গল্প-পরিচয় – শোভন বসু

গল্প-পরিচয়

১৯১৫ সালে (বাংলা ১৩২২ সন) শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ষোল বছর বয়সে তাঁর জীবনের প্রথম ছোটগল্প— একটি অলৌকিক কাহিনী— রচনা করেন। গল্পটির নাম ‘প্রেতপুরী’। পুষ্পপাত্র পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েও লেখক দীর্ঘকাল এটিকে তাঁর কোন গল্পগ্রন্থে স্থান দেননি। ১৯৬৪ সালে শারদীয় রোমাঞ্চ পত্রিকায় এই গল্পটি পুনর্মুদ্রিত হয়। লেখকের শেষ অলৌকিক গল্প হল ‘কামিনী’ (১৯৬৫)। এই দুটি গল্পই ঘটনাচক্রে একই গ্রন্থে— ‘রঙীন নিমেষ’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

শরদিন্দুবাবু তাঁর প্রথম অলৌকিক গল্পেই ভূতজ্ঞানী বরদার সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। প্রথম দিকে ভূতের গল্পগুলি মূলত বরদারই কাহিনী। অধিকাংশ গল্পের পশ্চাৎপট মুঙ্গের শহর ও বিহারের গ্রামাঞ্চল। বরদার গল্প বলার এক নিজস্ব ভঙ্গি ছিল। গোড়াতেই চমকপ্রদ একটা কথা বলে সে শ্রোতাদের হতবুদ্ধি করে দিত তারপর শ্রোতারা সামলাইয়া ওঠবার আগেই গল্প শুরু করত। তখন আর তাকে থামানোর উপায় ছিল না। এইভাবেই সে অল্পকালের মধ্যে পাঠকদের মনে আসন পেতে বসে। সত্যান্বেষী ব্যোমকেশের সঙ্গেও একবার ভূতান্বেষী বরদার সাক্ষাৎ ঘটেছিল। সে কাহিনী— ব্যোমকেশ ও বরদা— ইতিপূর্বে শরদিন্দু অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ডে সঙ্কলিত হয়েছে।

এক কৌতূহলী পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে লেখক মৃত্যুর কয়েক মাস পূর্বে বলেছিলেন: ‘ভূতের গল্প সম্বন্ধে আমার একটু দুর্বলতা আছে। বরদা চরিত্র কাল্পনিক। নতুন কোন আইডিয়া না পেলে ভৌতিক গল্প আর লিখব না। আসলে বরদাই আমাকে ছেড়ে গেছে, আমি বরদাকে ছাড়িনি।’

কেবলমাত্র গ্রন্থাকারে প্রকাশিত ছোটগল্পগুলির মধ্য থেকে নির্বাচন করে দু’ধরনের গল্প অম্‌নিবাসের পঞ্চম খণ্ডে সঙ্কলিত হয়েছে। প্রথম একত্রিশটি গল্প অলৌকিক ধরনের; লেখকের সমস্ত অলৌকিক গল্পগুলি এখানে দেওয়া হয়েছে। বত্রিশ থেকে আশি সংখ্যক বাকি গল্পগুলি হল মূলত সরস কাহিনী— হাস্যোজ্জ্বল কৌতুকরসই যার প্রধান উপজীব্য।

গল্পগুলি রচনাকাল অনুসারে সন্নিবিষ্ট। লেখকের সমুদয় গল্প সঙ্কলনের পর গল্পগ্রন্থগুলির পরিচয় নির্দেশ করা হয়েছে।

গ্রন্থের সংস্করণ ভেদে কোন কোন গল্পের সামান্য পাঠ-ভেদ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া লেখক তাঁর ব্যক্তিগত কপিতে নিজে কিছু কিছু সংশোধন ও পরিবর্তন করেছিলেন। এইভাবে সংশোধিত পাঠই বর্তমান সঙ্কলনে গ্রহণ করা হয়েছে।

শরদিন্দুবাবুর কতকগুলি হাস্য ও কৌতুকরসের গল্প নিয়ে ইতিপূর্বে দুটি সঙ্কলন গ্রন্থ বেরিয়েছিল— সরস গল্প ও হসন্তী। এই দুটি বইএর সব গল্প শরদিন্দু অম্‌নিবাসের পঞ্চম খণ্ডে পাওয়া যাবে।

অলৌকিক ও অতিলৌকিক গল্পেরও একটি সঙ্কলন ‘কল্পকুহেলী’ নামে পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে। শ্রীসুভদ্রকুমার সেন লিখিত সেই গ্রন্থের ভূমিকার অংশ বিশেষ এখানে উদ্ধৃত করা হল:

‘…কলা বৌয়ের ঘোমটার আবরণ সরাতে চাওয়াটা যেমন অযৌক্তিক এবং অশোভন তেমনি অলৌকিক অতিলৌকিক কাহিনীর সম্পূর্ণ বুদ্ধিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা চাওয়াটা অযৌক্তিক ও অপরিণত মননের পরিচায়ক।

সার্থক অলৌকিক কাহিনীর একটি মূল ধর্ম হল the benefit of the doubt, গল্পটি পড়ে শেষ করবার পর পাঠকের মনে কিছু সন্দেহ থেকে যাওয়া চাই; অর্থাৎ ব্যাপারটি হলেও হতে পারে এই ধরনের অনুভূতি পাঠকের মনে রেশ জাগিয়ে রাখে। একটি উদাহরণ দিলে ব্যাপারটি পরিষ্কার হবে।…

[‘কালো মোরগ’] গল্পটিকে যদি বিশ্লেষণ করি দেখব যে, ঘটনার পরম্পরা এমনই যে গোকুলবাবুর মন সহজেই বিভ্রান্ত হয়েছে। পাঠক ঘটনাগুলি এই ভাবে সাজালেই আমার বক্তব্যের যাথার্থ্য অনুধাবন করতে পারবেন। জামায় টান লাগা— সেই বিশেষ গাছটি দেখা— আবদুল্লা কাহিনী স্মরণ— শীতের মায়াবী কুয়াশা ছড়ানো সন্ধ্যা— ভগ্নপ্রায় কবরখানা— এবং সর্বোপরি মোরগটির রংয়ের সঙ্গে আবদুল্লার লুঙ্গির সাদৃশ্য। তারও চেয়ে বড় কথা গোকুলবাবুর মন সেই সময়ে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেক বেশী মাত্রায় উত্তেজিত ছিল। এই ভাবে অবচেতন মনের নজীর ও দোহাই দিয়ে হয়তো সমস্ত ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করা চলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাঠকমনে কিছু খুঁতখুঁতুনি থেকে যায়। সমগ্র ব্যাপারটিই কি অবচেতন মনের কারসাজি? কিংবা আরো কিছু বুদ্ধির অগম্য অভিজ্ঞতা জীবনের অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে থাকে? এই সংশয়েই অলৌকিক কাহিনীর রসপুষ্টি বা সার্থকতা। ঠিক এই রকম ঘটনা জীবনে হয়তো ঘটে না, একথা হয়তো সত্য; কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও ঘটতে পারে। ঘটেনি বা ঘটে না বলেই ঘটবে না একথা জোর করে বলা চলে না।…

