কুলের কাঁটা – ১

মোকাম আপনাদের পসন্দ হইয়েসে?—জানতে চায় রামপ্রসাদ। প্রশ্নটা সে করে অবিনাশচন্দ্রকে, যদিও তার দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল অবিনাশের স্ত্রী আরাধনার দিকে। জবাবও দিলেন আরাধনা। বললেন, পাণ্ডাজি, এখান থেকে কুণ্ড যে অনেক দূরে পড়বে। ঐ কুণ্ডের কাছাকাছি কোনো ঘর পাওয়া যায় না?

পাণ্ডা রামপ্রসাদ বলে, এক বাত বল্টু বাবুজি? হমার মোকাম একদম ঐ কুণ্ডের বাগে  

রামপ্রসাদ শর্মা রাজগীরের পাণ্ডা। কুণ্ডের কাছেই তার নিজস্ব দ্বিতল বাড়ি। রামপ্রসাদ রেলে কাজ করত; রিটায়ার করার পরে গ্র্যাচুইটির টাকায় এক যজমানের কাছ থেকে সস্তায় এই বাড়িটা কিনেছে। রেলে কাজ করলেও সে ব্রাহ্মণসন্তান, পূজারীর বংশ। অবসরপ্রাপ্ত জীবনে কৌলিক বৃত্তিতেই ফিরে এসেছে।

আরাধনা জানতে চাইলেন, ওর বাড়িতে কে কে আছে। পাণ্ডাজি তাঁর ভাঙা ভাঙা বাংলায় নামের এক ফিরিস্তি শোনালেন, বুধন, শনিচরী মুংলি আর লছমী। আরাধনা আন্দাজে বুঝলেন, প্রথম তিনজন ওর সন্তান-সন্ততি—নামকরণের সময় পাণ্ডাজি শুধু সপ্তাহের কী বার সেটা খোঁজ নিয়েছিল। তাহলে দলছুট ‘শেষ নামটা ওর ব্রাহ্মণীর।

বাড়িটি দেখে ওঁদের পছন্দ হল। একতলার দক্ষিণপুব খোলা ভাল ঘরটা তিনি ছেড়ে দিলেন যাত্রীদের। দোতলার ঘরটা নিলেই ভাল হত; কিন্তু আরাধনা বাতে পঙ্গু—সিঁড়ি ভাঙার হাঙ্গামাটা এড়াতে চাইলেন।

একটা জিনিস প্রথমেই খটকা লাগল অবিনাশের –ঐ লছমী! ঘোমটায় মুখটা অবশ্য আড়ালে আছে, তবু মনে হয় ওর বয়স বছর পঁচিশ-ছাব্বিশ। পাণ্ডাজি ষাটের কোঠায়। তার মানে দুজনের বয়সের ফারাক প্রায় চল্লিশ বছর। এমনও হয় না কি?

রামপ্রসাদ হাত দুটি জোড় করে বললেন, বাবুজি আপনারা রেলগাড়ির ধকল সয়ে এসেছেন। ই-বেলায় রসুইয়ের ইন্তজাম করবেন না। লছমী আপনাদের খাবার বানিয়ে দেবে। লেকিন এক বাত আছে বাবুজি, হামিলোক মছলি খায় না—

অবিনাশ বাধা দিয়ে বলেন, বিলক্ষণ। সে জন্য কিছু নয় তবে আপনার স্ত্রীকে আবার কেন মিছিমিছি—

এক হাত জিব্ বার করে পাণ্ডাজি বলে, জী নেহি! লছমী হমার বেটি আছে। হমার ঘরওয়ালি ইখানে না আছে। তার বহিনের সাদি আছে, তাই—

ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল অবিনাশের। অবগুণ্ঠনবতী লছমীর দিকে আবার নজর পড়ল। দরজার চৌকাঠ ধরে সে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে।

সেদিন সন্ধ্যায় আরাধনা তাঁর স্বামীকে বললেন, আচ্ছা তুমি ঐ লছমীকে লক্ষ্য করে দেখেছ?

অবিনাশ ধুতির প্রান্ত থেকে চোরকাঁটা তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। মুখ না তুলেই বললেন, মানুষটাকে দেখেছি, মুখখানা নয়। কেন?

—ওর মুখের সঙ্গে আমাদের মিন্টির মুখের অদ্ভুত মিল।

চমকে স্ত্রীর দিকে তাকালেন, অবিনাশ, মিন্টি! মানে মিনতি! কী বকছ পাগলের মতো?

আরাধনা হেলে বললেন, না গো, সে কথা বলছি না। কিন্তু দুজনের মুখের আদল…… অবিনাশ স্ত্রীকে ধমক দেন, কী পাগলের কথা। মিন্টি হারিয়ে গেছে চোদ্দো বছর আগে। তখন তার বয়স ছিল বারো-তেরো—কচি মুখ ছিল তার …

আরাধনা বলেন, সেটুকু বুঝবার মতো বুদ্ধি আমার ঘটেও আছে। ও যে মিন্টি নয় তা আমিও জানি। তবু ওকে দেখেই আমার বুকের মধ্যে ছাঁৎ করে উঠেছিল।

অবিনাশ জবাব দিলেন না। কী যেন গভীর চিন্তায় ডুবে গেছেন তিনি

এক বাড়িতে থাকতে হলে ঘোমটা বেশি দিন চলে না। তাছাড়া অবিনাশ ওর বাপের বয়সি। অচিরে ঘোমটা খুলতে হল। এবার নিজেও স্তম্ভিত হয়ে গেলেন অবিনাশ!

পাণ্ডাজির স্ত্রী বাপের বাড়ি গেছে। ফলে লছমীই এখন গৃহিণী। সে কিছুতেই ওঁদের দুজনকে পৃথক রান্নার আয়োজন করতে দিল না। বলল, দুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছেন, কেন খামকা কষ্ট করবেন। আমাকে তো রান্না করতেই হবে—দুটি চাল হাঁড়িতে বেশি নেওয়া বইতো নয়? খরচপত্রের হিসাব পিতাজির সঙ্গে করবেন’। রান্না আমিই করব।

অগত্যা হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন আরাধনা। এমনিতেই তিনি বাতে পঙ্গু। এ তো অযাচিত স্বর্গ। দিবারাত্র তিনি ডুবে রইলেন কুণ্ডতে।

অবিনাশ ডুবে ছিলেন চিন্তায়। দিন দুই পরে চিন্তার গলাজল থেকে মুখ তুলে পাণ্ডাজিকে বললেন, কিছু মনে করবেন না পাণ্ডাজি, আপনি যে এতদিনেও লছমীর বিবাহ দেননি, এতে সমাজ থেকে আপত্তি ওঠেনি?

পাণ্ডাজি চকিতে অন্দরমহলের দিকে দৃকপাত করে নিচু গলায় তার বিচিত্র ভাষায় বললে, সে এক ভারি দুঃখের কথা বাবুজি। লছমী বিবাহিত; কিন্তু ওর মরদ ওকে নেয়নি। সে এক বিশ্রী কেলেঙ্কারি।

—কেলেঙ্কারি! কীসের কেলেঙ্কারি পাণ্ডাজি?

—সে আপনার শুনে কাজ নেই বাবুজি।

—তাহলে দ্বিতীয়বার মেয়ের বিবাহ দেননি কেন? বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে?

কেমন করে দেব? একবার বিয়ে দিতেই আমি ফতুর হয়েছি। তাছাড়া শনিচরী—

—শনিচরী? আপনার স্ত্রী? তিনি চান না তাঁর কন্যার বিবাহ হয়?

পাণ্ডাজি তার টাকে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, শনিচরী লছমীর বিমাতা। লছমীর মা ফুলেশ্বরী স্বর্গে যাবার পর বুধনের মাকে আমি বিবাহ করেছিলাম। শনিচরী এখন এখানে নেই, তাই বাড়িতে শান্তি আছে, না হলে দেখতেন দুজনের ধুন্ধুমার লেগেই থাকত।

হঠাৎ একটা অদ্ভুত প্রস্তাব পেশ করে বসেন অবিনাশ, দেখুন পাণ্ডাজি, আমাদের সংসারে আমরা মাত্র দুজন—এই বুড়োবুড়ি। ছেলে-মেয়ে আমাদের নেই। অথচ ভগবানের দয়ায় অর্থের অভাব নেই আমাদের। দেখতেই পাচ্ছেন, আমার স্ত্রী বাতে পঙ্গু এখন আমি যদি ফেরার সময় আপনার কন্যাটিকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চাই, আপনি রাজি হবেন?

পাণ্ডাজি অনেকক্ষণ জবাব দিতে পারেন না। শেষে দম নিয়ে বললেন, মাপ করবেন বাবুজি, আমি আপনার প্রস্তাবটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।

—দেখুন, আমি লছমীকে কন্যাত্বে বরণ করতে চাই। সে আমার মেয়ের মর্যাদা নিয়ে আমার সংসারে থাকবে। আমার স্ত্রী পঙ্গু, বুঝতেই পারছেন, আপনার মেয়ের খাওয়া-পরা শখ-আহ্লাদের যাবতীয় দায় আমার, এ কথা বলাই বাহুল্য। যেহেতু তাকে আমি আমার পরিবারভুক্ত বলে মনে করতে চাই, তাই তাকে মাহিনা আমি কিছু দেব না, কিন্তু আমার নিজের বিধবা কন্যা বা পুত্রবধূ থাকলে আমি যা করতাম এ ক্ষেত্রেও আমি তাই করব— ওর নাম পোস্ট অফিসে একটি খাতা খুলে তাতে প্রতি মাসে আমি একশ টাকা করে জমা দিয়ে যাব। লছমী যে-কোনো কারণে যদি কোনোদিন, আমার সংসার ছেড়ে চলে আসতে চায়, তাহলে ঐ টাকাটাই হবে তার নতুন জীবনের মূলধন।

বিস্ময়ে একেবারে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন রামপ্রসাদ। অবিনাশের হাত দুটি ধরে বললেন, রামজির অশেষ কৃপা যে আপনার মতো মানুষ আজও পৃথিবীতে জন্মায়। তবে বাবুজি, লছমী প্রাপ্তবয়স্কা, তার সঙ্গে কথা না বলে আমি আপনার এ প্রস্তাবের জবাব দিতে পারছি না।

সে রাত্রেই আরাধনা স্বামীকে প্রশ্ন করলেন, তোমার মতলবটা কী বলো তো?

—মতলব! মতলব আবার কীসের?

—একশ টাকায় এর চেয়ে ভাল রাঁধুনি কলকাতায় পাওয়া যেত না?

—আহা হা, রাঁধুনি কেন? ওকে তো আমি পুত্রবধূর মর্যাদায়-

— তুমি কি ওর সঙ্গে সুরজিতের বিয়ে দিতে চাও?

সুরজিৎ অবিনাশের শ্যালক। অবিনাশ গম্ভীর হয়ে বলেন, ও যদি লছমী না হয়ে মিনতি হত, তাহলে নিশ্চয় তোমার আপত্তি হত না। তোমার ভাই তাহলে রাজ জামাই হয়ে যেত।

তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকিয়ে আরাধনা বলেন, তাই তো জানতে চাইছি, তোমার মতলবখানা কী?

পরদিন পাণ্ডাজি জানালেন তিনি অবিনাশচন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি। তবে শনিচরী ফিরে আসার আগেই ওঁদের যাত্রা করতে হবে। কারণ শনিচরী জানতে পারলে বাধা দেবে।

অবিনাশ কারণটা জানতে চাওয়ায় পাণ্ডাজি সব কথা অকপটে স্বীকার করলেন। অর্থাৎ যদিচ শনিচরী খুশি হবে লছমী বিদায় হলে, কিন্তু সে কলকাতাবাসী এক বর্ধিষ্ণু পরিবারে কন্যার মর্যাদা নিয়ে একশ টাকা রোজগার সম্বল করে যাচ্ছে এ কথা শুনলে সে ধুন্ধুমার বাধিয়ে দেবে।

সব শুনে অবিনাশ বললেন, বুঝলাম সে-ক্ষেত্রে লছমীর সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য আমাকে জানাতে হবে। কোথায় কবে তার জন্ম হয়েছে, কোথায় বিবাহ হয়েছিল।

বাধা দিয়ে পাণ্ডাজি বলেন, কেন বাবুজি। এতসব খবরে কী প্রয়োজন?

—প্রয়োজন আছে। সম্ভব হলে এবং লছমী রাজি হলে তাকে হয়তো পাত্রস্থ করব। অতঃপর পাণ্ডাজি বিস্তারিত বিবরণ দিলেন। লছমীর জন্ম তারিখ তাঁর মনে নেই, এটা মনে আছে—দিল্লিতে মহাত্মাজি যেদিন নিহত হলেন তার দুদিন পরে। তখন উনি পাটনা জংশনে পোস্টেড। লছমীর জন্ম রেলওয়ে হাসপাতালে। ওর বাল্যকাল কেটেছে পাটনাতেই। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছে। তারপর এগারো-বারো বছর বয়সে তার বিবাহ হয়। ছাপড়া জেলার বিশৌলী গ্রামের সম্পন্ন চাষি মহাবীর প্রসাদ দেওয়ের একমাত্র পুত্রের সঙ্গে। বছর পাঁচেক পরে ‘গহনা’ কবে ওরা লছমীকে নিয়ে যেতে আসে। কিন্তু কি দুর্ভাগ্য লছমীর—সেই রাত্রেই তার পেটে একটা অসহ্য যন্ত্রণা হয়। রেলের ডাক্তারবাবু পরীক্ষা করে তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং অপারেশন করেন। বরযাত্রীরা এটাকে বিশ্রীভাবে নিল। তারা বললে-সঙ্কোচে থেমে গেলেন পাণ্ডাজি।

অবিনাশ বলেন, কিন্তু ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞাসা করলেই তো তাঁরা জানতে পারতেন অসুখটা কী জাতের ছিল।

বিচিত্র হাসলেন পাণ্ডাজি। বললেন, তা পারতেন, কিন্তু তার পূর্বেই তাঁরা লছমীর গহনা পুঁটলিতে বেঁধেছিলেন। আমার মেয়ের নামে কলঙ্ক রটিয়ে সদর্পে গ্রামে ফিরে যাওয়াটাই পছন্দ হল তাঁদের। সে ক্ষেত্রে পুত্রের পুনরায় বিবাহ দিয়ে আর একটি কন্যাদায়গ্রস্তের রক্ত শুষবার সুযোগ পাবেন তাঁরা।

অবিনাশ বলেন, কত তারিখে লছমীর অপারেশন হয়েছিল মনে আছে আপনার? পাণ্ডাজি ঝুঁকে পড়েন, বাবুজি আপনি যাচাই করতে চাইছেন! আপনিও বিশ্বাস করছেন, যে, লছমী ‘মা’ হতে বসেছিল।

দৃঢ়ভাবে মাথা নেড়ে অবিনাশ বললেন না। বিশ্বাস আমি করিনি। তবে হ্যাঁ, যাচাই আমি করতে চাই। আমার জেনে নেওয়া দরকার অসুখটা কী।

—কেন বাবুজি?

—সে আমার কন্যা হতে চলেছে। ভবিষ্যতে কোনো সুপাত্রের সঙ্গে তার বিবাহ দেওয়ার প্রয়োজনে আমাকে সব কথা একদিন বলতে হতে পারে। আমি চাই না এই অজুহাতে লছমীর ভাগ্যে দ্বিতীয়বার কোনো বিড়ম্বনা আসুক।

পাণ্ডাজি মাথা নেড়ে বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন বাবুজি। এ দুনিয়া ভারি পাজি জায়গা। অসুখটা কী তা ডাক্তার সাহেব আমাকে বলেছিলেন কিন্তু সে ইংরেজি নাম আমার স্মরণে নেই। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন। সময়টা মোটামুটি বলতে পারব। তার পরের মাসেই আমি রিটায়ার করি। তার মানে 1963 সালের ফাগুন চৈত।

অবিনাশ বলেন, ওতেই হবে। আমি কালই পাটনা যাচ্ছি। ফিরে এলে কথা হবে।

.

দিন দুই পরে আরাধনা স্বামীকে বললেন, একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করেছ? বুধন, মুংলি এমনকি পাণ্ডাজি পর্যন্ত ভাঙা ভাঙা বাংলা বলে, অথচ লছমীর বাংলা উচ্চারণ পরিষ্কার। বোঝাই যায় না যে ও বিহারী।

অবিনাশ বললেন, তা হোক, তুমি যা ভাবছ তা নয়। লছমী তোমাদের সেই হারানো মিন্টি নয়।

—অমন অদ্ভুত কথা আমি কেন ভাবতে যাব?

—সচেতনভাবে না ভাবলেও কথাটা তোমার অবেচতন মনে আছে। তাই ওর বাংলা উচ্চারণে এতটা আশ্চর্য হয়েছ তুমি। কিন্তু আসলে এটা নিতান্তই কাকতালীয় ঘটনা। আমি নিশ্চিতভাবে জেনে এসেছি। শোনো—

সারাটা দিন ছোটছুটি করছেন উনি। পাটনা রেলওয়ে হাসপাতালে অবশেষে সব সন্দেহের নিরসন হল। ঘটনাচক্রে ওঁর পরিচিত একজন ডাক্তারের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল হাসপাতালে। ডক্টর সতীশ ধর। তাঁর কাকা ছিলেন অবিনাশের সহপাঠী। ডক্টর ধর অবিনাশের অনুরোধে পুরাতন রেজিস্টার ঘেঁটে বার করে দিলেন অকাট্য তথ্য : “2.2.48 তারিখে সকাল সাতটা বারো মিনিটে পাটনা আউটার সিগনালের কেবিনম্যান শ্রীরামপ্রসাদ শর্মার স্ত্রী ফুলেশ্বরী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন—জাতকের ওজন সাত পাউন্ড—প্রসূতির প্রথম কন্যাসন্তান।”

শুধু ঐটুকুই নয়। পরবর্তী সংবাদটাও বিশদ। প্রথম তথ্যে জাতকের নাম ছিল না। জন্মমুহূর্তে কারও নাম থাকে না, তাই শুধু লেখা ছিল ‘ফিমেল চাইল্ড’, এবার নাম পাওয়া গেল।

“25.3.63 তারিখে রাত বারোটার সময় এমার্জেন্সি বিভাগে একটি রোগিণী আসে। নাম লছমী দেবী। বয়স ষোলো। পিতার নাম রামপ্রসাদ শর্মা। পেটে নিদারুণ যন্ত্রণা। রাত তিনটার সময় ডাঃ শঙ্করীপ্রসাদ ত্রিবেদী, সার্জেন রোগিণীর অ্যপেন্ডিক্স কেটে বাদ দেন। 30 মার্চ অ্যাপেন্ডিসাইট্সি-এর রোগিণীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

সমস্ত খবর শুনে আরাধনা বললেন, এত খবর তুমি কেন নিচ্ছ বলো তো? তোমার অবচেতন মনে কী আছে?

অবিনাশ বলেন, সেটা এবার তোমাকে জানাবার সময় হয়েছে। দরজাটা বন্ধ করে দাও।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *