কুমারটুলি বনমালী সরকারের পরিবারবর্গ
সদগোপ জাতীয় আত্তারাম (আত্মারাম) সরকার হুগলী জেলার ভদ্রেশ্বর থেকে এসে কলকাতার কুমারটুলিতে বসবাস করতে থাকেন। বনমালী, রাধাকৃষ্ট এবং হরেকৃষ্ট এই তিন পুত্র রেখে তিনি মারা যান।
বনমালী পার্টনার (কোম্পানির) কমার্শিয়াল রেসিডেন্টের দেওয়ান এবং কিছুকাল অনারেবল ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির কলকাতাস্থ ডেপুটি ট্রেডার ছিলেন। তিনি বিপুল বিত্তের অধিকারী হন; দাতা হিসাবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। কলকাতা, হুগলী ও ২৪ পরগণায় তাঁর সম্পত্তি ছিল। কুমারটুলিতে নির্মিত তাঁর বাসভবনটি ছিল কলকাতার বৃহত্তম অট্টালিকা–কথিত আছে, ১৭৫৬তে কলকাতা অবরোধের বহু পূর্বেই এটি নির্মিত হয়েছিল; বর্তমানে (১৮৮১) এটি জরাজীর্ণ। নিষ্ঠাবান হিন্দু বনমালী শ্রীশ্রীশ্যামসুন্দর ও শিব ঠাকুরের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন, মন্দিরসহ বিগ্রহ দুটি এখনও বর্তমান। বনমালী ও হরেকৃষ্ট নিঃসন্তান ছিলেন। রাধাকৃষ্ট একমাত্র পুত্র কৃষ্টমোহনকে রেখে মারা যান। কৃষ্টমোহন এত অমিতব্যয়ী ছিলেন যে কলকাতায় তাঁর নাম হয়ে গিয়েছিল বড়বাবু। যৌবনেই কৃষ্টমোহনের মৃত্যু হয়; মৃত্যুকালে তিনি তাঁর একমাত্র বিবাহিতা কন্যা আনন্দময়ী দাসীকে রেখে মারা যান। আনন্দময়ীও নিঃসন্তান ছিলেন, তিনি তাঁর সমগ্র পৈতৃক সম্পত্তি বিগ্রহদ্বয়ের নামে উৎসর্গ কনের এবং দেবরপুত্র (বা ভাসুরপুত্র) জনার্দন নিয়োগীকে সেবাইত নিয়োগ করেন। জনার্দনও অপুত্রক ছিলেন; তিনিও উইল দ্বারা তাঁর পোষ্যপুত্র ও জ্যেষ্ঠ জামাতাকে সেবাইত নিয়োগ করে যান।
পরিবারটির এখন আর সে ঐশ্বর্য বা জাঁকজমক নেই।