কে দেখা দিল না

কে দেখা দিল না

আমার বন্ধু শঙ্করকে গুয়াহাটি যেতে হয়েছিল অফিসের কাজে৷ আমিও তখন যাচ্ছিলাম দিল্লি হয়ে রাজস্থান৷ দু’জনে সম্পূর্ণ দু’দিকে যাব৷ দমদম এয়ারপোর্টে বসে গল্প করলাম খানিকক্ষণ৷ আমার প্লেন সাড়ে পাঁচটায় আর শঙ্করের প্লেন ছাড়বে সাড়ে ছ’টায়৷

শঙ্কর বলল, ‘‘তুই রাজস্থানে ঘুরবি৷ শুনে আমার খুব লোভ হচ্ছে৷ অফিসের কাজ না থাকলে আমি তোর সঙ্গে চলে যেতাম৷’’

আমি বললাম, ‘‘আমারও তো ওদিককার ট্রেনের টিকিট কাটা হয়ে গেছে৷ না হলে দিল্লির বদলে ঘুরে আসতাম গুয়াহাটি৷’’

প্লেনে ওঠার জন্য আমারই আগে ডাক পড়ল৷

শঙ্কর জিজ্ঞেস করল, ‘‘তুই কবে ফিরবি, সুনীল?’’

আমি বললাম, ‘‘কুড়ি তারিখ শনিবার সকালে৷’’

শঙ্কর বলল, ‘‘আমি ফিরে আসব তার অনেক আগেই৷ তা হলে ওই কুড়ি তারিখ ফিরেই তুই আমার বাড়িতে চলে আসিস৷ তোর বেড়াবার গল্প শুনব৷ আর রাত্তিরে আমরা খাব একসঙ্গে৷’’

আমি বললাম, ‘‘ঠিক আছে, ওই কথাই রইল৷’’

আমি চলে গেলাম প্লেনের দিকে৷ তারপর দিল্লি ছুঁয়ে রাজস্থানে ঘোরাঘুরি করলাম বেশ কয়েকদিন৷ ইচ্ছেমতন এক-এক জায়গায় থেকেছি৷ কোথায় কোন হোটেলে উঠছি, তা আমার বাড়ির কেউ জানত না, জানবার দরকারও বোধ করেনি৷

ফিরে এলাম ঠিক কুড়ি তারিখেই৷ আরও কয়েকদিন থেকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু আজকাল তো ট্রেনের টিকিট যে-কোনও সময় চাইলেই পাওয়া যায় না!

বাড়ি ফিরে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠছি, দোতলার মুখে দাঁড়িয়ে আছে আমার ছোটভাই৷ আমাকে দেখে তার মুখখানা যেন ছাই রঙের হয়ে গেল৷

সে বলল, ‘‘দাদা, তুই খবরটা শুনেছিস?’’

আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘কী খবর?’’

‘‘তুই শঙ্করদার খবর এখনও জানিস না?’’

‘‘শঙ্করের খবর? কী হয়েছে শঙ্করের?’’

আমার ছোটভাই চুপ করে গেল৷ আমি দৌড়ে ওপরে উঠে এসে তাকে ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললাম, ‘‘কী হয়েছে? কিছু বলছিস না কেন?’’

‘‘শঙ্করদা মারা গেছে!’’

কয়েক মুহূর্তের জন্য যেন আমার জ্ঞান চলে গিয়েছিল৷ মাথায় কিছু ঢুকল না৷

তারপর আমি চিৎকার করে বললাম, ‘‘মিথ্যে কথা! হতেই পারে না!’’

এই তো সেদিন দেখা হল শঙ্করের সঙ্গে৷ আমি বিদায় নেওয়ার সময় সে আমার হাত জড়িয়ে ধরে বলল, কুড়ি তারিখে দেখা হবে৷ আমার চেয়েও শঙ্করের স্বাস্থ্য অনেক ভালো৷ সুন্দর চেহারা৷ সে কী করে হঠাৎ মরে যাবে?

কিন্তু এক-একটা ঘটনা থাকে, চিৎকার করে প্রতিবাদ জানালেও মিথ্যে হয়ে যায় না৷ এইসব খবর নিয়ে কেউ মিথ্যে ঠাট্টাও করে না৷

শঙ্কর সত্যিই নেই৷ গুয়াহাটিতে গিয়ে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল৷ কোনও চিকিৎসার আগেই তার শেষ নিশ্বাস পড়ে৷

অন্য বন্ধুবান্ধবরা কেউ শঙ্করের মৃতদেহ দেখেনি৷ খবর পাওয়া গিয়েছিল প্রায় একদিন পরে, কারণ টেলিফোনের লাইন পাওয়া যাচ্ছিল না৷ প্লেনে ফিরিয়ে আনার অনেক ঝামেলা৷ শঙ্করের মামা গুয়াহাটি চলে গিয়ে পোড়াবার ব্যবস্থা করেছিলেন৷

আমি সিঁড়ির ওপর বসে পড়লাম৷ আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়াতে লাগল৷ শঙ্কর আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তার সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হবে না? আজ কুড়ি তারিখ, শনিবার, আজ সে আমাকে নেমন্তন্ন করে রেখেছিল, তার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করার কথা৷ আজ আমি শঙ্করের মায়ের সামনে দাঁড়াব কী করে?

শঙ্করের মৃত্যুর পরেও তার চিঠি আসতে লাগল৷ ও খুব চিঠি লিখতে ভালোবাসত৷ পোস্টকার্ডে ছোট-ছোট চিঠি লিখত অনেককে৷ সেইসব চিঠি এসে পৌঁছতে লাগল অনেক পরে৷ সেইসব চিঠি দেখলেই বুকটা ধক করে ওঠে৷ মনে হয় না, মানুষটা বেঁচে আছে?

এয়ারপোর্টে শেষ দেখা শঙ্করের সেই চেহারা এখনও আমার চোখে ভাসে, তার কথাগুলো স্পষ্ট শুনতে পাই৷

তারপর কেটে গেল তিন মাস৷ শঙ্করের বাড়ির বৈঠকখানায় আমাদের বন্ধুদের একটা আড্ডা ছিল, এখন আর সেখানে কেউ যায়ই না৷ তবু প্রায়ই শঙ্করের কথা মনে পড়ে৷

আমি আবার একটা নেমন্তন্ন পেলাম মানসের জঙ্গল ঘুরে দেখার৷ জঙ্গল আমার খুব প্রিয়৷ ডাক পেলেই ছুটে যাই৷ আর মানস ফরেস্ট তো অতি বিখ্যাত৷ থাকার ব্যবস্থা জঙ্গলের মধ্যেই, ডাকবাংলোতে৷

তিন দিন ধরে সেই জঙ্গলে প্রচুর ঘোরাঘুরি করার পর একজন অসমিয়া বন্ধু আমাকে তার জিপ গাড়িতে করে পৌঁছে দিয়ে গেল গুয়াহাটির সার্কিট হাউসে৷ সেখানে আমার নামে একটা ঘর বুক করা আছে৷

কী একটা কারণে যেন অসমের সব সরকারি অফিসে স্ট্রাইক চলছে, তাই সার্কিট হাউসে খাবার পাওয়া যাবে না৷ অসমিয়া বন্ধুটি বাইরে থেকে একগাদা খাবার কিনে নিয়ে এল আমার জন্য৷

কিছুক্ষণ গল্প করার পর সে বিদায় নিল৷ রাত প্রায় সাড়ে দশটা৷ সারাদিন জিপ গাড়িতে চেপে এসেছি বলে ধুলোয় গা একেবারে চিটচিটে হয়ে গেছে৷ তাই আমি স্নান সেরে নিলাম ভালো করে৷ তারপর খেতে বসলাম৷

আজ আর ডাকলে বেয়ারাদেরও পাওয়া যাবে না৷ প্লেট, চামচ কিংবা এক গ্লাস জলও কেউ দেবে না৷ সবাই ছুটি নিয়েছে৷ সার্কিট হাউসের আর কোনও ঘরে কোনও লোক নেই৷ এত বড় সার্কিট হাউসটা একেবারে নিস্তব্ধ৷

আমি একা থাকতে ভালোবাসি৷ হাতে একটা বই খুলে নিয়ে একা-একা খাওয়াটাও পছন্দ করি৷ যত ইচ্ছে সময় লাগুক, কেউ মাথা ঘামাবে না৷

একখানা লুচিতে আলুরদম ভরে সবেমাত্র মুখে দিয়েছি, জানলার কাছে কিসের যেন একটা শব্দ হল৷ মুখ তুলতেই মনে হল, কে যেন জানলার পাশ দিয়ে চট করে সরে গেল৷

আমি ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘কে?’’

কেউ কোনও উত্তর দিল না৷ যতদূর জানি, আজ সার্কিট হাউসে কোনও লোক নেই৷ তা হলে কে দাঁড়িয়ে ছিল? কেউ থাকলেও লুকিয়ে পড়বে কেন? চোর-টোর নাকি?

দরজা খুলে বাইরে উঁকি দিয়ে দেখলাম৷ না, কেউ নেই৷ তা হলে আমারই ভুল হয়েছে৷ জানলার পর্দাটা উড়ছে, সেই জন্যই ভুল হতে পারে৷

ফিরে এসে বইটা তুলে নিয়ে খাওয়া শুরু করতেই আবার ঠকাস করে জানলার একটা পাল্লা বন্ধ হয়ে গেল৷ এবার যেন স্পষ্ট দেখতে পেলাম, জানলার পাশ দিয়ে সরে গেল একটা মুখ৷

আবার ধমকের সুরে চেঁচিয়ে বললাম, ‘‘কে? কে ওখানে?’’

কোনও উত্তর নেই৷ চোখে এত ভুল দেখছি!

উঠে গিয়ে আবার দরজা খুলে দেখলাম, কেউ কোথাও নেই৷ অন্য সব দরজায় তালা লাগানো, মাঝখানে লম্বা বারান্দা, চোর যদি হয় সে জানলার কাছে দাঁড়িয়ে শব্দ করবে কেন? কেউ কি আমার সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে!

এই লুকোচুরি কথাটা মনে আসতেই মনে পড়ল শঙ্করের কথা৷

শঙ্কর এই গুয়াহাটিতে এসেই মারা গেছে৷ শঙ্করের বড়মামা ছাড়া আর আমাদের চেনাশোনা কেউ শঙ্করের মৃতদেহ দেখেনি৷ মামা-ভাগ্নেতে মিলে কোনও ষড়যন্ত্র করেনি তো? কোনও কারণে শঙ্কর গুয়াহাটিতে লুকিয়ে থেকে নিজের মৃত্যুসংবাদ রটিয়ে দিয়েছে?

কিন্তু শঙ্করের ছোট ভাই আর বোনকে আমি কী দারুণ কাঁদতে দেখেছি৷ শঙ্করের মা শোকে-দুঃখে যেন পাথর হয়ে গিয়েছিলেন৷ মায়ের কাছে কি কেউ ছেলের নামে এমন মিথ্যে বলতে পারে? শঙ্করের বড়মামাও খুব গম্ভীর ধরনের মানুষ, তিনি এ-ধরনের নির্মম রসিকতা করতেই পারেন না৷

নাঃ, শঙ্কর বেঁচে থাকতে পারে না৷

আবার খাওয়া শুরু করলাম৷ এবার ঘরের মধ্যে একটা দমকা হাওয়া ঢুকে এল, ঘরের একদিকের দেওয়ালে একটা জঙ্গলের ছবি, আর-একদিকের দেওয়ালে একটা ক্যালেন্ডার৷ হাওয়ায় ক্যালেন্ডারটা খুলে পড়ে গেল মাটিতে৷

আমি ক্যালেন্ডারটা তুলবার জন্য উঠতে গিয়েও ভাবলাম, থাক, খাওয়ার পর তুললেই হবে৷

তখনই মনে পড়ল, আজকের দিনটাও শনিবার, আর এ-মাসের কুড়ি তারিখ৷ সঙ্গে-সঙ্গে আমার শরীরে একটা শিহরন বয়ে গেল৷

আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম, ‘‘শঙ্কর, শঙ্কর, তুই কি লুকিয়ে আছিস? আমার সামনে চলে আয়৷ আমাকে সব কথা বল!’’

কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না৷

তিন মাস আগেকার এক কুড়ি তারিখ, শনিবারে শঙ্করের সঙ্গে আমার খাওয়াদাওয়া করার কথা ছিল, আজও সেইরকম একটা দিন৷ শঙ্কর নেই৷ আজ কি আমি একা একা খেতে পারি?

খাবার সরিয়ে রেখে আমি বাথরুমে গিয়ে হাত ধুয়ে নিলাম৷ শঙ্করের জন্য বুকটা হু-হু করে উঠল৷

বাথরুমের জানলা দিয়ে বাইরে দেখা যায় অন্ধকার একেবারে ঘুটঘুট করছে৷ পাশেই বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদী৷ জলের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু নদীটা দেখা যাচ্ছে না৷

বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখি, ঝড়ের মতন হাওয়ায় জানলার পর্দা উথালপাথাল করছে৷ এ-ঘরের সব দরজা-জানলায় বড়-বড় ভারী পর্দা৷ এমন পর্দা, যার আড়ালে কোনও মানুষ লুকিয়ে থাকতে পারে৷

একেবারে ফাঁকা সার্কিট হাউস, চোর-ডাকাত ঢুকে পড়া অসম্ভব নয়৷ আমার কাছে টাকা-পয়সা প্রায় কিছুই নেই, কিন্তু চোর-ডাকাতরা তা জানবে কী করে?

আমি সবক’টা পর্দা সরিয়ে-সরিয়ে দেখলাম৷ দরজায় লাগালাম খিল আর ছিটকিনি৷ কাচের জানলাগুলোতে শক্ত গ্রিল লাগানো আছে, কেউ ঢুকতে পারবে না৷

বইটা পড়ার চেষ্টা করতেই ঝড়ের হাওয়ায় একটা জানলার পর্দা খুব উড়তে লাগল৷ কাচের পাল্লা তো বন্ধ করেছিলাম, খুলে গেল কী করে?

উঠে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখলাম৷ ছিটকিনিটা একটু আলগা মতন, হাওয়ার ধাক্কায় নিজে-নিজেই খুলে গেছে৷ হাওয়া আসছে দারুণ জোরে৷ অন্য একটা জানলার পর্দা সরিয়ে দেখলাম, তার দুটো পাল্লাই খোলা, এটা বোধহয় বন্ধই করিনি৷

এই প্রথম আমি ভয় পেলাম৷ একই দিকে দুটো জানলা৷ দুটোই নদীর দিকে৷ কিন্তু একটা জানলার পর্দা দমকা হাওয়ায় উড়ছিল, আর অন্য জানলার পর্দাটা একটুও নড়েনি৷ দুটো জানলাই খোলা, দুটো জানলা দিয়েই তো সমান হাওয়া আসার কথা৷

বাইরে কিছুই দেখা যায় না৷ এমন হতে পারে, অন্য জানলাটার কাছেই কোনও বড় গাছ আছে কিংবা দেওয়াল-টেওয়াল কিছু আছে, তাই হাওয়া বাধা পাচ্ছে৷ এ ছাড়া আর তো কোনও কারণ থাকতে পারে না৷

এইসব কথা ভাবলেও সত্যি কথা বলছি, আমার বেশ ভয় করতে লাগল৷

এখন আর বই পড়া যাবে না৷ দুটো জানলায় ভালো করে ছিটকিনি এঁটে আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম৷

একটু পরেই মনে হল, জানলায় কেউ ঠক ঠক করছে৷

আমি মনে-মনে বলতে লাগলাম, কেউ না৷ কেউ না! ওটা ঝড়ের শব্দ, বাতাসের ধাক্কা৷ তা ছাড়া আর কিছুই নয়৷

হঠাৎ প্রচণ্ড একটা ধাক্কায় সেই প্রথম জানলাটার পাল্লা খুলে গেল হাট করে, ঝোড়ো বাতাস ঘরের মধ্যে যেন তাণ্ডব শুরু করে দিল৷ ঝনঝন শব্দে পড়ে ভেঙে গেল দেওয়ালের ছবিটা৷

আমি দারুণ ভয়ে আঁ-আঁ চিৎকার করে উঠলাম৷

অন্য জানলাটায় একটুও শব্দ নেই, বাতাসের ঝাপটা নেই৷ তা হলে এ নিশ্চয়ই অলৌকিক কাণ্ড!

শঙ্কর নেই, তবে কি তার প্রেতাত্মা দেখা করতে চায় আমার সঙ্গে? অর্থাৎ, ভূত৷

এতকাল ভূতে বিশ্বাস করিনি৷ কিন্তু এখন ভয়ে কাঁপিয়ে দিচ্ছে সর্বাঙ্গ৷ সত্যিই মনে হচ্ছে, অন্ধকার ঘরের মধ্যে কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছে৷

বেডসুইচটা টিপে আলো জ্বালতেই অবশ্য দেখা গেল, ঘর খালি৷ কেউ নেই, এলোমেলো বাতাস বইছে শুধু৷ ছবিটা পড়ে ভেঙে গিয়েছে৷

এবার আমি ঠাস করে নিজের গালে একটা চড় কষালাম!

যদি শঙ্কর ভূত হয়ে এসেও থাকে, তাতে আমার ভয় পাওয়ার কী আছে? শঙ্কর আমার অতি প্রিয় বন্ধু ছিল, সে কি আমার কোনও ক্ষতি করবে? কখনও না৷

ছেলেমানুষের মতন ভয় না পেয়ে আমার ধৈর্য ধরে দেখা উচিত৷ ভূত আছে না নেই, তার প্রমাণ হয়ে যাবে৷ নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভূত হলে ভয় পাওয়ার কোনও কারণই নেই৷ তার কাছ থেকে ভূতেদের ব্যাপার-স্যাপার সব জেনে নেওয়া যাবে৷

নিজেকে চড় মারার ফলে অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেলাম৷ খুলে দিলাম দুটো জানলার পাল্লা৷ আসুক হাওয়া৷ আরও যদি কেউ আসতে চায় তো আসুক৷

বিছানা ছেড়ে চেয়ারে বসলাম বইটা নিয়ে৷ জোরে বললাম, ‘‘শঙ্কর আয়, দেখা দে৷ কিংবা যদি কিছু বলতে চাস, বল৷ আমি ভয় পাব না৷ তোর যেরকম চেহারাই হোক, ভয় পাব না৷ আয় শঙ্কর, আয়, তোর সঙ্গে আমার অনেক গল্প বাকি আছে৷’’

তারপর মাঝে-মাঝে বই পড়া আর মাঝে-মাঝে জানলার দিকে তাকানো, এইভাবে কেটে গেল সারারাত৷ চেয়ারে বসে৷ কেউ এল না৷ কেউ কিছু বলল না৷ শঙ্কর দেখা দিল না৷

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *