গড়ের মাঠ
গড় তো ফোর্ট উইলিয়ম। প্রাচ্যদেশে ব্রিটিশ রাজের সামরিক শক্তির সবচেয়ে বড় নিদর্শন। তার মাঠ আমাদের গড়ের মাঠ। গড় ফোর্ট উইলিয়ম ১৭৮০ নাগাদ আত্মপ্রকাশ করে গড়ের মাঠের পশ্চিমে গঙ্গার পূর্বকূলে। কিন্তু সেনাবাহিনীর সেই গড় তো আম আদমির কাছে অনেক দূরের, তার মাঠ আমাদের অনেক কাছের! শুনেছি একটি গড় আগে ছিল বিবাদী বাগের জিপিও যেখানে, সেখানে। ১৭৫৬ সালে সেই দুর্গ সিরাজের সেনাবাহিনী অধিকার করলে বোঝা গিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে যথেষ্ট নিরাপদ নয় তা। ১৭৫৭-য় পলাশীর যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জিতে গেলে বণিক হয়ে যেতে থাকে শাসক। শাসকের নিরাপত্তার জন্য এই নতুন গড়ের, এই নতুন দুর্গের পরিকল্পনা। গড় হলো, তার মাঠ হলো। এমনি এক মাঠ নয় তেপান্তর। তার এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো দেখা যায় না। যদি সমুখ সমর হয়, এই মাঠেই তা হবে। মাঠ ছিল সেনাবাহিনীর অধিকারে। স্বাধীনতার পরও মাঠ সেনা বাহিনীর। কিন্তু তার অধিকার আমাদের। নগর কলকাতাবাসীর। কলকাতা কেন কলকাতায় আসা মফস্বলবাসীরও। ভবঘুরে, আশ্রয়হীন, নিঃসঙ্গ মানুষের আশ্রয় এই গড়ের মাঠেই। হ্যাঁ, এমনই গড় করেছিল ইংরেজ, যে গড় থেকে যুদ্ধের গোলাগুলি বারুদের ধোঁয়া বের হয়নি কোনোদিন। কোনো যুদ্ধ করেনি কোনো সেনাবাহিনী। এই গড় কোনো যুদ্ধের মুখোমুখি হয়নি কোনোদিন। হুঁ, লড়াই হয়েছে তার মাঠে, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিং, থেকে ইস্টার্ন রেল, উয়াড়ি, এরিয়ান্স কিংবা বালি প্রতিভার ভিতরে। গড়ের মাঠ আসলে খেলার মাঠ। যুদ্ধের মাঠ নয়। বছরে দুই দিন, ২৬শে জানুয়ারি আর পনেরই আগস্ট গড়ের সমুখের রাজপথে যুদ্ধের ভেরি বাজে, কামান নিয়ে ট্যাঙ্ক সেই পথে এগোয়, মহাযুদ্ধের ঘোড়ার টগবগ শোনা যায়, রাইফেল উঁচিয়ে সেনাবাহিনী প্যারেড করে বটে, সবই লোক দেখানো। যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই গড়ের মাঠের বাতাস তাই বলে। গড়ের মাঠে যুদ্ধ ছিল না, যুদ্ধ নেইও। গড়ের মাঠে বসে ভিন প্রদেশ থেকে ভাগ্যান্বেষণে আসা সরল মানুষ কাউয়া গুণতি করে। অক্টারলোনি মনুমেন্ট (শহীদ মিনারের পুরনো নাম) কত উঁচু তা আন্দাজ করে। যুদ্ধ নেই। শান্তি আছে। ছেলেবেলা থেকে জানি কুরুক্ষেত্রর মতো করে গড়ে তোলা গড়ের মাঠ রক্তারক্তির যুদ্ধ দ্যাখেনি। ইলিশ আর চিংড়ির লড়াই দেখেছে। এরিয়ান্স থেকে মোহনবাগানে খেলতে আসা অসীম মৌলিকের গোল দেখেছে। ছেলেবেলায়, কিশোর বেলায় টিকি উঁচানো ট্রামে চেপে গড়ের মাঠে যাওয়া ছিল সবচেয়ে আনন্দের। হুঁ, ডিপো থেকে ফার্স্ট ট্রাম ছাড়ত ভোর সাড়ে চারটেয়। আলো ফোটেনি তখনও, ঘুমন্ত উত্তর কলকাতা ভেদ করে ফুটবল নিয়ে গড়ের মাঠ যাত্রা করলাম আমরা একদল, স্বপ্ন দেখি চুনী, পিকে বলরাম হবোই হবো। অবারিত সবুজে ফুটবল পিটিয়ে ফেরা রোদ উঠে গেলে। গত শতকের ষাটের দশকের কথা বলছি। প্রাতের কলকাতা তখন আড়মোড়া ভাঙছে। গড়ের মাঠে ঘুরে ট্রামও ফিরত বেলগাছিয়া, আমরাও ফিরতাম। গড়ের মাঠে ঘেরা ফুটবলের মাঠ। ক্লাবের তাঁবু, ইডেন গার্ডেন, বড় লাটের বাড়ি (রাজ্যপালের কুঠী) থেকে শহীদ মিনার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ঘোড়দৌড়ের মাঠ… এত বিস্তীর্ণ প্রান্তর আমি আদিগন্ত বিস্তৃত শস্য ক্ষেত্র ছাড়া আর কোথাও দেখিনি। আমি কেন কেউ দেখেছে বলে জানি না। ছেলেবেলার গড়ের মাঠেই সেইসব ক্লাব, যেখানে চুনী, পিকে, বলরাম, অরুময় নৈগম থেকে মঙ্গল পুরকায়স্তকে ঢুকতে দেখা যায়। ওই যে ছফুটের বেশি লম্বা থঙ্গরাজের মাথা দেখা যায়। ক্লাব তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে হাফ প্যান্ট রোগা টিঙটিঙে কিশোর উঁকি মারছে, যদি দেখা যায়। গড়ের মাঠের খেলা তো টিকিট কেটে দেখতে হয়, টিকিটের টাকা কে দেবে? ট্রাম ভাড়াই বা পাব কোথায়, ট্রামের টিকিট ফাঁকি মেরে যদি বা গেলাম, খেলা দেখার উপায় কী? ঘোড়ায় চাপা পুলিশ ঘুরছে ব্যাটন উঁচিয়ে। ভয় তরাশে ছুটছে হাবুলদা, কাবুলদা। লাঠির ঘা পড়ল বুঝি পিঠে। ধুতি তুলে ছুটছে দর্জিপাড়ার নিমাইকাকু। খেলা আরম্ভ হয়ে যায় প্রায়। র্যামপার্টে দাঁড়িয়ে দেখছি তারকাঁটার ওপারে ফুটবল নিয়ে ছুটছে অরুময়। দেখতে পাচ্ছি না, লোকে অরুময় অরুময় বলে চিৎকার করছে তাতেই বুঝছি সেই দক্ষিণ ভারতীয়র বুটের ডগায় আঠার মতো লেগে আছে ফুটবল। হু, গড়ের মাঠে প্রথম খেলা দেখা আমার এই ভাবে। বিনি পয়সায়। কিছু দেখা হলো, কিছু দেখা হলো না। গ্যালারির চিৎকারে গলা মেলাচ্ছি গোওওল। কে দিল কে দিল, মঙ্গল না দীপু দাস? র্যামপার্টে শুধু গোলকিপারের পিঠ দেখা যায়। জার্সি চেনা যায়। তাই দিয়েই সব বুঝে নিতে হয়। তখন ফুটবল হতো গরমে আর বর্ষায়। আই.এফ.এ লিগ গেলে শিল্ড। ক্রিকেট শীতে। কলকাতায় তখন হকিও ছিল। ভি.