1 of 2

গোলদিঘির ভূত! – শিবরাম চক্রবর্তী

গোলদিঘির ভূত! – শিবরাম চক্রবর্তী

ভূতের কথা বলতে গেলে এক অদ্ভুত ঘটনার কথা আমার মনে পড়ে। বছর কয়েক আগের কথা। তখন সবে এক দৈনিক পত্রিকার আপিসে সাংবাদিকের কাজে ঢুকেছি।

নামমাত্র কাজ। রবিবারের কাগজে একটুখানি লিখতে হয়—ফি হপ্তায়। আমার একটা আলাদা স্তম্ভ ছিল, তাইতেই লিখতাম।

লেখার কাজ এমন কিছু না, কিন্তু পড়ার কাজটাই ছিল ভারী! সপ্তাহে একবার ওই একটুখানি লেখার জন্য এত বেশি আমাকে পড়তে হত—এত রকমের দৈনিক, সাপ্তাহিক আর সাময়িক পত্র ঘাঁটতে হত যে বলবার না। ভূত না হলেও, বলতে কি, সেই একটা বিভীষিকা ছিল।

এইরকম কাগজপত্র ঘাঁটবার কালে একদিন একটা খবর আমার চোখে পড়ল। দৈনিকটির প্রেরিত পত্রের স্তম্ভে একজনের একখানা চিঠি। চিঠিখানি স্তম্ভিত করবার মতোই।

পত্রদাতা লিখেছেন, ‘সম্পাদকমশাই, আমরা গোলদিঘি এলাকার বাসিন্দা। কিছুদিন থেকে ভূতের উপদ্রবে বড়োই উৎপীড়িত হচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে অশরীরী ভদ্রলোক তেমন কষ্টদাতা না হলেও যখন—তখন যেখানে—সেখানে তাঁর অবাঞ্ছনীয় আবির্ভাব আর অন্তর্ধানে এ অঞ্চলের সকলেই আমরা বিশেষ কাহিল হয়ে পড়েছি। ব্যাপারটা আমাদের প্লীহার পক্ষে খুব হিতকর নয়, এমনকী, হার্টের পক্ষেও। হার্ট যদিও পিলের মতন সহজে চমকাবার ছেলে না, কিন্তু তাহলেও, ছেলের মতো ফেল করতে পারে তো!—যাই হোক, আপনাদের বিশ্ববিশ্রুত পত্রিকার সংখ্যাহীন পাঠক—পাঠিকার কারও যদি এই ভৌতিক দুর্যোগের কোনো প্রতিকার জানা থাকে, যদি দয়া করে আপনার পত্রিকার মারফতে তিনি জানান তাহলে আমরা অত্যন্ত বাধিত হব। ইতি—ইত্যাদি।’

কলকাতার বুকের ওপর ভূত! একটু অভূতপূর্ব কাণ্ডই বই কী! এ কি কখনো সম্ভব হতে পারে?

‘কী ভাবছেন মশাই অমন গালে হাতে দিয়ে?’

আরেকজনের কথায় আমার চমক ভাঙল। এই কার্যালয়েরই, আমার এক সহযোগী। আমার মতোই আরেকজনা।

‘এই, ভূতত্ব।’ আমি বললাম—’ভূতত্ব নিয়েই ভাবছিলাম।’

‘ও, ভূতত্ব? আজকের ভূমিকম্পের কথা বলছেন? জাপানের সমুদ্রকিনারের তিনটি শহর ধসে গেছে, কত ঘর—বাড়ি গেছে, মরেছে যে কত হাজার—ইয়ত্তা নেই তার। বাস্তবিক, এই ভূমিকম্পগুলো কেন যে হয়, তার রহস্য আবিষ্কার করা—’

‘আজ্ঞে, সে ভূতত্ব নয়, আমি ভাবছি ভূতত্ব’—বাধা দিয়ে বলতে গেলাম।

‘একই কথা। ভূতত্ব আর ভূমিকম্পের তত্ত্ব এক। একই সূত্রে গাঁথা। একটার যদি আমরা কিনারা করতে পারি—’

‘আহা, তা নয়। তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাচ্ছিনে মশাই, আমি ভাবছি ভূত নিয়ে। ভূত আছে কি না, ভূতের অস্তিত্ব—নাস্তিত্ব এই সব নিয়ে। যেমন মহৎ থেকে মহত্ত্ব, আমসৎ থেকে আমসত্ব, তেমনি ভূত থেকে ভূতত্ব। ভূমিকম্পের সঙ্গে এর কোনোই সম্পর্ক নেই।’

ব্যাকরণমতে আরও উদাহরণমালা জোগাতে যাচ্ছিলাম, এমন সময়ে সম্পাদকের ঘর থেকে তলব এল।

যেতেই সেই কাগজটার ভূতপূর্ব অংশটা তিনি পড়তে দিলেন—’পড়ে দেখ।’

‘দেখেছি।’

সম্পাদক বললেন, ‘আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা আসেননি আজ, কেন কে জানে! তুমি একবার যাও দেখি। গোলদিঘির এই ভূতুড়ে ব্যাপারটার সবিশেষ জেনে এসো তো! খবরটা কালকের কাগজে সবিস্তারে ছাপাতে পারলে বেশ চাঞ্চল্যকর হবে। কাগজ কাটবে খুব।’

‘আজ্ঞে, মাপ করবেন আমায়। ভূত আমি বিশ্বাস করিনে।’ আমি জানালাম—’ভূতে আমার ভারি ভয়।’

‘বিশ্বাস করো না তো ভয় কিসের আবার?’ অবাক হলেন সম্পাদকমশাই।

‘আজ্ঞে, সেই জন্যেই তো। ওদের মোটেই বিশ্বাস নেই, ভূত ভারি ভয়ঙ্কর জীব।’

‘আহা, তোমাকে কি ভূতের সঙ্গে মুলাকাত করতে বলেছি? অমূলক ভয় তোমার। আরে, তাদের কি পাত্তা মেলে? যাদের বাড়ি উপদ্রব হচ্ছে সেখানে যাবে, পত্রদাতার সঙ্গে দেখা করবে। করে বিস্তারিত সব জেনে, ফলাও করে লিখে আনবে—কাজ তো এই!’

‘কিন্তু পত্রদাতার ঠিকানা তো কাগজে দেয়নি।’ আমি দেখালাম—’চিঠিতে লেখা নেই।’

‘আসল চিঠিতে আলবৎ ছিল, নইলে এ—চিঠি ছাপত না। কিন্তু সে—ঠিকানা তো ওই কাগজের দপ্তর থেকে জানা চলে না। তাহলে যে ব্যাপারটা ওরা টের পেয়ে যাবে। আমরা যা করতে যাচ্ছি, মালুম পেয়ে নিজেরাই করে বসবে আগে। সব মাটি হবে তাহলে।’

‘তাহলে?’ আমার প্রতিধ্বনি হয়।

‘একটুখানি জায়গা তো গোলদিঘি। অঞ্চলটায় ঘোরো গে। যাকে দেখবে একটু ভীত, ভাবিত, সন্ত্রস্ত—পাকড়াবে অমনি। মুষড়ে—পড়া কী ম্রিয়মাণ কেউ যদি তোমার নজরে পড়ে, ছেড়ো না তাকে। যদি কাউকে দেখ খুব বিচলিত, বুঝবে সেই তোমার এই পত্রদাতা, কিংবা এই পত্রদাতার মতোই অপর কেউ, ভূতের উৎপাতে প্রপীড়িত। বুঝেচো? আলাপ করে ভাব জমিয়ে আসল কথা আদায় করবে তার কাছ থেকে। এমন কি শক্ত কাজ?’

তিনি তো আমায় চাঙ্গা করতে চাইলেন, কিন্তু আমার প্রাণ ঠান্ডা হয়ে এল। ‘নিজস্ব সংবাদদাতার’ পরস্মৈপদী বেগার ঠেলতে—বিশেষত, যার পেছনে এত ঠ্যালা—মোটেই আমার ভালো লাগে না। তা ছাড়া, ভূতের ব্যাপারে উৎসাহ—এক কথায় ভূৎসাহ—চিরকালই আমার কম। ভূতত্বে আগ্রহ কোনোদিনই আমার নেই। ভূতের ত্রিসীমানায় আমি বিরল। আনাচে—কানাচে ভূতের গন্ধ পেলেই আমার ভোঁ—দৌড়!

‘আমি কি পারব?’ তবুও আমি গাঁইগুঁই করি।

‘পারবে হে, পারবে। তুমি তুখোড় ছেলে—তাই তো তোমাকেই এই গুরুভার চাপাচ্ছি…’

‘আজ্ঞে, আমার দ্বারা কি এই দুঃসাধ্য কাজ—’

‘হবে হে, হবে। অবশ্যি, চালাক তুমি তেমন নও, কিন্তু তা না হলেও, তোমার লাক আছে। তোমার ভাষাতেই বললাম কথাটা। তোমার ভাষা সহজে তুমি বুঝতে পারবে। সাদা বাংলায় কথাটা এই, এধারে—ওধারে একটু ঘুরে—ফিরে দেখবে, চোখ—কান খোলা রেখে। চাই কি, দৈবক্রমে একটু চেষ্টা না করতেই, হয়তো তোমার সঙ্গে লোকটার দেখা হয়ে যেতে পারে। এই নাও…’

এই বলে তিনি পকেট হাতড়াতে লাগলেন। তাঁর নিজের পকেট। হাতড়ে—টাতড়ে খুচরো—খাচরায় যা মিলল আমার হাতে সমর্পণ করলেন—

‘এই নাও টাকা দু—আড়াই হবে। কাজটা সারার পর কফি—হাউসে গিয়ে—গোলদিঘির কাছেই তো কফি—হাউস! কফি—টফি যা হয় খেয়ো প্রাণ ভরে।’

এতক্ষণে কাজটায় আমার গা লাগে। ‘যে আজ্ঞে’ বলে বেরিয়ে পড়ি। বউবাজার থেকে একেবারে বইয়ের বাজারে। কলেজ স্কোয়ারেই সটান!

অলিগলি ধরে ট্যাং ট্যাং করে তো পৌঁছলাম গোলদিঘি। দিঘিটার চার কোনায় দু—চক্কর মারা যাক একবার। দেখি কাউকে ভীত ভাবিত বিচলিত বিড়ম্বিত দেখা যায় কিনা!

বিকেল থেকেই মেঘলা লেগেছিল আজ। এখন আবার টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়তে লাগল। সন্ধে উৎরে গেছে কখন! গোলদিঘির গ্যাসবাতিগুলো টিম টিম করে জ্বলছে! আর আমি চক্কর মারছি তখনও গোলদিঘির চক্রান্তে।

একটা একটা করে বাদামের খোলা ভাঙছি, গালে ফেলছি, আর ভালো করে তাকাচ্ছি। না, বাদামের দিকে নয়, লোকগুলোর দিকে। কাউকে যদি আমার সম্মুখে ভূতগ্রস্ত দেখতে পাই!

কিন্তু দেখব কি, ভালো করে দেখতে—না—দেখতেই গোলদিঘি ফাঁকা হয়ে গেল। জলটাও একটু জোরে এল আবার। টিপ টিপ থেকে টপ টপ শুরু করল। এতক্ষণ যারা ঘুরপাক খাচ্ছিল এখানে, দেখতে দেখতে গেল কোথায়? জলের সঙ্গে হাওয়া হয়ে গেল নাকি? অ্যাঁ, ভূত নয় তো এরা সব? আমার গা ছমছম করে।

ভদ্রলোক বলেছিলেন কাজ সারা হলে কফি—হাউসে যেতে। আড়াই টাকা পকেটে নিয়ে আগেই আমি সেখানে পা বাড়ালাম। যদি সেখানেই সম্পাদক—কথিত, সম্প্রতি কফি—ত সেই ভদ্রলোকের পাত্তা মেলে আমার!

কফি—হাউসও ফাঁকা। বাদলার ধাক্কা এখানেও লেগেছে। এই বর্ষায় যে যার ঘরে বসে চা খেয়ে চাঙ্গা হচ্ছে, কফি—হাউসে হানা দেবার গরজ বোধ করেনি।

বসলাম গিয়ে কাফের এক কোণে। আর একজন মাত্র ছিল সেই টেবিলে। হাফশার্ট গায়ে, আধাবয়সি ভদ্রলোক। লোকটিকে কেমন যেন মুহ্যমান মনে হল!

মনে হল ইনি যেন ভূত—টুত দেখেছেন। অন্তত সেইরকম মুখের ভাবখানা। তাঁর কাছেই বসলাম তাই।

বয় আসতেই এক পেয়ালা গরম কফি আর এক প্লেট পটাটো—চিপসে হুকুম দিয়েছি।

‘হঠাৎ কি বিশ্রী বাদলা করল বলুন তো!’ ভদ্রলোকের সঙ্গে ভাব জমাবার চেষ্টা করি।

‘ভারি বিচ্ছিরি সত্যিই।’ ভদ্রলোক সায় দিলেন।

‘এরকম আবহাওয়ায় চানাচুর আর ভূতের গল্প বেশ জমে, কী বলেন?’ কায়দা করে লোকটাকে পথে আনবার প্রয়াস পাই।

‘ভূতের গল্প? ভূতের আবার গল্প কি?’ ওঁর তেমন উৎসাহ দেখা যায় না।

কফি আর চিপস এসে পড়ল আমার। চিপস—এর পাত্রটা এগিয়ে দিলাম ওঁর দিকে—যদি পটাটো দিয়ে পটানো যায় একটু।

চিপস উনি ছুঁলেন না, বয়কে বললেন আইসক্রিম আনতে! আইসক্রিমও এসে গেল দেখতে দেখতে।

‘আপনি তো এই গোলদিঘির এলাকারই লোক, তাই না? এ অঞ্চলে আছেন অনেক দিন! প্রবীণ ব্যক্তি; দেখেছেন শুনেছেন অনেক। ভূত অদ্ভুত অনেক কিছুই আপনার চোখে পড়েছে—নয় কি?…’

‘ভূত? গোলদিঘিতে ভূত? না, মশাই না, ভূত—টুত কিছু নেই এখানে। সাতজন্মে না।’ ভদ্রলোক আরেক পাত্র আইসক্রিমের হুকুম দিলেন।

আইসক্রিম খেতে পারে বটে লোকটা। এমন ক্রিমখোর জীবনে আমি দেখিনি। কৃমি হয়ে না মারা যায় শেষটায়।

আমি এক এক চুমুক কফি খাই, আর উনি গেলাসের পর গেলাস গেলেন। প্রায় সতেরো গেলাস আইসক্রিম সারলেন ভদ্রলোক, ততক্ষণে আমি মাত্র তিন পেয়ালা কফি টানতে পেরেছি—আর প্লেট দুয়েক আলু—ভাজা, ব্যস! কিন্তু এতক্ষণ ধরে এত চেষ্টা করেও একটুকরো ভূতের খবর ওঁর মুখ থেকে খসাতে পারলাম না! ওঁকে ভূৎসাহিত করার সমস্ত অধ্যবসায় আমার ব্যর্থ হল।

যতই আমি ভূতের কথা পাড়তে যাই ততই উনি ঘাড় নাড়তে থাকেন—’না না না! গোলদিঘিতে ভূত থাকে? এত গোলমালের মধ্যে? ভূত কখনো তিষ্ঠোতে পারে কলকাতায়? ভূত—টুত যা ছিল এখানে, সব ইহলোকপ্রাপ্ত হয়েছে। মরে মানুষ হয়ে গেছে সব! ক—বে!’

সতেরো গেলাস আইসক্রিম সাবাড় হল, কিন্তু ভূ—শব্দটি ওঁর মুখ থেকে বার করা গেল না।

অগত্যা উঠতে হল আমায়। কফি—হাউসের মায়া কাটাতে হল অবশেষে। কাফের দরজা বন্ধ হবার সময় হয়েছিল। উঠে কাউন্টারে দাম দিতে গেলাম।

কিন্তু বিল দেখে তো আমার চক্ষু চড়ক! পনেরো টাকা বিল!

‘পনেরো টাকা কেন? আমি তো মোটে তিন পেয়ালা কফি আর দু—প্লেট চিপস খেয়েছি—তার জন্যে পনেরো টাকা?’ প্রবল কণ্ঠে আমি প্রতিবাদ করি।

‘আর সতেরো গ্লাস আইসক্রিম, সেটা খেল কে?’ কফি—হাউসের কর্মকর্তা শুধোন।

‘সে তো আরেক জন।’ জানাই আমি।

‘আমরা কি কানা? ঘাস বেচতে বসেছি? চালাকি পেয়েছেন নাকি? আপনার টেবিলে আপনি ছাড়া আর অন্য কোনও লোক ছিল না।’

‘কেন, ওই ভদ্রলোক?’ আঙুল দিয়ে দেখাতে গিয়ে দেখলাম উনি নেই। উঠে গেছেন কখন! কিন্তু এর মধ্যেই সরে পড়লেন কোথায়?

ব্যাপারটা আমার ভালো ঠেকল না। আমি বললাম, ‘দেখুন মশাই, এইসব রসিকতা আমার ভালো লাগে না। পকেটে সম্বল আমার মোট আড়াই টাকা, সেই আন্দাজে আমি খেয়েছি। পনেরো টাকা আমি পাব কোথায়? আমাকে বাঁধা রাখলেও অত টাকা দিয়ে খালাস করতে আসবে না কেউ।’

‘তাহলে তো পুলিশ ডাকতে হয়। বেওয়ারিশ মাল থানায় জমা দেওয়াই দস্তুর।’

ইঙ্গিতের অপেক্ষাই ছিল শুধু! তাঁর কথা না খসতেই বেয়ারাটা কোত্থেকে একটা পাহারাওয়ালা এনে খাড়া করেছে! যদ্দূর বেয়াড়া কাজ হতে হয়।

ব্যাপারটা আমি আরও পরিষ্কার করে বোঝাতে যাচ্ছি, পাহারাওয়ালাটা আমায় বাধা দিল। বলল, ‘চলিয়ে থানামে।’

‘থানামে? থানামে কেন যাব? কেয়া কিয়া? কফি খায়া, উসকো দাম দেদিয়া, চুক গিয়া। ফিন থানা কাহে?’

কিন্তু কে শোনে! পাহারাওলাটা আমার ঘাড় পাকড়াল। টেনে নিয়ে চলল আমায়।

এমন সময় দেখি সেই ভদ্রলোক! এগিয়ে আসছেন মালকোঁচা মেরে। আমাকে সাহায্য করতেই—এতক্ষণে!

কিন্তু আমাকে না, পাহারাওলাকেই। পাহারাওলাটা আমার গলদেশ ধরেছিল, তিনি এসে আমার তলদেশ ধরলেন। দুজনে মিলে চ্যাংদোলা করে সিঁড়ি দিয়ে নামাতে লাগলেন আমাকে।

‘তুমলোক কেয়া করতা বলতো? হামকো পা ছোড় দেও না। থানামে কি আমি নিজে হেঁটে যেতে জানিনে?’ আপত্তির সুরে আমি বলি। রাষ্ট্র—বাংলায় জগাখিচুড়ি বানিয়ে একাকার করি।

‘তুমহারা পায়ের পাকড়া কৌন হো? হাম তো গর্দান লিয়া। দুসরে তো হিঁয়া কোই নেহি!’—পাহারাওলার আওয়াজ কানে আসে।

কিন্তু ততক্ষণে আমি মূর্ছিত হয়ে পড়েছি!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *