তিন
কয়েকদিন ভার্সিটি বন্ধ ছিল, আজ খুলেছে। রোজ ভার্সিটিতে গিয়ে অফ পিরিয়ডে শিউলিকে জিজ্ঞেস করল, তুই কি কোনো ছেলের প্রেমে পড়েছিস? অথবা কোনো ছেলে তোকে সামনা সামনি বা চিঠি দিয়ে অথবা মোবাইলে প্রেম নিবেদন করেছে?
শিউলি বলল, হঠাৎ আজ একথা জিজ্ঞেস করছিস কেন? মনে হচ্ছে, কেউ তোকে প্রেম নিবেদন করেছে?
রোজ বলল, যা জিজ্ঞেস করলাম তার উত্তর আগে দে।
শিউলি বলল, না, আমাকে কেউ কোনোভাবেই প্রেম নিবেদন করেনি। করার সুযোগও আমার কাছ থেকে কেউ পায়নি। কারণ ক্লাস সেভেন থেকে মা আমাকে বোরখা পরিয়ে স্কুলে পাঠাতেন। আজ পর্যন্ত আমি বোরখা পরেই সবখানে যাই। তা ছাড়া বড় হবার পর থেকে আজ পর্যন্ত অন্য ছেলেদের দূরের কথা, আত্মীয়-স্বজনের কোনো ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করিনি। শুধু তাই নয়, প্রয়োজন ছাড়া তাদের সামনেও যাইনি, এমন কী কথাও বলিনি। তোকে তো বলেছি আমাদের ফ্যামিলি রক্ষণশীল। এবার তুই আমার প্রশ্নের উত্তর দে।
রোজ বলল, বেশ কিছুদিন থেকে একটা ছেলে মাঝে মাঝে রাত এগারটা বারটার দিকে মোবাইলে ফোন করে। তাকে অনেক রাগারাগি করেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। নির্লজ্জার মতো ফোন করেই চলেছে।
শিউলি বলল, তুই ফোন রিসিভ করিস কেন? লাইন কেটে দিয়ে মোবাইল অফ করে দিবি।
মোবাইলে প্রথম দিন আলাপ হবার পর পরবর্তীতে তাই করতাম; কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
ফোনে তোকে কী বলে?
বলে আপনার কণ্ঠস্বর খুব মিষ্টি। সেই স্বর শোনার জন্য সারাদিন প্রতীক্ষায় থাকি। রাতে শোনার পর তবে ঘুমোতে পারি। নচেৎ সারারাত জেগে থাকতে হয়।
বখাটে ছেলেরাই এরকম করে। তুই তার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে তোর বাবাকে দিয়ে থানায় কেস করাতে পারিস। পুলিশের রুলের গুতো ও জেলের ভাত খেলে প্রেমের মজা বুঝতে পারবে।
প্রথম প্রথম তোর মতো আমিও ওসব ভেবেছিলাম; কিন্তু ছেলেটার মার্জিত কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে সে বখাটে নয়, বরং শিক্ষিত ও ভদ্র ঘরের ছেলে। তাই বাবাকে জানিয়ে থানায় কেস করতে বিবেকে বেধেছে।
শিউলি হেসে উঠে বলল, একথা আগে বলবি তো। তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে, তুই ছেলেটাকে ভালবেসে ফেলেছিস। তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে চিন্তিত মুখে বলল, কাজটা তুই ভালো করিস নি। গতকাল একটা দৈনিক পেপারে পড়লাম, কলেজের একটা ছেলে ক্লাস টেনের একটা ছাত্রীর সঙ্গে প্রথমে মোবাইলে মিস কলের মাধ্যমে পরিচয় হয়। তারপর কয়েকমাস মোবাইলেই প্রেম করে। একদিন ছেলেটা তাকে দেখা সাক্ষাতের কথা বলে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় আসতে বলে। মেয়েটা আসার পর বিয়ে করার কথা বলে ছেলেটা ও তার চার পাঁচজন বন্ধুসহ একটা নির্মাণাধীন বাড়ির নির্জন কক্ষে নিয়ে গিয়ে মুখ বেঁধে সবাই মিলে ধর্ষণ করে। তারপর মুখ খুলে দিয়ে সবাই পালিয়ে যায়। মেয়েটির আর্তচিৎকারে লোকজন এসে তাকে হাসপাতালে। নিয়ে ভর্তি করে দেয়। তারপর শিউলি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলল হায়রে মুসলমান, তোমরাই নাকি মানবজাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জাতি। আজ তোমাদের অধঃপতন দেখে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি ক্রিপের হাসি হাসছে আর তোমাদের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। যতদিন মুসলমানরা আল্লাহ ও তার রাসুল (সা)-এর বাণী মেনে চলেছে, ততদিন তারা মাথা উঁচু করে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশকে সান-সওকাতের সাথে শাসন করেছে। বর্তমান প্রজন্মদের কাছে সেসব। ইতিহাস ও অলিক কল্পনা।
রোজ বলল আজকাল অধঃপতনের জন্য কারা দায়ী বলতে পারিস?
শিউলি বলল, মা-বাবা আর রাষ্ট্রের প্রশাসকরা। এসব আলোচনা করতে গেলে অনেক কথা বলতে হবে। অন্য এক সময় তা করা যাবে। এখন এতটুকু বলতে পারি, মা-বাবা যদি সৎ ও ধার্মিক হত, ছেলেমেয়েদের সৎ ও ধার্মিক করে গড়ে তুলত এবং তাদের হাতে মোবাইল না দিত, তাহলে ছেলেমেয়েদর এত অধঃপতন হত না।
রোজ বলল, তুই খুব দামি কথা বলেছিস।
শিউলি বলল, আমি খুব অবাক হচ্ছি বিয়ের আগে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রেম করা নিষেধ জেনেও এরকম কাজ করবি ভাবতেই পারছি না। তুই বোধ হয় জানিস না, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেম করা সর্বোত্তম প্রেম। তাই বলব ভালো চাসতো ছেলেটার সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ করে দে।
কীভাবে বন্ধ করব বলে দে।
ফোন করলে বলিব, তোর বিয়ের কথা পাকা হয়ে গেছে।
ঐ কথা বলা যাবে না।
কেন বলা যাবে না?
ওকে আমিও ভীষণ ভালবেসে ফেলেছি।
তাই যদি হয়, তা হলে এতক্ষণ প্যাচাল পাড়ার কি দরকার ছিল?
প্যাচাল পাড়লাম তুই কী বলিস জানার জন্য। এখন বল কী করব?
তুইও যখন তাকে ভালোবেসে ফেলেছিস তখন তার বায়োডাটা নিয়ে কারও দ্বারা ওর সবকিছুর খোঁজ খবর নে। যদি ভালো হয়, তোকে আর বাধা দেব না। আর যদি খারাপ হয়, তা হলে তোর বাবাকে জানিয়ে এর বিহিত করতে বলবি।
কথাটা তুই খুব ভালো বলেছিস। ঠিক আছে, তাই করব।
তা হ্যাঁরে, ছেলেটার নাম কী?
নাদিম।
বাহ, খুব সুন্দর নাম তো। নামের অর্থ জানিস?
না, তুই জানলে বলে দে।
নাদিম অর্থ হল সহচর। কী করে ছেলেটা?
চাকরি করে।
কী চাকরি করে, কত বেতন পায় জিজ্ঞেস করিসনি?
অনার্স নিয়ে মাস্টার্স করেছে শুনে জিজ্ঞেস করিনি।
তবু তোর জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল। যাই হোক, যা বললি তা যদি সত্যি হয়, তা হলে তো ভালো হবার কথা।
রোজ বলল, মিথ্যে হলে তোর কথামতো বাবাকে জানিয়ে ছেলেটাকে শায়েস্তা করতে বলব।
শিউলি বলল, হ্যাঁ সেটাই ঠিক হবে। তারপর ঘড়ির দিকে চেয়ে বলল, চল, ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।
এদিকে পরের দিন থেকে নাদিমের জ্বর আবার বেড়ে গেলে ফোন করে মা-বাবাকে জানাল। ওনারা এসে বড় ডাক্তার নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন। প্রায় পঁচিশ দিন পর সুস্থ হলে আয়েশা খাতুন ও ইউনুস হাওলাদার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইলেন।
নাদিম বলল, এখন আমি যাব না। অসুখ হয়ে অনেক দিন অফিস করতে পারিনি। কিছুদিন অফিস করার পর ছুটি নিয়ে যাব।
ওনারা আরও কয়েকদিন থেকে সময়মতো খাওয়া দাওয়া করার ও শরীরের দিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলে বাড়ি ফিরে গেলেন।
বাবা-মা বাড়ি চলে যাবার দিন নাদিম রাত বারটার সময় রোজকে ফোন করল।
রোজ নিজের রুমে পড়ছিল। সে ভেবেছিল, ক্লিনিকের খুনের ঘটনা শোনার পর নাদিম ফোন করে তাদের দেখা-সাক্ষাতের কথা বলবে। তাই প্রতিদিন তার ফোনের অপেক্ষায় থাকত। আট দশ দিন পার হয়ে যাবার পরও যখন ফোন পেল না তখন তার মনে হয়েছিল, তা হলে কি নাদিমও ঐ ক্লিনিকের ডাক্তারনির প্রেমিকের মতো দেখতে কালো কুৎসিত? কথাটা মনে হতে বুকের মধ্যে বেশ ব্যথা অনুভব করেছিল, কারণ ফোনে আলাপের মাধ্যমে সেও সত্যি সত্যিই তাকে ভালবেসে ফেলেছিল। আজ এত রাতে কে আবার ফোন করল জানার জন্য মোবাইল সেট হাতে নিয়ে নাম্বার দেখে মনের মধ্যে আনন্দের শিহরণ অনুভব করল। তারপর রিসিভ করে সালাম দিয়ে বলল, কী ব্যাপার, এতদিন পর?
নাদিম সালামের উত্তর দিয়ে বলল, কেমন আছেন?
আলহামদু লিল্লাহ, আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি।
তা এতদিন পর ফোন করলেন কেন?
বললে বিশ্বাস করবেন?
সেটা আমার ব্যাপার, আপনি বলুন।
নাদিম দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলল, সেদিন জ্বর অবস্থায় আপনাকে ফোন করেছিলাম। তারপরের দিন থেকে জ্বর খুব বেড়ে যায়। সুস্থ হয়ে আজ ফোন করলাম।
রোজ সহানুভূতি জানিয়ে জিজ্ঞেস করল, এখন কেমন আছেন?
নাদিম বলল, এক্ষুনি বললাম না, সুস্থ হয়ে ফোন করলাম?
এতদিন অসুখে ভুগলেন, বাড়িতে খবর দেন নি?
হ্যাঁ, দিয়েছিলাম। মা-বাবা এসেছিলেন। আজ সকালে ফিরে গেছেন। আমাকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। অফিসের কথা বলে যাইনি।
আপনার বাড়ি কি ঢাকায়?
না, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে থাকেন, না মেসে থাকেন?
মেসে থাকি। তবে সেপারেট একটা রুম নিয়ে।
রান্না-বান্না নিজে করেন, না মেসের কাজের বুয়ারা করে দেয়?
ঐ রকম বুয়াদের রাখা ইসলামে নিষেধ। তাই চৌদ্দ-পনের বছরের একটা ছেলে রেখেছি। সে-ই সব কিছু করে।
বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বললেন, কিন্তু টাউনে না গ্রামে বলেন নি।
গ্রামে। নাম বাড়াইল, থানা-নবীনগর। এবার একটা কথা বলতে চাই।
বেশতো বলুন।
আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হতে পারে না?
দেখা সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছেন কেন?
কেন চাচ্ছি বুঝতে পারেন নি? না, বুঝেও না বোঝার ভান করছেন?
বুঝতে যে পারিনি তা নয়, তবে সত্যটা জানার জন্য জিজ্ঞেস করেছি।
যা বুঝেছেন সেটাই সত্য।
তবু আপনার মুখে শুনতে চাই ।
আপনাকে বিয়ে করতে চাই।
আপনি একা চাইলে তো হবে না, যাকে বিয়ে করবেন তাকেওতে চাইতে হবে।
তাতো নিশ্চয়। তাই তার সঙ্গে দেখা করে সামনা-সামনি বলতে চাই।
রোজের তখন বান্ধবী শিউলির কথা মনে পড়ল; “ছেলেটার সম্পূর্ণ বায়োডাটা নিয়ে কাউকে দিয়ে সত্য মিথ্যা যাচাই করবি।”
তাকে চুপ করে থাকতে দেখে নাদিম বলল, কিছু বলছেন না যে?
রোজ বলল, ক্লিনিকের ডাক্তারনির ঘটনার যদি বিপরীত কিছু হয়, তা হলে কী ঘটবে সেটাই চিন্তা করছিলাম।
নাদিম বলল, বিপরীত ঘটনা বলতে কী বোঝাতে চাচ্ছেন, বুঝতে পারছি না।
রোজ বলল, এটা না বোঝার কী আছে?
নাদিম বলল, বুঝতে পারিনি বলেই তো জানতে চাচ্ছি।
কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে রোজ বলল, ডাক্তারনি সুন্দরী ছিল আর তার প্রেমিক ছিল কালো কুৎসিত। আমি বুঝতে পেরেছি আপনি সুন্দর, কিন্তু আমি যদি কালো কুৎসিত হই, তাহলে আপনি আমাকে দেখে যদি ডিনাই করেন, তখন আমিওতো আপনাকে খুন করতে পারি।
নাদিম হেসে উঠে বলল, পাগলের মতো কী যা-তা বলছেন? আপনি যতই কালো কুৎসিত হন না কেন আমি আপনাকে কিছুতেই ডিনাই করব না। এবার বলুন তো, আমি যদি ঐ রকম হই, তা হলে আপনি কি আমাকে খুন করবেন?
রোজ, বলল, আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিওর, আপনি খুব সুন্দর ও হ্যান্ডসাম।
কী করে বুঝলেন?
আমি অন্তরের দৃষ্টি দিয়ে অনেক কিছু বুঝতে পারি।
ঐ কথা আমিও যদি বলি?
আপনার যদি অন্তত দৃষ্টি থাকে, তা হলে দেখতে পাবেন। তবে আমি। জানি আপনার তা নেই।
তাই যদি হয়, তা হলে তো আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হওয়া জরুরি।
হ্যাঁ, আপনি ঠিক কথা বলেছেন। দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারে পরে আলাপ করব। এখন আপনার বায়োডাটা বলুন।
নাদিম বলল, নাম ধাম তো একটু আগে বললাম, আর কী করছি তাতো অনেক আগেই বলেছি।
রোজ বলল, কিন্তু মা-বাবা, ভাই-বোনদের কথা বলেন নি।
নাদিম তাদের সবকিছু বলল, নিশ্চয় ইনকোয়ারী করাবেন?
করানো কি উচিত নয়।
নিশ্চয় উচিত।
আমার বায়োডাটা জানতে ইচ্ছা করছে না?
না।
কেন?
ফোনে যতটুকু জেনেছি, তার বেশি কিছু জানার প্রয়োজন নেই আমার।
কথাটা ঠিক বলেন নি। কারণ যাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাকে শুধু দেখলে তো হবে না, তার সবকিছু অবশ্যই জানা উচিত। একই কারণে আমি আপনার বায়োডাটা নিলাম।
ঠিক আছে, বলুন।
রোজ বায়োডাটা জানিয়ে বলল, এবার রাখি তা হলে?
নাদিম বলল, আমার যে একটা কথা জানতে খুব ইচ্ছা করছে?
বলুন।
আমার মনের কথা শুনলেন, আপনারটা বলবেন না?
রোজ হেসে উঠে বলল, এত লেখাপড়া করলে কী হবে, আপনি একদম ছেলেমানুষ।
নাদিম অবাক কণ্ঠে বলল, জীবন সাথির ব্যাপারে এত বড় সিদ্ধান্তের কথা বললাম, তবু আমাকে ছেলেমানুষ বলছেন?
হ্যাঁ বলছি। কারণ ছেলেরা এসব ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও মেয়েরা যে পারে না, এই সামান্য কথাটাও আপনি জানেন না। তা ছাড়া হাদিসে আছে–”আমাদের নবী করীম (সঃ) বলেছেন-”কোনো কাজ তাড়াহুড়ো করে করতে নেই। তাড়াহুড়ো করা শয়তানের কাজ।” এ ব্যাপারে মনীষীরাও বলেছেন, “ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিওনা।”
নাদিম বলল, কথাগুলো আমিও জানি, কিন্তু তোমাকে ভালবেসে মনের অবস্থা এমন হয়েছে যে, মাঝে মাঝে অনেক কিছু ভুলে যাই।
তাকে তুমি করে বলছে শুনে রোজ হেসে উঠে বলল, জ্ঞান অর্জন করে যদি তা কাজে না লাগানো যায়, তা হলে জ্ঞানের ও মনুষত্বের অমর্যাদা করা হয়। কথাটা মনে রাখলে খুশি হব।
নাদিম বলল, খুব মূল্যবান কথা বলেছ, নিশ্চয় মনে রাখব। তারপর জিজ্ঞেস করল, আমার কথা শুনে হেসে উঠলেন কেন?
রোজ আবার হেসে উঠে বলল, আপনি থেকে তুমি করে বলছেন, তাই হাসি পেল।
সরি বলে নাদিম বলল, কিছু মনে করবেন না, বেখায়েলে বলে ফেলেছি। ক্ষমা করে দিন।
রোজ বলল, সরি বলার পর ক্ষমা চাওয়ার দরকার ছিল না। কারণ মনের ওপর কারও হাত নেই। এখন থেকে আমাকে তুমি করেই বলবেন।
নাদিম আনন্দিত স্বরে ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, শুধু আমি না, তুমিও আমাকে তুমি করে বলবে।
রোজ বলল, আমাদের লাইন কেটে দেয়া উচিত। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখুন কটা বাজে। অসুখ থেকে উঠে এত রাত অবধি জেগে থাকলে শরীর খারাপ করবে আর ফজরের নামাযও কাযা হয়ে যাবে।
নাদিম বলল, ঠিক কথা বলেছ। তোমার পড়ারও অনেক ক্ষতি হয়েছে।
রোজ বলল, তা একটু হয়েছে। তারপর সালাম বিনিময় করে লাইন কেটে দিল।