কেমন করে তড়িৎ-আলোয়
দেখতে পেলেম মনে
তোমার বিপুল সৃষ্টি চলে
আমার এই জীবনে।
সে সৃষ্টি যে কালের পটে
লোকে লোকান্তরে রটে,
একটু তারি আভাস কেবল
দেখি ক্ষণে ক্ষণে।
মনে ভাবি, কান্নাহাসি
আদর অবহেলা
সবই যেন আমায় নিয়ে
আমারি ঢেউ-খেলা।
সেই আমি তো বাহনমাত্র,
যায় সে ভেঙে মাটির পাত্র–
যা রেখে যায় তোমার সে ধন
রয় তা তোমার সনে।
তোমার বিশ্বে জড়িয়ে থাকে
আমার চাওয়া পাওয়া।
ভরিয়ে তোলে নিত্যকালের
ফাল্গুনেরই হাওয়া।
জীবন আমার দুঃখে সুখে
দোলে ত্রিভুবনের বুকে,
আমার দিবানিশির মালা
জড়ায় শ্রীচরণে।
আপন-মাঝে আপন জীবন
দেখে যে মন কাঁদে।
নিমেষগুলি শিকল হয়ে
আমায় তখন বাঁধে।
মিটল দুঃখ, টুটল বন্ধ–
আমার মাঝে হে আনন্দ,
তোমার প্রকাশ দেখে মোহ
ঘুচল এ নয়নে।
এলাহাবাদ, ১ কার্তিক- সন্ধ্যা, ১৩২১