পেজ, অশোককুমার, গুরুবক্স সিং, ইনামুর আর আনিসুর রহমান, দুই ভাই… গড়ের মাঠে এঁদের দেখা যেত। ফার্স্ট ডিভিশন ঘেরা মাঠে, সেকেন্ড বা থার্ড ডিভিশন খোলা মাঠে। কী অমোঘ আকর্ষণ ওই মাঠের। খেলা আরম্ভ হবে ঘেরা মাঠে, দলে দলে লোক যাচ্ছে দেখতে। ঠাণ্ডা লেবু জল দেদার বিকোচ্ছে। চানাওয়ালা ঘন্টা বাজিয়ে লোক ডাকছে। ফুচকাওয়ালাকে ঘিরে হেরো আর জেতা দলের সমর্থক উবু হয়ে বসে পড়েছে। হুইসিল মারছে পাগলা ফকির। সে ঘেরা মাঠের বাইরে রেফারিগিরি করে। ফাউল অফ-সাইড ধরে ফেলে। গড়ের মাঠের গড়ের ওপারে সূযার্স্ত হচ্ছে। ট্রামের জন্য হাঁটছি। খুব ভীড়। যে ট্রাম ধর্মতলায় ঢুকছে তার সেকেন্ড ক্লাসে উঠে গুনগুন করছে হাবুলদা, সুরের আকাশে তুমি যে গো শুকতারা…। তখন কলকাতা অন্যরকম ছিল। হাবুল মল্লিক ইস্কুল পাশ করতে পারেনি। খেলা ছাড়া আর কিছু জানত না। কোথায় হারিয়ে গেল জানি না। হয়তো গড়ের মাঠেই। তার তো আরম্ভ নেই শেষ নেই। মাঠে প্রবেশ করে আর বের হতে পারছে না।
হাবুল মল্লিকই গড়ের মাঠ চিনিয়েছিল। সে-ই বলেছিল একদিন খিদিরপুর যেতে হবে। যে ট্রাম যায়, সেই ট্রামেই ফিরব। কেন যেতে হবে? না সেই ট্রাম গড়ের মাঠ ভেদ করে বেহালা, খিদিরপুর যায়। ট্রামেই বসে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে কী সুন্দর না দেখায়। হাবুলদা দেখেছে কিন্তু আমাদেরও দেখাতে চায়। ঘোড়দৌড়ের মাঠের পাশ দিয়ে যাবে সেই ট্রাম। কপালে থাকলে রেসও দেখা যাবে বাইরে থেকে। পুজোর সময় কবিতীর্থর ঠাকুর দেখতে গড়ের মাঠের এক প্রান্ত থেকে ট্রামে চেপে সেই অবারিত প্রান্তর ভেদ করে খিদিরপুর গিয়েছিলাম। সন্ধ্যার শহর। ভিক্টোরিয়ার মাথার উপরে অর্ধেক চাঁদ দেখেছিলাম ফেরার সময়। তখন ভিক্টোরিয়া এত আলোয় সাজেনি। কিন্তু অন্ধকারে তার গায়ের শ্বেত পাথর থেকে ঠিকরে আলো বেরিয়ে আসছিল। আশ্বিনের রাত। গড়ের মাঠ নির্জন। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। কত বড় মাঠ। অন্ধকারে নেমে গেলে দিকহারা হয়ে যাব। অবাক হয়ে অন্ধকার দেখেছিলাম। মনে আছে এখনো। কত বড় বড় গাছ। ভুষন্ডীর মাঠ হয়ে যায় রাত্রিকালে গড়ের মাঠ। আন্নাকালি তার আগের জন্মের স্বামীকে খুঁজে পেয়ে মুড়ো ঝ্যাঁটা নিয়ে তাড়া করে।
গড়ের মাঠ নামে সেই আমলে ট্যাবলয়েড সাইজের একটা খেলার পত্রিকা বের হতো। মনে হয় কলকাতার সবচেয়ে পুরোন খেলার পত্রিকা। তার ছবির গায়ে হাত পড়লে কালি উঠে ছবি ধ্যাবড়া হয়ে যেত। কিন্তু কী ডিম্যান্ড! পকেটে দু-চার আনা থাকলে তা দিয়ে গড়ের মাঠ কিনে ধর্মতলা থেকে হন্টন। ট্রাম লাইন ধরে বেলগেছে। রাস্তা ভুল হওয়ার চান্স নেই। খেলার মাঠ নামে আর এক পত্রিকাও পাওয়া যেত এই ময়দানে। পরে বের হয়েছিল অলিম্পিক। খেলার দিন দেদার বিকোত।
গড়ের মাঠে খেলার সেই আকর্ষণ এখন নেই। ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান, মহামেডান… ভাল খেলা হয় যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। গড়ের মাঠ, ঘোড়সওয়ার পুলিশ, মানুষের দৌড়, র্যামপার্ট বাতাসে ভেসে আছে। মনে হয় গড়ের মাঠ নিঃসঙ্গ হয়েছে। কিন্তু গড় আছে আর তার মাঠ তো আছেই। ফি বছর এই মাঠে বই মেলা বসত। কিছু মানুষ পণ করে তা তুলেই দিল কোর্ট কাছারিতে গিয়ে। তবু গড়ের মাঠ আছে। সন্ধ্যায় নিঃসঙ্গ মানুষটি বসবে কোথায় চটি খুলে তার উপরে পাছা রেখে পা লম্বা করে গড়ের মাঠে। সমস্ত দিনের শেষে বিশ্রাম। সন্ধ্যায় ঘরে না ফিরে গড়ের মাঠে। বাড়িতে দুঃখ জমা আছে হে। দুঃখ বোঝো? ঘরে বাতাস নেই, দমচাপা। এখেনে গঙ্গার হাওয়া দেয়। দখিনা বাতাস। গা জুড়োয়। মাঝে মাঝে পাহারাওয়ালা লাঠি ঘুরিয়ে দেখে যায় কারা আছে। মেয়েমানুষ নিয়ে পুরুষমানুষ বসেছে কিনা। বসলে তাদের বয়স কত, দূরত্ব কত পরস্পরের। গিয়ে দেখুন অন্ধকারে কিংবা অল্প চাঁদের আলোয় এক মধ্যবয়সী মোবাইল ফোনে কথা বলেই যাচ্ছে। হয়ত পুরাতন প্রেম কিংবা নতুন সম্পর্ক। হয় তো বউ ছেড়ে গেছে তাকে। বউয়ের সঙ্গেই কথা হয়ে যাচ্ছে। ফিরে এস কুসুম। শহীদ মিনারের আশেপাশে কত মানুষ সন্ধ্যায়। চাওয়ালা চানাওয়ালা আইসক্রিমওয়ালা ঘুরছে। ঘুরছে পুলিশের খোচড়। মেয়েমানুষের দালাল। কানের কাছে এসে ফিসফিস, একদম ফিরেশ। এইট্টিন। ফ্যামিলি গার্ল। ফ্যামিলি থেকে আসা বউ। হুঁ, গড়ের মাঠ তো ভিক্টোরিয়া অবধি প্রসারিত। অনন্ত অন্ধাকার নিয়ে আধা ঘুমে পড়ে থাকে সন্ধ্যা থেকে। ঘুরছে কিশোরী কন্যারা। এতবড় ময়দান। রাস্তা থেকে অন্ধকারে নেমে গেলেই হলো। পাহারাওয়ালা নেবে কিছু। ভয় নেই স্যার আসুন। তখন ঘোড়ায় টানা ফিটন গাড়ির ভিতর থেকে নেমে আসা প্রেমিকার গলার মালা গড়ের কাছে পথের উপর লুটোয়। অশ্বমেধের ঘোড়া (দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়) গল্পের সেই ফিটন গাড়ি নিয়ে ভিক্টোরিয়া স্মৃতি সৌধের পাশ দিয়ে ঘুরে গড়ের পাশ দিয়ে এগিয়ে রেড রোড ধরে গঙ্গার কাছে চলে যেতে পারেন আপনি। বাঁদিকের সবটাই গড়ের মাঠ। ডানদিকে ইডেন গার্ডেন। একবার আগুন লাগতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কনরাড হান্ট দুই দেশের পতাকা বাঁচাতে আগুনের দিকেই ছুটেছিলেন। চার্লি গ্রিফিথ মাঠের ভিতর দিয়ে ছুটে ছিলেন হেল্প হেল্প করতে করতে। গড়ের মাঠ জানে তা। তবে কিনা অনেক বছর তো হলো। স্মৃতি বিভ্রম ঘটতে পারে। পারেই। আরো আছে দুঃখের স্মৃতি। ঘেরা মাঠের গ্যালারি ভেঙে অনেক সমর্থকের মৃত্যু। গড়ের মাঠ দেখেছে তা।
গড়ের মাঠ দখল করে নিয়েছে নানা কিসিমের মানুষ। বাস টারমিনাস থেকে দীঘা শিলিগুড়ি বালুরঘাট কোচবিহারের বাস ছেড়েই যাচ্ছে সমস্তদিন ধরে। দুপুরে কাউয়া গোণার অপরাধে বিহারী ভোলেভালে লোকটিকে ফাইন করেছে মৌচ পাকানো লাঠি ঘুরানো পাহারাওয়ালা। অবারিত প্রান্তরে ঘুমিয়ে পড়েছে কতজন। এতখানি রোদ শীতকালে আর কোথায় পাবে? পারলে শীতের দেশে রপ্তানি করা যেত। গরমের দিনেও গাছতলায় ঘুমিয়ে আছে নিশ্চিন্ত মানুষ। ওই দূরে প্যাটন ট্যাঙ্ক। বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় তাকে রণাঙ্গন থেকে নিয়ে এসে রেখে দিয়েছে সেনাবাহিনী। যুদ্ধের স্মৃতি।
এইই তো কলকাতা শহরের ফুসফুস। প্রোমোটার আর রিয়েল এস্টেটের কারবারিরা যেতে যেতে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে, ইস, কত ফ্ল্যাট হতো। কলকাতার এই জায়গাটিই পড়ে আছে। ফেলে রাখার মানে কী? বসন্তদিনে গড়ের মাঠ ভেদ করে ছুটে যাওয়া রাজপথ কুসুম কুসুমে রঞ্জিত হয়ে থাকে। গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া… লাল হলুদ। কী যে রূপ হয় তখন এই প্রান্তরের। আহা এ যেন সেই ধুলাউড়ির মাঠরে ভাই, ধুলাউড়ির মাঠ। লাল শাড়ি আঁচল উড়িয়ে কে পার হয়ে যাচ্ছে সেই মাঠ। ভোল কন্যা নয় তো? ভুলিয়ে ভুলিয়ে ঘুরিয়ে মারবে মাঠের ভিতর।
তাজা বাতাস নিতে এই মাঠে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে গাড়ি নিয়ে প্রাতঃ ভ্রমণে আসেন বরিষ্ঠজন। সবুজ ঘাসের উপর পা ফেলে ফেলে আয়ু বাড়ান। লাইফের এক্সটেনশন চান ভগবান স্যারের কাছে। হুঁ। এমনই এক উষাকালে হয়তো হয়েছিল গড়ের মাঠে প্রথম রক্তপাত। মৃত্যু। যে প্রান্তরে যুদ্ধ হয়নি, রক্ত ঝরেনি এমন একটা সেনাবাহিনি সমেত গড় থাকতে, সেই প্রান্তরে ভয়ানক রক্তপাত, নিষ্ঠুর হত্যা দেখে ভয়ে আমাদের প্রিয় নায়ক অভিনেতা পালিয়ে গিয়েছিলেন মুম্বই। গুলির শব্দ। আর্তনাদ। আপনি কিছু দ্যাখেননি। কে লোকটা? লেখক বিপ্লবী সরোজ দত্ত। সেই ঘটনা রক্তাক্ত করেছিল গড়ের মাঠের বুক। সেই রক্তের দাগ এখনো শুকোয়নি। আমরা মুছে দিতে পারিনি।