গাড়োলস্য গাড়োল
আদরের ডাক-নাম য়প বা ইয়প– সারা দেশটা জুড়ে তোলা-নাম হ্যার ডক্টর ইয়োজেপ (য়পপ) গ্যোবলস, রাষ্ট্রের প্রপাগান্ডা মন্ত্রী, রাজধানী বার্লিনের গাও-লাইটার (অঞ্চলাধিকারী) এবং ফ্যুরার অ্যাডলফ হিটলারের শেষ জুয়োখেলার পাশা যখন ব্লাঙ্কো মেরে মেরে যাচ্ছে, তখন সর্বাত্মক, টোটাল ওয়ারের জন্য কুল্লে তাগৎ ‘ইকট্টে’ করার জন্য সর্বাধিকারী। পার্টির ব্রেন-বাক্সো। শত্রু-মিত্র সবাই এক সুরে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, প্রপাগান্ডা কারে কয়, সে-বস্তু দেখিয়ে গেছে ওই ব্রেন-বাক্সোটা।’ বাক্সোটির এক দিক দিয়ে ঢুকত সাদামাটা তথ্য, হাফ-তথ্য, ডাহা মিথ্যে, ঘৃতলবণতৈলতণ্ডুলবস্ত্রইন্ধন বেরিয়ে আসত অন্যদিক দিয়ে। এক-একখানা চাঁছাছোলা, নিটোল, অব্রণ, অনিন্দনীয় কলাসৃষ্টি! দাঁড়ান, এই ‘কলাসৃষ্টি’ রহস্যটা একটু গুছিয়ে বলতে হয় কারণ এ বাবদ তাবৎ টেকনিক্যাল টার্ম একমাত্র ফরাসির মারফত প্রকাশ করা সম্ভব। তদুপরি গ্যোবলস্ সায়েবের দিলের দোস্ত থেকে জান-এর দুশমন্তক, স্বীকার করেছেন, ভোঁতা হোঁৎকা টিউটন নাৎসি পাঁঠাদের ভেতর ওই গ্যোবলসই ছিলেন একমাত্র জিনিয়াস, যাঁর স্কন্ধে বিরাজ করত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মস্তিষ্ক-কুণ্ডলী পরিপূর্ণ লাতিন মাথা– তাই তাঁর লিখন-কথন উভয়েতেই ছিল, ফরাসিসুলভ ফটিক স্বচ্ছতা।(১) এ-কলাসৃষ্টিকে অ্যভর দা’র বলা যেতে পারে, মাস্টার পিস অব আর্ট বললে ঠিক ঠিক মানেটা ওত্রায় না। অবুজে দা’র শব্দসমষ্টি আমি শুনেছি; এটা বোধ হয় morale-এর মতো ইংরেজিতে চালু ভেজাল ফরাসি মাল (আমরা যেরকম কলকাত্তাই উর্দুতে ‘একঠো’ দুঠো’র ভেজাল বরাব্বর ব্যবহার করে আসছি!)– অর্থ, যে কলাসৃষ্টি কোনও কাজে লাগে না, যেমন ‘পাপিয়ে মাশে’তে তৈরি কাশ্মিরি-ফুলদানি-পারা সৃষ্টিছাড়া বস্তু, যেটাতে ফুল রাখা যায় না বটে, কিন্তু দেখতে খাসা। গ্যোবলস্ সায়েবের বেতার বক্তৃতা বা সম্পাদকীয় প্রবন্ধ বিলকুল বেকার নয়– টায়-টায় কাজে লাগত। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে তিনি টলস্টয়কে নিশ্চয়ই পরম আপ্যায়িত করতে পারতেন; পার্থক্য মাত্র এইটুকু যে, টলস্টয় তাঁর কলা দ্বারা নির্মাণ করতেন স্বর্গরোহণের সোপান, য়পপ নির্মাণ করতেন রসাতলের খাড্ডায় সবচেয়ে নিপতিত হওয়ার তরে অত্যুত্তম পিচ্ছল সানুপ্রদেশ। আর ইহুদিকুলের কল্যাণার্থে গ্যাস-চেম্বার!
হিটলার বক্তৃতা-গর্জনও রুদ্রের তাণ্ডব নৃত্যতুল্য প্রলয়ঙ্কর, কিন্তু সেটাকে অত সহজে বিশ্লেষণ করা যায় না। সেটাও কলাসৃষ্টি এবং সেটি য়পপ-মার্কার চেয়ে লক্ষগুণে কার্যকরী। কড়া পাক।
দু জনার মুখে একই জিগির : ইহুদিকুল সর্বনেশে। এদের সমূলে বিনাশ করতে হবে।(২)
কিন্তু দু জনের মনের ভিতর দু প্রকারের যুক্তি। য়পপের বিশ্বাস, ইহুদিরা সর্ব ব্যাপারেই সাতিশয় ধুরন্ধর। এদের সঙ্গে ‘নর্ডিক আর্যরা’ অর্থাৎ জর্মনরা কিছুতেই পাল্লা দিতে পারবে না। পক্ষান্তরে হিটলার এটা মানতে পারেন না– জান্ কবুল। তাঁর মতে, এই বসুন্ধরায় যে-কটা ডাঙর ডাঙর জাত, গোষ্ঠী, বংশ–যা খুশি বলুন, ইংরেজিতে Race–জর্মনে Rasse–তার মধ্যে ‘আর্য’ রেস সর্বোত্তম। এবং সেই আর্য রেসের ভিতর সর্বোত্তমেরও সর্বশ্রেষ্ঠ জর্মনির নর্ডিক, নীল চোখ, ব্লন্ড (সোনালি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে রুপালি– যেটাকে বলা হয় প্রাটিনাম ব্লন্ড) চুলধারী ‘আর্য’ রেস। ইহ-বিশ্বের সর্ববাবদে তারাই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্পন্ন শক্তিমান যুবার শরীরেও যেমন ক্যানসার দেখা দিতে পারে, ঠিক তেমনি জর্মন সমাজে এসে ঢুকেছে ইহুদি গোষ্ঠী। এবং ছারপোকার মতো ভার্মিন। ছারপোকা বেশি বুদ্ধিমান না মানুষ বেশি বুদ্ধি ধরে, এ প্রশ্ন বুদ্ধিমান মানুষ তুলবে না–বুদ্ধিমান বা মূর্খ ছারপোকা তুলবে কি না, সেটা হিটলার বলেননি।
য়পপ বললেন, ‘এটা হল তুলনা। তুলনা যুক্তি নয়।’
ফ্যুরার বললেন, ‘তুলনা মাত্রই তিন ঠ্যাঙের উপর দাঁড়ায়। টায়-টায় যুক্তির স্থান নিতে পারে না সত্য, কিন্তু আপন বক্তব্য জোরদার ও প্রাঞ্জল করার জন্য, তুলনার ব্যবহার করেছেন। সর্বগুণীজ্ঞানীই।’
য়পপ বললেন, ‘তর্কস্থলে মেনে নিলুম।’ গ্যোবলস্ বড়ই প্রভুভক্ত ছিলেন। নইলে প্রভুর আত্মহত্যার চব্বিশ ঘন্টার ভিতর তাঁর ছ’টি শিশু পুত্রকন্যাদের ডাক্তার দিয়ে খুন করিয়ে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করবেন কেন?(৩) বললেন, ‘তাই সই। কিন্তু আমি আপনাকে হাতেনাতে দেখিয়ে দেব, ইহুদিরা অন্তত ব্যবসার ক্ষেত্রে আর্যের চেয়ে বেশি বুদ্ধি ধরে।’
‘কোনও ক্ষেত্রেই না।’
‘বাজি ধরুন।’
‘বিলক্ষণ! কত?’
‘এক লাখ।’
‘গেমাখট– পাক্কি বাৎ।’
দু জনাতে ছদ্মবেশে বেরোলেন। তার জন্য বেশি বেগ পেতে হয় না। এমনিতেই ঠোঁটকাটা বার্লিন-ককনিরা বলত ফ্যুরারের চুল নেবে পড়ে কপাল ঢাকেনি অকল্পনীয়; আর গ্যোবলস্ এক লহমার তরে বকর বকর বন্ধ করেছে– এটা ততোধিক অবিশ্বাস্য। হিটলার তাই চ্যাটচেটে পমেটম দিয়ে যেন প্রায় ভৈরবচণ্ডীর মতো চুড়ো-খোঁপা বাঁধলেন– এবারে আর চুল খসে পড়ে, কপাল ছাপিয়ে চোখ এস্তেক ঢেকে দেবে না। ব্যস্, এতেই হয়ে গেল ছদ্মবেশ। আর য়পপ? তিনি বললেন, তিনি প্রতি দশ মিনিটে মাত্র একটি সেনটেনস বলবেন। এ-রকম বিকট চুপচাপ লোককে কে চিনবে য়পপ বলে!
য়পপেরই প্রস্তাবমতো দু জনাতে ঢুকলেন এক পাঁচমিশিলি খাঁটি আর্য দোকানে। চাইলেন একটা টি-সেট। দোকানি একটি রমণীয় ট্রের উপর সবকিছু সাজিয়ে সামনে ধরল। গ্যোবলস তো তাঁর মুণ্ডটি ডান থেকে বাঁয়ে, ফের বাঁ থেকে ডাইনে নাড়িয়ে নির্বাক প্রশস্তি শুনিয়ে দিলেন। তার পর হঠাৎ যেন মনে পড়ল ওইরকম ভাবখানা করে বললেন, ‘কিন্তু আমার যে-দোস্তকে আমি এই জন্মদিনের সওগাৎটা দেব তিনি তো ন্যাটা; আপনাদের কাছে কি লেফট-হ্যান্ডারদের জন্যে কোনও টি-সেট আছে?’ হিটলার বললেন, ‘হুঁ।’ ভদ্র আর্যসন্তান আমাদের দোকানি তো বেবাক বে-বাক– অবাক। ‘লেফট-হ্যান্ডারস টি-সেট?’ সে আবার কী গব্বযন্ত্রণা রে বাপু! বাপের জন্মে নাম এস্তেক শোনেনি। অনেকক্ষণ ঘাড় চুলকে, বিস্তর আন্দেশা করে আপসা-আপসি করে সবিনয় জানালে, তার কাছে নেই।
হিটলার দিলদরাজ আদমি। একগাল হেসে বললেন, ‘মাখটনিকস, মাখটনিকস– বিলক্ষণ, বিলক্ষণ! তাতে এসে-যায় না। আমরা অন্য দিন দুসরা জিনিসের জন্য আসব’খন– খাসা দোকানটি কিন্তু! কী বল হ্যার ডক্– থুড়ি! ঔফ বিডার জেএন! গুটে নাখট! আসি তবে। হেঁ হেঁ হেঁ হেঁ।’
এবারে য়পপ প্রভুকে নিয়ে ঢোকালেন এক ইহুদির দোকানে।
দোকানি ছিল না। তার চোদ্দ বছরের ছেলে ছুটে এসে অদৃশ্য স্যামপুতে (কথাটা আজকাল বড়ই ‘ফেশিনিবিল’ হয়েছে; আম্মো ব্যাভার করতে চাই) হাত কচলাতে কচলাতে একবারের জায়গায় তিন-তিনবার বলে বসল, ‘য়ুটন ময়েন, য়ুটন ময়েন, য়ুটন ময়েন (গুটন মর্গেনের অর্ধশিক্ষিত’ উচ্চারণ), মাইনে হেরেন!’
উত্তরে হিটলার বিড়বিড় করে কী একটা বললেন, ঠিক ঠাহর করা গেল না। দক্ষিণে কোনও কোনও ব্রাহ্মণ নাকি একদা রাস্তায় (‘সড়ক’ ‘সরকে’ বা ‘সরণিতে’–ওহ! কী স্টর্ম ইন এ টি ‘সেট’!) বেরোলে চিৎকার করতেন, অস্পৃশ্য যেন সরে যায়, তার ছায়া যেন ওঁর গায়ে না পড়ে–তবে এদের পঞ্চাশ বা ষাট লক্ষকে বামুন গ্যাস চেম্বারে(৪) খুন করে পুড়িয়েছে একথা কখনও শুনিনি। অতএব হিটলার যে ইহুদি ছোকরাকে হেল-ফোলো– উয়েল-মেট (hail-fellow-well-met) করেননি, সেটা স্পষ্টই বোঝা যায়। ইহুদি ছোকরা কাঁচুমাচু হয়ে বললে, ‘আমার বলে দেওয়া উচিত, সরকারের হুকুম, কোনও “আর্য” যদি ইহুদির দোকানে ঢোকেন তবে দোকানদার যেন তাঁকে সতর্ক করে দেয়, এটা ইহুদির দোকান, এখানে কেনাকাটা করলে আর্যই দায়ী। সাইন-বোর্ডেও স্পষ্ট করে লেখা আছে, আপনারা হয়তো লক্ষ করেননি।’
হিটলার বিড়বিড় করলেন, “শোন্ গুট শোন্ গুট’–অনেকটা যেন ঠিক আছে, ঠিক আছে, মেলা বকো না।
টি সেট চাওয়া হল। এল। গ্যোবলস্ ন্যাটার সেট চাইলেন।
ছোকরা প্রথমটায় হকচকিয়ে গেল।
পরমুহূর্তেই সম্বিত ফিরে একগাল হেসে বললে, ‘এখুনি নিয়ে আসছি, স্যার! বলে যে সেট ট্রের উপর সাজিয়ে রেখে দেখিয়েছিল সেইটে তুলে নিয়ে গুদোমঘরে অদৃশ্য হল। দু-মিনিট পরেই আরেকটা আরও বাড়িয়া ট্রের উপর সাজিয়ে নিয়ে এল ন্যাটাদের সেট।
তালেবর ছোকরা করেছে কী, এবার ওই আগেকার সেটই উল্টো করে সাজিয়েছে অর্থাৎ টি-কাপগুলোর আঙটিগুলো রয়েছে খদ্দেরের-বাঁ দিকে; তার মানে, খদ্দের বাঁ-হাত বাড়ালে আঙুল ঠিক আঙটার যথাস্থানে পড়বে।
গ্যোবলস্ বাক্যব্যয় না করে যথামূল্যে সেট কিনে নিলেন।
বেরিয়ে এসে বললেন, ‘দেখলেন ইহুদিটার চালাকিটা?’
হিটলার অতিশয় সরল দরদী কণ্ঠে বললেন, ‘চালাকিটা আবার কোথায়? বেচারি আর্যের ন্যাটা সেট ছিল না স্টকে তো সে আর করবে কী?
***
এবারে সিরিয়স কথা– ব্যাটারা বলে, তারা নাকি আর্যোত্তম। আরে মোলো, আর্যোত্তম যদি হবিই, তবে সর্ব-আর্যের– তা সে গ্রিকই হোক, লাতিনই হোক কিংবা তাদের বহু পূর্বের মিটানির হিটাইটই হোক– সর্বপ্রাচীন সংহিতা চতুর্বেদ আছে ভারতীয় আর্যের শ্রুতিতে ভিন্ন অন্য কোন আর্য গোসাঁইয়ের খট্টাঙ্গ প্রত্যঙ্গে?
কিন্তু, আমরা তো দিয়েছি আশ্রয়– প্রথম ইহুদিরা যখন জীবনমৃতাবস্থায় নিমজ্জমান তরণীতে করে বোম্বাই উপকূলে পৌঁছয়। গ্যাস-চেম্বারের কথা এই দু-বা আড়াই হাজার বছর ধরে আমাদের মাথায়ই খেলল না! তবে, হ্যাঁ, এদানির কেউ কেউ বলেন, আমরা যে অস্মদ্দেশে ইজরায়েল প্রেসিডেন্টের শুভানুগমনোপলক্ষে উদ্বাহু হয়ে ‘লৃত্ত’ করিনি সেটা গ্যাস চেম্বারে পোরার চেয়েও সৎ গুনাহ্! তোবা! তোবা!
৩০/৪/৬৬
———-
১. অক্সফোর্ডের ইতিহাস-অধ্যাপক ট্রেভর-রোপারের মতো জর্মনির জাতশত্রু শতকে গোটেক; তদুপরি তিনি একটি আস্ত স্নবশ্য স্নব। তিনি বলেন “and it was the Latin luidity of his Goebbels’) mind, the un-German suppleness of his argument which made him so much more successful as a preacher than the forthblowing nationalists of the South.”
অবশ্য অধ্যাপককে বোঝা ভার। তিনি শতাধিক বার বলেছেন, জর্মনরা অতিশয় অগা জাত। উত্তরে বলি, অগারা পরিষ্কার যুক্তি বোঝে না; রহস্যের সন্ধানে কোটে মাথা। তাই জর্মন দার্শনিকদের ভিতর লাতিন ধরনের স্বচ্ছ লেখক শোপেনহাওয়ার ভোতা লেখক হেগে-এর তুলনায় অবহেলিত।
২. নূরনবেরগের মোকদ্দমায় যখন আসামি নাৎসিদের বিরুদ্ধে বলা হল যে তাঁদের ফ্যুরার গুরুই ইহুদিদের ausrotten ‘সবংশে নির্বংশ করবেন বলে একাধিকবার সর্বজন সমক্ষে কবুল করেছিলেন, তখন আসামি পক্ষ বলে, “ওসব কথার কথা। কেউ যখন বলে “তোমার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাব” (বাংলায় বলতে গেলে এই অনুবাদই জুৎসই) তখন অন্য পক্ষ সেটা সিরিয়াসলি শব্দার্থ নিয়ে বিশ্বের তাবৎ ডুগডুগি বানাবার যন্ত্রপাতি বিনষ্ট করতে মাথায় গামছা বাঁধে না।’
৩. সবিস্তর কাহিনী পাঠক পাবেন, অধীনের ‘দু-হারা’ পুস্তকে, ‘হিটলারের শেষ দশ দিন’ প্রবন্ধে।
৪. এর অন্যতম বড়কর্তা হ্যাঁস নুরনবের্গ মোকদ্দমায় সাক্ষী দেন, এবং পরে এঁর ফাঁসি হয়। দু-জন হাড়ে-পাকা মনস্তত্ত্ববিদ মার্কিন চিকিৎসক এঁকে আগা-পাশতলা পুনঃপুন পরীক্ষা করেও এর ভিতর কোনো কিছু অ্যানরমাল পাননি। ইনি বলেন, হাজার খানেক মানুষ গ্যাস দিয়ে মারতে আমার ১০ থেকে ১২ মিনিট সময় লাগত, কিন্তু আসল মুশকিল ছিল এদের পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করা– দিনের পর দিন নাগাড়ে চব্বিশ ঘন্টা চুল্লিগুলো চালু রেখেও কাজ খতম হত না। গ্যাস চেম্বারে ইহুদিদের চাবুক মেরে মেরে ঢোকানো থেকে, চুল্লি চব্বিশ ঘণ্টা চালু রেখে তাতে লাশ পুড়িয়ে ছাই করে জলে ভাসানো পর্যন্ত সব কাজ করত কোনও কোনও স্থলে ইহুদিরাই। তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে এই প্রলোভনে। পরে অবশ্য তাদেরও ঘাড়ে গুলি করে করে মারা হত, পিছন থেকে, অতর্কিতে।