(চলে এলাম, তোমায় ছেড়ে চলে এলুম–
মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়)
চলে এলুম, তোমায় ছেড়ে চলে এলুম
রইলো পড়ে ছেঁড়া মাদুর, ভাঙ্গা সানকী
জীর্ণ কাঁথা মলিন বালিশ
মুলিবাঁশের ছিদ্রবেড়া, পচাঁ ডোবা
মাটির ঝাঁকি, পুরানো কোদাল
ফেলে রেখে চলে এলাম
চলে এলুম, তোমায় ছেড়ে চলে এলুম
দুঃখপূর্ণ মুখটি তোমার উঠলো ভেসে চোখের মধ্যে
ঘন্ট করা কচুর শাকে আমায় তুমি খেতে দিলে
মাটির ব্যকে পা ঠেকিয়ে অন্ন দিলুম মুখের ভেতর
হাতের খেলায় বিদায় নিলো ঘাসের যত মাছিগুলো
পাশে দেখলুম বুড়ো কুকুর শুয়ে আছে খালি পেটে
মাথার উপর কড়া রোদ্দুর কাকের শরীর
এবং তোমার
চোখের জলে ভিজে যাওয়া শাড়িটাকে
মনে ছিল, আসার বেলায় বলবো কিছু
খুচরো পয়সা দিয়ে যাবো
মুন্সী বাড়ি কাজের জন্যে বলেও যাবো
দিয়ে যাবো গামছাটাকে শাড়ি কোরে পরবে তুমি
কিন্তু আমার হয়নি বলা অত কিছু—
তবু আমায় আসতে হলো, আসতে হলো তোমায় ছেড়ে
গ্রামটা আমার ভেসে গেছে
চৈত্র এলে পুড়েও যাবে
কাজের জন্যে দুয়ার দুয়ার ঘুরেও কোন ফল হবেনা
এখন দেখি শহর আমায় রাখে কিনা!
বেঁচে থাকার ইচ্ছা নিয়ে গ্রামটি ছেড়ে চলে এলুম
চলে এলুম, তোমায় ছেড়ে চলে এলুম
৯/৫/৭০