ঊনচল্লিশ
‘না, আমার কোন ভুল হচ্ছে না,’ আনমনে বলল ডিলান।
‘মেয়েটা আসলে কে?’ জানতে চাইল রানা।
‘আসুন,’ বলল ডিলান, ‘নিজেরাই বরং দেখুন।
সোফা ছেড়ে ফ্রিয়ের চিলার কেবিনেট থেকে বিয়ার নিল ডিলান। বোতলের ক্যাপ খুলে লম্বা চুমুক দিল। প্যাসেজ লক্ষ্য করে রওনা হয়ে বলল, ‘বুক ধড়ফড় করছে, যেন মরেই যাব!’
তার পিছু নিল রানা ও ফক্স। ওরা চলে এল স্পেসশিপের করিডরের মত ধাতব প্যাসেজে। বিশ ফুট দূরে ডানদিকের এক ঘরে ঢুকল ডিলান। ওখানে পা রেখে রানার মনে হলো, ঘরটা যেন নাসার মিশন কন্ট্রোল রুম। ডেস্কে ডেস্কে কমপিউটার। ঘরে ঘাম, বিয়ার ও ভাজা মুরগির বাসি গন্ধ। চারপাশে অসংখ্য বই ও ম্যাগাযিন। বড় এক ডেস্কে শক্তিশালী এক সুপার কমপিউটার। বেঞ্চ টেনে ওটার সামনে বসল ডিলান। মাউস হাতে নিয়ে বলল, ‘এবার দেখা যাক!’
কয়েকবার ক্লিক দিতেই ওয়েবসাইটে এল মেইনস্ট্রিম মিডিয়া নিউয। একটা আর্টিকেল খুঁজছে ডিলান। ‘এই তো, দু’দিন আগের কথা। আপনারা বোধহয় ব্রিটেনের নিউয ফলো করেন না।’
‘আমরা গত ক’দিন ধরে অন্য কাজে ব্যস্ত,’ বলল ফক্স।
ডিলানের পাশে দাঁড়িয়ে খবরটা পড়তে লাগল রানা।
দৈনিক কাগজের হেডলাইনে লেখা:
সড়ক দুর্ঘটনা!
করুণভাবে মৃত্যুবরণ করেছে সাংসদের একমাত্র মেয়ে।
স্ক্রল করে নিচে গেল ডিলান।
স্ক্রিনে বাঁকা হাসির এক মেয়ে। মাথার চুল সোনালি। বয়স হবে বিশ। অবশ্য চাহনিতে রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতার ছাপ।
‘বিংগো!’ বলল ডিলান। ‘পেয়ে গেছি!’
স্ক্রিনের দিকে ঝুঁকে মেয়েটাকে দেখল রানা ও ফক্স। একই কথা ভাবছে ওরা। ভিডিয়োর সেই একই মেয়ে, এতে কোন ভুল নেই।
নিচে মধ্যবয়স্ক দম্পতির ছবি। পেছনে এডওয়ার্ডিয়ান কাউন্টি ম্যানশন। স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছে স্বামী। তার কাঁধে মাথা রেখেছে বেচারি। তৃতীয় ছবিতে বিশাল এক গাছে গুঁতো মেরে মুড়ির টিনের মত তুবড়ে গেছে টু-সিটার এক পোর্শে স্পোর্টস কার।
‘নেলি গান,’ বলল ডিলান। ‘বয়স উনিশ। লেখাপড়া করত সাসেক্স ইউনিভার্সিটিতে। বাড়ি ফেরার পথে প্রচণ্ড বেগে গাড়ি চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। জানা যায়নি ফাঁকা রাস্তায় কেন দুর্ঘটনা ঘটল। কোন সাক্ষী ছিল না। দুর্ঘটনায় মুহূর্তে মৃত্যুবরণ করে।’ ঘুরে রানা ও ফক্সকে দেখল ডিলান। ‘তবে আমরা জানি কীভাবে মারা গেছে সে।’
‘মানুষকে খুন করে আগেও বহুবার দুর্ঘটনা বলে চালানো হয়েছে,’ মন্তব্য করল ফক্স।
‘আটাশ তারিখ বাড়ির কাছে হ্যানবারির সেইণ্ট মেরি দ্য ভার্জিন প্যারিশ চার্চে প্রাইভেট ফিউনেরাল,’ পড়ে শোনাল ডিলান। ‘তার মানে আগামীকাল।’
মাথা দোলাল রানা। মন দিয়ে দেখছে দম্পতির ছবি।
লোকটা বেশ লম্বা। মধ্যবয়স্ক হলেও সুদর্শন।
‘কী নাম এই লোকের?’ জানতে চাইল রানা।
‘সুটেড পশুটার মাথার চুল এখনও শয়তানি করতে করতে পেকে যায়নি,’ বিড়বিড় করল ফক্স।
কমপিউটার স্ক্রিন থেকে মুখ তুলে ওদেরকে দেখল ডিলান। ‘চিনলেন না? ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। নিজের পার্টিতে খুব জনপ্রিয়। আগামী নির্বাচনে হয়তো হবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। নাম ক্রিস্টোফার গান। অনেকে বলে ক্রাইস্ট।’
‘এর সম্পর্কে আরও কিছু জানেন?’ বলল রানা।
‘শুনেছি, স্রেফ কপালের জোরে ক’বার স্ক্যাণ্ডাল থেকে রক্ষা পেয়েছে। তার মেয়ে শেষ করে দিচ্ছিল বাবার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। উঁচু পর্যায়ে বন্ধুবান্ধব আছে বলে বিপদ উৎরে গেছে।
‘কতটা উঁচু পর্যায়ের?’ বলল রানা। ‘এক্ষেত্রে মনে হচ্ছে, ফুরিয়ে গিয়েছিল মেয়েটার ভাগ্য।’
‘হয়তো তারাই কিডন্যাপ করেছে?’ মন্তব্য করল ডিলান ‘শয়তান-পূজায় বলি দেয়ার সময় দরকার হয় সুন্দরী মেয়ে।’
‘কিন্তু নামকরা নেতার মেয়ে কিডন্যাপ হলে দৈনিক পত্রিকার হেডলাইন হতো,’ বলল রানা। ‘মস্ত ঝামেলায় পড়বে কিডন্যাপার। এসব কিন্তু হয়নি। তাই আমার ধারণা, শার্লন হলে বলির অনুষ্ঠানের পর, সবাই যখন তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বাড়ি ফিরছে, তখন লাশের কী হবে, সেটা নিয়ে ভেবেছে কেউ।’
‘ভিডিয়োটা দেখার পর থেকে কেমন যেন টয়লেট পাচ্ছে,’ বিড়বিড় করল ডিলান।
‘গাড়ি-দুর্ঘটনার অন্তত একসপ্তাহ আগে খুন করা হয়েছে, বলল রানা। ‘এতদিন বরফ দিয়ে ঢেকে রেখেছে লাশ। অর্থাৎ, ফাঁকি দিয়েছে পুলিশকে। সেজন্যে চাই লোকবল ও লাখ লাখ পাউণ্ড। অথচ, যে-কোন মেয়ে হলেই যখন চলে, সেক্ষেত্রে নেলি গানকে এত ঝামেলা করে তুলে নেবে কেন কেউ?’