…বরদার উক্তিব্যক্তি সম্বন্ধে তার বন্ধুরা স্থিরনিশ্চয় নয়। ইংরেজী হলে বলতুম রীতিমত sceptic৷ বরদার বর্ণিত কাহিনীগুলি তার বন্ধুরা শুনতে অনিচ্ছুক নয়, কিন্তু বিশ্বাস করতে পরাঙ্মুখ। অথচ যখন গল্প বলা শেষ হয় তখন তারা গল্পটিকে গাঁজাখুরি বলে সরাসরি উড়িয়ে দিতেও পারে না। ঘরে ফিরে যেতে তাদের গা ছমছম করে। ধরা যাক ‘নীলকর’ গল্পটি। গল্পের নায়িকা কবুতরী সেই ধরনের মেয়ে যাদের বলে পুংশ্চলী। কাহিনীর শুরু থেকে তার ব্যবহার তার চরিত্র ও স্বভাব অনুযায়ী। কিন্তু নীলকর সাহেবের সেই কোৎঘরে বরদার সামনে তার ব্যবহার কি hysteria-জনিত, নাকি অন্য কোন কারণজাত? বরদা তার উত্তর জানে কি? অন্তত তার বন্ধুরা সঠিক উত্তরটি জানে না।…

ভূতুড়ে বাড়ি প্রকল্পনা (theme) আশ্রয় করে কাহিনী… ‘প্রতিধ্বনি’ এবং ‘অশরীরী’…। পুরনো বাড়ি জীবন-নাট্যের অনেক বাহ্যিক ও আন্তরিক দৃশ্যের নীরব সাক্ষী। জন্ম-মৃত্যুর লাল নীল সূতায় বোনা জীবন-নক্সার বহু বিচিত্রতা তার কক্ষে কক্ষে অলিন্দে অলিন্দে আজও হয়তো আঁকা হয়ে আছে, কে জানে। যে সব নরনারী একদিন তাদের দুঃখসুখের, হাসিকান্নার ছন্দেবিছন্দে এই ঘরগুলিকে ভরিয়ে রেখেছিল, আজ তারা কোথায়? পাত্র-পাত্রীরা হয়তো অনন্তে বিলীন হয়েছে, কিন্তু তাদের তীব্র অনুভূতি, জ্বলন্ত ইমোশন— সে সবও কি মহাশুন্যে বিলীন হয়ে গেছে? কোথাও কি কোনও ‘অনাহত বীণাতারে’ তারা বাজছে না? কোথাও কি বাতাসের দমকে দমকে ঈথারের থরে থরে, সময়ের স্তরে স্তরে সেগুলি সঞ্চরণ করে না? যেমন করে মহাফেজখানায় পুরানো কাগজপত্র রক্ষিত হয়, তেমন কোথাও থাকে না কি? বছরের পর বছর কেটে যায়, সে সব কাগজপত্র কেউ নেড়ে-চেড়ে দেখেও না; কিন্তু একদিন কেউ তো সেগুলো দেখতেও পারে?

‘প্রতিধ্বনি’ গল্পটির বিশেষত্ব এই যে, এই গল্পে অলৌকিকের কোন রূপ প্রকাশিত নেই। তবু সে আছে। তার অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। বাতাসের মতো আলোর গতিপথের মতো দৃষ্টিগোচর না হলেও তার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না।

‘অশরীরী’ গল্পে বক্তার কাঁধে হঠাৎ শিমুল ফুল পড়ার কল্পনাটি বড় সুন্দর। ব্যাপারটি কি সম্পূর্ণ কাকতালীয়?

এই ধরনের কাকতালীয় (?) যদি ‘মরণ-ভোমরা’ গল্পে। বক্তা গল্প বলা শেষ করলেন। বন্ধ ঘর। চুরোটের ধোঁয়ায় ঘরের হাওয়া ভারী হয়ে উঠেছে। একজন উঠে গিয়ে জানালাটা খুলে দিলেন। অমনি সঙ্গে সঙ্গে শীতল বাতাস নিয়ে এল আরাম আর একটা কালো কুচকুচে কালো ভ্রমর।

‘শূন্য শুধু শূন্য নয়’ এবং ‘সবুজ চশমা’ fantasy জাতীয় রচনা।

‘মায়া কুরঙ্গী’ এবং ‘সতী’ মূলতঃ অতি-অলৌকিক কাহিনী। ‘মায়া কুরঙ্গী’র শেষ অনুচ্ছেদে হঠাৎ বক্তার নারীমুখ চিত্রণ কুশলতায় লেখকের তুলির টানটি (touch) বড় সুন্দর।

‘চিরঞ্জীব’ গল্পের মুখ্য চরিত্র চিরঞ্জীব-কে গঞ্জিকাবীর মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গল্পের সমস্ত আবহাওয়াটি বদলে গেল কর্ণেল ভর্মার একটি প্রশ্নে: ‘চিরঞ্জীব! কোথায় সে?’…

‘কামিনী’ গল্পে প্রচলিত প্রকল্পনাকে নতুনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

আর একটি আশ্চর্য গল্প ‘বহুরূপী’। এই গল্পের প্রকল্পনা doppelgaenger কল্পনাকে আশ্রয় করেনি। পক্ষান্তরে জীবিত ও অ-জীবিতের এই লুকোচুরির কল্পনাটি খুব চমৎকার। এবং বরদাকে impersonate করার কল্পনাটি তুলনাহীন।

‘ছোটকর্তা’য় জীবিত ও অজীবিতের মধ্যে এক মধুর সম্পর্কের স্নিগ্ধ চিত্র আঁকা হয়েছে। পারিবারিক ও বাস্তু প্রেতাত্মা— ইংরেজী হলে বলতুম domestic ghost প্রকল্পনাটি অভিনব।

‘নিরুত্তর’ ও ‘ফকিরবাবা’ occult জাতীয় গল্প।

‘পিছু পিছু চলে’ গল্পটির নাম সহজেই হতে পারত ‘এড়ানো যায় না’। সত্যবান গজাধর সিন্ধে কাকে দেখছে? অনন্তা মারাঠে কে? অনন্তার প্রেত কে? নাকি তার নিজের বিবেক অনন্তার রূপ ধরে তাকে তাড়া করে ফিরছে?

শ্রীযুক্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অলৌকিক-অতিলৌকিক কাহিনীর আর-একটি উল্লেখযোগ্য দিক স্থানীয় পরিবেশের যথাযথ ও সুন্দর বিনিয়োগ। ‘মধু-মালতী’ গল্পে পুণা শহর ও মারাঠা জীবন যথাযথ ও সুন্দরভাবে বিম্বিত হয়েছে। পশ্চিম ভারতের এই শান্ত স্নিগ্ধ শহরটির সঙ্গে যাদের পরিচয় আছে তাঁরা ‘মধু-মালতী’ বা ‘চিরঞ্জীব’ পড়তে বসে নিশ্চয়ই মন-কেমনের হাওয়া অনুভব করবেন। বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকের বিহার প্রদেশ, বিশেষতঃ মুঙ্গের শহর বরদার কাহিনীগুলিকে উদ্ভাসিত করেছে। পরিবেশ-সৃষ্টির এই সহজ কুশলতায় অলৌকিকের মধ্যেও মানবিক রস সঞ্চারিত হয়ে, গল্পগুলিকে আরও বেশী চিত্তহারী করেছে।’

‘শ্রেষ্ঠ গল্প’-এর ভূমিকায় শ্রীজগদীশ ভট্টাচার্য লেখকের ভূতের গল্প সম্বন্ধে মন্তব্য করেছেন:

‘ভূতের ভয় মানুষের সংস্কারগ্রস্ত মনকে আদিম যুগ থেকে অধিকার করে আছে। ভয় যেমন প্রবল, আকর্ষণও তেমনি দুর্বার। কিন্তু ভৌতিক রহস্য চিরদিনই অন্ধকারে আবৃত। এ যুগের মানুষের বৈজ্ঞানিক কৌতূহল এই অন্ধকারকে আলোকিত করবার জন্যে অলৌকিক লোকেও তার বুদ্ধির আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। ভৌতিক রহস্যলোকে কবিকল্পনা চিরকালই প্রসারিত হয়েছে। আমাদের ত্রৈলোক্য মুখুজ্জের ভুতুড়ে গল্প থেকে পরশুরামের ‘ভূশণ্ডীর মাঠে’র রসিকতা পর্যন্ত বিচিত্র রসের অনেক ভৌতিক কাহিনী লিখিত হয়েছে। শরদিন্দুবাবুর ভূতের গল্পে ভয়ের চেয়ে বিস্ময়ের উপাদানই বেশী। ফলে সেগুলোতে ভয়ানক-রসের চেয়ে অদ্ভুত-রসেরই পরিবেশন। শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত বলেছিল, ‘মৃত্যুর পরপারের ইতিহাসটা যদি কোনও উপায়ে শুনিয়া লইতে পারা যায়, তবে তার চেয়ে লাভ আর কি আছে? তা সে যে-ই বলুক এবং যেমন করিয়াই বলুক না।’ শরদিন্দুবাবু জন্মজন্মান্তরের জীবনধারাকে সাহিত্যে গ্রথিত করে রেখেছেন। মৃত্যু ও পুনর্জন্মের মধ্যেকার তমসাবৃত জীবনরহস্য স্বভাবতই তাঁকে আকর্ষণ করেছে। এখানেই তাঁর ভূতের গল্পের উৎপত্তি।’

‘চুয়াচন্দন’ গল্পগ্রন্থের সমালোচনা প্রসঙ্গে শ্রীপ্রমথনাথ বিশী এই সঙ্কলনে সন্নিবিষ্ট কয়েকটি গল্পের বিষয়ে লিখেছিলেন (শনিবারের চিঠি, আষাঢ় ১৩৪৩):

…‘মরণ-ভোমরা’ ও ‘রক্ত-খদ্যোত’ ভৌতিক গল্প। ভূতের গল্পের দুটি অত্যাবশ্যক অঙ্গ— তাহা ভূত হওয়া চাই ও গল্প হওয়া চাই। শরদিন্দুবাবু এ বিষয়ে সিদ্ধহস্ত। ইহার প্রধান রস— রহস্যের রস। সংস্কার এখানে বুদ্ধির বড় শরীক। শরদিন্দুবাবুর মধ্যে এই রহস্য ঘনীভূত করিয়া তুলিবার শক্তি যথেষ্টই আছে।… এবার হইতে ভোমরা দেখিলেই শরদিন্দুবাবুর কথা মনে পড়িবে, কি জানি তিন দিনের মধ্যে কাহাকে ইহধাম ত্যাগ করিতে হইবে।’

শরদিন্দুবাবু তাঁর জীবদ্দশায় বরদার গল্পগুলি নিয়ে একটি গল্প-সংগ্রহ প্রকাশ করার কথা ভেবেছিলেন। তাঁর নোটখাতায় এই সংগ্রহের একটি ভূমিকার খসড়া দেখা যায়। সেটির আংশিক উদ্ধৃতি বোধকরি অপ্রাসঙ্গিক হবে না:

‘রক্ত-খদ্যোত’ গল্পের শেষ কয়েক পংক্তির ভাবাংশ স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের একটি গল্প হইতে গৃহীত হইয়াছে।

‘অশরীরী’কে লিখিবার সময় দ্য-মোপাসাঁর ‘La Horla’ নামক গল্পটি মনের পশ্চাৎপটে বিদ্যমান ছিল। উভয় গল্পই ডায়েরীর আকারে লেখা— কিন্তু বিষয়বস্তুতে কোনো মিল নাই। ‘অশরীরী’কে দ্য-মোপাসাঁর ভাবানুপ্রেরণায় লিখিত বলা যাইতে পারে।

অন্য গল্পগুলি মৌলিক।’

শোভন বসু
২৮ জুলাই ১৯৭৫

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *