কোগ্রামের মধু পণ্ডিত
বিপদে পড়লে লোকে বলে, ‘ত্রাহি মধুসূদন।’
তা, কোগ্রামের লোকেরাও তাই বলত। কিন্তু তারা কথাটা বলত মধুসূদন পণ্ডিতকে। বাস্তবিক মধুসূদন ছিল কোগ্রামের মানুষের কাছে সাক্ষাৎ দেবতা। যেমন বামনাই তেজ, তেমনই সর্ববিদ্যা-বিশারদ। চিকিৎসা জানতেন, বিজ্ঞান জানতেন, চাষবাস জানতেন, মারণ উচাটন জানতেন, তাঁর আমলে গাঁয়ের লোক মরত না।
সাঁঝের বেলা একদিন কোষ্ঠকাঠিন্যের রুগি বগলাবাবু মধুসুদনের বাড়িতে পাঁচন আনতে গেছেন। গিয়ে দেখেন, গোটা চারেক মুশকো চেহারার গোঁফওয়ালা লোক উঠোনে হ্যারিকেনের আলোয় খেতে বসেছে আর মধু-গিন্নি তাদের পরিবেশন করছে, লোকগুলোর চেহারা ডাকাতের মতো, চোখ চারদিকে ঘুরেছে, পাশে পেল্লায় চারটে কাঁটাওয়ালা মুগুর রাখা।
মধু পণ্ডিত বগলাবাবুকে বলল, ওই চারজন অনেকদূর থেকে এসেছে তো, আবার এক্ষুনি ফিরে যাবে, অনেকটা রাস্তা, তাই খাইয়ে দিচ্ছি।
কথাটায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। মধু পণ্ডিতের বাড়ির উনুনকে সবাই বলে রাবণের চিতা। জ্বলছে তো জ্বলছেই, অতিথিরও কামাই নেই, অতিথি-সৎকারেরও বিরাম নেই। বগলাবাবু বললেন, তা ভালো, কিন্তু আমারও অনেকটা পথ যেতে হবে, পাঁচনটা করে দাও।
মধু পণ্ডিত বলে, ‘আরে বোসো, হয়ে যাবে এক্ষুনি। ওই চারজন বরং তোমাকে খানিকটা এগিয়ে দিয়ে যাবে খন। শচীনখুড়োকে নিতে এসেছিল, তা আমি বারণ করে দিয়েছি।’
বগলাবাবু চমকে উঠে বললেন, ‘শচীনখুড়োকে কোথায় নেবে! খুড়োর যে এখন-তখন অবস্থা! এই তিনবার শ্বাস উঠল।’
সেইজন্যই তো নিতে এসেছিল!
বগলাবাবু ভালো বুঝলেন না। পাঁচন তৈরি হল, লোকগুলোও খাওয়া ছেড়ে উঠল।
মধু পণ্ডিত হুকুম করল, ‘এই তোরা বগলাদাদাকে একটু এগিয়ে দিয়ে যা।’
বগলাবাবু কিন্তু-কিন্তু করেও ওদের সঙ্গে চললেন। বাড়ির কাছাকাছি এসে ভয়ে-ভয়ে জিগ্যেস করলেন, ‘তোমরা কারা বাবারা?’
লোকগুলো পেন্নাম ঠুকে বলল, ‘আজ্ঞে যমরাজার দূত, প্রায়ই আসি এদিক পানে, তবে সুবিধে করতে পারি না। ওদিকে যম মশাইকেও কৈফিয়ত দিতে হয়। কিন্তু মধু পণ্ডিত কাউকেই ছাড়ে না।’
সেই কথা শুনে বগলাবাবু ভিরমি খেলেন বটে, কিন্তু মধু পণ্ডিতের খ্যাতি আরও বাড়ল।
হরেন গোঁসাইয়ের টিনের চালে একদিন জ্যোৎস্না-রাতে ঢিল পড়ল। হরেন গোঁসাই হচ্ছেন গাঁয়ের সবচেয়ে বুড়ো লোক, বয়স দেড়শ বছরের কিছু বেশি। ডাকাবুকো লোক। লাঠি হাতে বেরিয়ে এসে হাঁক দিলেন, কে রে?
মাথা চুলকোতে-চুলকোতে একটা তালগাছের মতো লম্বা সিঢ়িঙ্গে চেহারার লোক এগিয়ে এসে বললে, ‘আপনারা কী অশরীরী কাণ্ড শুরু করলেন বলুন তো! গাঁয়ের ভূত যে সব শেষ হয়ে গেল।
হরেন গোঁসাই হাঁ করে চেয়ে থেকে বললেন, ‘তার মানে?’
