গরুর রচনা
গরুর রচনা। গরুর চোনা নয়। তা ভাল না মন্দ এ নিয়ে কত কথা আছে। গরুর রচনার চেয়ে দেশপ্রেম কিংবা বড় হয়ে তুমি কী হতে চাও লিখতে সুবিধে হতো। বড় হয়ে আমি “দেশপ্রেমিক” হব এই রচনা লিখে সাড়া ফেলে দিয়েছিল আমার খুড়তুতো ভাইয়ের মাসতুতো ভাই মহেশ। মহেশ একটি গরুর নাম। আবার মহেশ মাসতুতো ভাইয়ের নাম। সুতরাং মহেশ নামের এই মানুষটি একটি গরু। গো মাতা নয় গো পিতা। বলদ। সেই বলদে দেশপ্রেম নিয়ে লিখে ২০-র ভিতরে কুড়িই পেয়েছিল শোনা যায়। আমার খুড়তুতো ভাই গণেশ বলে, বরং ২০-র চেয়ে বেশি পাওয়াও অসম্ভব ছিল না। এই কালে পরীক্ষায় যেমন মাইনাস নম্বর দেওয়া হয়, প্লাস দেওয়া চালু করলে কুড়িতে মহেশ পঁচিশই পেত। আমি লিখলে আমিও পেতাম। আমি কাত্তিক গরুর রচনার বদলে আমি দেশপ্রেম লিখতাম না হয়। দেশ অনেক বড়। দেশ আমার দেশ। গরুও অনেক বড়। গরু আমার গরু। গবাদি পশু খুবই মূল্যবান। পুরাকালে দেশ জয় করে সৈনিকরা সোনাদানা রমণী এবং গবাদিপশু লুন্ঠন করত। সেই লুন্ঠন বন্ধ করতে দেশপ্রেমিক হওয়া জরুরি। সুতরাং গরুর রচনা লিখতে গিয়ে যদি দেশপ্রেম নিয়ে লেখা হয়, তা ভুল তো হবে না, বরং তাইই সমীচিন হবে। দেশ লুন্ঠন এবং গবাদি পশু লুন্ঠন একই ঘটনার দুই রূপ। গো-রক্ষাই দেশ-রক্ষা। দেশ রক্ষাই গো রক্ষা। আসুন গরুর কথা বলি গরুর রচনার মাধ্যমে। গরু নিয়ে যেমন মহেশ গল্পের কথা জানি। গরু নিয়ে আর এক গল্প জানি, ‘হাজরা নস্করের যাত্রা সঙ্গী’ (শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়)। হাজরা চাষা মানুষ। গরু কিনে গো-হাট থেকে ফিরছে। রাতে গরুর সঙ্গে রুটি ভাগ করে খাচ্ছে। গরু আর মানুষ এক সঙ্গে বসবাস করে একে অন্যের ভাষা বুঝতে পারে। সুখ দুঃখও। গরু চিরকালই ভাল যাত্রাসঙ্গী। যাই হোক গরুর রচনা লিখতে গিয়ে অন্য কথা না বলে গরুর কথা বলি।
গরু এক অবোধ প্রাণী। মানুষের ভিতরেও অবোধ মানুষ আছে। তাঁকে আদর করে ‘গরু’ বলা হয়। যেমন মহেশ আর গণেশ। আমার খুড়তুতো ভাই এবং তার মাসতুতো ভাই। এবং আমি কাত্তিক। আমিও এক অবোধ মানুষ। সাতও জানি না, পাঁচও জানি না। গরুর চারটি পা। চতুষ্পদ প্রাণী। চতুষ্পদ নিয়ে গরু চতুর্দিকে ঘুরে বেড়ায়। উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর আর পুবে বঙ্গোপসাগর… উত্তর পুবে আসাম নাগাল্যাণ্ড… ইত্যাদি ইত্যাদি। এই আমাদের দেশ। এই আমাদের শুরু ও শেষ। যেমন এই আমাদের শাড়ি, এই আমাদের নারী। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা, মুম্বই থেকে গুয়াহাটি, এই ভারত আমার দেশ। গরু এই চারদিকে চতুষ্পদ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। গরু দুধ দেয়। দুধ আমাদের পুষ্টি দেয়। পুষ্টির কথা শুনলে আমার মনে পড়ে ফষ্টির কথা। ফষ্টির কথা শুনলে নষ্টির কথা। কী থেকে কিসে যাচ্ছি? যাচ্ছি তো যাচ্ছি। গরু ঘাস খায়। নদীতীরে সবুজ ঘাসের জমি। নদীর নাম মালিনী। মালিনী নদীর কূলে কন্বমুণির আশ্রম। সেই আশ্রমে উর্বশী মেনকা এবং বিশ্বামিত্রর গর্ভজাত কন্যা শকুন্তলা বড় হয়ে উঠছিল। বেতস লতার মতো তার দেহ বল্লরী। এই সময় দেশের রাজা দুষ্মন্ত শিকারে বেরিয়েছিলেন। একটি হরিণ শিশুর পিছু পিছু দৌড়ে তিনি এসে পৌঁছলেন কন্বমুণির আশ্রমে। যুবতী শকুন্তলাকে দেখে মোহিত হলেন। দেশের রাজা বলে কথা। আশ্রম কন্যাকে প্রলুব্ধ করে নির্জনে নিয়ে গিয়ে ভোগ করলেন। অভিজ্ঞান দিয়ে গেলেন। অভিজ্ঞান আংটি যেমন হতে পারে, অভিজ্ঞান হতে পারে অঙ্গে অঙ্গে নখের দাগ। দাঁত আর নখের দাগ অভিজ্ঞান নিয়ে গৃহে ফেরে বন কন্যা শকুন্তলা, এক আদিবাসী যুবতী। বনে গিয়েছিল পাতা কুড়োতে, ঝাঁটি কাঠ সংগ্রহে। বন তাদের পেটের ভাত দেয়। সালোয়া জুড়ুম, দেশপ্রেমিক গ্রাম-রক্ষী বাহিনীর লোক শকুন্তলাকে ভোগ করে অভিজ্ঞান দিয়ে চলে গেছে। মালিনী নদীর তীরের বনভূমিতে এমন হয়ে থাকে। দুষ্মন্তরা এখন এমন করে থাকেন।
লিখছিলাম গরুর রচনা। হয়ে গেল দুষ্মন্ত আর শকুন্তলার গল্প। গরুর দুইটি কান, মাঝে মাঝে নাড়ায়। লেজ দিয়ে মশা মাছি পোকা-মাকড় তাড়ায়। হাম্বা রব দিয়ে গো-শাবক গো-মাতাকে ডাকে। সেই ডাক গ্রীষ্মের দ্বিপ্রহরে শোনা যায় গ্রামের বাতাসে। অন্তত আমি তো শুনেছি। তৃষ্ণার্ত গো-শাবক, বাছুরের মুখে তখন কাকিমা জলের বালতি ধরতেন। আমাদের বাড়িতে কালো গরু ছিল। অঘ্রান মাসভর তার পরিচর্যা করত মা-কাকিরা। সকালে খুরে আর শিঙে তেল মাখাত। গলায় জবাফুলের মালা পরাত। গরু আমাদের কৃষিভিত্তিক সমাজে গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে এক নম্বর। সেই সমাজ ধীরে ধীরে বদলে গেছে। গরুর গাড়ি এক সময়ে ছিল অন্যতম যান। গাড়োয়ানের গাড়ি টানে গরু। এ দেশে পাতাল রেল, রাজধানী এক্সপ্রেসের সঙ্গে গরুর গাড়ি আছে। বিশ্বের সব চেয়ে শ্লথ গতির যান। আবার নিরাপদ যানও বটে। বাসে ট্রামে যাওয়া আসা করলে হামেশাই তো শুনতে পাই কন্ডাকটর, ড্রাইভারকে সুসভ্য নাগরিক তিরস্কার করছেন, যা গরুর গাড়িতে কন্ডাকটরি করগে যা, ড্রাইভার না গরুর গাড়ির গাড়োয়ান! গরুর গাড়ির গাড়োয়ান হওয়ার চেয়ে অসম্মান আর নেই যেন। একটা নাটক বহুদিন চলেছিল, গরুর গাড়ির হেড লাইট। মোটা দাগের হাসির নাটক। গরুর গাড়ি রাতে চলে না। খুব দরকারে চললে নিচে লন্ঠন ঝুলত। মানুষের ইতিহাসে যানবাহন যতো গতিশীল হয়েছে গরুর গাড়ি ততো ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি শেষ গরুর গাড়ি যাত্রা করেছিলাম ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের (তখন অখণ্ড মেদিনীপুর) গোপীবল্লভপুরের বর্গীডাঙা থেকে প্রায় মাইল কুড়ি পশ্চিমে বংশীধরপুর গ্রামের উদ্দেশে। সঙ্গে বিছানাপত্র আর সুটকেস। আহা শীতের দিনে রোদ পোয়াতে পোয়াতে ঘন্টা চারের যাত্রা। কম বেশি হতে পারে। গাড়োয়ান ছিলেন বছর ৩৫-এর অতীব বলশালী আদিবাসী পুরুষ। গায়ে আলোয়ান সামনে বসে দুই বলদকে নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে যাচ্ছে উদ্দিষ্ট পথে। সেই পথ মোরামের। চড়াই উৎরাই ছিল পথে। টিলার গা দিয়ে, অরণ্যের ধার দিয়ে সেই যাত্রা। দু চোখ ভরে প্রকৃতিকে দেখা। সমুখে বহুদূরে সিংভূমের পাহাড় দেখা যাচ্ছে। গাড়োয়ান তার জিভ আলটাকরায় ছুঁইয়ে বিচিত্র ধ্বনিতে গরুকে নির্দেশ দিচ্ছিল। দুই বলদ আমাদের নিয়ে যেন অগস্ত্য যাত্রা করেছিল। মন খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পৌঁছতে বিকেল হয়ে গিয়েছিল। এতটা পথ এক সঙ্গে আসায় গাড়োয়ানের সঙ্গে ভাব হয়েছিল খুব। রাতে সে থেকে গেল গাড়ি আর গরু নিয়ে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নদীর ধারে বাড়ি গল্পে যে পরিবারটি কলকাতা ছেড়ে এক নদীর ধারে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেছিল বনগাঁ রাণাঘাট লাইনের গাংনা পুর স্টেশনে নেমে, দুপুরে যাত্রা করে অপরাহ্নে তারা পৌঁছেছিল নতুন বসতিতে। গাড়োয়ান বলছে, ওই দেখা যায় বটতলা, তারপর আর বেশি নয়। ছইয়ের ভিতর থেকে পিছনে তাকিয়ে শ্যামলী গ্রাম দেখতে দেখতে চলে। সমরেশ বসুর পাপ পুণ্য গল্পে গরুর গাড়ি করে যাচ্ছে গলায় দড়ি দেওয়া মেয়ের লাশ থানার দিকে। তার পিছু পিছু যাচ্ছে অনুতাপে দগ্ধ হতে থাকা পিতা। সেই যাত্রা ছিল ভয়ানক। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের উড়ো চিঠি গল্পে গরুর গাড়ি নিয়ে সা-জোয়ান ছেলেরা বেরোবে মনস্থ করে, হারিয়ে যাওয়া মামোদ আলিকে তারা খুঁজে আনবে খড্ডা থেকে। কিন্তু খড্ডা কোথায় তাই জানা নেই কারো। হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস সাবিত্রী উপাখ্যান-এ গরুর গাড়িতে করে ধর্ষিতা গ্রাম বধুকে নিয়ে রাঢ়ের অনন্ত প্রসারিত মাঠ পরিক্রমার এক অসামান্য বিবরণ আছে। আমি খুব ছেলেবেলায় ‘কোন এক সিনেমা দেখেছিলাম মায়ের কোলে বসে। সুচিত্রা সেন চলে যাচ্ছেন ছই দেওয়া গরুর গাড়ি চেপে অজানায়। ব্যাক গ্রাউন্ডে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান, “ওই রাজার দুলালী সীতা বনবাসে যায়রে…।”
গরুর গাড়িতে গরু জুততে সাধারণত জোয়াল ব্যবহার করা হয়, ঘোড়ার গাড়ির মতো লাগাম থাকে না। গাড়ির চাকাগুলি হয় বড় বড়, সাধারণত কাঠের তৈরি। তবে এখন তাতে লোহার রিং ব্যবহার করা হয়। সম্পূর্ণ লোহার তৈরি চাকার ব্যবহারও খুব বিরল নয়। উনিশ শতকের বিভিন্ন বিদেশী উপন্যাসেও যাতায়াত ও মালবহনের উপায় হিসেবে গরুর গাড়ির উল্লেখ দেখতে পাই। এইচ.রাইডার হ্যাগার্ড’এর বিখ্যাত উপন্যাস কিং সলোমনস মাইনস’এর কথা বলা যায়। ওই উপন্যাসেই রাত্রিতে বিশ্রাম নেওয়ার সময় বা বিপদে পড়লে অভিযাত্রীরা প্রায়শই গরুর গাড়িগুলোকে গোল করে সাজিয়ে একধরণের দুর্গ গড়ে তুলে তার মধ্যবর্তী জায়গায় আশ্রয় নিত। গরুর বা ঘোড়ার গাড়িকে ব্যবহার করে এইধরণের দুর্গ গড়ে তোলার রেওয়াজ অবশ্য সেকালে প্রচলিত ছিল। চেঙ্গিজ খানের নাতি বাতু খানের নেতৃত্বে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে যে মোঙ্গল আক্রমণ চলে সেখানে তার প্রতিরোধে স্থানীয় অধিবাসীরা গরুর গাড়িকেই এই ভাবে ব্যবহার করেছিল।
সাতক্ষীরার অদূরে ধূলিহর ছিল আমাদের ওপার বাংলার ভিটে বাড়ি। আমাদের নিজেদের গরুর গাড়ি ছিল বোধহয়, কিন্তু তা ক্ষেতের ফসল, বিশেষত অঘ্রান মাসে ধান নিয়ে আসার জন্য ব্যবহার করা হতো। ফসলের ক্ষেতে চাকার দাগ— লিক, পড়ে থাকত বহুদিন। স্বাধীনতার বছর দশের পরের কথা বলছি। আর কোথাও যেতে হলে, মাইল তিন দূরে সাতক্ষীরে, কিংবা ফিংড়ি, কুকরুলি গ্রামে বা ভোমরা বর্ডারে যেতে হলে সক্কালে গরুর গাড়ি হাজির। গাড়োয়ান খড় বিচুলি খাইয়ে নিত গরুকে। ছই দেওয়া গাড়ির বাঁশের চটার পাটাতনে খড় বিছিয়ে তার উপর চাদর দিয়ে বেশ আরামের বসার জায়গা। গাড়ি চলল দুলতে দুলতে। গাড়োয়ান নুর আলি কথা বলছে ঠাকুমার সঙ্গে। কতরকম কথা যে। দেশভাগের তেমন আঁচ আমাদের সাতক্ষীরেতে তখন ছিল না। এপার-ওপার যাতায়াত চলত। এপারে আমরা বসিরহাট সংলগ্ন গ্রামে বসতি করেছি। বর্ডারে আসতে গরুর গাড়ি কিংবা সাতক্ষীরে অবধি গরুর গাড়িতে এসে মোটরগাড়ি।
মনে আছে গ্রীষ্মে কাঁসাই এর বালুকাচ্ছন্ন বুক পার হয়ে গাড়ি উঠবে বাঁধে। বলদ দুটি টানতে পারছে না। উপরে উঠতে গিয়ে বসে পড়ছে বার বার। গাড়িতে অনেক ধানের বস্তা। ভার কম নয়। গাড়োয়ান টানছে গাড়ি জোয়ালে কাঁধ দিয়ে। মনে পড়ে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে দুই বলদ। গাড়োয়ান থামাতে পারছে না। পথে ফণা তোলা বিষধর দেখেছিল তারা। গরুর গাড়ির গতি দেখেছিলাম সেদিন। গাড়োয়ান অসহায়। আবার দেখেছি ধীর গতিতে নববিবাহের পর কন্যা চলেছে শ্বশুরবাড়ি। ছইয়ের ভিতর থেকে মুখ বাড়িয়ে জলভরা চোখে সে দেখছে চারদিকের মাঠ আর গ্রাম-পৃথিবী। বরই গাড়োয়ান। সে বরবেশে বসে আছে গাড়োয়ানের জায়গায়। গরুকেও সাজিয়েছে সে ফুলের মালা দিয়ে। আহা এমন দৃশ্য জন্ম-জন্মান্তরেও ভুলিব না।
গরুর গাড়ির ইতিহাস যুগ যুগান্তের। নতুনপ্রস্তর যুগের সময় থেকেই মানুষ এই যানটি ব্যবহার করে আসছে। আল্পস পর্বতের উপত্যকায় গুহাচিত্র পাওয়া গেছে গরুর গাড়ির। গুহাচিত্র থেকে জানা যায়, যে খ্রিস্টের জন্মের ৩১০০ বছর আগে ব্রোঞ্জ যুগেও গরুর গাড়ির অস্তিত্ব ছিল। হরপ্পা সভ্যতাতেও যে গরুর গাড়ির অস্তিত্ব ছিল তার সপক্ষে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, খ্রিস্টজন্মের ১৬০০ থেকে ১৫০০ বছর আগেই সিন্ধু অববাহিকা ও ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল, যা সেখান থেকে ক্রমে ক্রমে দক্ষিণেও ছড়িয়ে পড়ে।
হ্যাঁ, এও সত্য, বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মানব সভ্যতার আদ্যিকালের এই যান। উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গায়কের গানের অংশ শোনাই,
গরু মইষের গাড়ি নাই
গাড়ির উপুরা ছই নাই
ছইয়ের তলোত কইনা নাই
সেই গাড়ির গাড়িয়াল নাইরে
আজি গাড়িয়াল বন্ধু হারেয়া গেইছে রে।
গাড়িয়াল, গাড়োয়ান হারিয়ে গিয়ে মানুষের গানই শেষ হয়ে গেছে।
এই দেখুন গরুর রচনা লিখতে গিয়ে গরুর গাড়ি নিয়ে কত কথা বলে ফেললাম। গরুর রচনা এমনি। গরুকে ফেলে তা যাত্রা করে অন্যদিকে। অন্য কারো উদ্দেশে।