খালি মন মন মন, তোর শরীর নাই?

শোনো, ওরকম luv u luv u luv u luv u এসএমএস পাঠাবে না তো আর। একটু পর পর লভড়ড় য় লভড়ড় য়. সত্যিকার মিস করলে চার কিলোমিটার ছুটে এসে চুমু খেতে খেতে বলতে ভালোবাসি। ভালোবাসি। ভালোবাসি। বাঙালি পুরুষের মতো এত আলসে জাত জগতে নেই। এমনিতে আলসে, তার ওপর মুঠো−ফান এসে আরও আলসে বানিয়ে দিয়েছে। রাত জেগে কুড়ি বাইশ পাতার প্রেমের চিঠি লেখার দিন তো আর নেই, ইমেইল ভালো করে ব্যবহার করার আগেই শুরু হয়েছে মুঠো−ফানের মোচ্ছব। আলসেরা এখন অল্পতে, যাকে বলে শর্টকাটে প্রেম সারার সুবিধে পেয়েছে । কেন বাবু, loveove লেখা যায় না? একটা অক্ষর বেশি টিপলে কি সময় নষ্ট হয় খুব? আর অত ইংরেজিতেই বা কেন, bhalobashi শব্দটি কি খারাপ শোনায়? নাকি অত বড় শব্দ লিখলে আঙুলে ব্যথা হয়?

সবটা আলো গিলে নিয়ে রাতগুলো ভুত হয়ে বসে থাকে, আর রাজ্যির সব অকাজের ব্যস্ততা কাটলে যখন করার কিছু নেই, বলার কিছু ভাবার কিছু নেই, তখন তোমার মনে পড়ে আমাকে। হুলস্থূল ডাকাডাকি। আমিও মাইরি, ছুটে যাই আমার বংশীবাদকের কাছে। বংশীবাদক কি বোঝে কেন যাই? বোঝে যে আমি ইচ্ছে করলেই বলতে পারতাম কারও ডাকে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, কিন্তু বলি না? আধঘন্টা হাবিজাবি কথা বলে ব্যস, তোমার চুমু খাওয়া শুরু হয়ে যায়। চুমু তো নয়, আস্ত আস্ত কামড়। আর বুকে যেদিন প্রথম হাত দিলে, মনে হচ্ছিল বাঘের থাবা বুঝি। এরপর ধমক খেয়ে দাঁত নখ গুটিয়ে মানুষ হলে, পালকের মতো আঙুল ছোঁয়ালে বুকে। সারা শরীর কী ভীষণ কাঁপে তোমার স্পর্শে তুমি কি টের পাও? টের নিশ্চয়ই পাও, তারপরও কী করে পারো আমাকে অমন করে ভিজিয়ে ভাসিয়ে, আমাকে পাগল করে অবশ করে, ঠোঁটে বা চোখে গুড নাইট কিস খেয়ে টা টা বলতে? এত যে বলো মন মন, তোমার কি শুধু মনই আছে, শরীর নেই? তুমি বাঙালি না হলে তোমার ওই টা টা বলার মুখে দীর্ঘ একটি দম বন্ধ করা চুমু খেয়ে টেনে তোমাকে বিছানায় নিতাম। কাপড় চোপড় ছিঁড়ে ছুঁড়ে তোমার সঙ্গে সারারাত আমি সাত-আকাশে উড়তাম। হ্যাঁ তুমি বাঙালি না হলে তাই করতাম। বাঙালিকে বিশ্বাস নেই বাবা, এত ধকল সইতে না পেরে হয়তো মুহূর্মুহূ মুর্চ্ছা যাবে।

তোমার সংকোচটা কোথায় বলো তো! দুজনই অ্যাডাল্ট, দুজনই একা। এরকম তো নয় যে কোনও এক্সট্রা মেরিটাল রিলেশান হচ্ছে। হিপোক্রেসি আমি হেইট করি। তুমি কি বোঝো উত্থানরহিতের মতো তোমার আচরণ আমাকে মাঝে মাঝে ষেন²জি করে তোলে? তারপরও দিনের পর দিন তুমি ও-ই করছো, রসের এসএমএস পাঠিয়ে যাচ্ছে!, সেজেগুজে আমার বাড়িতেও আসছো, এসে কিন্তু আদ্যিকালের বদ্যি বুড়োর মতো বসে থাকছো, কেবল যাবার সময় হলে তোমার ভেতরের যুবক জেগে ওঠে, হঠাৎ তোমার চুমুর তেষ্টা পায়। আমাকে যে রাতে রাতে ভীষণভাবে জাগিয়ে যাও, এরপর যে স্বমৈথুনের আশ্রয় নিয়ে বাঁচতে হয় আমাকে। বোঝো? কম তো করছো না সিটি সেন্টার, নলবন, রেস্তোরাঁ, রেড ওয়াইন, হাত ধরা, হাঁটা, চুমু খাওয়া, স্তন ছোঁওয়া ..। আগুন জ্বালাচ্ছে! ঠিকই, জ্বালিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যাচ্ছো। তুমি কি কোনও প্রেমিক আদৌ?

আঠারো বছর বয়সে না হয় আমার মন থেমে আছে। তখনও প্রেমিকের স্পর্শে যেমন পুলক লাগতো, এখনও ঠিক তেমন। আসলে সত্যি কথা বলতে কী, পুলকের পরিমাণ আগের চেয়ে বরং বেশি।কিন্তু গোপনে গোপনে বয়স তো বাড়ছে, তোমারও, আমারও। মানুষ বাঁচে কদ্দিন বলো তো! আর ক কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে তোমাকে সম্পূর্ণ করে পেতে? এভাবে সময়গুলো ইডিয়টের মতো ফুরোচ্ছে! কেন? আমাদের শরীর যদি পরস্পরকে না চাইতো, তাহলে কথা ছিল, কিন্তু চায় তো! তারপরও ঘোড়সওয়ারের মতো লাগাম যেন তোমাকে টেনে ধরতেই হবে ! এই অসভ্যতাগুলো ছাড়ো তো তুমি। ভাল্লাগে না। আবার ঢং করে বলছো ধীরে বও উতল হাওয়া। এত ধীরে বইব কী করে, ভেতরে তো বান ডাকছে, ঝড় নামছে!

আমার মুশকিল কি জানো, আর কোনও পুরুষকে আমি এখন স্পর্শ করার কথা কল্পনাও করতে পারি না। কাউকে চুমু খাবো ! কারও সঙ্গে শোবো! না, অসম্ভব। তোমায় আচ্ছত হয়ে আছি, আমাকে কি মানায় ওসব? তুমিময় জগত আমার। এ জগতে কার সাধ্য আছে ঢোকে? বেসিকেলি আমি স্ট্রিক্টলি মনোগ্যামাস, এ সমাজের জন্য একটু বেমানান।

এই পাথর, শোনো, এখন থেকে bhalobashi লিখবে। luv বাদ দাও। খুব তো বলছি ভালোবাসি লিখতে! কেন? তুমি কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো!
বাসো? ছাই বাসো।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *