গাঙের ভূত
নৌকোর পিছনে লেগেছে ঠিক। এমন হয়, দিগ্বিবিদিক শূন্য অথৈ গাঙ, এই গাঙে সব সময় হা হুতাসী, হু হু বাতাস বয়েই যাচ্ছে। যে বাতাস বয়ে বেড়ায়, তা যে সব সময় নিরীহ, নির্দোষ সে কথা বলা যাবে না। ভালো বাতাস, মন্দ বাতাস, দুষ্ট বাতাস, পাগলা বাতাস…কত রকম বাতাস যে আছে। রোখন হলো জলদস্যু। গাঙের নৌকো, লঞ্চ, স্টিমার লুট করে তার আনন্দ। তবে হ্যাঁ, সে তার কাজ এমন নিঃশব্দে করে যে আজ পযর্ন্ত তার হাতে একটি মানুষও মারা যায়নি। পিস্তল আছে, শূন্যে ভেসে ফেটে যাওয়া বোমা আছে তার কাছে। তাতেই সওদাগরী নৌকো কুপোকাত। আর আছে জলবোমা। জলে ফাটে। তাতে জলস্তম্ভ ওঠে অনেক উঁচু পযর্ন্ত। জলবোমার তৈরি কৌশল তাকে শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিল তার ওস্তাদ হরি সর্দার। লোকটা বাঘের পেটে গেছে শোনা যায়। নৌকো নিয়ে বের হলো, তারপর ভ্যানিশ। কেউ কেউ বলে গাঙের তেনাদের কেউ, তা বাঘের ভূতও হতে পারে, শোধ নিয়েছে। সে নৌকো নিয়ে মধুতলা দ্বীপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, বাঘের দ্বীপ থেকে বাঘ উড়ে এসে তাকে মুখে করে উড়ে গিয়েছিল গাঙের ভিতর। মধুতলায় বাঘ মেরেছিল নাকি হরি সর্দার তার জলবোমা দিয়ে। বাঘিনী সাঁতরে পেরিয়ে যাচ্ছিল এ দ্বীপ থেকে সে দ্বীপ। কতরকম কথাই না শোনা যায় বাতাসে। কিন্তু হরি সর্দার যে আর ফেরেনি, তা সত্যি। হুঁ, তার নৌকোর পিছু ধরেছে একটা বাতাস। গন্ধ পাচ্ছে রোখন। তার সাগরেদ বুনো মণ্ডলকে জিজ্ঞেস করল, কিছু মনে হচ্ছে তোর, ও বুনো?
বুনোর মস্ত চেহারা। গায়ে খুব জোর। একটা আম কিংবা কাঁটাল গাছ পিঠে করে এ গাঁ থেকে সে গাঁ নিয়ে যেতে পারে। নৌকো মাথায় করে সাঁতরে পার হতে পারে হাসনাবাদের গাঙ। এই সব কথাও বাতাসে ভাসে। বুনোর এমনি শক্তি, কিন্তু তাকে দিয়ে ফালতু কাজ করাতো তার গাঁয়ের সদানন্দ চক্কোত্তি, বামুন। বেড়া বেঁধে দে, কাঠ চেলা করে দে, আম গাছটা কেটে কাঠ গোলায় দিয়ে আয়। আর কাজে অন্যথা হলে কঞ্চির বাড়ি, এই হাত পাত, হাত পাত…। সদানন্দ হলো লিকলিকে একটা লোক, বুনো ফু দিলেই সে উড়ে যায় কিন্তু