‘মানে আর কী বলব বলুন। ভূতেরা হল আত্মা। চিরকাল ভূতগিরি তো তাদের পোষায় না। ডাক পড়লেই আবার মানুষের ঘরে গিয়ে জন্ম নিতে হয়। মানুষ মরে আবার টাটকা ছানা-ভূতেরা আসে। তা মশাই, এই কোগ্রামে আমরা মোট হাজারখানেক ভূত ছিলাম। কিন্তু দেড়শো বছর ধরে একটাও নতুন ভূত আসেনি। ওদিকে একটি-একটি করে ভূত গিয়ে মানুষ হয়ে জন্মাচ্ছে। ইদানীং তো একেবারে জন্মের মড়ক লেগেছে আজ্ঞে। গত মাসখানেকের মধ্যে এক চোপাটে চুয়াল্লিশটা ভূত গায়েব হয়ে গেল। সর্দার রাগারাগি করবে।’
‘তা আমি কী করব?’
লজ্জার মাথা খেয়ে বলি, আপনারা কি সব মরতে ভুলে গেছেন? আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম বড় আশা নিয়ে। কিন্তু আপনিও বেশ ধড়িবাজ লোক আছেন মাইরি। তা, মধু পণ্ডিতের ওষুধ না খেলেই কি নয়?
ভারী অসন্তুষ্ট হয়ে ভূতটা চলে গেল। কিন্তু কদিন পরেই এক রাতে গাঁয়ের লোক সভয়ে ঘুম ভেঙে শুনল, রাস্তা দিয়ে এক অশরীরী মিছিল চলছে। তাতে স্লোগান উঠছে, ‘মধু পণ্ডিত নিপাত যাক! নিপাত যাক! নিপাত যাক! এ তন্দরুস্তি ঝুটা হ্যায় ভুলো মৎ। ভুলো মৎ। এ ইলাজি ঝুটা হ্যায়! ভুলো মৎ। ভুলো মৎ। মধুর নিদান মানছি না! মানছি না। মানব না।’
কিন্তু মাস তিনেক পর একদিন সিড়িঙ্গে ভূতটা খুব কাঁচুমাচু হয়ে মধু পণ্ডিতের বাড়িতে হাজির হল সন্ধেবেলায়।
মধু তামাক খাচ্ছিল, একটু হেসে বলল, ‘কী হে, শুনলাম আমার বিরুদ্ধে খুব লেগেছ তোমরা?
‘পেন্নাম হই পণ্ডিতমশাই, ঘাট হয়েছে।’
‘কী হয়েছে বাপু?’
‘আজ্ঞে আমি আর সর্দার ছিলাম গতকাল অবধি। আর সব জন্মের মড়কে গায়েব হয়ে গেছে। কিন্তু কাল রাতে একেবারে সাড়ে সর্বনাশ, আমাদের বুড়ো সর্দার পর্যন্ত মানুষের ঘরে গিয়ে জন্ম নিয়ে ফেলেছে। আমি একেবারে একা।’
‘একা তো ভালোই, চরে বরে খা গে। এখন তো তোর একচ্ছত্র রাজত্ব।
জিভ কেটে ভূতটা বলল, ‘কী যে বলেন! একা হয়ে এ-প্রাণে আর জল নেই। বড্ড ভয়-ভয় করছে আজ্ঞে। খেতে পারচি না, শুতে পারচি না। রাতে শেয়াল ডাকে প্যাঁচা ডাকে, আমি কেঁপে-কেঁপে উঠি।’
‘তা, তোর ভয়টা কীসের?’
‘আজ্ঞে, একা হওয়ার পর থেকে আমার ভূতের ভয়ই হয়েছে, যমরাজার পেয়াদাগুলোও ভীষণ ট্যাটন। একা পেয়ে যাতায়াতের পথে আমাকে ডাঙস মেরে যায়।’
‘ঠিক আছে, তুই বরং আমার সঙ্গেই থাক।’
সেই থেকে সিড়িঙ্গে ভূতটা মধু পণ্ডিতের বাড়িতে বহাল হল।
একদিন জমিদার কদম্বকেশরের ভাইপো কুন্দকেশর এসে হাজির। গম্ভীর গলায় বললেন, ‘ওহে মধু একটা কথা ছিল।’
মধু তটস্থ হয়ে বলল, ‘আজ্ঞে বলুন।’
‘আমার বয়স কত জানো?’
‘বেশি বলে তো মনে হয় না।’
কুন্দকিশোর একটা শ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘পঁচানব্বই, বুঝলে? পঁচানব্বই। আমার কাকা কদম্বকেশরের বয়স জানো?’
‘খুব বেশি আর কী হবে?’
‘তোমার কাছে বেশি না লাগলেও, বেশি-ই। একশ পঁচিশ বছর।’
‘তা হবে।’
‘আমার কাকা নি:সন্তান তা তো অন্তত জানো!’
মধু পণ্ডিত মাথা চুলকে বলে, ‘তা জানি, উনি গেলে আপনারই সব সম্পত্তি পাওয়ার কথা।’
‘জানো তাহলে? বাঁচালে। এও নিশ্চয়ই জানো, কাকার সম্পত্তি পাব এরকম একটা ভরসা পেয়েই আমি গত সত্তরটা বছর কাকার আশ্রয়ে আছি। জানো, একদিন জমিদার হয়ে ছড়ি ঘোরাব বলে আমি ভালো করে লেখাপড়া করিনি পর্যন্ত। একদিন জমিদারনি হবে এই আশায় আমার গিন্নি এই বুড়ো বয়সেও যে বাড়িতে ঝি-এর অধম খাটে, তা জানো! আমার বড় ছেলের বয়স পঁচাত্তর পেরিয়েছে! শোনো বাপু, কাকা মরুক এ আমি চাই না। কিন্তু হকের মরাই বা লোকে মরছে না কেন? মরলে আমি কান্নাকাটিও করব, কিন্তু মরছে কোথায়! আর নাই যদি মরে বাপু, তবে অন্তত সন্ন্যাসী হয়ে হিমালয়ে তো যেতে পারে। বৈরাগী হয়ে পথে-পথে দিব্যি বাউল গান তো গেয়ে বেড়াতে পারে। তা তোমার ওষুধে কি সে সবেও বারণ নাকি? তোমার নামে লোকে যে কেন মামলা করে না, সেইটেই বুঝি না।’
মধু পণ্ডিত বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘আপনার বয়স হয়েছে জানি, কিন্তু তাতে ভয় খাচ্ছেন কেন? বয়স তো একটা সংস্কার মাত্র, শরীর যদি সুস্থ-সবল থাকে, মানসিকতা যদি স্বাভাবিক থাকে, তবে আপনি একশো বছরেও যুবক। উলটো হলে, পঁচিশ বছরেও বুড়ো। এই আপনার কাকাকেই দেখুন না। মোটে তো সোয়া শো বছর বয়স, দেড়শো পেরিয়েও দিব্যি হাঁকডাক করে বেঁচে থাকবেন।’
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কুন্দকেশর বললেন, ‘বলছ?’
নির্যস সত্যি কথা।
কুন্দকেশর চলে গেলেন। কিছুদিন পর শোনা গেল, তিনি নিরানব্বই বছরের স্ত্রী আর পঁচাত্তর বছরের বড় ছেলের হাত ধরে সন্ন্যাসী হয়ে বেরিয়ে গেছেন।
সন্ধে হয়ে এসেছে, প্রচণ্ড বর্ষা নেমেছে আজ। মেঘে ডাকছে। ঝড়ের হাওয়া বইছে। এই দুর্যোগে হঠাৎ মধু পণ্ডিতের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হল। দরজা খুলে মধু একটু অবাক, বেশ দশাসই চেহারার একজন মানুষ দাঁড়িয়ে। গায়ে ঝলমলে জরির পোশাক। ইয়া গোঁফ, ইয়া বাবরি, ইয়া গালপাট্টা, মাথায় একটা ঝলমলে টুপি। তাতে ময়ূরের পালক, গায়ের রং মিশমিশে কালো বটে, কিন্তু তবু লোকটি ভারী সুপুরুষ।
মধু পণ্ডিত হাতজোড় করে বললেন, ‘আজ্ঞে আসুন, আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।’
‘আমি তোমার যম।’ জলদম্ভীর স্বরে লোকটা বলল।
শুনে মধু পণ্ডিত একটু চমকে উঠল। খুন করবে নাকি? কোমরে একটা ভোজালিও দেখা যাচ্ছে। কাঁপা গলায় মধু বলল, ‘আজ্ঞে।’
লোকটা হেসে বলল, ‘ভয় পেও না বাপু। আমি ভয় দেখাতে আসিনি।’
বরং বড় ভাইয়ের মতো পরামর্শ দিতে এসেছি। তুমি এই গাঁ না ছাড়লে আমি কাজ করতে পারছি না। আমি যে সত্যিই যমরাজা, তা বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই। মধু দণ্ডবৎ হয়ে প্রণাম করে উঠে মাথা চুলকে বলে, ‘আপনার আদেশ শিরোধার্য কিন্তু শ্বশুরবাড়িটা কোথায় ছিল, তা ঠিক মনে পড়ছে না।’
‘বলো কী?’ যমের চোখ কপালে উঠল, ‘শ্বশুরবাড়ি লোকে ভোলে?’
‘আজ্ঞে অনেক দিনের কথা তো, দাঁড়ান, গিন্নিকে জিগ্যেস করে আসি’, বলে মধু পণ্ডিত ভিতরবাড়ি থেকে ঘুরে এসে একগাল হেসে বলে, ‘এই বর্ধমানের গোবিন্দপুর। কিন্তু গিয়ে লাভ নেই। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি গত হয়েছেন।’
যমরাজ বলেন, ‘তা শালা-শালিরা তো আছে।’
‘ছিল, এখন আর নেই।”
”তাদের ছেলে-মেয়েরা সব?’
‘আজ্ঞে তারাও গত হয়েছে। তস্য পুত্র-পৌত্রাদিরা আছে বটে। কিন্তু তারাও খুব বুড়ো। গিয়ে হাজির হলে চিনতে পারবে না।’
যমরাজ গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘তোমার বয়স কত মধু?’
‘আজ্ঞে মনে নেই।’
যমরাজ ডাকলেন, ‘চিত্রগুপ্ত! মধুর হিসেবটা দেখো তো।’
রোগা সিড়িঙ্গে একটা লোক গলা বাড়িয়ে বলল, ‘আজ্ঞে দুশো পঁচিশ।’
‘ছি:-ছি: মধু!’ যমরাজ অভিমানভরে বললেন, ‘এতদিন বাঁচতে তোমার ঘেন্না হওয়া উচিত ছিল। থাকগে, আমি তোমাকে কিছু বলব না। পৃথিবীর নিয়ম ভেঙে চলছ, চলো। মজা টের পাবে।’
যমরাজ চলে গেলেন, মধু কিছুদিনের মধ্যেই মজা টের পেতে লাগল।
হয়েছে কী, মধুর ওষুধ যে শুধু মানুষ খায়, তা নয়। রোদে শুকুতে দিলে পাখি-পক্ষীও খায়, ঘরে রাখলে পিঁপড়ে, ধেড়ে ইঁদুরও ভাগ বসায়। তাদেরও হঠাৎ আয়ু বাড়তে লাগল। কোগ্রামের মশা-মাছি পর্যন্ত মরত না। বরং দিন-দিন মশা, মাছি, পিঁপড়ে, ইঁদুর ইত্যাদির দাপট বাড়তে লাগল। আরও মুশকিল হল জীবাণুদের নিয়ে। কলেরা রুগিকে ওষুধ দিয়েছে মধু, তা সে ওষুধ কলেরার পোকাও খানিকটা খেয়ে নেয়। ফলে রুগিও মরে না, কিন্তু তার কলেরাও সারতে চায় না। সান্নিপাতিক রুগিরও সেই দশা, কোগ্রামে ঘরে-ঘরে রুগি দেখা দিতে লাগল। তারা আর ওঠা-হাঁটা-চলা করতে পারে না। কিন্তু ওষুধের জোরে বেঁচে থাকে।
এক শীতের রাতে আবার যমরাজ এলেন।
‘মধু! কী ঠিক করলে?’
‘আজ্ঞে, লোকে বড় কষ্ট পাচ্ছে।’
‘তা, তো একটু পাবেই। এখনও বলো, যমের সঙ্গে পাল্লা দিতে চাও কিনা।’
শশব্যস্ত দণ্ডবৎ হয়ে মধু পণ্ডিত বলে, ‘আজ্ঞে না। তবে এখন যদি ওষুধ বন্ধ করি, তবে চোখের পলকে গাঁ শ্মশান হয়ে যাবে। একশো বছর বয়সের নিচে কোনও লোক নেই।’
যমরাজ গম্ভীর হয়ে বলেন, তা একটা ভাববার কথা বটে, তোমার এত প্রিয় গাঁ, তাকে শ্মশান করে দিতে কি আমারই ইচ্ছে? তবে একটা কথা বলি মধু। যেমন আছ থাকো সবাই। তবে গাঁয়ের বাইরে মাতব্বরি করতে কখনও যেও না। আমি গণ্ডি দিয়ে গেলাম। শুধু এই কোগ্রামের তোমরা যতদিন খুশি বেঁচে থাকো। অরুচি যতক্ষণ না হয়। তবে বাইরের কেউ এই গাঁয়ের সন্ধান পাবে না। কানাওলা ভূত চারদিকে পাহারায় থাকবে। কোনও লোক এদিকে এসে পড়লে অন্য পথে তাদের ঘুরিয়ে দেবে।’
মধু দণ্ডবৎ হয়ে বলে, ‘যে আজ্ঞে!’
সেই থেকে আজও শোনা যায়, কোগ্রামের কেউ মরে না। কিন্তু কোথায় সেই গ্রাম, তা খুঁজে-খুঁজে লোকে হয়রান। আজও কেউ খোঁজ পায়নি।