১
ফলকনামা এক্সপ্রেস থেকে বিজয়ওয়াড়াতে নেমে সাত্যকি যখন এক ঘন্টা ধরে খোঁজাখুঁজির পর পট্টভিনগরের নির্দিষ্ট বাড়ির খোঁজ পেল, তখন তাকে রীতিমতো বিধ্বস্ত দেখাতে লাগলো। বাড়ির ভেতর থেকে যিনি বেরিয়ে এলেন তাঁর বয়স ষাট-একষট্টি হবে। খালি গা। পরনে লুঙ্গি। হাত দুটিতে মাটি মাখা ছিল। সম্ভবত বাগানের কাজকর্ম করছিলেন। একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞেস করলেন, কাকে চাই?
জি.এম. বালযোগী। ছোট্ট উত্তরটা দিয়ে সাত্যকি ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় পুরো নামটাই বলে ফেললো, গোপাল মনোহর বালযোগী।
আপনি কোথা থেকে আসছেন?
কলকাতা থেকে। সাত্যকি এ বারে ভাবলো, ভদ্রলোক এরপর যা বলবেন তা হলো, আমিই জি.এম. বালযোগী। কী ব্যাপার বলুন। কিন্তু ভদ্রলোক শুধু শেষের কথাটাই জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপার কী বলুন তো?
বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে এইভাবে কথাবার্তা বলার দরুন সাত্যকি মনে মনে একটু অসন্তুষ্টই হচ্ছিলো। আসলে কলকাতা থেকে এতোটা পথ জার্নি করে তার ওপর আবার এক ঘন্টা ধরে বাড়ি খোঁজার পর যদি এমনভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে কথা চালাতে হয়, মনটা তা হলে কিছুতেই প্রসন্ন থাকতে পারে না। সাত্যকি শুধু একটাই প্রশ্ন করলো, আপনিই কি জি.এম. বালযোগী?
না। ভদ্রলোক মাথা নাড়ালেন যে ভাবে তাতে না এবং হ্যাঁ দুটোই মনে হতে পারে। ভাগ্যিস উনি মুখেও ‘না’ বললেন তাই রক্ষে। তবে সাত্যকি ভেবে পেল না, উনি জি.এম. বালযোগী না হওয়া সত্ত্বেও কেন জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার বলুন তো? সব জায়গায় অতিরিক্ত কৌতূহল দেখানো কী ঠিক? পথের ক্লান্তিতে এবং ভদ্রলোকের ওপর বিরক্ত হয়েই সাত্যকি বেশি কথা বলাবলির মধ্যে আর গেল না। সংক্ষেপে সারলো, ওঁকে একটু ডেকে দেবেন?
জি.এম. বালযোগী এখান থেকে চলে গেছে।
চলে গেছেন? খুঁজে পাওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়ে সাত্যকি সত্যি সত্যিই মুষড়ে পড়লো। ভাঙা গলায় জানতে চাইলো, কোথায় গেছেন অনুগ্রহ করে বলতে পারবেন কী?
ও এখন সুমিঠ্ঠাগুরম-এ আছে। ভদ্রলোক দায়সারা গোছের একটা উত্তর দিলেন, ওখানে গিয়ে আপনি খোঁজ করুন।
স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিলো ভদ্রলোক আর কথা বাড়াতে রাজি নন। কিন্তু সাত্যকির তখন হাবুডুবু খাবার মতো অবস্থা। কলকাতা ছেড়ে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার পট্টভিনগরের একটি বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে কোথায় সুমিঠ্ঠাগুরম, সেটা আবার কোথায় কোন জেলায় অর্থাৎ মানচিত্র এবং দূরত্ব কিছুই জানা নেই। ভদ্রলোক বাড়ির ভেতরে ঢুকবার ব্যস্ততা দেখাতেই সাত্যকি অসহায় দৃষ্টি নিয়ে করুণ গলায় বললো, কীভাবে যেতে হবে, প্লিজ যদি একটু বলে দেন……
একষট্টি বছরের মানুষটা সাত্যকিকে এ বারে আপাদমস্তক দেখতে লাগলেন কতো আর বয়স হবে ছেলেটার? বড়ো জোর চব্বিশ, কী পঁচিশ। পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চির মতো হাইট। চমৎকার স্বাস্থ্য। গায়ের রংটা ফর্সা এবং কালের মাঝামাঝি একটা জায়গায় থমকে ওকে ঘিরে রেখেছে। ঠোঁট দুটো সামান্য একটু পুরু তবে ওর কাটা কাটা চোখ এবং নাক ছেলেটাকে আশ্চর্য এক ব্যাক্তিত্বের মুকুট পরিয়ে দিয়ে ঝকঝকে আর বুদ্ধিদীপ্ত করে তুলেছে। সেই সঙ্গে এই মুহূর্তে বেশ কিছুটা মায়াবীও। ভদ্রলোক সাত্যকিকে আর একঝলক দেখে নিয়ে হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কী গোপাল, মনোহর বালযোগীকে…..
আজ্ঞে না। সাত্যকি তড়িঘড়ি উত্তর দিয়ে ভদ্রলোককে মাঝপথেই থামিয়ে দিল। আসলে সঠিকভাবে কী যে বলতে চেয়েছিলেন, সেটার নিশানা না পেলেও যেটুকু বোঝা গেছে তার ওপর নির্ভর করেই সাত্যকি বললো, আমি জি.এম. বালযোগীকে কোনোদিন দেখিওনি। আমি আমার বাবার একটা নির্দেশ পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। নরম মনোভাব দেখিয়ে সাত্যকি নিজেকে মেলে ধরলো শুধুমাত্র এই কারণে, বয়স্ক মানুষটা যেন সুমিঠ্ঠাগুরম-এর পথ- নির্দেশটুকু দয়া করে জানিয়ে দেন।
সাত্যকির হিসেবটা কাজে লাগলো। ভদ্রলোক মাটি মাখা ডানহাতটা দিয়ে পিঠ চুলকে নিয়ে হালকা গলায় বললেন, আরে মশাই আপনি তো রাজামুন্দ্রি হয়েই এলেন-
রাজামুন্দ্রি!
রাজামুন্দ্রিও চিনতে পারছেন না? অতো বড়ো জংশন স্টেশনটায় ট্রেন পাক্কা দশ মিনিট দাঁড়ায়। কাছেই গোদাবরী নদী। নদীর ওপর বিশাল সুদীর্ঘ ব্রীজ….এতো সব কিছু আপনার চোখ এড়িয়ে গেল কীভাবে? আশ্চর্য!
আমি হয়তো তখন ঘুমাচ্ছিলাম। সাত্যকি অপরাধ কবুল করে পার পেতে চাইলো।
হুম। ভদ্রলোক এ বারে একটু গম্ভীর। গম্ভীর গলাতেই বললেন, বিজয়ওয়াড়া থেকে ট্রেন ধরে মনে করুন আপনি আবার কলকাতার পথে ফিরছেন অর্থাৎ যে পথে এসেছিলেন ঠিক সেই পথেই ফিরে যাচ্ছেন। ঘন্টা পাঁচেক জার্নির পর ওই সুবিশাল চওড়া গোদাবরী নদীর ব্রীজ পেরিয়ে পৌঁছে যাবেন রাজামুন্দ্রি জংশনে। দেখবেন আবার যেন ঘুমিয়ে….
না-না ঘুমাবো না। সাত্যকি বেশ লজ্জা পেল। আপনি বলুন—
যদি না ঘুমিয়ে পড়েন তা হলে ওখানেই ট্রেন থেকে নেমে পড়ুন। বেশ বড়ো শহর রাজামুন্দ্রি। হাজারো-হাজারো মানুষে পথঘাট সারাক্ষণই গিজগিজ করছে। তবে অসুবিধের কিছু নেই। স্টেশনের বাইরেই বাস টার্মিনাল। ওখান থেকে আপনি রামেশ্বর-এর বাসে চাপুন। সাড়ে চার ঘন্টা, পাঁচ ঘন্টা লাগবে সুমিঠ্ঠাগুরমে পৌঁছাতে। ওই গ্রামেই এখন ওর স্থায়ী আস্তানা। কী যেন একটু ভেবে ভদ্রলোক আরও বললেন, আপনি অবশ্য বিজয়ওয়াড়া থেকেও বাসে চেপে রাজামুন্দ্রি চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে আবার সুমিঠ্ঠাগুরম। তবে এ পথে গেলে সময়টা একটু বেশিই লাগবে। আর একটা কথাও এই ফাঁকে বলে নিই, নয়তো পরে আবার আমাকে গালাগাল করবেন।
বাবার বয়সী লোকদের আমি কক্ষনো গালাগাল করি না। সাত্যকি সামান্য হেসে জানতে চাইলো, কিন্তু ব্যাপারটা কী বলুন তো?
আপনি যার খোঁজে এসেছেন মানে এই জি.এম. বালযোগী—ও কিন্তু বহু বছর আগে এই পট্টভিনগর ছেড়ে ওই সুমিঠ্ঠাগুরমে আস্তানা বানিয়েছে। তাও ধরুন গিয়ে বছর কুড়ি, একুশ তো হবেই। বর্তমানে ও যে ওখানেই রয়েছে তেমনটা আমি জোর দিয়েও বলতে পারছি না। গত দশ বছর ওর কোনো খবরই আমার জানা নেই। অতএব আপনি সুমিঠ্ঠাগুরমে গিয়ে ওকে যদি না পান….
আপনাকে আমি বিন্দুমাত্র দোষারোপ করবো না। এরপর সাত্যকি ভদ্রলোককে ধন্যবাদ জানাতেই তিনি সেটা নীরবে গ্রহণ করে মাথা নাড়তে লাগলেন। তারপরেই আচমকা একটা প্রশ্ন করলেন, কলকাতা থেকে আপনি এতো দূরে ছুটে এসেছেন গোপাল মনোহরের কাছে, এখন আবার দৌড়োবেন সুমিঠ্ঠাগুরম-এ। ব্যাপারটা একটু খুলেই বলুন না?
একষট্টি বছরের বৃদ্ধ মানুষটাকে কেমন যেন কুৎসিত মনে হলো সাত্যকির। এতোক্ষণ ধরে পথ-নির্দেশ টির্দেশ দেবার আড়ালে এই হলো তাঁর আসল চেহারা। অন্যায় কৌতূহল আর অসংযমী স্রোতে শেষ পর্যন্ত নিজেকে ভাসিয়ে দিলেন। ভদ্রলোক তাকে না ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন, সাত্যকি কী এবারে ওঁকে অন্য ধরনের উপদেশ দেবে? কী করে উনি ভাবলেন যে ব্যাপারটা ওঁকে খুলে বলা যেতে পারে? উত্তরটা সাত্যকির এইভাবে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল, আপনি যখন গোপাল মনোহর বালযোগী নন কারণটা শোনার অধিকারও আপনার নেই। তা ছাড়া ওই ধরনের প্রশ্ন করাটাই অত্যন্ত অশোভন। রুচিহীন ব্যাপার। তবে সাত্যকি তেমনটা বললো না। কেন-না বাইরে বেরিয়ে অপরের সঙ্গে কথার সংঘর্ষে যতো কম যাওয়া যায় সেদিকেই লক্ষ্য রাখা উচিত। সাত্যকি ভদ্রলোকের মুখের দিকে চেয়ে করুণার এক টুকরো হাসি ছড়িয়ে উত্তর দিল, সেটা তো আমি জি.এম বালযোগীকেই বলবো। দ্বিতীয় অন্য কাউকেই নয়। আচ্ছা চলি, নমস্কার—সাত্যকি কথাটা শেষ করে মুহূর্ত আর দাঁড়ালো না। পায়ের কাছে পড়ে থাকা মাঝারি ধরনের স্যুটকেসটা তুলে নিয়ে পথে নেমে পড়লো।
রাজামুন্দ্রি স্টেশনে সাত্যকি যখন ট্রেন থেকে নামলো চারদিকে তখন শেষ বিকেলের ছায়া। স্টেশনের বাইরে আসতেই দেখলো দূরপাল্লার বাসগুলো সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে। বাসের মাথায় মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজটা খুব দ্রুতগতিতে চলছে। যাত্রীদের হাজারো কথায় মুখরিত পরিবেশটা আরও গমগম করছে বাসের হেল্পারদের চিৎকারে। দূরপাল্লার বাসগুলো কোথায় কোথায় যাবে তারই ফিরিস্তি দিয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে সরব ঘোষণা—বাস ছাড়ার সময়সীমা।
সাত্যকি সঙ্গে সঙ্গে হিসেব করে নিল, এখন যদি সে রামেশ্বরমের বাসে ওঠে তা হলে সুমিঠ্ঠাগুরমে পৌঁছাতে তার খুব কম করেও রাত সাড়ে দশটা, এগারোটা হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন হলো, অতো রাতে অপরিচিত জায়গায় গিয়ে খোঁজাখুঁজিটা করবে কেমন করে? তা ছাড়া নিরাপত্তার ব্যাপারটাও তো ভাবতে হবে। সুতরাং আজকের রাতটা রাজামুন্দ্রি শহরের কোনো হোটেলে কাটিয়ে পরদিন ভোরের বাস ধরাটাই হবে সঠিক বিবেচনার কাজ। তা ছাড়া জার্নি আর জার্নিতে সাত্যকি এখন ক্লান্তির সমুদ্রে ডুবে আছে। এই মুহূর্তে বিশ্রামের বিশেষ প্রয়োজন। তবে পরিস্থিতি অন্য রকম দাবি করলে তাকে এই ক্লান্ত শরীরেই বেরিয়ে পড়তে হতো। মাঝরাতে পৌঁছোনোর তেমন কোনো জরুরি বেড়ি তার পায়ে লাগানো নেই। অতএব ধীরে সুস্থে কাল সকালেই রওনা দেওয়া যাবে।
সকালের বাস কখন ছাড়বে ইত্যাদি ভালো করে জেনে নিয়ে সাত্যকি হোটেলের খোঁজে চারদিকে একবার অলসভাবে চোখ দুটোকে ঘুরিয়ে নিতেই তার দৃষ্টির ফ্রেমে রামাকৃষ্ণা লজ ধরা দিল। ভালোমন্দ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, সুবিধা-অসুবিধে ওসব নিয়ে সে কোনোরকম মাথাই ঘামালো না। সাত্যকি শুধু ওর শরীরটাকে একটু ছড়িয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু রামাকৃষ্ণার দিকে এগোবে কী—যে ভাবে অজস্র মানুষ অত্যন্ত ব্যস্ততার সঙ্গে রাস্তা পারাপার হচ্ছে, এগিয়ে আসছে তাতে তো হাঁটাই মুশকিল। এ যেন ফ্লাই ওভারের নীচে সন্ধ্যার ‘শিয়ালদা’। প্রতিনিয়ত প্রায় বিজয়ার কোলাকুলি করে পথ চলতে হচ্ছে। ফলে ধাক্কাধাক্কি, গুঁতোগুঁতিও লেগে আছে। তবে কারও সঙ্গেই কোনো বিরোধ নেই। সবাই সব কিছু মেনে নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। আঠারো, উনিশের ভরা বর্ষার তিন যুবতী নিজেদের মধ্যে খলবল করতে করতে আপন মহিমায় যেন পেখম ছড়াচ্ছিল। হৃদয়ের তাপ নিতে দুই যুবক পরিষ্কার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কনুই চালিয়ে এমন একটা ভাব করলো, মনে হতেই পারে ওদের বুঝি ইন্টারভিউ দেবার বিশেষ তাড়া রয়েছে। সাত্যকি ভাবলো ছেলে দুটোর কপালে কিছু জুটবে। ওমা কোথায় কী! মেয়ে তিনটি তেলুগু ভাষায় কিছু একটা বললো বটে তবে তা মোটেই গম্ভীর হয়ে নয়। ওদের মুখগুলো বেশ হাসি-হাসি। হতে পারে ওরা কেউই তেমন রাগারাগি করতে পারে না। অথবা রাগের সময়েও সারা মুখে লেগে থাকে পূর্বরাগের ছোঁয়া। আর তেলুগু ভাষায় যেটা বলেছে, তার বাংলা মানেটা সম্ভবত একটু দেখে চলো। ষাঁড়ের মতো এমনভাবে ছোটার কোনো দরকার নেই।
ট্রেনের হুইসেলের ঘনঘন এক দীর্ঘ আওয়াজে সাত্যকির হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। রাত তখন প্রায় পৌনে দুটো হবে। সেই সন্ধ্যেবেলাতেই সে স্নান খাওয়া সেরে রামাকৃষ্ণা লজের বিছানা নিয়েছিল। দারুন একখানা ঘুম দিয়েছে। অবশ্য ট্রেনের হুইসেলের ওই চিৎকারে ঘুমটা না ভাঙলে নিদ্রার ভারী পাথরটা সাত্যকির দুই চোখের পাতায় আরও অনেকটা সময় যে চেপে বসে থাকতো সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। টেবিলের ওপর জলের গেলাস ছিল। জল খেয়ে সাত্যকি একটা সিগারেট ধরালো। খোলা জানালা দিয়ে অনবরত যে বাতাস বইছিল সেটা খুব একটা আরামদায়ক নয়। তাতে গরমের ছোঁয়া। আসলে এই ঘরের ওপরেই খোলা ছাদ। সারাদিনের সূর্যের তাপ মেখে এমনিতেই বোধহয় এটা গরমই থাকে। ঠান্ডা হতে হতে সেই শেষ রাত, তবে ও নিয়ে সাত্যকির কোনো মাথাব্যথা নেই। যখন যেমন পরিবেশ, সে ঠিক নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। বেশ কিছুটা বিশ্রাম পেয়ে এই মুহূর্তে তার চোখে ঘুম নেই। শুয়ে শুয়ে সাত্যকি এই জি.এম. বালযোগীর ব্যাপারটাই নতুন করে ভাবতে লাগলো। আসলে সেও ওই ভদ্রলোকের সম্পর্কে কিছুই জানে না। তাঁকে কোনোদিন চোখেও দেখেনি। তবুও ওই মানুষটার কাছে ছুটে এসেছে শুধু বাবার নির্দেশে। তাঁর একান্ত আদেশে।