বুনো তাকে ভয় করত যমের মতো। একবার সদানন্দর বাগানের ফুল গাছ ছাগলে মুড়িয়ে খেয়েছিল, বুনোকে বৈশাখ মাসের খর রোদ্দুরে কান ধরে উঠবস করাচ্ছিল সদানন্দ ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে। রোখন গিয়েছিল তার মাসির বাড়ি মাসির মেয়ের বিয়ের নেমতন্ন খেতে। পথে দেখল একটা মস্ত চেহারার রাবনের মতো লোককে একটা লিকলিকে লোক উঠবস করাচ্ছে। লিকলিকে লোকটা তো ওই লোকটার কেড়ে আঙুলের মতোও নয়।ইস কী হেনস্থা। খুব খারাপ লেগেছিল রোখনের। সে দাঁড়িয়ে ছিল যতক্ষণ না শাস্তি শেষ হয়। অত রোদ্দুরে ওই লিকলিকে বামুন সদানন্দ যদি উঠবস করত, অজ্ঞান হয়ে যেত ঠিক। মরেই যেত কি না তার ঠিক নেই। কঞ্চির চেয়েও রোগা, জানলার গরাদের ফাঁক দিয়ে গলে যেতে পারে সদানন্দ। কী কাণ্ড একশো বার উঠবস করে লোকটা আবার কাঠ চেলা করতে লাগল কুড়ুল দিয়ে। একটু বিশ্রামও নিল না। কিছুই হয়নি যেন তার। গা মুছে নিল শুধু গামছায়। বুড়ো বামুন শাস্তি দিয়ে চলল তার মন্দিরের দিকে। তখন রোখন তাকে ডাকল, এই শুনে যা।
কী বলেন ছার। সে কুড়ুল হাতে তার সামনে এসে দাঁড়ায়। মস্ত দেহ। ঘামে চকচক করছে। গা শিউরে উঠেছিল রোখনের। সে তো জলের সর্দার। জলদস্যু। ডাঙায় এসে মনে হয় একেবারে দুবর্ল। সে সাহস করে বলেছিল, ওই লিকলিকে লোকটা তোকে উঠবস করাল কেন?
আঁজ্ঞে, ভালবেসে। খুব শান্ত গলায় বলেছিল সে, তারপর মিনমিনে গলায় বলেছিল, ছাগলে গাঁদার চারা মুড়িয়ে খেল যে,আমারই তো দোষ।
মুকখু, বেশ করেছে ছাগলে খেয়েছে, এই সাঁতার জানিস।
জানি ছার, সাঁতরে গাঙ পার হতি পারি।
নৌকোয় হাল ধরতে পারিস।
জানি ছার, বামুনবাবার জমি আছে আবাদে,সেই ভুতুয়াখালি দ্বীপে,আমি তো হাল বেয়ে নিয়ে যাই।
তখন রোখন সর্দার তার হাত ধরে বলেছিল, আমার সঙ্গে কাজ করবি?
কী কাজ? সে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল।
জলদস্যু হবি? রোখন তার কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করেছিল।
এই সেরেছে, পুলিসে ধরবে। সে চাপা গলায় বলে উঠেছিল, আর বামুনবাবার খুব অসুবিধে হবে, এত কাজ করবে কে?
আবার লোক রাখবে। রোখন বলেছিল।
ইনার বাগানে কেউ কাজ করতি চায় না, খুব খাটনি তো।
জলদস্যু রোখন বুঝেছিল লোকটা খুব সরল। লোকটাকে বিনি পয়সায় খাটায় বামুন। কোনো রকমে একে এখান থেকে তুলে নিতে পারলে এরই ভাল হবে। সে মাস বেতনে রাখবে। হাজার টাকা আর তিন বেলা খাওয়া। তাকে সমস্তটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। জলে থাকতে হবে। জলেই ডাকাতি করতে হবে। চোরাকারবারি নৌকো লুট করতে হবে। ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করতে হবে। তার এতবড় দেহ, গলায় কি জোর নেই? সে বলল, খুব আছে, কিন্তু বামুন ঠাকুর আস্তে কথা বলতে বলেছে, মিনমিন করে বলতে বলেছে, বামুনের বুক ধড়ফড় করে বলে সে আস্তে কথা বলে। একবার জোর গলায় কথা বলায় সাত ঘন্টা অজ্ঞান হয়ে ছিল বামুনবাবা, তাই সে মিনমিন করে এখন।
তাহলে চ আমার সঙ্গে। তার হাত ধরেছিল রোখন।
সেই বুনো বসে আছে নৌকোর এক গলুইয়ে। অন্য দিকে রোখন। একটা বাতাস অনেকক্ষণ ধরে পাক দিচ্ছে। তারা ফিরছে হাসনাবাদ। হাসনাবাদে বুনো নেমে যাবে, রোখন যাবে নিজের বাড়ি গতখালি। সে একটা দ্বীপ।
এখন জোয়ারের সময়।স্রোতের অনুকুলে চলেছে নৌকো।এবার বিশেষ কাজ হয়নি জলে বেরিয়ে। একটা ভুতুড়ে বাতাস যে পিছনে লেগে সব ভণ্ডুল করে দিচ্ছে তা বুঝতে পারছিল রোখন। ফলে দলের লোককে নামাতে নামাতে সেও ফিরবে বাড়ি। আবার সাতদিন বাদে বদর বদর, পীরের নাম নিয়ে বেরোবে। হাসনাবাদ থেকে নেবে বুনোকে আগে। তার দলে পাঁচজন আছে মোট। বুনো বলল, ছার, ঠিক ধরেছেন, বাতাসই ভণ্ডুল করে দেছে সব, কেউ একটা আছে।
আছে? রোখন সর্দার জিজ্ঞেস করল উৎকণ্ঠিত হয়ে।
হ্যাঁ আছে। বলে নাক টানল বুনো।
তাহলে তোরে নামাব না, হাসনাবাদ যেতে হবে না, তুই গতকালই চ।
কেন ছার?
রোখন বলল, আমি একা ফিরতে পারব না বুনো, শীত শীত করছে।
বুনো বলল, তা তো করবেই, বাতাসই ঠাণ্ডা বরফ।
ঠাণ্ডা বরফ হবে কেন?
বুঝতেছ না ছার, বাতাস তো এমনি বাতাস না, হেই কেডা রে? বলে ওঠে বুনো মণ্ডল। তার গলার আওয়াজ কী? জল পযর্ন্ত চলকে ওঠে। এই যে আওয়াজ দিল, জল কেন, বাতাসও চুপ। সব কেমন থম থম করতে লাগল। বুনো আবার গলা খাঁকারি দিল, ক’দিন ধরে পিছনে পিছনে ঘুরতেছ তুমি, আমাদের কোনো কাজ হয় নাই, ধারে কাছে আসে নাই কেউ, উলটা বাতাস, ঘুন্নি বাতাসে আসবে কেন, আগে কেডা বলো, নইলে এমন রাম নাম ছাড়ব, অজ্ঞান হই যাবা।
তখন তিনি আবির্ভূত হলেন। মাঝ নৌকোয় এসে ভাসতে লাগলেন। কী ঠাণ্ডা গো। গলায় গামছা জড়িয়ে নিয়ে চোখ বুঁজল রোখন। ভয় করছে খুব। অথচ বুনোর ভয়ডর বলতে কিছু নেই, মাথা মোটা হুমদো। তেনাদের ভয় করবে না কেন?
বুনো বলল,এই ঠিক হয়ে বসো,আমার ছার খুব ভালো,আমারে বামুনের খপ্পর থেকে উদ্ধার করে এনেছে, ভয় নেই, ছারের হিদয় খুব বড়।
আঁজ্ঞে হিদয় আমার মেজ কাকুর ছেলে, সোঁদরবনে মধু ভাঙতে গে ফেরেনি।
আরে ও হিদয় না, বুকিরি হিদয় বলে, লেখাপড়া নেই?
ছিল,জলে ডুবতি সব ভেসে গেল যে। খুনখুনে গলায় সে বলল। রোখন সর্দার বুঝল কথায় চন্দ্রবিন্দু লাগানো আছে। বোঝাই যাচ্ছে কে এসেছে।
বুনো জিজ্ঞেস করল, কী করে হলো?
আঁজ্ঞে তুফানে জাহাজ ডুবি হয়েছিল, তারপর থেকে গাঙে গাঙে ঘুরছি, দিশা পাচ্ছিনে, ডাঙায় যাব তো উপায় নেই, জলের ভিতর আমি ভেসে ভেসে মরে যাব।
মরার আর বাকি আছে কী, কিন্তু তুফান কবে হলো, কোথায় হলো, আমরা তো জানিনে। বুনো রোখনকে ডাক দিল, ও ছার ঘুমোয়ে পড়লেন নাকি?
না, এমনি। কোনো রকমে বলল রোখন, চোখ বন্ধই রেখেছে, তুই কথা বল।
তুফান কবে হলো, আমরা জানিনে কেন? বুনো জিজ্ঞেস করে।
চোখ পিটপিট করে রোখন দেখল নৌকোর মধ্যিখানে একটা অন্ধকারের স্তূপ। তার সঙ্গেই কথা বলছে বুনো। মূর্খ একটা। ভূত চেনে না। ভূতে ভয় পাবে না? আরে ভূতে যদি ভয় না পাস, তুই মানুষ হলি কেমনে?
না, ভয় পাবে কেন, আমি ঠাণ্ডাচরণ মল্লিক, ঠাণ্ডা মানুষই ছিলাম বলা যায়, জাহাজ ডুবি না হলে এতদিনে আমেরিকা চলে যেতাম, নেহাত বিপাকে পড়ে এয়েছি সাহস করে এই নৌকোয়।
যাহ বাবা, তার মনের কথা পড়ে নিয়ে বলে দিল! ঠাণ্ডাচরণ এর নাম। চোখ খুলেছে রোখন সর্দার, জিজ্ঞেস করল, জাহাজ আমেরিকা যাচ্ছিল?
ইয়েছ ছার। বলল ঠাণ্ডাচরণ।
তারপর? সাহস করে জিজ্ঞেস করল রোখন সর্দার।
অতলান্ত সাগরে তুফান হলো ছার, কী ঢেউ আর বিস্টি আর বাতাসের ঝাপটা।
সে সাগর কোথায়? জিজ্ঞেস করল রোখন।
আঁজ্ঞে,গাঙের পর গাঙ,তারপরে বড় গাঙ, তারও পরে আরো বড় গাঙ, তারপরে হবে কিংবা আরো পরে হবে পচ্চিম দিকে যেতে হবে, সুয্যি ডোবার দেশ সে।
কী বলতেছ, সুয্যিডোবার দেশ? অবাক হয়ে যায় বুনো আর রোখন।
ইয়েছ ছার, সেই দেশেই সুয্য ডোবে। বলল ঠাণ্ডাচরণ।
বুনো বলল, ইস্কুলে পড়েছি সূয্যি ওঠার দেশের কথা।
হুঁ হুঁ, চা পান। বলল রোখন সর্দার।
বুনো বলল, না ছার জাপান।
ওই হলো, তুই জ বল আমি চ বলি। রোখন বলল।
ঠাণ্ডাচরণ বলল, সুয্যিডোবার দেশে যাওয়াই হলো বেপদ, না গেলে তুফান হতোনি, আমারে ডাঙায় দিয়ে এস বাবারা, আমি তোমাদের গোলাম হয়ে থাকব।
বুনো সর্দার বলল, তুই খুব ঠাণ্ডা।
হ্যাঁ ছার, মরার পর আরো হয়েছি, সুয্যিডোবার দেশে তো খুব ঠাণ্ডা, সিটাও ঢুকে গেছে আমার অন্ধকারে।
বু্নো জিজ্ঞেস করল, তুই অন্ধকার?
ইয়েস ছার, অন্ধকার জমে জমে এই হয়েছি। বলল ঠাণ্ডাচরণ।
থাক বসে, আমরা হাসনাবাদের দিকে যাচ্ছি, তোরে সেখেনে নামাবো, আমিও নামব, ডাঙা পেয়ে যাবি। বুনো বলল। শুনে গা-পিত্তি জ্বলে গেল রোখন সর্দারের। জন্মের আগে থেকে তার ভূতের ভয়। ভূত সে একদম সহ্য করতে পারে না। ভূত নিয়ে হাসনাবাদ যেতে হবে। হা ভগবান। সে মনে মনে রাম নাম নিতে লাগল।
ছার খারাপ নাম নিওনি, কষ্ট হয় খুব, দম আঁটকে আসে। ঠাণ্ডাচরণ বলল।
এই কথায় বুনো বলল, হ্যাঁ ছার, উ নাম মনে এনেননি, ঠাণ্ডাচরণ মশায়ের কষ্ট হয়।
খুব রেগে গেল রোখন।কিন্তু ভূতের কথা অমান্য করার সাহস হলো না। সে রাবন রাবন বলতে লাগল মনে মনে। তাও বুঝতে পেরেছে ঠাণ্ডাচরণ। বলল, এইটে বলেন, খুব আরাম হয়, রাবন রাবন।
উফ! বুনো শুনে বলল, আমার ছারের বড় হিদয়, রাবন রাবন!
এখন বুঝতে পারছে বামুন কেন বুনোকে কান ধরে রোদের ভিতর উঠবস করাতো। বেশ করত। মুখ্যু। তোর মালিক কী চায় তা বুঝিসনে। এখনো হাসনাবাদ ঘন্টা তিন। ভুটভুট ভুটভুট করে বোট চলেছে তো চলেছে। ভুটভুট ভুটভুটকে মনে হচ্ছে ভূতভূত ভূতভূত।কী করে সে যাবে ভূতের সঙ্গে অতদূর। সে বলল, বুনো আমার গা কেমন করছে, এ কারে তুললি বোটে?
ঠাণ্ডাচরণ ঝিমোচ্ছিল, অন্ধকারের স্তূপ ঢেউয়ে দুলছিল। গাঙের ভূত ডাঙায় কেন যাবে?বুনো বলল, ইনি তো আছরয় নিছে, আমি কী করব ছার।
তখন রোখন সর্দার করবে কী? কালো বরফের মতো অন্ধকার জমা ভূতের দিকে তাকিয়ে তার ছয় ব্যাটারির টর্চ তাক করল। সুইচে আঙুল দিয়েছে তো ঠাণ্ডাচরণ টের পেয়েছে, কী করেন কী করেন ছার, মরে যাব।
বুনো বলল, না ছার না।
রোখন চুপ করে থাকল। কিন্তু আবার। টর্চ বের করেই দপ করে জ্বালিয়ে দিতেই গাঙ জুড়ে আর্তনাদ, এ কী করলেন ছার, উঁহু, কী কষ্ট, আমি ফুরিয়ে যাচ্ছি!
জমা অন্ধকারের দফারফা। ভূত ভ্যানিশ আলোর ভিতরে। কিন্তু টর্চ তো জ্বলে থাকতে পারে না। ব্যাটারি ফুরিয়ে যাবে। তাই নেভাতে আবার বাতাস আরম্ভ হলো। সেই উথালপাথাল বাতাস। বুনো বলল, ছার এডা কী হলো, সে তো শুধু ডাঙায় যেতে চেয়েছিল, এমন করলেন কেন? চোখ মুছতে লাগল বুনো মণ্ডল। তখন রোখনের মনে হলো সত্যিই এটা কি ঠিক করেছে সে? অন্ধকার গাঙের দিকে তাকিয়ে ডাকতে লাগল, রাবন রাবন, আয় আয়, ঠাণ্ডাচরণ ফিরে আয়।