গ্রিনসহ’স ফোল্লি

গ্রিনসহ’স ফোল্লি

দুজন মানুষ কোথায় জঙ্গলের মধ্যে ঘুরছিল।

-ঠিক আছে, তুমি ওখানে-রেমন্ড ওয়েস্ট বলল, ঠিক আছে।

 হোরাস বিল্ডলার একটা গভীর শ্বাস ফেলল।

–কিন্তু আমার প্রিয়, সে কেঁদে বলল, কতটা বিস্ময়কর, তার স্বরটা খুব বেশি হয়ে গেল সৌন্দর্য শাস্ত্রের আনন্দে, তারপরে সশ্রদ্ধ ভয়ে স্বরটা আরও গম্ভীর হয়ে গেল। এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এই বিশ্বজগতের বাইরে এটা সত্যিই একটা ভালো ঘটনা।

আমি মনে করি তুমি এটা পছন্দ করেছ,–রেমন্ড ওয়েস্ট বলল সন্তোষজনক ভাবে।

পছন্দ কর? আমার প্রিয়–হোরানের এই কথাটা ব্যর্থ হল। সে তার ক্যামেরা খুলল এবং ব্যস্ত ছিল।

এটা আমার সংগ্রহের একটা রত্ন হয়ে থাকবে–সে আনন্দের সঙ্গে বলল। আমি মনে করি, তুমি কি মনে কর না, যে এটা সত্যিই আনন্দের কিছু মনস্ট্রিসিটিস সংগ্রহ করা? সাত বছর আগে স্নানের সময় একদিন রাত্রে আমার মনে এই ধারণা এসেছিল। আমার শেষের রত্নটা হচ্ছে, যেটা আমি ক্যাম্পো সেন্টোতে। জেনোয়াতে পেয়েছিলাম, আমি মনে করি যে এটা আমাকে প্রহার করে, এটাকে কী বলে?

–আমার ন্যূনতম ধারণা নেই এটার সম্বন্ধে, রেমন্ড বলল।

 –আমি মনে করি, এটা একটা নাম পেয়েছে।

–হতে পারে। কিন্তু ঘটনাটা হল এটা অন্য কিছুর মত এতটা গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু বেশি গুরুত্ব পেয়েছে গ্রিনসর মূর্খর্তা।

-গ্রিনস মানুষ হওয়ার জন্য এটা তৈরি করেছে?

-হ্যাঁ, এটা তৈরি করা হয়েছিল ছিয়াশি কিংবা সত্তর কিংবা ওই সময়ে, সেটার সময় স্নায়ীর সাফল্যের ঘটনা ঘটেছিল। খালি পায়ে যে ছেলে চলাফেরা করত সে অনেক সম্পদের মালিক হয়ে, স্থানীয় ধারণাকে ভাগ করা হয়েছিল যে কেন সে এই বাড়িটা তৈরী করেছিল। এটা কি প্রাচুর্যের উদাহরণ না তার আস্থাভাজনদের অনুপ্রাণিত করার জন্য এই বাড়িটা তৈরি করেছিল। যদি পরেরটা সঠিক হয় তাহলে কিন্তু তার আস্থাভাজনেরা অনুপ্রাণিত হয়নি, তাই সে হয়ত দেউলিয়া হয়ে গেছিল কিংবা পরের কাজটার প্রতি অগ্রসর হয়েছিল। তারপর নামটা এসেছিল গ্রিনসর মূর্খ।

হোরাসের ক্যামেরায় একাট আওয়াজ হল সেখানে, সে বলল সন্তোষজনক সুরে আমাকে স্মরণ করাও তোমাকে ৩১০ নম্বরটা দেখাতে আমার সংগ্রহ থেকে। এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি এবং এটা ইতালিয়দের রীতিনীতি মেনে করা হয়েছিল, সে তারপর ঘরটার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি বুঝতে পারি না কিভাবে মি. গ্রিনস এটা ভেবেছিল।

এটা কিছু ক্ষেত্রে স্পষ্টও বটে, রেমন্ড বলল, সে লয়ার এর চেটিয়াক্স পরিদর্শন করেছে, তুমি কি সেটা মনে কর না? ওই চূড়াগুলো এবং তারপর, দুর্ভাগ্যভাবে, সে ওরিয়েন্ট ভ্রমণে গিয়েছিল। তাজের প্রভাব সত্যিই স্মরণীয় হয়ে থাকার মত। আমি বরং মুরিস উইং পছন্দ করি। সে বলল, ভেনেসিয়ান প্রাসাদের লক্ষণগুলো বটে।

একজন অবাক হয়ে যাবে এটা ভেবে যে সে কিভাবে একজন স্থপতিকারীকে নিয়ে এসেছিল এই পুরো ভাবনাটাকে বাস্তবায়িত করার জন্য।

রেমন্ড তার কাঁধ ঝাঁকুনি দিল।

–এটার সম্বন্ধে কোনও সমস্যা নেই, আমি প্রত্যাশা করি। সে বলল, সম্ভবত স্থপতিকারী একটা ভালো উপার্জন করে সরে গেছে। যখন গ্রিনস দেউলিয়া হয়ে গেছে।

–আমরা কি এটা অন্য দিক থেকে দেখতে পারি? জোরাস জিজ্ঞাসা করল, অথবা আমরা কি অনধিকার প্রবেশ করছি!

আমরা সত্যিই অনধিকার প্রবেশ করছি, রেমন্ড বলল, কিন্তু আমি মনে করি না এটা কোন ব্যাপার ঘটাবে।

সে ঘরের কোণার দিকে তাকাল এবং হোরাস তাকে অনুসরণ করতে লাগল

–এখানে কে বাস করে, আমার প্রিয়? মাতৃপিতৃহীন লোক না ছুটিতে যারা পরিদর্শনে আসে? এটা একটা বিদ্যালয় হতে পারে, এটা কোন খেলার মাঠ কিংবা তৎপরতার দক্ষতা হতে পারে না।

ওহ, একজন গ্রিনস এখানে এখনও থাকে,-রেমন্ড তার কাঁধ চাপড়ে বলল, এই ঘরটা এখনও ধ্বংস হয়ে যায়নি। ওল্ড গ্রিনস-এর ছেলে এই ঘরটার উত্তরাধিকারী; সে একটু কৃপণ স্বভাবেরও বটে, এবং এই কোণে থাকত। কখনই সে একটা টাকাও খরচ করত না সম্ভবত তাদের খরচ করার মত কোন টাকা ছিল না। তার মেয়ে এখন এখানে বাস করে। বৃদ্ধা, মহিলাটি-খুব পাগলের মত।

যখন সে রেমন্ডকে বলছিল তখন সে নিজেকে অভিনন্দন জানাচ্ছিল গ্রিনসর মূর্খতা ভেবে, যেটা মনে হয়েছিল তার অতিথিকে আমোদ-প্রমোদ করানো, সাহিত্যিক নিন্দুকরা সবসময় তাদের নিজেদেরকে ভবিষ্যৎবাণী করেছে যেহেতু তারা সপ্তাহের ছুটির দিনটা শহরে কাটানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, এবং তারা কখনই শহরটাকে ক্লান্তিকর ভাবত না যখন তারা সেখানে আসত। আগামীকাল সেখানে রবিবারের পেপারগুলি আসবে এবং তারজন্য আজকে রেমন্ড ওয়েস্ট নিজেকে অভিনন্দন জানিয়েছে। সে প্রস্তাব দিয়েছে যে সে গ্রিনসর ফোল্লিতে যাবে হোরাস বিল্ডসারসের মন্সট্রিসিটিস এর চেনা সংগ্রহগুলোকে সমৃদ্ধ করার জন্য।

তারপর তারা ঘরের কোণার দিকে তাদের দৃষ্টি ফেরাল এবং তারা একটা অবহেলিত সরুগলির মধ্যে আসল। এটার এক কোণে একটা কৃত্রিম অমসৃণ পাথরের স্তূপ ছিল, এবং সেই পাথরের তলায় একটা চেহারা ছিল যেটাকে দেখানো হয়েছে হোরাস রেমন্ডকে আনন্দের সহিত জড়িয়ে ধরেছিল।

আমার প্রিয়, সে চিৎকার করে উঠল। তুমি কি জান সে কি পেয়েছে? একটা চিত্রিত পোশাক। এই পোশাকটা দেখতে বাড়ির পরিচারিকার মত। যেমন সেখানে অনেক পরিচারিকা থাকত।

আমার সবচেয়ে ভালো রোমহর্ষকর অভিজ্ঞতা হচ্ছে যখন আমি এই ঘরটাতে বাস করতাম এবং এই শহরে। আমি তখন ছোট্ট একটা ছেলে ছিলাম। এই ঘরটাতে সত্যি একটা পরিচারিকা ছিল যে সকালে ডেকে নিত। তার পরনে ছিল ছাপা পোশাক এবং একটা চুটি, সত্যি তার একটি চুটি ছিল। যাইহোক সে একজন সত্যিকারের পরিচারিকা ছিল এবং সে বড় পিতলের পাত্রে গরম জল নিয়ে আসত। তখন আমরা কতটা আনন্দদায়ক দিন কাটাতাম।

তার পোশাকে যে চেহারাটা ছিল সেটা খাড়া অবস্থায় ছিল এবং তারপর এটা তাদের দিকে ঘরে গিয়েছিল, তার চেহারাটা দেখে চমকে যাওয়ার মত অবস্থা হত, অগোছালো চুলগুলো তার কাঁধের উপর পড়ত। একটা চুটি যেটা দেখতে লাগত টুপির মত, এই চুটি যেটা ইটালির ঘোড়াগুলো পরত। যেটা তার মাথায় ঠাসাঠাসি হয়ে থাকত। রঙিন রঙের যে পোশাক সে পরত সেটা তার গোড়ালি পর্যন্ত চলে আসত। আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সে এই পোশাক পরত, তার মুখটা ততটা পরিষ্কার ছিল না, তার তীক্ষ্ণ সুবুদ্ধিসম্পন্ন চোখগুলো তার দিকে কিছু জ্ঞাপন করছিল।

আমি অবশ্যই অপরাধ স্বীকার করব এইভাবে অনধিকার প্রবেশের জন্য মিস গ্রিনস-রেমন্ড ওয়েস্ট বলল, যখন সে তারদিকে এগিয়ে গেল, কিন্তু মি. হোরাস বিল্টলারকে আমার সঙ্গে থাকছে?

হোরাস তার মাথা নিচু করল এবং টুপিটা সরিয়ে নিল।

এটা খুবই আগ্রহের–পুরনো ইতিহাস এবং সুন্দর প্রাসাদ।

রেমন্ড ওয়েস্ট খুব শান্ত হয়ে একজন সুপরিচিত লেখক সম্বন্ধে বলতে লাগল, সে জানে যে রেমন্ড ওয়েস্ট একজন খ্যাতনামা লোক ছিল, সে সবজায়গায় ঝুঁকি নিতে পারে, কিন্তু অন্যরা সেটা পারে না।

দুমড়ে মুচড়ে মিস গ্রিনস দেখল তার পিছনে কিছু দাঁতখিচানো আধিক্য চলছে।

এটা একটা সুন্দর বাড়ি সে প্রশংসনীয় সুরে বলল, আমার দাদু এটা তৈরী করেছিল, আমার সময়ের আগে, অবশ্যই, এটা বর্ণনা করা হয়েছিল যে সে তার প্রতিবেশীদের বিঘ্নীত করতে চেয়েছিল।

আমি বলব সে এটা করেছিল, ম্যাডাম, হোরাস বিল্ডলার বলল।

-মি. বিল্ডলার একজন, সুপরিচিত সাহিত্যমনস্ক নিন্দুক,রেমন্ড ওয়েস্ট বলল। মিস গ্রিনসর কোন শ্রদ্ধা নেই সাহিত্যিক সমালোচকদের জন্য, সে কোন অনুভূতি দেখাল না।

–আমি এটা ভাবি, মিস গ্রিনস বলল, যখন সে এই ঘরটার–বর্ণনা দিচ্ছিল। সে বলল এটা একটা স্মৃতিসৌধ আমার দাদুর প্রতিভার। তোমরা বোকা লোকগুলো এখানে এস, এবং জিজ্ঞাসা কর কেন আমি এটা বিক্রী করিনি এবং কেন আমি ফ্ল্যাটে থাকার ব্যবস্থা করিনি। আমি ফ্ল্যাটে গিয়ে কী করব? এটা আমার ঘর তাই আমি এখানে থাকি, মিস গ্রিনস বলল।

মিস গ্রিনস বলল তুমি কি এখানে সবসময় বসবাস করছ, সে অতীত ঘটনা চিন্তা করে বলল। সেখানে আমরা তিনজন থাকতাম, লরা যাজককে বিয়ে করেছিল, বাবা তাকে কোন টাকা দিয়েছিল না, এবং যাজকদের অবিশ্বজনীন হওয়া উচিত, মিস গ্রিনস মারা গিয়েছিল তার একটা বাচ্চাকে রেখে। বাচ্চাটাও মারা গিয়েছিল। সেটি তার ঘোড়ার সওয়ার শিক্ষকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। বাবা তাকে তার সম্পত্তি থেকে বিচ্ছেদ করেছিল। হার ফ্লেচার খুব সুন্দর দেখতে ছিল, কিন্তু কোন কাজের ছিল না, মনে কর না সেটি তার সঙ্গে সুখে ছিল। যাইহোক, সে বেশিদিন বেঁচেছিল না। তাদের একটা ছেলে ছিল, সে আমাকে কখনও কখনও লিখত, কিন্তু সে গ্রিনস ছিল না, আমি গ্রিনস বাবাধরের শেষ উত্তরাধিকারী। মিস গ্রিনস তার কাঁধ ঝাঁকাল গর্বের সঙ্গে এবং তারপর আবার এবড়ো খেবড়ো টুপিটাকে ঠিকঠাক করে নিল, তারপর ঘুরে সে তীক্ষ্ণভাবে বলল।

হ্যাঁ, মিসেস ক্রসওয়েল, এটা কি?

ঘর থেকে একটা চেহারা বার হল তাদের পাশে পাশে মিস গ্রিনশকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মিস গ্রিনসকে হাস্যকরভাবে কিছুটা পৃথক বলে মনে হচ্ছিল, মিসেস ক্রসওয়েল এর চুলগুলো পরিপাটি করে সাজানো ছিল। চুলগুলো নীলরঙের ছিল, এবং চুলগুলো খুঁটিনাটিভাবে কখনো কোঁচকানো কিংবা কখনো গুটিয়ে ছিল। তার চুল দেখে এটা মনে হচ্ছিল যে সে একজন ফ্রান্সের মারকুইস যে একটা সুন্দর পোশাকের পার্টিতে যাচ্ছে। আর অন্য একজন মধ্য বয়স্ক লোককে ঠিকভাবে সাজানো হয়েছিল।

যদিও সে একজন লম্বা মহিলা নয়, তার একটা খুব উন্নত এবং মহার্ঘ্য বক্ষ ছিল, তার গলার স্বরটা খুব গম্ভীর ছিল, কিন্তু কিছু শব্দ বলার ক্ষেত্রে তাঁর ইতস্ততা আসত, যেমন যে সমস্ত শব্দগুলো দিয়ে শুরু হয়েছে। এবং তার উচ্চারণে অতিরঞ্জিত করার জন্য সন্দেহের উদ্রেক হত। এবং এটা মনে হত যে অনেক আগে তার যৌবনকালে সেই এইরকম সমস্যায় পড়েছিল এক উচ্চারণ করা নিয়ে।

–মাছ, ম্যাডামস–মিসেস ক্রসওয়েল বলল, কড মাছের টুকরো। এটা এখনও পৌঁছায়নি। আমি আলফ্রেডকে বলেছি এটা খোঁজ করার জন্য যেতে। কিন্তু সে এটা করতে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বরং অপ্রত্যাশিতভাবে, মিস গ্রিনস হাসিতে ফেটে পড়ল।

–প্রত্যাখ্যান। সত্যিই সে কথাটা প্রত্যাখ্যান করেছে?

–আলফ্রেড হচ্ছে সবথেকে অলস এবং অবাধ্য লোক। মিস গ্রিনস তার দুটো আঙ্গুল ঠোঁটে তুলল এবং একটা কান কেটে যাওয়ার মত হুইসেল বাজাল এবং তারপরেই তারস্বরে চিৎকার করতে লাগল :

–আলফ্রেড, আলফ্রেড, এখানে এস।

কর্ণারে ঘোরার মুখে একজন যুবক এই ডাকে এগিয়ে আসল। তার হাতে একটা ঝটা ছিল। সে খুব সাহসী এবং দেখতে সুন্দর ছিল। এবং সে যখন মিসেস ক্রসওয়েলের কাছে আসল তার মুখটা ভীষণ ক্ষতিকর বলে মনে হচ্ছিল এবং মিসেস ক্রসওয়েলের দিকে এক পলকে তাকাল।

–তুমি আমাকে চাইছিলে, মিস? সে বলল।

–হ্যাঁ, আলফ্রেড, তুমি নাকি মাছের খোঁজ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছ। এটা কি সত্যি?

আলফ্রেড বলল–যে সে এটা অবশ্যই করবে।

–আমি আপনার জন্য মাছের খোঁজে যেতে পারি, যদি তুমি চাও মিস, তুমি যেহেতু আমাকে বলেছ।

–আমি এটা চেয়েছিলাম–আমি রাত্রিরের খাবার জন্য এটা চাই।

 তুমি ঠিক বলেছ মিস, আমি এক্ষুনি যাব।

সে তারপর মিসেস ক্রসওয়েলের দিকে উদ্ধত দৃষ্টি নিয়ে তাকাল, কিন্তু ক্রসওয়েল বিড়বিড় করে কিছু বলতে লাগল।

-সত্যি! এটা মানা যায় না।

–এখন সে আমি ভাবি-মিস গ্রিনস বলল, এক স্বামী-স্ত্রী যারা অদ্ভুত পরিদর্শনকারী। তাদেরকে মনে হয়, তারা আমার ইচ্ছার মত নয়, মিসেস ক্রসওয়েল।

মিসেস ক্রসওয়েলকে বিভ্রান্ত লাগছিল।

–আমি সত্যিই দুঃখিত, ম্যাডাম–তুমি জান কি, মিস গ্রিনস বলল তার মাথা নাড়িয়ে। একটা উইলের সুবিধা নিশ্চয়ই উইল প্রত্যক্ষ করবে না, এটা ঠিক, তাই নয় কি? সে তারপর রেমন্ড ওয়েস্টকে আবেদন করল।

স্পষ্টতই ঠিক। রেমন্ড বলল : আমি অনেক আইনকানুন জানি, মিস গ্রিনস বলল, এবং তোমরা দুজন যুবক ছেলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে।

তারপর সে তার কর্নিককে বিয়ের ঝুড়িতে ছুঁড়ে ফেলে দিল।

–তুমি কি কিছু মনে করবে যদি তুমি আমার সঙ্গে পাঠাগারে আসো।

 –হোরাস বলল এটা খুব আনন্দদায়ক ব্যাপার।

সে তারপর হোরাসকে ফ্রেঞ্চ-এর জানলা দিয়ে পথ নির্দেশ করল এবং তারা হলুদ এবং সোনালী রঙের বসবার ঘর অতিক্রম করল। সেখানে দেখা গেল সমস্ত আসবাবপত্র ধূলোয় ভরে গেছে। তারপরে তারা একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে দিয়ে গেল। তারপর সিঁড়িতে উঠল এবং তারপর প্রথম তলার একটি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল।

–এটা আমার দাদুর পাঠাগার। সে সজোরে বলল।

হোরাস ঘরের চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখল এবং খুব আনন্দ পেল। এটা একটা ঘর সেটাতে আমার দাদুর মতামত বিরাজ করত। এবং এই ঘরটা মনস্ট্রিসিটিজ-এ ভর্তি ছিল। একটা দানবীয় মত আসবাব ছিল, সেটা একদম আলাদা, সেটা ব্রোঞ্জ দিয়ে মোড়ক দেওয়া ছিল। সে ভাবল, চাল এবং ভারজিনিয়া এবং একটা বড় ব্রোঞ্জের ঘড়ি যার একটা ফটোগ্রাফ সে নিতে চেয়েছিল। অনেক সুন্দর সুন্দর বই, মিস গ্রিনস বলল।

রেমন্ড তখন বইয়ের দিকে নজর দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে কোনও বইই আগ্রহসূচক ছিল না, এবং কোনও বইই মনে হচ্ছিল না যে পড়া হয়েছে। সেগুলি চমৎকারভাবে ক্লাসিকে পরিপূর্ণ। যেগুলো আনা হয়েছিল ৯০ বছর আগে একজন ভদ্রলোকের পাঠাগার সাজানোর জন্য। কিন্তু লুপ্তপ্রায় উপন্যাসগুলোও এখানে সংযযাজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো পড়া হয়েছে বলে মনে হল না।

মিস গ্রিনস একটা বড় ডেক্সের ড্রয়ারে কিছু হাতড়াচ্ছিল, তারপর সে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পেল।

আমার উইল–সে বলতে লাগল, যদি আমি উইল ছাড়া মারা যেতাম, তাহলে এই ঘোড়া নিয়ে আসা ছেলেটা এটা পেয়ে যেত। হ্যারি ফ্লেচার খুব সুন্দর দেখতে একটা লোক। কিন্তু তার মত ভবঘুরে কেউই নেই। তুমি দেখো না কেন তার ছেলে এই স্থানের উত্তরাধিকারী হয়েছে। না, সে বলেই চলল, এটা মনে হচ্ছিল যে সে কোন না বলা আপত্তিগুলো তুলছে। আমি মনস্থির করে নিয়েছি আমি এটা ক্রসওয়েলকে ছেড়ে দিচ্ছি।

তোমার রক্ষণাবেক্ষণকারীর কী হবে?

-হ্যাঁ, আমি তাকে সব কিছু বলেছি। আমি একটা উইল করেছি যাতে সে আমার সমস্ত কিছু পায় এবং আমি ভাবি তাকে আর কোন মজুরি দিতে হবে না, এখনকার খরচ থেকে এটা আমাকে রক্ষা করবে। সে খুব ভালো তাই নয় কি? কিন্তু তার বাবা একজন সীমার জিনিসপত্র বিক্রেতা, তার কিছুই নেই যাতে সে সুখে থাকতে পারে।

তারপর সে কাগজটা খুলল। তারপর একটা পেন নিয়ে কালিতে ডোবাল এবং তার সই করল, তার নাম হল ক্যাথরিন ডরথি গ্রিনস।

–এটাই ঠিক, সে বলল, তুমি এটা দেখছ সই করা আছে। এবং এতে তুমি একটা সই কর, তখন এটা আইনিমাফিক পরিণত হয়ে যাবে।

তারপরে সে পেনটা রেমন্ড ওয়েস্ট কে দিল। সে এক মুহূর্ত ইতস্ততবোধ করল, এবং একটা অপ্রত্যাশিত অনুভূতি দেখে সে অবাক হয়ে গেল। তারপরে সে তার চেনা সইটা তাড়াতাড়ি করল।

হোরাস তার কাছ থেকে পেনটা নিয়ে নিল এবং সেই পেপারে এক মিনিটে একটা সই করল।

-এটা আইন সম্মত হয়ে গেল, মিস গ্রিনস বলল।

তারপর সে বইরের ধার ঘেঁষে এগিয়ে গেল, এবং বইগুলো অনিশ্চিতভাবে দেখতে লাগল। তারপর সে কাঁচের দরজাটা খুলল, একটা বই নিল এবং তারপর কাগজটা রেখে দিল সেই ঘরের মধ্যে।

–আমার নিজস্ব ঘর আছে এই জিনিসগুলি রাখার জন্য, সে বলল।

লেডি অডলের সিক্রেট, রেমন্ড ওয়েস্ট বলল, এই শিরোনামের দিকে তাকিয়ে সে বইটা অন্য জায়গায় রেখে দিল।

মিস গ্রিনস আবার অট্টহাস্যে হেঁসে উঠল।

এখনকার যুগে এটা সবথেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে। সে বলল, তোমার বইয়ের মতন। নয়।

সে রেমন্ডের দিকে একটা হঠাৎ বন্ধুত্বপূর্ণ ঝাঁকুনি দিল, রেমন্ড খুব বিস্মিত হয়ে গেল সে কখনই জানত না যে সে বই লিখেছিল। যদিও রেমন্ড ওয়েস্ট-এর নাম সাহিত্যে বিখ্যাত হয়ে আছে। কখনই সে নিজেকে সবথেকে ভালোে বিক্রেতা বলে বলেনি। যদিও মধ্যবয়স্ক হওয়ার জন্য সে কিছুটা নরম স্বভাবের হয়ে গেছে। তার বইগুলো নীরস সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করে।

-আমি বিস্মিত হয়ে যাই, হোরাস এক নিঃশ্বাসে বলে গেল, আমি কি একটা ঘড়ির ছবি নিতে পারি?

এটা তোমার উপর নির্ভর করছে। গ্রিনস বলল, এটা এসেছিল, আমি নিশ্চিত যে এটা প্যারিসের প্রদর্শনী থেকে এসেছিল।

–সম্ভবত তাই হবে, হোরাস বলল, তারপর হোরাস তার দাদুর ছবি তুলল।

–এই ঘরটা খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না আমার দাদুর সময় থেকে, গ্রিনস বলল, এই ঘরটা তার পুরনো ডায়েরিতে ভর্তি ছিল। এটা সত্যিই আগ্রহজনক, আমি এটা মনে করি, আমার চোখের দৃষ্টিও নেই যে এটা আমি নিজে নিজে পড়তে পারি। আমি চাই এটা যাতে প্রকাশনা করা হয়। কিন্তু আমি মনে করি একজনকে এদের উপর কাজ করতে হবে।

-তুমি এ বিষয়ে কাউকে নিযুক্ত করতে পার, রেমন্ড ওয়েস্ট বলল।

-সত্যিই তুমি বলছ এটা? একটা একটা ধারণা, তুমি জান, আমি এটার সম্বন্ধে ভাবব।

রেমন্ড ওয়েস্ট তার ঘড়ির দিকে এক পলক তাকাল।

-আমি তোমার দয়াতে কখনোই অনধিকার প্রবেশ করব না। সে বলল।

-আমি তোমাকে দেখে খুব আনন্দিত হলাম–মিস্ গ্রিনস মাধুর্যসহকারে বলল, আমি শুনেছিলাম তুমি নাকি পুলিশ-এ ছিলে, যখন আমি শুনেছিলাম তুমি ঘরের কোণায় ঘুরে বেড়াচ্ছ।

–কেন একজন পুলিশের দরকার, হোরাস দাবী করল, সে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে কখনোই ইতস্তত বোধ করেনি।

মিস গ্রিনস অপ্রত্যাশিতভাবে উত্তর দিল।

–যদি তুমি সময় জানতে চাও, তাহলে একজন পুলিশকে জিজ্ঞাসা কর। মিস গ্রিনস বলতে লাগল এবং ভিক্টোরিয়ান বুদ্ধির উদাহরণ দ্বারা হোরাসের পাঁজর চাপড়াল এবং অট্টহাস্যে চিৎকার করতে লাগল।

এটা সত্যিই একটা বিস্ময়কর বিকেল ছিল, হোরাস দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল। যখন তারা বাড়ির দিকে এগোচ্ছিল, সত্যি বলতে কি, এই জায়গায় সবকিছু আছে। এই পাঠাগারে একজন লোকের দরকার। সেই সমস্ত পুরনো গোয়েন্দার গল্প হত্যা সম্বন্ধে পাঠাগারে–এইরকম ধরনের পাঠাগার লেখকদের খুব ভালো পছন্দ।

-যদি তুমি হত্যা নিয়ে কথা বলতে চাও, তাহলে তোমাকে জেন কাকিমার সঙ্গে কথা বলতে হবে। রেমন্ড বলল।

–তোমার কাকিমা মানে নি তুমি মিস মার্পলকে বোঝাচ্ছ? সে কিংক্যবিমূঢ় হয়ে গেল।

–সেই পুরনো আদবকায়দার সুন্দর মহিলাটি যাকে তোমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাত্রের আগে, সেই হচ্ছে শেষ ব্যক্তি যে হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

ও, হ্যাঁ। হত্যার বিষয়ে ওই মহিলা সত্যিই বিশেষজ্ঞ ছিল, রেমন্ড বলল।

–কিন্তু এটা সত্যিই ষড়যন্ত্র। তুমি কী বলতে চাইছ?

–আমি এটা বলতে চাই, রেমন্ড বলল, সে সংক্ষিপ্ত করল–কেউ এই হত্যাটা করেছিল, কিংবা এই হত্যায় কেউ জড়িত ছিল, কিংবা কারুর উপর হত্যার অপরাধটা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমার কাকিমা, জেন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে।

-তুমি মজা করছ।

-না, একদমই করছি না, আমি তোমাকে আগেকার স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড-এর কথা উল্লেখ করতে পারি এবং আরো কয়েকজন মুখ্য কনস্টেবল কিংবা একজন এবং দুজন পরিশ্রমী সি. আই. ডি ইনসপেক্টরের নাম ঘোষণা করতে পারি।

হোরাস বলল যে বিস্ময় কমানো শেষ হবে না, চা-এর টেবিলে তারা জোয়ান ওয়েস্ট-এর সম্বন্ধে বলল সে ছিল রেমন্ড-এর স্ত্রী, লু অক্সলি তার ভাইজি, এবং বৃদ্ধ মিস মার্পল। এটা দেখা গেল যে মিস গ্রিনস তাদেরকে বলেছে।

আমি মনে করি এই পুরো ঘটনায় একটা ছোট পাপ লুকিয়ে আছে। হোরাস বলল, এইরকম রাজকুমারীর মতন মেয়ে, আবার তারা পরিচারিকা চা-এর টেবিলে, আজ্ঞে সে নিশ্চয়ই তার মহিষীকে জানে, তার জন্য এই উইলটা করে দিয়েছে।

-তুমি আমাকে জেন কাকিমার সম্বন্ধে বল, সেখানে সত্যি কি হত্যা ঘটেছিল–না, ঘটেনি? তুমি কি মনে কর?

মিস মার্পল বললেন–তুমি এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মজা করা উচিত নয়। আর্সেনিক হল একটি সম্ভাব্যতা অর্জন করা খুব সহজ।

জেন ওয়েস্ট স্নেহপূর্ণভাবে বলল–এটা, সত্যি, ডার্লিং, এটা খুব বেশি সুস্পষ্ট ছিল না। রেমন্ড বলল–এটা উইল করার পক্ষে খুব ভাল, আমি মনে করি না। এই পুরনো জিনিসটার কিছু ছাড়ার মত আছে একমাত্র বাড়ির সাদা ঘোড়াটা ছাড়া? এবং কে এটাকে নেবে?

হোরাস বলল–একটা সিনেমা সংস্থা কিংবা একটা হোটেল কিংবা একটা প্রতিষ্ঠান?

রেমন্ড বলল–তারা একটা গানের জন্য কিনবে, কিন্তু মিস মার্পল তার ঘাড় নাড়াচ্ছিল।

–আমি তোমার সঙ্গে একমত হতে পারছি না, রেমন্ড। আমি বলতে চাইছি ওই টাকাটা সম্বন্ধে, দাদু একজন অপব্যয়ী ছিল, তাই যদিও যে প্রচুর টাকা উপার্জন করত, সে রাখতে পারত না, যদি এটা বলা হয় যে সে দেউলিয়া হয়ে গেছিল, তবে এটা বলা ঠিক হবে না কারণ তাহলে তার ছেলে এত বড় একটা বাড়ি তৈরী করতে টাকা কোথায় পেল।

কিন্তু তার ছেলে তার বাবার থেকে অনেক বেশী পৃথক একজন, একজন কৃপণ। সে প্রত্যেকটা টাকা জমিয়েছে। আমি বলতে পারি যে সে তার জীবনে অনেক টাকা সঞ্চয় করেছে। এই মিস গ্রিনস তাকে নিতে এসেছিল, কারণ গ্রিনস কম টাকা ব্যয় করা পছন্দ করত না, হ্যাঁ আমি মনে করি সে একটা বড় অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছে।

–এই ব্যাপারে, আমি অবাক হয়ে যাই–লু-এর কী ভাবনা জোয়ান ওয়েস্ট বলল।

তারা লুর দিকে তাকিয়ে যে নিস্তব্ধভাবে আগুনের পাশে বসেছিল।

লু হল জোয়ান ওয়েস্ট-এর ভাইঝি, সাম্প্রতিককালে তার বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। তার দুটো ছেলেমেয়ে রয়েছে, এবং খুব সামান্য পরিমাণ টাকা রয়েছে তাদেরকে লালন-পালন করার জন্য।

–আমি বলতে চাইছি যদি এই মিস গ্রিনস কাউকে চায় সে তার দিনলিপিটা পড়বে এবং একটা বই প্রকাশ করবে, জোয়ান বলল।

–এটা একটা ভাল ধারণা, রেমন্ড বলল।

লু-খুব নিচু স্বরে বলল।

-এটা একটা কাজ আমি করেছিলাম, এবং আমি আনন্দ উপভোগ করেছিলাম।

 রেমন্ড বলল, আমি তাকে লিখব। আমি বিস্মিত হয়ে যাই, এই মহিলাটি পুলিশের সম্বন্ধে এমন মন্তব্য করে কি বোঝাতে চাইছিল। মিস মার্পল চিন্তামগ্ন হয়ে বলল।

-ওহ এটা একটা মজা ছিল।

-এটা আমাকে মনে করিয়ে দিল। মিস মার্পল তার মাথা নাড়িয়ে বলল এবং বললেন এটা তাকে মি. নেজস্মিথ-এর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। রেমন্ড উদগ্রীভাবে জিজ্ঞাসা করল মি. নেজস্মিথ কে?

মিস মার্পল বললেন–সে মৌমাছি রাখত। সে রবিবারের কাগজে চিত্ৰকাব্য লেখাতে খুব দক্ষ ছিল এবং সে লোককে ভুল বাসনা প্রদান করত মজা পাওয়ার জন্য। কিন্তু কখনও কখনও এটা তাকে সমস্যায় ফেলেছিল।

তখন সবাই নিস্তব্ধ হয়ে গেল মি. নেজস্মিথএর কথা ভেবে এবং মিস গ্রিনস এবং মি. নেজস্মিথের মধ্যে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না, তারা স্থির করল যে জেন কাকিমা তার বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা বিছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।

.

০২.

হোরাস বিল্ডলার লন্ডনে ফিরে গেল, আর কোন মন্সট্রিসিটিস সংগ্রহ না করে, এবং রেমন্ড ওয়েস্ট একটা চিঠি লিখল মিস গ্রিনসকে। এই চিঠিতে সে বলল যে সে মিসেস লুইসা অক্সলেকে চেনে, সে দিনলিপি লেখার ক্ষেত্রে একজন প্রতিযোগী ছিল। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর। একটা আদবকায়দাযুক্ত চিঠি আসল, এই চিঠিটাতে পুরনো হাতের লেখায় লেখা ছিল, সেখানে মিসেস গ্রিনস নিজেকে ঘোষণা করেছিল যে সে মিসেস অক্সলির কাজে যোগদান করবে। এবং মিসেস গ্রিনসকে অক্সলির সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় দিতে হবে।

লোক নিযুক্ত করা হল। সে তার সমস্ত কাজ বুঝে নিল এবং সে সেই দিন থেকে কাজ করতে শুরু করল।

সে রেমন্ডকে বলল আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ। এটার আমার পক্ষে খুব সুন্দর একটা কাজ। আমি বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে নিয়ে যেতে পারি, কিংবা বাচ্চাদের গ্রিনসর কলিতে নিয়ে যেতে পারি। এই পুরো ঘটনাটা কতটা সুন্দর হবে! এই বৃদ্ধা মহিলাকে ভর করা যেতে পারে।

প্রথম দিন কাজের সন্ধ্যেবেলায় সে ফিরে আসল এবং তার দিনটা কেমন গেল বর্ণনা করল।

সে বলল, আমি কখনও পরিচারিকাকে দেখিনি। সেই পরিচারিকাটি সাড়ে এগারোটার সময় কফি এবং বিস্কুট নিয়ে আসল। তার মুখটা শুষ্ক কাঁচের মত হয়ে গিয়েছিল এবং সে আমার সঙ্গে খুব একাট কথা বলল না। আমি ভাবলাম সে হয়তো আমার নিযুক্তটা মেনে নেয়নি। সে বলতে লাগল যে বাগানের মালি আলফ্রেড এবং পরিচারিকার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। আলফ্রেড স্থানীয় ছেলে এবং ভীষণ অলস ছিল। আমার মনে হয় সে এবং পরিচারিকা দুজনে কারোর সঙ্গে কথা বলে না, মিস গ্রিনস ভান করে বলল, সেখানে সবসময়ই দ্বন্দ্ব বাগানের মালি এবং ঘরের পরিচারিকার মধ্যে। এই ধারণাটা আমার দাদুর সময় থেকে চলে আসছে। সেখানে তিনজন লোক এবং একটা ছেলে বাগানে তখন ছিল, এবং ঘরে আটজন পরিচারিকা ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে সবসময় সংঘর্ষ লেগে থাকত।

ওই দিন লু একটা অন্য খবর নিয়ে ফিরল।

–এটা মজা করার জন্য। আমাকে বলা হয়েছিল আমার ভাগ্নেকে ডাকার জন্য,–সে বলল।

–তুমি কি মিস গ্রিনসর ভাইপোর কথা বলছ?

-হ্যাঁ। এটা মনে হয় সে একটা কোম্পানিতে কাজ করছে। সেই কোম্পানিটা বোরহামে সমুদ্রের উপর গরমকালে কাজ করছিল। আমি নাট্যশালাকে ডেকে পাঠালাম এবং তাকে বললাম আগামীকাল দুপুরে খাওয়ার জন্য আসতে। এটা সত্যিই মজার ছিল এবং এই বৃদ্ধা মেয়েটা রক্ষণাবেক্ষণকারীকে জানায়নি। আমি মনে করি মিসেস ক্রসওয়েল কিছু করেছিল যেটা তাকে বিরক্ত করছিল।

রেমন্ড বলল–আগামীকাল এরকম একটা শিহরণ সৃষ্টিকারী দৃশ্য হবে?

–এটা সত্যিই একটা ঘটনাক্রম, তাই না? ভাইপোর সঙ্গে পুনর্মিলন, যেখানে জলের থেকেও রক্ত গাঢ় এবং আর একটা উইল হবে এবং পুরনো সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।

–তোমাকে খুব উদ্বিঘ্ন দেখাচ্ছে জেন কাকিমা।

–সত্যিই কি আমাকে বিপদজনক দেখাচ্ছে। তুমি কি পুলিশের সম্বন্ধে কিছু শুনেছ?

–লু-কে খুব বিভ্রান্ত লাগছিল, এবং বলল, আমি পুলিশে সম্বন্ধে কিছু জানি না।

–এই মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে সেখানে নিশ্চয়ই কিছু গুপ্ত অবস্থায় রয়েছে, মিস মার্পল বললেন।

লু পরের দিন মনের আনন্দে কাজে যোগ দিল। সে প্রথম দরজা পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল যেখানে দরজা এবং জানালাগুলি সবসময় ভোলা ছিল, মিস গ্রিনস-এর কোনও ভয় ছিল না, তাই সে এগিয়ে আসল। এবং সে সত্যিই সঠিক ছিল এই মহুর্তে যা করা উচিত। যেহেতু ঘরের প্রত্যেকটা জিনিসের অনেক ওজন ছিল কিন্তু সেখানে কোন বাজার মূল্য ছিল না।

গাড়ি চালানোর সময় লু আলফ্রেডকে অতিক্রম করে চলে গেল। যখন লু আলফ্রেডকে দেখতে পেল, তখন আলফ্রেড একটা গাছে হেলান দিয়ে ধূমপান করছিল। কিন্তু যেই মুহূর্তে আলফ্রেড লুকে দেখতে পেল। আলফ্রেড একটা ঝাটা নিল এবং পাতা আঁটাতে শুরু করল, না ভাবল, একজন অলস লোক, কিন্তু সুন্দর দেখতে। লোকটার লক্ষণগুলো লু-কে একজনের কথা মনে করিয়ে দিল। যখন সে হলঘরের মধ্যে দিয়ে সিঁড়িতে উঠে পাঠাগারে যাচ্ছিল, লু একবার ন্যাথানিয়াল গ্রিনসর ছবির দিকে দৃষ্টিপাত করল। ছবিটা ম্যান্টলপিস-এর উপর ছিল। ছবিটা ভিক্টোরিযান প্রাচুর্যের চূড়া হিসাবে পরিগণিত হচ্ছিল। পিছনে একটা আরামকেদারা ছিল। এই ছবিটার হাতগুলো ধারণ ক্ষমতা যুক্ত পাকস্থলীতে ছিল। যখন লু-সেই ছবিটার পাকস্থলী থেকে মুখের দিকে তাকাল, তখন সে ছবিটার সুন্দর ভ্রু এবং কালো গোঁফ দেখল। সে ভাবল ন্যাথানিয়াল গ্রিনসকে খুব সুন্দর দেখতে ছিল। যাকে খানিকটা আলফ্রেড-এর মত দেখতে।

সে তারপরে পাঠাগারে গেল। দরজা বন্ধ করে দিল, তারপর টাইপরাইটার খুলল, তারপর পাশের ড্রয়ার থেকে ডায়েরিটা বার করল। খোলা জানলা দিয়ে সে মিস গ্রিনসকে দেখতে পেল যে একটা রঙীন পোশাক পরে আগাছাগুলো তুলছিল। সেখানে দুদিন ভেজা দিন ছিল তাই আগাছাগুলো খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠেছে।

লু যেহেতু একটা শহরের মেয়ে, সে স্থির করল যদি তার একটা বাগান হয় তাহলে সেখানে শিলাপ রাখবে না। কারণ এতে প্রচুর আগাছা জন্মে। এবং সেগুলোকে হাত দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়, তারপর লু আবার তার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

যখন মিসেস ক্রসওয়েল পাঠাগারে সাড়ে এগারটার সময় কফি নিয়ে প্রবেশ করল। সে খুব রেগে ছিল। সে দুম করে চায়ের ট্রেটা টেবিলে রেখে দিল, এবং তারপর অন্যদিকে তাকাতে লাগল।

বাড়িতে কিছুই নেই। আমার এখন কি করা উচিত। আমাকে অবশ্যই জানতে হবে, আলফ্রেড-এর কোনও পাত্তা নেই।

–সে রাস্তায় ঝাঁট দিচ্ছিল, যখন আমি এখানে আসলাম, তাকে রাস্তায় দেখলাম। লু বলল।

আমি হলফ করে বলতে পারি, এটা সত্যিই একটা ভালো কাজ।

-মিসেস ক্রসওয়েল সজোরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসল এবং দরজায় দুম করে আওয়াজ করে বেরিয়ে গেল। লু…নিজের প্রতি ভেঙ্গচি কাটল। সে বিস্মিত হয়ে গেল, ভাইপো কেমন হবে।

সে কফিটা শেষ করল। এবং তারপর আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। এটা এতটা ব্যস্ত কাজ যে দ্রুত সময় অতিবাহিত হতে লাগল। ন্যাথানিয়াল গ্রিনস যখন তার দিনলিপি রাখত, সে এই খোলমেলা স্বভাবের আনন্দে সামিল হয়েছিল, লু বলল, একটা দ্রুত সম্পাদনার কাজ খুব জরুরি।

যেহেতু সে এটা শুনছিল। সে বাগান থেকে একটা আর্তনাদ শুনতে পেল, লাফিয়ে উঠে সে খোলা জানালার দিকে তাকাল। মিস গ্রিনস তার প্রস্তরময় বাগান থেকে টলতে টলতে বাড়ির দিকে আসছিল, সে তার হাতগুলো তার বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে আসছিল। তার বুকের মধ্যে একটা শর গেঁথে গিয়েছিল, লু চিনতে পেরেছিল এটা নিশ্চয়ই শর বা তীর হবে।

মিস গ্রিনসর মাথা তার নিজের বুকে ঝুঁকে যাচ্ছিল, সে লুকে খুব নিম্নস্বরে বলেছিল, …হত্যা …সে আমাকে হত্যা করেছে একটা শর দিয়ে…আমি সাহায্য চাই…।

লু দরজার দিকে ছুটে গেল। সে হাতলটা ঘোরাল, কিন্তু দরজাটা খুলছিল না, সে এক কিংবা দু মিনিট ধরে এই ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছিল, কিন্তু সে জানত না যে তাকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে, সে আবার জানলার দিকে ছুটে গেল।

–আমি বন্দী হয়ে গেছি।

মিস গ্রিনস যে লুর দিকে পেছন ফিরে ছিল, এবং কঁপছিল সে ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারীকে জানালা দিয়ে ডাকছিল।

–পুলিশকে ফোন কর, টেলিফোন…তারপর মাতালের মত এদিক-ওদিক দুলতে দুলতে সে অদৃশ্য হয়ে গেল তারপরে দেখা গেল মিস গ্রিনস বসার ঘরে রয়েছে, কিছুক্ষণ পর লু-চায়না মাটির কিছু আসবাবপত্র ভাঙ্গার আওয়াজ পেল। একটা খুব জোরে শব্দ এবং তারপর সবকিছু নিস্তব্ধ হয়ে গেল। তার মনের কল্পমান সে আবার দৃশ্যটাকে পূর্ণগঠিত করল, মিস গ্রিনস অন্ধের মত টলছিল। তার পাশে একটা টেবিল ছিল এবং সেখানে চায়ের সেটগুলো ছিল।

বেপরোয়াভাবে লু দরজায় লাফিয়ে পড়ল। তারপর ডাকতে এবং চেঁচাতে লাগল, সেখানে কোনও লতাপাতা পাইপ ছিল না। সেগুলো তাকে হয়ত সাহায্য করত এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য।

দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে সে ক্লান্ত হয়ে গেল, সে জানলার দিকে ফিরে তাকাল। তার ঘরে বসার ঘরের জানালা থেকে রক্ষণাবেক্ষণকারীর মাথাটা দেখা গেল।

–এস, আমাকে এখান থেকে বার কর মিসেস অক্সলে, আমি এখানে বন্দি হয়ে আছি।

–আমিও বন্দি হয়ে আছি, মিসেস অক্সলে বলল।

-সত্যি, একটা এক সশ্রদ্ধ ভয়মিশ্রিত ঘটনা। আমি পুলিশকে ফোন করেছি। এই ঘরের একটা বাড়তি অংশ আছে, কিন্তু মিসেস অক্সলে আমরা বুঝতে পারছি না কেন আমাদের তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আমি কখনই চাবির ঠিকানা শুনতে পাইনি, তুমি কি পেয়েছ?

-না, আমিও কিছুই শুনতে পাই নি, তাহলে আমরা এখন কী করব? আলফ্রেড হয়ত এটা শুনে থাকতে পারে। লু তীক্ষ্ণস্বরে আলফ্রেড, আলফ্রেড বলে চেঁচাতে লাগল।

–তুমি রাত্রির খাবার খেতে যাচ্ছ না এখন কটা বেজেছ তুমি জান?

লু তার ঘড়ির দিকে তাকাল-১২টা বেজে ২৫ মিনিট হয়ে গেছে।

–যতক্ষণ না ১২টা ৩০ মিনিট বাজবে, ততক্ষণ সে যাবে না, কিন্তু আগে যখনই সে পারত তখনই সে ছিকত।

-তুমি কি এটা মনে কর

লু বলতে চাইল–তুমি কি মনে কর সে মরে গেছে? কিন্তু তার গলায় কথাগুলো আটকে গেল।

আর কিছু করার ছিল না, কিন্তু অপেক্ষা করতে হল। সে জানলার উপর উঠে বসল। এটা মনে হল যে একটা পুলিশ হেলমেট পরে ঘরের কোণা থেকে বেরিয়ে আসছে। সে জানলায় হেলান দিয়ে থাকল। তারপর আলফ্রেড লু-র দিকে তাকাল, তার নিজের চোখ বন্ধ করে। তারপর তার গলার আওয়াজে তিরস্কার বেরিয়ে আসছিল।

সে খুব রেগে গিয়ে বলল–এখানে কি হচ্ছে? জানালা দিয়ে লু এবং মিসেস ক্রসওয়েল তার দিকে কিছু উত্তেজিত তথ্য ছুঁড়ে দিচ্ছিল।

কনস্টেবল একটা নোটবই এবং একটা পেনসিল আনল। তোমরা মহিলারা নিজেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেছ এবং নিজেদের সেখানে বন্দি করেছ? ঠিক আছে, তোমাদের নামগুলো বল?

-না, আমরা নিজেদের তালাবন্ধ করিনি, কেউ আমাদের এখানে আবদ্ধ করে রেখেছিল, এস আমাদের এখান থেকে মুক্ত কর।

তারপর কনস্টেবল তিরস্কার করে বলল–সব কিছু ঠিক সময়েই ঘটে। তারপর নিচের জানলায় অদৃশ্য হয়ে গেল।

সময়ও অনির্দিষ্ট হতে লাগল। লু একটা গাড়ি আসার আওয়াজ পেল, মনে হল এটা একটা ঘণ্টা, কিন্তু তিন মিনিটের মধ্যেই মিসেস ক্রসওয়েল এবং লুকে পুলিশ সার্জেন্ট মুক্ত করল, যেহেতু সার্জেন্ট অনেক বেশি সতর্ক এবং তৎপর ছিল।

লুর স্বর আস্তে হয়ে গেল এবং বলল–মিস গ্রিনস কোথায়? কি কি ঘটেছিল?

সার্জেন্ট তার গলাটা খুলে দিল। সে বলল–আমি তোমাকে এটা বলে ভুল করেছি ম্যাডাম, আমি মিসেস ক্রসওয়েলকে বলেছিলাম যে মিস গ্রিনস মারা গেছে।

মিসেস ক্রসওয়েল বলল–হত্যা করা হয়েছিল, এটা কি সত্যিই হত্যা?

সার্জেন্ট সন্দেহাতীতভাবে বলল–যদি এটা দুর্ঘটনা হত, তাহলে কিছু জেলে শর এবং তীর নিক্ষেপ করত।

আবার একটা গাড়ি আসার আওয়াজ পাওয়া গেল, সার্জেন্ট বলল।

–এটা নিশ্চয়ই MO হবে। এবং তারপর সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসল।

 কিন্তু ইনি MO ছিল না, যখন লু এবং মিসেস ক্রসওয়েল সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিল, একজন ইতস্ততভাবেই সামনের দরজায় প্রবেশ করল এবং থেমে গেল। তারপর বিভ্রান্ত অবস্থায় চারদিক ফিরে তাকাতে লাগল।

এইরকম সুন্দর স্বর লুর খুব চেনা লাগল–সম্ভবত মিস গ্রিনসর পরিবারের সঙ্গে সদৃশতা ছিল,–তাই সে জিজ্ঞাসা করল।

-মিস গ্রিনস কি এখানে থাকে?

-তোমার নামটা দয়া করে বলবে, সার্জেন্ট জিজ্ঞাসা করল। লোকটি বলল–আমার নাম ফ্লেচার, ন্যাট ফ্লেচার, আমি মিস গ্রিনসর ভাইপো।

–সত্যি নাকি–আমি সত্যিও দুঃখিত–আমি নিশ্চিত।

 ন্যাট ফ্লেচার জিজ্ঞাসা করল–কিছু কি ঘটেছে?

–সেখানে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। তোমার কাকিমাকে একটা তীর দিয়ে বিদ্ধ করা হয়েছে।

মিসেস ক্রসওয়েলকে মৃগী রোগ আচ্ছন্ন করেছিল এবং সে সুস্থ অবস্থায় ছিল না।

-তোমার কাকিমাকে হত্যা করা হয়েছে।

.

০৩.

 ইন্সপেক্টার ওয়েলচ চেয়ার নিয়ে টেবিলের কাছে বসল এবং তার দৃষ্টি সেই ঘরের চারজনের দিকে তাকাল, এটা ওই একই দিনের সন্ধেবেলা, সে ওয়েস্ট হাউসে গেছিল লু-অক্সলের বিবৃতি নেওয়ার জন্য।

–তুমি কি সঠিক শব্দটা সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে তাকে নিক্ষেপ কর–সে আমাকে একটা শর নিক্ষেপ করল–সে সাহায্য চায়?

লু মাথা নাড়াতে লাগল–সময়টা কত ছিল?

আমি আমার ঘড়ির দিকে এক মিনিট কিংবা দুমিনিট পরে তাকালাম-তখন ঘড়িতে বেজেছিল ১২:২৫ মিনিট।

তোমার ঘড়ি সঠিক সময় নির্দেশ করে তাই না?

আমি আমার নিজের ঘড়ির দিকে তাকালাম।

ইন্সপেক্টর রেমন্ড ওয়েস্টের দিকে তাকাল।

–এটা মনে হচ্ছে স্যার যে এক সপ্তাহ আগে তুমি এবং হোরেস বিল্ডলার দুজনেই মিস গ্রিনসর উইলের সাক্ষী ছিল?

সংক্ষিপ্তভাবে রেমন্ড বিকেলের পরিদর্শনের ঘটনাগুলি বর্ণনা করতে লাগল। এবং সে বলল, সে এবং হোরাস বিল্ডলার গ্রিনসর ফোল্লিতে গিয়েছিল।

ওয়েলচ বলল–তোমার এই পরীক্ষা-নীরিক্ষা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। মিস গ্রিনস আলাদভাবে তোমাকে বলেছে, বলেনি কি? বল উইলটা সম্বন্ধে সেটা মিসেস ক্রসওয়েলের পক্ষে করা হয়েছিল। এই মিস গ্রিনস ছিল রক্ষণাবেক্ষণকারী সে মিসেস ক্রসওয়েলকে কোন মজুরি দিত না কারণ মিসেস ক্রসওয়েল তার উইল পাবে বলে।

-হ্যাঁ, এটাই সে আমাকে বলছিল। তুমি কি মনে কর মিসেস ক্রসওয়েল ওটা সম্বন্ধে খুব বেশী সতর্ক।

আমি এটা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, মিস গ্রিনস এটা আমাকে বলেছে এবং মিসেস ক্রসওয়েল বুঝেছিল, গ্রিনস কি বোঝাতে চেয়েছিল। যাইহোক মিস গ্রিনস আমাকে বলেছিল যে সে এসেছিল মিসেস ক্রসওয়েলের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া করার জন্য।

তাই মিসেস ক্রসওয়লকে বিশ্বাস করতে হল। এবং মিস গ্রিনস বলেছিল যে তাকে একজন লোক তীর নিক্ষেপ করেছিল–

-সত্যিই কি তাকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল?

-হ্যাঁ সার্জেন্ট কেলে তাকে বার করে এনেছিল, এটা পুরনো আদবকায়দার চাবিও বটে। চাবিটা তালার মধ্যে ছিল না। এবং এটাতে কোন কিছু কৌশল প্রয়োগ করে খোলা যাচ্ছিল না, তুমি এটা ভাবতে পার মিসেস ক্রসওয়েলকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল এবং বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু ঘরের মধ্যে কোনও শর বা তীর ছিল না। এবং জানলা থেকেও মিস গ্রিনসকে তীর নিক্ষেপ করা হয়নি। জানলার কোণাগুলি বাধা দিয়েছিল।

তারপর রেমন্ড একটু থামল এবং বলতে লাগল :

–তুমি কী মনে কর মিস গ্রিনস একজন বাস্তবিক ঠাট্টাকারী?

মিস মার্পল তার কোণা থেকে তীক্ষ্ণভাবে তাকালেন।

মিস মার্পল বলল–উইলটা মিসেস ক্রসওয়েল-এর অনুকূলে নেই।

ইন্সপেক্টর ওয়েলচ বিস্মিত হয়ে গেল।

সে বলল–তুমি খুব চালাকি করে অনুমান করেছ না, মিসেস ক্রসওয়েল নামটা কি অনুকূল নয় উইলের পক্ষে।

এটা মি. নেস্নিথ-এর মত ব্যাপার মিস মার্পল বললেন, তার মাথা নেড়ে। মিস গ্রিনস, মিসেস ক্রসওয়েলকে বলেছিল সে তাকে সবকিছু দিয়ে দেবে। সেজন্য তাকে মজুরি প্রদান করেনি। কিন্তু সে তার সমস্ত টাকা ক্রসওয়েলকে না দিয়ে অন্য কাউকে দিয়েছিল। যাইহোক সে খুব আনন্দিত ছিলও বটে।

যাই হোক মিসেস অক্সলে আমাদের বলেছিল কোথায় উইলটা আছে, ইন্সপেক্টর বলল। সে আরো বলল, যদি অক্সলে না বলত তাহলে আমাদের অনেক বেশী করে খুঁজতে হত।

রেমন্ড ওয়েস্ট বলল–এটা একধরনের ভিক্টোরিয়ানদের অনুভূতির হাস্যকর অবস্থা। মনু বলল মিস গ্রিনস তার সমস্ত টাকাকড়ি তার ভাইপোকে দিয়ে দিয়েছে।

ইন্সপেক্টর তার মাথা নাড়াল। ইন্সপেক্টর বলল, না, সে এটা ন্যাট ফ্লেচারকে দেয়নি, এই গল্পের অন্য ঘটনা আছে–সম্ভবত আমি এই স্থানে নতুন এবং আমি এখানে অন্যের কথায় বিশ্বাস করতে হচ্ছে–কিন্তু আমার মনে হচ্ছে যে পুরনো দিনে মিস গ্রিনস এবং তার বোন দুজনেই একজন শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিল এবং মিস গ্রিনসর বোন শিক্ষককে পেয়েছে, না সে তার সমস্ত টাকাটা তার ভাইপোকে দেয়নি। সে থেমে গেল, তারপর তার চিবুক ঘসতে লাগল। তারপর বলল, মিস গ্রিনস সমস্ত টাকাকড়ি আলফ্রেডকে দিয়ে গেছে।

জোয়ান বিস্মিত হয়ে বলল–আলফ্রেড, সেই মালী?

–হ্যাঁ, মিসেস ওয়েস্ট, আলফ্রেড পোলক।

লু কেঁদে বলল–কিন্তু কেন?

মিস মার্পল কাশতে শুরু করলেন এবং বিড়বিড় করে বললেন।

–আমি মনে করি, হয়ত আমি ভুলও বলতে পারি, এখানে কিছু পারিবারিক কারণ রয়েছে।

ইন্সপেক্টার বলল–তুমি এইভাবে বলতে পার, এটা গ্রামে একটা সুপরিচিত ঘটনা। এটা মনে হচ্ছে থমাস পোলক, আলফ্রেডের দাদু, মিঃ গ্রিনসর চেনা পরিচয় ছিল খুব পুরনো বন্ধু হিসাবে।

–ঠিক বলেছ, লু বলল, এই সুদৃশতা সকালে দেখেছি।

সে মনে করল কিভাবে আলফ্রেড চলে যাওয়ার পর গ্রিনস এই ঘরটাতে এসেছিল এবং পুরনো গ্রিনসর ছবিটা দেখছিল।

মিস মার্পল হলফ করে বললেন–মিস গ্রিনস ভেবেছিল আলফ্রেড পোলকের এই ঘরটা সম্বন্ধে নিশ্চয়ই গর্বিত আছে, অথবা সে হয়ত এখানে থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু সেখানে তার ভাইপো এটাকে কোন গুরুত্ব দেয়নি এবং তাড়াতাড়ি এই ঘরটাকে বিক্রি করে দিয়েছিল, সে একজন অভিনেতা, তাই নয় কি? সে এখন কোন নাটকে অভিনয় করছে।

ইন্সপেক্টার ওয়েলচ ভাবল, একটা বৃদ্ধা মহিলাকে বিশ্বাস করা উচিত। কিন্তু সে বলল।

-আমি বিশ্বাস করি, ম্যাডাম, তারা জেমস ব্যারির নাটকগুলিতে অভিনয় করছে।

মিস মার্পল চিন্তাগ্রস্ত হয়ে বললেন বললেন–ব্যারির নাটকে।

ইন্সপেক্টার ওয়েলচ বলল–প্রত্যেকটা মহিলা কি জানে তারপরে সে রেগে লাল হয়ে গেল, তারপর বলল–নাটকটার নাম কি, সে আরো বলল, আমি থিয়েটার মঞ্চে বেশি যেতে ভালবাসি না, কিন্তু আমার স্ত্রী গেছে এবং গত সপ্তাহে এটা দেখেছে আমার স্ত্রী বলল, এটা সত্যিই একটা ভালো নাটক।

মিস মার্পল বললেন–ব্যারি অনেক সুন্দর সুন্দর নাটক লিখেছে। কিন্তু আমি বলব যখন আমি আমার বন্ধু, জেনারেল ইস্টারলির সঙ্গে, ব্যারির নাটক লিটল মেরি দেখতে গিয়েছিলাম। তারপর মিস মার্পল দুঃখিত হয়ে বলল, আমরা কেউই জানতাম না সেখানে কী দেখব?

ইন্সপেক্টার লিটল মেরি নাটকটা দেখেনি, তাই সে, বিভ্রান্ত হয়ে গেল। মিস মার্পল বলল-ইন্সপেক্টর, আমি যখন একটা মেয়ে ছিলাম, কেউই পাকস্থলী কথাটা উল্লেখ করেনি।

ইন্সপেক্টোর বেশি করে সমুদ্রের দিকে তাকাল এবং মিস মার্পল নিজে বিড়বিড় করতে লাগল, নাটকের শিরোনামগুলো।

প্রশাসনীয় ক্রিটেন খুব চালাকিপূর্ণ একটা নাটক। মেরি রোজ আর একটা সুন্দর নাটক, আমি কেঁদে বললাম আমার মনে পড়ছে, কোয়ালিটি স্ট্রিট আমি এটাকে বেশি পছন্দ করতাম না। তারপর আর একটা নাটক হল এ কিস কর সিনড্রোমস, ও সত্যিই খুব ভাল নাটক।

ইন্সপেক্টার ওয়েলচ-এর নাটক নিয়ে কথা বলার মত কোনও সময় ছিল না, সে তারপর ঘটনাটাতে ফিরে গেল।

সে বলল–ব্যাপারটা হচ্ছে, আলফ্রেড পোলক কি জানত যে বৃদ্ধা মহিলাটি তার জন্য একটা উইল করে গেছে? সে কি পোলককে বলেছিল? ইন্সপেক্টার আরও বলল তুমি দেখ, সেখানে একটা তিরন্দাজি ক্লাব রয়েছে বোরহাম লভেল-এ এবং আলফ্রেড পোলক তার একজন সদস্য, আলফ্রেড পোলক অবশ্য ভালো ধনুর্বিদ।

রেমন্ড ওয়েস্ট জিজ্ঞাসা করল–তুমি কী এখনও বুঝতে পারনি এটা ঠিক যে দুজন মহিলাকে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল এবং পোলক জানত যে এই দুই মহিলা কোথায় ছিল।

ইন্সপেক্টার রেমন্ড ওয়েস্ট-র দিকে তাকাল। তারপর বিষাদগ্রস্ত স্বরে, ইন্সপেক্টার বলল–সে অপরাধ করে অন্য জায়গায় থাকার অজুহাত দেখিয়েছে।

আমি সবসময় মনে করি, এটা সন্দেহজনক।

 ইন্সপেক্টার ওয়েলচ বলল–হ্যাঁ, এটা সত্যিই সন্দেহের, তুমি একজন লেখক হিসাবে এই কথা বলছ।

রেমন্ড ওয়েস্ট বলল–আমি গোয়েন্দা গল্প লিখি না।

ইন্সপেক্টার ওয়েলচ বলল–তুমি সন্দেহভাজন ঘটনা জান, কিন্তু আমরা দুর্ভাগ্যবশত এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে হত।

ইন্সপেক্টার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল।

ইন্সপেক্টার বলল–আমরা তিনজনকে সন্দেহ করেছি। এই তিনজনের ভীষণ কাছাকাছি সম্পর্ক ছিল এই ঘটনাটাতে, সব থেকে অদ্ভুত ঘটনা হচ্ছে যে, এটা মনে হচ্ছে কেউই এই কাজটা করেনি, রক্ষণাবেক্ষণকারীর সাথে আলোচনা করেছি। তার ভাইপোর সঙ্গে ন্যাট ফ্লেচারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এবং সেই মুহূর্তে কয়েক মাইল দূরে একজন লোক এবং তার সহকারী, গ্যারেজে গাড়িতে তেল ভরছিল, এবং আলফ্রেড পোলকের হয়ে দুজন শপথ করে বলতে পারে সে ডগ এবং ডাকে প্রবেশ করেছল ১২টা ২০-র সময় এবং তারপর সেখানে খাবার খেয়েছিল।

রেমন্ড ওয়েস্ট আশাপূর্ণভাবে বলল–এটা সত্যিই সন্দেহের। ইন্সপেক্টার ওয়েলচ বলল–হ্যাঁ এটা হতে পারে কিন্তু যদি তাই হয়, তাহলে সে এটা প্রকাশ করবে কেন?

সেখানে নিস্তব্ধতা বিরাজ করল, তারপর রেমন্ড মিস মার্পলের দিকে ঘুরে তাকাল যেখানে মিস মার্পল চিন্তামগ্ন হয়ে বসেছিলেন।

রেমন্ড বলল এবার তোমার পালা জেন কাকিমা। ইন্সপেক্টার বিভ্রান্ত হয়ে গেল, জোয়ানও বিভ্রান্ত হয়ে গেল, সার্জেন্টও বিভ্রান্ত হয়ে গেল, আমিও বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম, জোয়ান এবং লুও বিভ্রান্ত হয়ে গেল। কিন্তু জেন কাকিমা এটা তোমার পক্ষে স্পষ্ট হওয়া উচিত। আমি কি ঠিক বলেছি?

মিস মার্পল বললেন–আমি এটা বলব না, এটা একটা হত্যা, খেলা নয়। আমি মনে করি না, মিস গ্রিনস মরতে চেয়েছিল এবং এটা একটা নারকীয় হত্যাও ছিল বটে। একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং ঠাণ্ডা মাথায় খুন। এটা মজা করার ব্যাপার নয়।

-রেমন্ড লজ্জিত হয়ে বলল–আমি দুঃখিত, আমি এতটা উদাস নই যতটা আমি বলছি। একজনের এটাকে খুব হালকাভাবে নেওয়া উচিত মিস মার্পল বলল, এগুলি হচ্ছে আধুনিক প্রবণতা, সমস্ত যুদ্ধই মজা হিসাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। সত্যি, আমি চিন্তাহীন হয়েছিলাম যখন আমি বলেছিলাম যে তুমি উদাসীন ছিলে।

জোয়ান বলল–এটা সেটা নয়, যদিও আমি, গ্রিনসকে ভালোভাবে চিনি।

মিস মার্পল বললেন–এটা একদম সত্যি, তুমি কিন্তু তাকে চেন না জোয়ান, আমিও তাকে চিনি না, একদিন বিকেলে কথাবার্তা থেকে রেমন্ড অনুভুতি সংগ্রহ করেছিল লু তাকে দুদিন ধরে জানত।

রেমন্ড বলল–এখন এস জেন কাকিমা, আমাকে তোমার মতামত বল, ইন্সপেক্টার কিছু মনে করবে না?

ইন্সপেক্টার ভদ্রভাবে বলল-একদমই না।

–ঠিক আছে, এই তিনজন লোকের উদ্দেশ্য ছিল এই বৃদ্ধা মহিলাকে হত্যা করা এবং সেখানে তিনটে কারণ আছে। কেন তিনজনের কেউই সেটা করেনি, রক্ষণাবেক্ষণকারী এটা করতে পারে না কারণ সে বন্দি ছিল ঘরের মধ্যে এবং মিস গ্রিনস বলেছিল যে একটা লোক তাকে হত্যা করেছিল। মালি এটা করেনি কারণ সে ওই সময় ভগ এবং ডাকের মধ্যে ছিল যখন হত্যাটা ঘটানো হয়েছিল, তার ভাইপোও এটা করবে না কারণ সে তার গাড়ি নিয়ে কিছুটা দূরত্বে ছিল হত্যার সময়।

ইন্সপেক্টার বলল–ঠিক বলেছ, ম্যাডাম।

-এবং এটা মনে হচ্ছে যে বাইরের কেউ এই কাজটা করেছে, কখন করেছে, আমরা জানি না।

রেমন্ড ওয়েস্ট বলল–সেটাই ইন্সপেক্টার জানতে চাইছে।

মিস মার্পল কৈফিয়ত সমর্থন করে বললেন–একজন সবসময় উল্টো করে সবকিছু দেখে। আমরা যদি এই তিনজনের অবস্থান পরিবর্তন করতে না পারি, তাহলে আমরা কি হত্যার সময়টা পরিবর্তন করতে পারি না?

লু জিজ্ঞাসা করল–তুমি কি বলতে চাইছ যে আমার হাতঘড়ি এবং দেওয়াল ঘড়ি দুটোই ভুল ছিল?

মিস মার্পল বললেন–না আমি সেটা বলতে চাই নি, আমি বলতে চাইছি যে যখন তুমি মনে করছ হত্যা কাণ্ডটা ঘটেছিল, তখন কিন্তু এটা ঘটেনি।

লু চিৎকার করে বলল–আমি এটা দেখেছিলাম।

–আমি বিস্মিত হয়ে যাই যে, তুমি কি এটা বলতে চাওনি, আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুমি জান, এটা কি সত্যি, ঘটনা ছিল না, তুমি এই কাজটার জন্য কেন নিযুক্ত হয়েছিলে?

জেন কাকিমা জিজ্ঞাসা করল–তুমি কি বলতে চাইছ।

–এটা খুব অদ্ভুত লাগছে। মিস গ্রিনস টাকা খরচ করা পছন্দ করত না এবং সে তুমি ইচ্ছা সহকারে রাজী হয়েছিলে, সেটা তোমাকে বলা হয়েছিল, এটা বলা হয়েছিল সম্ভবত তুমি ওই পাঠশালাতে ছিলে, তুমি জানলা দিয়ে দেখেছিলে যাতে তুমি মূল সাক্ষী হতে পার,-একটা নির্দিষ্ট সময় এবং স্থান হত্যার জন্য।

লু অবিশ্বাস্যভাবে বলল তুমি এটা বলতে পার না যে মিস গ্রিনসকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

মিস মার্পল বললেন-আমি কি বলতে চাইছি এটা কি যে তুমি মিস গ্রিনসকে চেন না, সেখানে সত্যি কোনও কারণ নেই, তাহলে কি তুমি যখন মিস গ্রিনসকে দেখতে তার বাড়ি গিয়েছিলে, এটা কি সেই মিস গ্রিনস ছিল। রেমন্ড তাকে অনেকদিন আগে দেখেছে? মিস মার্পল বলতে লাগলেন আমি জানি, এটা বলে সে লুর উত্তরকে বাধা দিতে চাছিল সে একটা নিজস্ব পুরনো আদবকায়দাযুক্ত পোশাক পরেছিল এবং একটা অদ্ভুত ধরনের টুপি এবং অগোছালো চুল ছিল। সে ঠিক রেমন্ডের মত ঘটনাটা বলল। কিন্তু ওই দুজন মহিলা, তুমি জান, একই রকম বয়স, একই উচ্চতা সম্পন্ন। আমি রক্ষণাবেক্ষণকারীর কথা বলছি এবং মিস গ্রিনস।

লু চিৎকার করে বলল-রক্ষণাবেক্ষণকারী খুব মোটা কিন্তু তার মনটা খুব নরম।

 মিস মার্পল কাশতে লাগলেন–কিন্তু অমি দেখছি এখনকার দিনে আমরা অবাধে দোকানে চলাফেরা করছি। এবং একজনের পক্ষে এটা খুব সহজ আবক্ষ মূর্তি রাখা।

রেমন্ড দাবী করে বলল–তুমি কী বলতে চেষ্টা করছ?

–আমি ভাবছিলাম যে, এই দুই-তিনদিনে লু সেখানে কাজ করছিল। একজন মানুষ দুটো অংশ একসঙ্গে ভূমিকা নিতে পারে। তুমি নিজেকে বলেছিলে যে লু তুমি রক্ষণাবেক্ষণকারীকে দেখেছিলে কিনা মনে পড়ছে না। একমাত্র একটা মাত্র দৃশ্য ছাড়া সেখানে সেই মহিলাটি সকালে কফি ট্রেতে করে নিয়ে এসেছিল। একজন দেখে এই বিভিন্ন লোকগুলো বিভিন্ন চরিত্রে এক কিংবা দু-মিনিটের মধ্যে অভিনয় করছে এবং আমি নিশ্চিত এই পরিবর্তন শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তুমি কি মনে কর জেন কাকিমা যে মিস গ্রিনস আমার এখানে কাজ করার আগে মারা গেছে?

আমি বলব–সে মরেনি, এইরকম একটা বিবেকবুদ্ধিহীন বর্জিত মহিলা রক্ষণাবেক্ষণকারী এটা করতে পারে। তারপর সে তোমার সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিল এবং তুমি তার ভাইপোেকে ফোন করে জিজ্ঞাসা কর দুপুরের খাওয়ার সঠিক সময়ে আসতে। একজন লোক এটা জেনেছিল যে, এই মিস গ্রিনস সেই মিস গ্রিনস নয়। এবং তুমি যদি মনে কর যদি দুদিন কাজ করার সেখানে ভেজা ছিল এবং মিস গ্রিনস এখানে থাকত, কিন্তু আলফ্রেড এখানে আসত না। তার দ্বন্দ্ব ছিল রক্ষণাবেক্ষণকারীর সঙ্গে এবং গত সকালে আলফ্রেড যখন গাড়ি চালাচ্ছিল, মিস গ্রিনস তার বাগানে শিলাময় স্কুপে কাজ করছিল–আমি তখন নেই শিলাস্তূপগুলোর দিকে তাকালাম।

–তুমি কি মনে কর মিসেস ক্রসওয়েল মিস গ্রিনসকে হত্যা করেছে?

-আমি মনে করি, কফি আনার পর ওই মহিলা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং তারপর বাইরে গেছিল, এবং সে মিস গ্রিনসের অচেতন দেহকে বসার ঘরে বয়ে নিয়ে গেছিল। তারপরে সে মিস গ্রিনসর হিসাবে সাজল আবার শিলাস্তূপে বাগানে কাজ করতে গেল। যেখান থেকে তুমি জানলা দিয়ে দেখতে পাচ্ছিলে। সেই সময় গ্রিনস আর্তনাদ করতে লাগল এবং ঢলতে ঢলতে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে বুকে তীরবিদ্ধ অবস্থায়…যেন এটা মনে হচ্ছে তার গলায় আটকে গেছে। সে সাহায্যের জন্য চীৎকার করতে এবং বলতে লাগল সে আমাকে আঘাত করেছে। যাতে রক্ষণাবেক্ষণকারীকে সন্দেহ না করা হয়। সে রক্ষণাবেক্ষণকারীকে জানালা দিয়ে ডাকছিল যেন সে তাকে সেখান থেকে দেখেছে। তারপর সে টেবিলের উপর পোর্সিলেন ছুঁড়ে ফেলেছিল–এবং দ্রুত সিঁড়িতে উঠে গেল। তারপর তার পোশাক পরে নিল এবং তারপর মাথাটা জানলার বাইরে দেখাতে লাগল এবং বলল সে আটকে আছে।

লু বলল–তাকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।

–আমি জানি, সেখানে পুলিশ আসছে, কি পুলিশম্যান?

আমি বিস্ময় হয়ে যাই, কি পুলিশ ইন্সপেক্টার তুমি আমাকে বল কখন এবং কিভাবে। তুমি এখানে উপস্থিত হয়েছিলে?

ইন্সপেক্টার হতবুদ্ধি হয়ে গেল।

১২টা বেজে ২৯ মিনিটে আমরা একটা টেলিফোন পেলাম মিসেস ক্রসওয়েলের কাছ থেকে সে মিস গ্রিনসর রক্ষণাবেক্ষণকারী ছিল এবং কোন মতে বলল যে তার মহিষীকে মারা হয়েছে। আমি এবং সার্জেন্ট কেলে গাড়ি করে সেখানে গেলাম এবং ১২টা বেজে ৩৫ মিনিটে সেখানে উপস্থিত হলাম। আমরা দেখলাম মিস গ্রিনস মরে পড়ে আছে। এবং দুজন আবদ্ধ অবস্থায় ঘরের মধ্যে ছিল।

মিস মার্পল লু-কে বলল তুমি ব্যাপারটা বোঝ যে পুলিশকে তুমি দেখেছিলে, সে কিন্তু সত্যি পুলিশ কনস্টেবল ছিল না, তুমি তাকে কখনোই ভাবনি। কারুর পক্ষে ভাবা সম্ভব নয়। একজন আইন অনুযায়ী একটা মাত্র ইউনিফর্ম পরতে পারে।

-কিন্তু কেন?

-যদি তারা একটা নাটক এ কিস ফর সিনড্রেলা পরিবেশন করছিল, একজন পুলিশ হল মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করে, ন্যাট ফ্লেচারকে তার নিজের পোশাক পরে অভিনয় করতে হল। তাকে একটা গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হল যাতে তার সমস্ত মনযোগ সময়ের দিকে থাকে–সময়টা ছিল ১২টা বেজে ২৫ মিনিট, তারপর তাড়াতাড়ি চল। ঘরটা কোণায় রেখে দাও। তারপর পুলিশের পোশক পর এবং কাজটা শুরু কর।

কিন্তু কেন? কেন?

একজনকে বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে রাখতে হবে এবং একজনকে মিস গ্রিনসর গলায় তীরবিদ্ধ করতে হবে। তুমি কাউকে তীর দিয়ে আঘাত কর–কিন্তু এটার জন্য প্রচণ্ড শক্তি প্রয়োজন।

তুমি কি মনে কর তারা দুজনে এর মধ্যে ছিল।

 হ্যাঁ, আমি মনে করি, মা এবং ছেলে একরকম নয়।

 কিন্তু মিস গ্রিনসর কেন অনেক আগে মারা গেছে?

হ্যাঁ আমার কোন সন্দেহ নেই যে মি. ফ্লেচার আবার বিয়ে করেছিল। সে এমনভাবে ভান করে মনে হয় যেন বাচ্চা শিশুটিও মারা গেছে। এবং এই তথাকথিত ভাইপো হল দ্বিতীয় স্ত্রীর বাচ্চা এবং সেখানে সত্যিই কোন সম্পর্ক নেই। মহিলাটি রক্ষণাবেক্ষণকারীর স্থান লাভ করেছিল এবং জায়গাটাকে লক্ষ্য করছিল। তারপর ফ্লেচার নিজে তার ভাইপো হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল এবং তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল–যদিও সে পুলিশের পোশাকে এসে কিছু ব্যঙ্গকর উক্তি করেছিল এবং জিজ্ঞাসা করেছিল এই নাটকটিকে দেখতে, কিন্তু আমি মনে করি সে সত্যিটাকে মেনে নেয়নি, সন্দেহ করেছিল এবং তাকে দেখতে অস্বীকার করেছিল, সে তার উত্তরাধিকারী হত যদি সেই উইল না করে মারা যেতে। কিন্তু অবশ্যই সেই রক্ষণাবেক্ষণকারীর অনুকূলে উইলটা করেছিল, (যেটা তারা ভেবেছিল) তারপর এটা পরিষ্কার হয়ে গেল।

জোয়ান আপত্তি করে বলল। কেন শর বা তীর ব্যবহার করা হয়েছিল। এটা অনেক দূর থেকে আনতে হয়। মোটেই দূর থেকে আনা হয়নি। আলফ্রেড তিরন্দাজি ক্লাবে যুক্ত ছিল। আলফ্রেডকে দোষ দেওয়া হয়েছিল। আলফ্রেড যে ধারাতে ছিল ১২টা ২০ মিনিটে। এটাই তার পক্ষে দুর্ভাগ্যের বিষয়। সেজন্যই তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আলফ্রেড সবসময় সময়ের কিছু আগে বেরিয়ে যায় এবং এটাই তার পক্ষে সঠিক– জোয়ান মাথাটা নাড়ল, এটা মনে হচ্ছে সবকিছুই ভুল হয়েছে। আম মনে করি আলফ্রেড-এর অলসতা তার নিজের জীবনকে রক্ষা করেছিল।

ইন্সপেক্টার তার গলা থেকে তীর বার করল।

–ঠিক আছে ম্যাডাম, তোমার প্রস্তাবগুলো সত্যিই আগ্রহজনক আমাকে অনুসন্ধান করে দেখতে হবে।

.

০৪.

 মিস মার্পেল এবং রেমন্ড ওয়েস্ট বাগানের কাছে শিলাস্তূপের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। এবং বাগানের ঝুড়ির দিকে তাকাচ্ছিলেন সেটা শুকনো ফলে ভর্তি ছিল। মিস মার্পল বিড়বিড় করতে লাগলেন–অ্যালিসান, স্যাক্লিফ্রেজ, সিটিসাস, থিম্বল ক্যামপেনুলা…।

-হ্যাঁ এই সমস্ত প্রমাণগুলো আমার দরকার। যে এই বাগানে আগাছাগুলো তুলছিল, সে কিন্তু মালী নয়–সে গাছ উপড়ে ফেলছিল আগাছা ভেবে, কিন্তু আমি জানি আমি সঠিক। ধন্যবাদ রেমন্ড আমাকে এখানে আনার জন্য, আমি এই জায়গাটা নিজের জন্য দেখতে চাই।

সে এবং রেমন্ড দুজনে রাগী গ্রিনস কলির দিকে তাকিয়ে থাকল।

কিন্তু একটা কাশি তাদেরকে ঘুরতে বাধ্য করাল, একজন সুন্দর যুবক লোকও এই ঘরটার দিকে তাকাচ্ছিল।

সে বলল–প্লেগি বড় জায়গা, এটা খুব বড় এখনকার দিনে। আমি এটা সম্বন্ধে জানি না। আমি যদি একটা ফুটবলের পথ ধরলাম তাহলে অনেক টাকা উপার্জন করতাম। এইরকম একটা বাড়ি আমাকে তৈরী করতে হবে।

সে আমার দিকে লজ্জিত এবং কুণ্ঠিত হয়ে তাকাল।

আলফ্রেড পোলক বলল, আমি বলতে পারি এই বাড়িটা আমার দাদুর দাদু তৈরী করেছিল। সত্যিই এটা খুব সুন্দর বাড়ি, এবং তারা এটাকে গ্রিনস কলি বলে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *