গো-কল ব্রত
ব্রতকাল ও ব্রতচারিণী—চৈত্র মাসে চড়ক সংক্রান্তির দিন থেকে সারা বৈশাখ মাস রোজ গো-কল ব্রত করতে হয়। পাঁচ বৎসর বয়সে কুমারী এই ব্রত নেবে, চার বৎসর পালনের পর ব্রত উদযাপন করবে।
ব্রত-দ্রব্যাদি—গো-কল ব্রতের জন্য চাই:
১. দূর্বা ঘাস তিন আঁটি, ২. পাকা কলা তিনটি, ৩. পাখা একখানি, ৪. একঘটি জল, ৫. ছোটো একটি বাটিতে কিছুটা সরষের তেল, ৬. কিছুটা হলুদ বাটা, ৭. একটু সিঁদুর গোলা, ৮. একটু চন্দন, ৯. একখানি আরশি, ১০. একখানি চিরুনি।
ব্রত-অনুষ্ঠান: কুমারী গাই-গোরুর শিঙে তেল মাখিয়ে মাথায় একটু জলের ছিটে দেবে। তারপর গোরুর কপালে দেবে হলুদ, সিঁদুর, আর চন্দনের ফোঁটা। চার পায়ে তেল-হলুদ মাখিয়ে জল দিয়ে পা ধুইয়ে দেবে, তারপর আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দেবে পা; চিরুনি দিয়ে গোরুর মাথা আঁচড়ে দিয়ে আরশিতে দেখাবে তার মুখ।
এভাবে গোরুর পরিচর্যা করার পর এক আঁটি দূর্বা ঘাসে একটি আস্ত কলা দিয়ে মন্ত্র পড়ে গোরুকে খেতে দেবে।
মন্ত্র:
গো-কল গোকুলে বাস।
গোরুর মুখে দিয়ে ঘাস
হয় যেন মোর স্বর্গে বাস।।
এইভাবে তিন আঁটি দূর্বা ঘাস আর তিনটি কলা তিনবার মন্ত্র পড়ে খাওয়ানোর পর গোরুকে পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে বলবে:
মন্ত্র:
রোগ-শোক দূর হোক
কীট-পতঙ্গ দূর হোক।
মশা-মাছি দূর হোক।।
তোমাকে ঘুরিয়ে পাখা
আমার হাতে হোক সোনার শাঁখা।।
তারপর গোরুকে নমস্কার করবে।
উদযাপন দ্রব্য: গো-কল ব্রত উদযাপনের সময় চাই:
১. সোনার শিং দুইটি, ২. রূপার খুর চারটি, ৩. কাপড় একখানি, ৪. লাঠি একগাছা, ৫. ছাতা একটি। কাপড়, লাঠি, আর ছাতা পাবে রাখাল। শিং আর খুর পাবে ব্রাহ্মণে।
গো-কল ব্রত সমাপ্ত।