দীওয়ান-ই-হাফিজ
(২)
নৌ-জোয়ানির জৌলুসে ফের গুলজার আজ গোলেস্তান
ফুল-কিশোরীর খোশখবরি গায় বুলবুল খোশ এলহান
যৌবনাতুর ফুলকুঁড়ি-বাস যাচ্ছ মলয় ঘোড়সওয়ার,
সরো গোলাব জুঁই কলিদের কই যে কি মোর নমস্কার।
চাঁদ চেহেরায় ম্লান কোরো না কস্তুরী-কেশ-ধূপছায়ায়,
চুনোট চুলের খুনসুড়ি তোর করবে এবার খুন আমায়!
মদপায়ীদের নিত্য যারা বদনামী গায়, হচ্ছে ভয়,
এই খারাবির খেয়াল-সুখই ইমান তাদের করবে ক্ষয়।
খোদার প্রিয়ের হও প্রিয়তম্ – আছেন মাঝি ‘নোহের’ না-র
সিন্ধুকে যে বিন্দু ভাবে তুফান যাঁহার হুকুম চায়!
শনির সরাই দুনিয়া-খানার পাতিসনে হাত, পালিয়ে আয়;
অতিথ এলেই কঞ্জুস এই কাফের করে কতল তায়!
মদ- পূজারি বাচ্চা-শুঁড়ি পুতুল যদি হয় আমার,
নয়ন-পাতায় করব ঝাডু শরাব-পানার দোরের তার!
‘সোহ্হম সত্য’ ‘জগৎ মিথ্যা’ গণ্ডূষে যদি নাও শুষে ও
দেহ দেউলের কণা রহস্য বুঝতে নারবে বন্ধু কেউ!
আখের যাহার সম্বল ভাই দু-মুঠো মাটির নিঁদ-মহল,
বল সে বেকুবে, গগন-চুম্বী সাত মহলাতে তার কী ফল?
হে মোর বন্দি কিনানের চাঁদ! মেসেরং আজ তব দন্ডাধীন,
কারাবাসে এবে বিদায় বলিয়া হও এসে সখা তখত-নশিন।
জানিনে লো তোর এলো কুন্তলে কী খেয়াল খেলে এলোমেলো,
আম লো! শ্যামল কস্তুরী-কেশ দিনে কতবার আলগেলো!
মুক্তি-মুলুক, সবুরীর কোঠা এমন অজেয় উচ্চশির
জিনিবে তা বলে নাই হেন বল শত বাদশার তরবারির।
মদ্পি হাফিজ, মস্তানি চালা, বাস নেচে গেয়ে কাটুক কাল!
অন্যের মতো কোরো না কোরান ফেরেব-বাজির ফন্দি-জাল!