কৃপণ
কদম্ববাবু মানুষটা যতটা না গরিব তার চেয়ে ঢের বেশি কৃপণ। তিনি চণ্ডীপাঠ করেন কিনা কে জানে, তবে জুতো সেলাই যে করেন সবাই জানে। আর করেন মুচির পয়সা বাঁচাতে। তবে আরও একটা কারণ আছে। একবার এক মুচি তাঁর জুতো সেলাই করতে নারাজ হয়ে বলেছিল, ‘এটা তো জুতো নয়, জুতোর ভূত। ফেলে দিন গে।’ বাস্তবিকই জুতো এত ছেঁড়া আর তাপ্পি মারা যে সেলাই করার আর জায়গাও ছিল না। কিন্তু কদম্ববাবু দমলেন না। একটা গুণছুঁচ আর খানিকটা সুতো জোগাড় করে নিজেই লেগে গেলেন সেলাই করতে।
জুতো সেলাই থেকেই তাঁর ঝোঁক গেল অন্যান্য দিকে। জুতো যদি পারা যায় তাহলে ছাতাই বা পারা যাবে না কেন? সুতরাং ছেঁড়া ভাঙা ছাতাটাও নিজেই সারাতে বসে গেলেন। এরপর ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ, ছুতোরের কাজ, ছুরি-কাঁচি ধার দেওয়া, শিল কাটানো, ফুটো কলসি ঝালাই করা, ছোটখাটো দর্জির কাজ সবই নিজে করতে লাগলেন। এর ফলে যে উনি বাড়ির লোকের কাছে খুব বাহবা পান তা মোটেই নয়। বরং তাঁর বউ আর ছেলেমেয়েরা তাঁর এই কৃপণতায় খুবই লজ্জায় থাকে। বাইরের লোকের কাছে তাদের মুখ দেখানো ভার হয়।
কিন্তু কদম্ববাবু নির্বিকার। পয়সা বাঁচানোর যতরকম পন্থা আছে সবই তাঁর মাথায় খেলে যায়। তাঁর বাড়িতে ঝি-চাকর নেই। জমাদার আসে না। নর্দমা পরিষ্কার থেকে বাসন মাজা সবই কদম্ববাবু, তাঁর বউ বা ছেলেমেয়েরাও করে নেয়।
ছোট ছেলে বায়না ধরল, ঘুড়ি লাটাই কিনে দিতে হবে। কদম্ববাবু একটুও না ঘাবড়ে বসে গেলেন ঘুড়ি বানাতে। পুরোনো খবরের কাগজ দিয়ে ঘুড়ি আর কৌটো ছ্যাঁদা করে তার মধ্যে একটা ডাণ্ডা গলিয়ে লাটাই হল। ঘুড়িটা উড়ল না বটে, কিন্তু কদম্ববাবুর পয়সা বেঁচে গেল।
এহেন কদম্ববাবু একদিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরছেন। চার মাইল রাস্তা তিনি হেঁটেই যাতায়াত করেন। হাঁটতে-হাঁটতে হঠাৎ মাঝ রাস্তায় ঝেঁপে বৃষ্টি এল। সস্তা ফুটো ছাতায় জল আটকাল না। কদম্ববাবু ভিজে ভূত হয়ে যাচ্ছিলেন। তাড়াতাড়ি একটা পুরোনো বাড়ির রক-এ উঠে ঝুল বারান্দার তলায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টির ছাঁট থেকে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করতে লাগলেন।
হঠাৎ পিছনে প্রকাণ্ড দরজাটা খুলে গেল। একজন বুড়ো মতন লোক মুখ বাড়িয়ে একগাল হেসে বলল, ‘এই যে শ্যামবাবু! এসে গেছেন তাহলে? আসুন, আসুন, ভিতরে আসুন।’
কদম্ববাবু তটস্থ হয়ে বললেন, আমি তো শ্যামবাবু নই।
না হলে বা শুনছে কে? কর্তাবাবু দাবার ছক সাজিয়ে বসে আছেন যে! দেরি হলে কুরুক্ষেত্তর করবেন। এই কি রঙ্গ-রসিকতার সময়? আসুন, আসুন।
কদম্ববাবু সভয়ে বললেন, ‘আমি তো দাবা খেলতে জানি না।’
লোকটা আর সহ্য করতে পারল না। কদম্ববাবুর হাতটা ধরে দরজার মধ্যে টেনে নিয়ে বলল, ‘আচ্ছা লোক যা হোক। আপনি রসিক লোক তা আমরা সবাই জানি। তা বলে সবসময়ে কি রসিকতা করতে হয়?’
ভেতরে ঢুকে কদম্ববাবুর চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল। এইসব পুরোনো বনেদি বাড়িতে তিনি কখনও ঢোকেননি। যেদিকে তাকান চোখ যেন ঝলসে যায়।
মার্বেল পাথরে বাঁধানো মেঝে থেকে শুরু করে ঝাড়বাতি অবধি সবই টাকার গন্ধ ছড়াচ্ছে।
তিনি যে শ্যামবাবু নন, তাঁকে যে ভুল লোক ভেবে এ বাড়িতে ঢোকানো হয়েছে এ কথাটা ভালো করে জোর দিয়ে বলার মতো অবস্থাও কদম্ববাবুর আর রইল না। তিনি চারদিকে চেয়ে মনে-মনে হিসেব করতে লাগলেন, এই মার্বেল পাথরের কত দাম, কত দাম ওই দেয়ালঘড়ির…ভেজা ছাতা থেকে জল ঝরে মেঝে ভিজে যাচ্ছিল। লোকটা হাত বাড়িয়ে ছাতাটা হাত থেকে একরকম কেড়ে নিয়ে বলল, ‘এ: শ্যামবাবু, এই ছেঁড়া-তাপ্পি দেওয়া ছাতা কোথা থেকে পেলেন? আপনার সেই দামি জাপানি ছাতাখানার কী হল?
কদম্ববাবু শুধু হতভম্বের মতো বললেন, ‘জাপানি ছাতা?’
লোকটা হঠাৎ তাঁর পেটে একটা চিমটি কেটে বলল, ‘আপনার মতো শৌখিন মানুষ ক’টা আছে বলুন।’
ছেঁড়া জুতোয় জল ঢুকে সপ-সপ করছিল। কদম্ববাবু জুতো জোড়া সন্তপর্ণে ছেড়ে রাখলেন একধারে।
কিন্তু লোকটার চোখ এড়ানো গেল না। জুতো জোড়া দেখতে পেয়ে লোকটা আঁতকে উঠে বলল, ‘সেই সোনালি সুতোর কাজ করা নাগরা জোড়া কোথায় গেল আপনার? তার বদলে এ কী?’
কদম্ববাবু কৃপণ বটে, কিন্তু তিনি নিজেও জানেন যে, তিনি কৃপণ। সাধারণ কৃপণেরা টেরই পায় না যে, তারা কৃপণ। তারা ভাবে যা তারা যে করছে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কদম্ববাবু তাদের মতো নন। তাই লোকটার কথায় ভারী লজ্জা পেলেন তিনি। এমনকী তিনি যা শ্যামবাবু নন এ কথাটাও হঠাৎ ভুলে গিয়ে বলে ফেললেন, ‘বর্ষাকাল বলে নাগরা জোড়া পরিনি।’
লোকটা একটু তাচ্ছিল্যের ভাব দেখিয়ে বলল, ‘যার দেড়শো জোড়া জুতো সে আবার সামান্য নাগরার মায়া করবে এটা কি ভাবা যায়? শ্যামবাবু ছেঁড়া জুতো পরে বাবুর বাড়ি আসছেন, এ যে কলির শেষ হয়ে এল!’
কদম্ববাবু এ কথা শুনে সভয়ে আড়চোখে নিজের পোশাকটাও দেখে নিলেন। পরনে মিলের মোটা ধুতি, গায়ে একটা সস্তা ছিটের শার্ট। শ্যামবাবু নিশ্চয়ই এই পোশাক পরেন না। যেন তাঁর মনের কথাটি টের পেয়েই লোকটা হঠাৎ বলে উঠল, ‘না: আজ বোধহয় আপনি ছদ্মবেশ ধারণ করেই এসেছেন, শ্যামবাবু। তা ভালো। বড়লোকদেরও কি আর মাঝে-মাঝে গরিব সাজাতে ইচ্ছে যায় না। নইলে শ্যামবাবুর গায়ে তালি-মারা জামা, পরনে হেঁটে ধুতি হয় কী করে!’
কদম্ববাবু বিগলিত হয়ে হাসলেন। বললেন, ‘ঠিক ধরেছেন বটে।’
হলঘরের পর দরদালান। আহা, দরদালানেরও কি শ্রী! দু-ধারে পাথরের সব মূর্তি, বিশাল-বিশাল অয়েল পেন্টিং, পায়ের নিচে নরম কার্পেট।
এসব জিনিস চর্মচক্ষে বড় একটা দেখেননি কদম্ববাবু। তা শুনেছেন। টাকার কতখানি অপচয় যে এতে হয়েছে তা ভেবে তাঁর মাথা ঘুরতে লাগল।
দু-ধারে সারি-সারি ঘর। দরজায় ব্রোকেড বা ওই জাতীয় জিনিসের পর্দা ঝুলছে। দেয়ালগিরি আর ঝাড়লণ্ঠনের ছড়াছড়ি। এক-একটা ঝাড়ের দাম যদি হাজার টাকা করেও হয় কমপক্ষে।…
না: কদম্ববাবু আর ভাবতে পারলেন না।
লোকটা দরদালানের শেষে একটা চওড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠতে-উঠতে বলল, ‘কর্তাবাবুও আজ আপনাকে দেখে মজা পাবেন। যা একখান ছদ্মবেশ লাগিয়ে এসেছেন আজ!’
কদম্ববাবু হে:-হে: করে অপ্রতিভ হাসি হাসলেন।
সিঁড়ি যে এরকম বাহারি হয় তা কদম্ববাবুর কল্পনাতেও ছিল না। আগাগোড়া পাথরে বাঁধানো কার্পেটে মোড়া এ সিঁড়িতে পা রাখতেই তাঁর লজ্জা করছিল।
দোতলায় উঠে কদম্ববাবু একেবারে বিমূঢ় হয়ে গেলেন। রাজদরবারের মতো বিশাল ঘর রুপোয় একেবারে রূপের হাট খুলে বসে আছে। যেদিকে তাকান সেদিকেই রূপো। রূপোর ফুলদানি, রূপোর ফুলের টব, রূপোর টেবিল, রূপোর চেয়ার, দেয়ালে রূপোর বাঁধানো বড়-বড় ফটো।
কদম্ববাবু চোখ পিটপিট করতে লাগলেন।
লোকটা একটু ফিচকে হেসে বলল, ‘হল কী শ্যামবাবুর অ্যাঁ। এ বাড়ি আপনার অচেনা? রূপোমহলে দাঁড়িয়ে থাকলেই কি চলবে? কর্তাবাবু যে সোনামহল্লায় আপনার জন্য বসে থেকে থেকে হেদিয়ে পড়লেন। আসুন তাড়াতাড়ি।’
‘সোনামহল্লা’ কদম্ববাবুর বেশ ঘাম হতে লাগল শুনে। রুপো মহলেই যে লাখো-লাখো টাকা ছড়িয়ে আছে চারধারে।
কিংখাবের একটা পরদা সরিয়ে লোকটা বলল, যান, ঢুকে পড়ুন।
কদম্ববাবু কাঁপতে-কাঁপতে সোনামহল্লায় ঢুকলেন। কিন্তু ঢুকেই যে কেন মূর্ছা গেলেন না সেটাই অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন তিনি।
সোনামহল্লার সব কিছুই সোনার। এমনকী পায়ের তলার কার্পেটটায় অবধি সোনার সুতোর কাজ। সোনার পায়াওয়ালা টেবিল, সোনার পাতে মোড়া চেয়ার, সোনার ফুলদানি, সোনার ঝাড়লণ্ঠন। এত সোনা যে পৃথিবীতে আছে তা-ই জানা ছিল না কদম্ববাবুর।
তিনি এমন হাঁ হয়ে গেলেন যে, ঘরের মাঝে একটা বিরাট সোনার টেবিলের ওপাশে যে গৌরবর্ণ পুরুষটি একটা সোনায় বাঁধানো আরাম-কেদারায় বসে ছিলেন তাঁকে নজরেই পড়েনি তাঁর।
হঠাৎ একটা গমগমে গলা কানে এল, ‘এই যে শ্যামকান্ত এসো।’
কদম্ববাবু ভীষণ চমকে উঠলেন।
চমকানোর আরও ছিল। কর্তাবাবুর সামনে যে দাবার ছকটি পাতা রয়েছে সেটা যে শুধু সোনা দিয়ে তৈরি তা-ই নয়, প্রত্যেকটি খোপে আবার হিরে, মুক্তো, চুনী আর পান্না বসানো। একধারে সোনার ঘুঁটি, অন্যধারে রুপোর।
প্রত্যেকটি ঘুঁটির মাথায় আবার এক কুচি করে হিরে বসানো।
‘বোসো, বোসো হে শ্যামকান্ত। আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। মনে আছে তো আজ আমাদের বাজি রেখে খেলা। এই হল আমার বাজি।’
এই বলে কর্তাবাবু একটা নীল ভেলভেটে মোড়া বাক্সর ঢাকনা খুলে টেবিলের একপাশে রাখলেন।
কদম্ববাবু দেখলেন, বাক্সের মধ্যে মস্ত একটা মুক্তো। মুক্তো যে এত বড় হয় তা জানা ছিল না তাঁর।
‘তুমি কি বাজি রাখবে শ্যামবাবু?’
কদম্ববাবু আমতা-আমতা করে বললেন, আমি গরিব মানুষ, কী আর বাজি রাখব বলুন।
কর্তাবাবু ঘর কাঁপিয়ে হা:-হা: অট্টহাসি হেসে বললেন, ‘গরিবই বটে। বছরে যার কুড়ি লাখ টাকা আয় সে আবার কেমন গরিব?’
‘আজ্ঞে আপনার তুলনায় আমি আর কী বলুন।’
কর্তাবাবু গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘সে কথাটা সত্যি শ্যামবাবু। আমার মেলা টাকা। এত টাকা যে আজকাল আমার টাকার ওপর ঘেন্না হয়। খুব ঘেন্না হয়।’
‘টাকার ওপর ঘেন্না। কদম্ববাবুর মুখটা হাঁ-হাঁ করে উঠল।’
কর্তাবাবু গম্ভীর গলায় বললেন, ‘আজ সকালে মনটা খারাপ ছিল। কিছুতেই ভালো হচ্ছিল না। কী করলুম জানো? দশ লক্ষ টাকার নোট আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে দিলুম।’
‘অ্যাঁ?’
‘শুধু কি তাই? ছাদে উঠে মোহর ছুঁড়ে কাক তাড়ালুম। তাতে একটু মনটা ভালো হল। তারপর জুড়িগাড়ি করে হাওয়া খেতে বেরিয়ে এক হাজারটা হীরে আর মুক্তো রাস্তায় ছড়িয়ে দিয়ে এলুম।’
কদম্ববাবু দাঁতে দাঁত চেপে কোনওরকমে নিজেকে সামাল দিলেন। ‘লোকটা বলে কী?’
কর্তাবাবু বললেন, ‘এসো, চাল দাও। তুমি কী বাজি রাখবে বললে না?’
কদম্ববাবু মুখটা কাঁচুমাচু করে ভাবতে লাগলেন।
কর্তাবাবু নিজেই বললেন, ‘টাকা-পয়সা হিরে-জহরত তো আমার দরকার নেই। তুমি বরং তোমার পকেটের ওই কলমটা বাজি ধরো।’
‘কলম।’ কদম্ববাবু শিউরে উঠলেন। মাত্র আট আনায় ফুটপাথ থেকে কেনা। তবু কদম্ববাবু উপায়ন্তর না পেয়ে কলমটাই রাখলেন মুক্তোর উলটোদিকে।
‘কিন্তু চাল?’ দাবার যে কিছুই জানেন না কদম্ববাবু।
চোখ বুজে একটা ঘুঁটি এগিয়ে দিলেন কদম্ববাবু।
কর্তাবাবু বললেন, ‘সাবাস!’
কদম্ববাবু চোখ মেলে একটা শ্বাস ছাড়লেন। তারপর বুদ্ধি করে কর্তাবাবুর দেখাদেখি কয়েকটা চাল দিয়ে ফেললেন।
হঠাৎ কর্তাবাবু সবিস্ময়ে বলে উঠলেন, এ কী! তুমি যে কিস্তি দিয়ে বসেছ আমাকে! অ্যাঁ! এ কী কাণ্ড! আমি যে মাত।
তারপরেই কর্তাবাবু হঠাৎ ঘর কাঁপিয়ে হা: হা: হা: হা: করে অট্টহাসি হাসতে লাগলেন। সে এমন হাসি যে, কদম্ববাবুর মাথা ঝিম-ঝিম করতে লাগল। চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলেন। ভয়ে চোখও বুজে ফেললেন।
যখন চোখ মেললেন তখন কদম্ববাবু হাঁ।
কোথায় সোনার ঘর? কোথায় রুপোর ঘর? কোথায় সেই ঝাড়বাতি আর দেয়ালগিরি? কোথায় আসবাবপত্র? এ যে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার ভাঙা সোঁদা একটা পোড়ো বাড়ির মধ্যে বসে আছেন তিনি! চারদিকে চুন-বালি খসে ডাঁই হয়ে আছে। চতুর্দিকে মাকড়সার জাল। ইঁদুর দৌড়চ্ছে।
কদম্ববাবু আতঙ্কে একটা চিৎকার দিলেন। তারপর ছুটতে লাগলেন।
সেই বাড়িরই এমন দশা কে বিশ্বাস করবে? মেঝেয় পাথর সব উঠে গেছে, সিঁড়ি ভেঙে ঝুলে আছে, দরদালানের দেওয়াল ভেঙে পড়েছে।
কদম্ববাবু পড়ি কি মরি করে ধ্বংসস্তূপ পেরিয়ে কোনওরকমে বাইরের দরজায় পৌঁছলেন। দরজাটা অক্ষত আছে। কদম্ববাবু দরজাটার কড়া ধরে হ্যাঁচকা টান মারতে সেটি খুলে গেল।
কদম্ববাবু রাস্তায় নেমে ছুটতে লাগলেন। বৃষ্টি পড়ছে, তাঁর ছাতা নেই, পায়ে জুতোও নেই। ভাঙা পোড়ো বাড়ির মধ্যে কোথায় পড়ে আছে।
কদম্ববাবু হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন। তারপর ভাবতে লাগলেন সত্যিই তো টাকা বাঁচিয়ে হবেটা কী? শেষে তো ওই ভূতের বাড়ি।
বুক ফুলিয়ে কদম্ববাবু একটা দোকানে ঢুকে একটা বাহারি ছাতা কিনে ফেললেন। জুতোর দোকানে ঢুকে কিনলেন নতুন একজোড়া জুতো।
তারপর আবার ভাবতে লাগলেন। শুধু নিজের জন্যে কেনাকাটা করাটা ভালো দেখাচ্ছে না।
তিনি আবার দোকানে ঢুকে গিন্নির জন্য শাড়ি ও ছেলেমেয়েদের জন্য জামা-কাপড়ও কিনে ফেললেন।
মনটা বেশ ভালো হয়ে গেল তাঁর।