
–আমরা কেউই বেশ্যালয়ে যাই না…কোনো মেয়ে আমাদের প্রেমিকাদের ধারেকাছে আসতে পারবে না…এখন যেমন শান্তিতে আছি তা দিতে পারবে না…আমাদের প্রেমিকারা কোনো সাংসারিক অশান্তি করেন না…পবিত্র প্রেম…অবিনশ্বর সম্পর্ক…তুলতুলে…চুলবুলে…
–বিদেশে বেশ্যালয়ে যেতেন যে…
–তা যেতাম…আগেকার সংসার জীবনে সকলেই যেতাম…
–আপনাদের যে প্রেমিকারা এখানে রয়েছেন তাঁদের বলেছেন…সকলেরই তো প্রেমিকা রয়েছেন এখানে…
–তাঁদের বলাও যা না বলাও তাই…প্রেমিকার সঙ্গে আমার কোর্টশিপ চলছে…শুনলেন না একটু আগে…কেলোর ভোদুন ভগবানের কাছে হ্যাঁ মানে যা বোঝায়…না মানেও তাই বোঝায়…এখানে জঙ্গলের ব্লাডি ফাকিং জীবনে আমাদের ওইটাই মূলমন্তর…চলুন বাড়ির পেছন দিকটাও দেখে নিন…
[ একজন তরুণীকে গণধর্ষণ করে মেরে ফেলেছে স্কাউন্ড্রেলগুলো…অন্য তরুণীদের কিডন্যাপ করে এনে বন্ধ করে রেখেছে নিশ্চয়ই…দেখতেও পাচ্ছি না…গলার আওয়াজও শুনতে পাচ্ছি না…তাদের শাড়ি-ব্লাউজও তো কোথাও দেখছি না…বাইরে শুকোবে…তারাও কি ক্রিমিনাল নাকি…অন্য কোথাও ঘর-টর আছে মনে হয়…]
–চলুন…আমাকেও তো কাজ শেয়ার করে নিতে হবে…দেখে রাখি…আরে…আপনারা তো মুর্গিও পুষেছেন দেখছি…তা দিশি মুর্গি পুষলেন কেন ? ব্রয়লার পুষতে পারতেন…পোলট্রি ফার্মের মতন…
–দিশি মুর্গি নিজের খেয়াল নিজেরা রাখে…ভোঁসড়ির ছ্যানা মোরগ নিজের হারেমে বাদশার ডিউটি সমাধা করে ডিমের ব্যবস্হা করে দ্যায়…হারেমের ডিম থেকে অনেক কনেমুর্গি আর দামড়া-মোরগ সাড্ডল্য হয়… ব্রয়লার রাখলে তাদের স্বাস্হ্যের খেয়াল রাখতে হতো…ছ্যানা কিনে এনে মানুষের মতন মানুষ করতে হতো…বিশেষ খাবার দিতে হতো…ব্রয়লাররা তো মোরগের ভালোবাসার ডিম পাড়ে না…ওটা ওদের মেন্সটুরেশান…ভোঁসড়ির ছ্যানা যথেষ্ট দিশি মুর্গি আছে…পালক ছাড়িয়ে…আগুনে পুড়িয়ে খেলেই হল…নো তেল নো মশলা…নুন মাখান আর কাঁচা লঙ্কা দিয়ে খান…তবে রোজ-রোজ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের জ্যামে দুঘন্টা তো লাগবেই…পেট পোষ্কার রাখার জন্য পায়খানার মাঠের গাছে-গাছে পঞ্চধাতুর ফাং শুই ঘণ্টি টাঙানো আছে…লঙ্কার গাছও আছে চৌহদ্দির মধ্যে…ওগুলো আমরাই পুঁতেছি…বীজ এনে…ভোঁসড়ির ছ্যানা লঙ্কা পেকে শুকিয়ে গেলে তা থেকেই আবার বীজ তৈরী হয়ে যায়…যিনি মারা গেলেন তিনি মাঝেমধ্যে বাটার চিকেন রাঁধতেন…তাতে বাটার থাকত না অবশ্য…
–বুইঝলেন কিনা…বাইঞ্চোত মুর্গিগুলারে জংলি জানোয়ারে তুইলা নিয়া যায় না…দূরে সইলা গেলে সে সম্ভাবনা থাকে…দিনের বেলায় ছাইড়া দেই…রাতের বেলায় উই খাঁচা দেখতাসেন…প্রায় ঘরের মাপের… তাতে ঢুকাইয়া দেয়া হয়…ইন ফ্যাক্ট ওরা নিজেরাই সন্ধ্যা হইবার আগে আইসা ঢুইকা পড়ে…বাইঞ্চোত খাঁচাটা বোধহয় স্কট সাহেবে পাখি পোষার জন্য তৈরি করতেসিল…
–আর এটা কী ? এটা তো জেলখানা বা থানার লক-আপের মতন সামনে দিকে গরাদ দেয়া…
–এটায় হয়তো সায়েব জংলি জানোয়ার পুষত…বা পোষা কুকুর রাখত…কিংবা তখুনকার দিনি ভারতীয়দের সাজা দেবার জন্যি সায়েবরা ব্যক্তিগত কারাগার রাখত…তাও হতি পারে…ওটাকে আমরা ভাঁড়ার ঘর হিসাবে ব্যবহার করি…যখুনই চাল… আটা… ডাল… আলু… পেঁয়াজ… তেল… আনাজ… মশলাপাতি… বাসন-কোসন…পেটরল…ডিজেল…হ্যানত্যান জিনিস বাল্ক আনা বা হাতানো হয়…তখুন ওর ভেতরে রাখি…ইঁদুরে কাঠবিড়ালিতে খরগোশে নষ্ট করে…তা করুক…তার পরেও যা বাঁচে আমাদের জন্য যথেষ্ট…
–জঙ্গলে গিয়ে টয়লেট করতে হয় নাকি ? সাহেবরাই তো টয়লেটকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আসতে শিখিয়ে গেছে…
–রামায়ণ-মহাভারতে টয়লেটগুলা কি রাজপ্রসাদেই আছিল ? কুরুক্ষেত্রে কুথায় হাইগতে যাইত শতশত কৌরব-পাণ্ডব সৈন্য…যুদ্ধক্ষেত্রে সুলভ শৌচালয় আছিল কি…কৌরবদিগের প্রাসাদে কয়খানা টয়লেট আছিল…অ্যাটাচড ওয়াশরুম…পঞ্চবটি বনে…আকবরের সৈন্য রাজস্হানে লইড়বার সময় কুথায় হাগিত…জলের বদলে বালি দিয়া পুঁছিত কি…
–এই…চুপ করুন…এখন ব্লাডি সিরিয়াস ইশ্যু তুলবেন না…টু বি প্রিসাইজ…প্রত্যেক তলায় ঘরের ভেতরেই একটা করে পায়খানা আছে…পায়খানা মানে চেয়ারের মাঝে গোল করে কেটে এনামেলের গামলা বসানো…তাইতে সায়েব-মেমরা মনে হয় হাগতেন-মুততেন…আর ভারতীয় মেথররা নিয়ে গিয়ে ফেলে আসতেন…এনামেলের পাত্রগুলো আমরা মুর্গিদের খাবার দেবার কাজে লাগাই…
–হ্যাঃ হ্যাঃ…কুড়ি কোটি দুর্যোধনের বাল…আমি সালা এগগালে নগসাল ছিলুম…মনে থাকে যেন…
–এই চুপ…যে মরে গেছে তার নকল করবেন না…
— আপনি এই বয়সেই ফোকলা হয়ে গেলেন কী করে ?
–বুঝলেন কিনা…প্রেমিকার থন চুষে…
–থন না স্তন…
–থন…থন…উনি আপনারে আনন্দদায়ী হুরিপরির কথা কইলেন কৎখন আগে…তা হুরুপরির থন চুষলে দাঁত একটু আইলগা তো হইবেই…হেথায় থাইকতে-থাইকতে প্রেমিকার সঙ্গদানে আপনেরও হইবে…উইটাই বাইঞ্চোত আমাগো দাঁত মাজার পদ্ধতি বইলা মনে লইতে পারেন…
–এখন কোথায় হাগতে যান আপনারা…
–ওই যে ওই দিকে…বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী ওই দিকটাই সঠিক…যেখানি আবনি গুলি খেয়ে মরার ভয়ে হ্যাণ্ডস আপ করি দাঁড়িয়ে পড়িছিলেন…তার পাশ দিয়ে এক ফার্লংটাক এগিয়ে আগাছাঘেরা জায়গাটায় ফাঁকা দেখে বসতে হয়…কুয়োটাও ওই দিকেই…আগি কুয়ো থেকে জল তুলি মগি করি নে যাবেন…কুয়োর কাচেই মগ আচি…মাজে-সাজে সবাই মিলে হাগতি বসি গল্পগুজব করার ইচ্ছে হয়…তাই অনেকগুনো মগ আচি…আবনার যদি বড় মাপের বা ফুলআঁকা মগ দরকার হয় তো তাও আচি…যিনি মরি গেলিন তিনি মুর্গিদের ঠেঙে চেয়ে এনামেলের গামলা নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে রেকেচিন… রাতবিরেতে তিন তলা থেকি নাবতি চাইতেন না…সকালি রোদ উটলে মাটি খুঁড়ি পুঁতি আসতেন…আবনাকে তিন তলার ঘর অ্যালট করা হয়েছে…আবনিও ইচ্ছে হলি চেয়ারে বসি গামলায় হাগতি পারেন…যিনি মরি গেলিন তাঁর রাকা একাধটা গামলা আচি মনে হয়…আমরা তো ওনার ঘরে যখুনতখুন যেতিম না…পচন্দ করতিন না…
–কুয়োটাও সাহেবেরই খোঁড়ানো ?
–ভোঁসড়ির ছ্যানা আমরা মাটি খুঁড়ে লাশকে মাটি চাপা দিতে পারি মানে এই নয় যে জঙ্গলে বসবাস করার জন্য কুয়োও খুঁড়ে ফেলব…
–আমি একটু হেগে আসতে চাই…সকালে পেয়েছিল…কিন্তু জলের অভাবে চেপে গিয়েছিলাম…তারপর ভেতরে সেঁদিয়ে গেছে…
–একটু কেন…বাইঞ্চোত পুরাটাই হাইগা আসুন না…ফুল কোর্স…
–যেখানে হ্যাণ্ডস আপ করে দাঁড়িয়েছিলেন ভোঁসড়ির ছ্যানা সেখান পর্যন্ত সটান চলে যান…তারপর এক-দু ফার্লং এগিয়ে ফাঁকা দেখে বসে পড়ুন…গাছের ডালে-ডালে ফাং শুই বাজনা আছে…কোঁৎ পাড়তে না হয় যাতে…
–বুঝলেন কিনা…হাইগবার জন্য আগে থিকা বাইঞ্চোত এক ফুট গভীর গর্ত কইরা রাখি আমরা…হাইগা চাপা দিয়া দেই…নয়তো জঙ্গলের নিবাসীরা কেউ কেউ গু খাইবার লোভে নানাদিকে ছড়াইয়া ফ্যালে… ফেলাইয়া-ছড়াইয়া খাইবার অভ্যাস…কয়েকটা গর্ত করা আসে…তারই একটায় আপাতত হাগুন…পরে আপনেও নিজের হাইগবার গর্ত খুঁইড়া রাখবেন… খুরপি-টুরপি আসে…বৎসরখানেক পরে ফার্টিলাইজার হইয়া যায়… অরগ্যানিক সব্জি পাওয়া যায়…স্বাস্হ্যের পক্ষে ভালো…
–এইখানে রেখে যাচ্ছি ঝোলাটা…
–যান…হয়ে আসুন…
–ওকে…সি ইউ…হ্যাভ এ গুড টাইম…