‘হয়তো ওর বাবাকে সতর্ক করতে,’ আন্দাজ করল ফক্স।
‘তাতে কার কী লাভ?’ ওর দিকে তাকাল রানা।
শ্রাগ করল ফক্স। ‘জানি না। হয়তো এর ব্যাখ্যা দিতে পারবে ওর বাপ।’
‘তার সম্পর্কে আরও জানতে হবে,’ ডিলানের দিকে তাকাল রানা। ‘সার্চ করে দেখুন তার ব্যাপারে আরও কিছু পাওয়া যায় কি না।’
‘গাড়ি-দুর্ঘটনার পর থেকেই শুরু করি,’ কমপিউটার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠল ডিলান। ইউটিউবে সার্চ দিল বিবিসি টিভির খবরের জন্যে। একটা ভিডিয়োতে দেখা গেল, অভিজাত একটি ঘরে ফায়ারপ্লেসের সামনে চেয়ারে বসে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে ক্রিস্টোফার গান। কাগজের মত সাদা তার মুখ। চোখে জল। তবে সামলে রেখেছে নিজেকে। ‘দুর্ঘটনার দিন ফোন করেছিল,’ কাঁপা গলায় জানাল সে। বলতে লাগল, কত ভাল মেয়ে ছিল নেলি। সামনে দীর্ঘ জীবন। ক্রিস্টোফার আর তার স্ত্রীর চোখের মণি ছিল সে। ওর মিষ্টি আচরণের জন্যে ওকে ভালবাসত সবাই। এখনও কেউ মানতে পারছে না, হঠাৎ করেই চিরবিদায় নিয়েছে নেলি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে ক্রিস্টোফার গানের স্ত্রী। তবে নিজেকে সামলে নিয়েছে সে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার সবাইকে সাধ্যমত সহায়তা দেবে সে। ইত্যাদি ইত্যাদি…
‘লোকটা ডাহা মিথ্যা বলছে,’ হঠাৎ করেই বলল রানা। ইউটিউব পয করে ওকে দেখল ডিলান। ‘আমারও তা-ই ধারণা। একবারও ক্যামেরার দিকে তাকাচ্ছে না। ‘
‘হয়তো তাকে হুমকি দিয়েছে কেউ?’ বলল ফক্স।
‘মনে হয় না,’ বলল রানা। ‘এখন প্রথম এবং প্রধান প্ৰশ্ন হচ্ছে: কেন বেছে নেয়া হলো তার মেয়েকে?’ ডিলানের দিকে তাকাল ও। ‘কী ধরনের স্ক্যাণ্ডালে জড়িয়ে গিয়েছিল লোকটা?’
‘নানান গুজব শুনেছি,’ বলল ডিলান। ‘নেলির বাবা তো বলছে, ওর চেয়ে লক্ষ্মী মেয়ে হয় না। শান্ত ও সুবোধ। তবে শোনা যায় যৌন কেলেঙ্কারি আর দোকান থেকে মালপত্র চুরিতে জড়িত ছিল মেয়েটা। অবশ্য এখন মরে গেছে বলে তার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করবে না কেউ। সবাই জানে, সারাজীবন মিথ্যার পর মিথ্যা কথা বলে আখের গুছিয়ে নেয় রাজনৈতিক নেতারা। কাজেই ওটা নিয়ে কেউ কিছু মনে করে না।’
বিশ্বাসযোগ্য অন্য কোন তথ্যের উৎস আছে কি না, ভাবছে রানা। কয়েক মুহূর্ত পর বলল, ‘বলুন তো, ঠিক কবে হ্যারিসের বইটা আপনাকে দিয়েছেন এলেনা?’
ওর কথায় বিস্মিত হলো ডিলান। ‘ওদের এজেন্সিতে এসেছে অন্তত তিনসপ্তাহ আগে। ওর গাধা স্বামী মনে করেছিল, ওটার কথা বললে দুশ্চিন্তায় পড়বে এলেনা। আমার কাছে বইটা এসেছে তিনদিন আগে।’
‘অর্থাৎ আপনার কাছে যে পাণ্ডুলিপির অংশ, ওটা এসেছে কমপক্ষে তিনসপ্তাহ আগে।’
‘হ্যাঁ। তবে তাতে কী?’
‘আমরা যখন হ্যারিসের লাশ পেলাম, তার একটু আগেও বই লিখছিল সে। এখন যদি ধরে নিই প্রতিদিন তিনঘণ্টা করে লেখালেখি করেছে, তা হলে তিনসপ্তাহে বইটা প্রায় শেষ হওয়ার কথা। অর্থাৎ এরইমধ্যে হ্যারিস লিখেছে কমপক্ষে আরও কয়েক শ’ পৃষ্ঠা। আর আপনার কাছে আছে পুরনো একটা অংশ।’
মাথা দোলাল ডিলান। ‘তা ঠিক। তবে কয়েক শ’ পৃষ্ঠা পড়েই বা কী লাভ! চরিত্রে তো আরোপ করেছে ছদ্মনাম।’
‘এবার আমার পরের প্রশ্ন: সেক্ষেত্রে এত কষ্ট করে বই লিখে কী লাভ ছিল তার?’ বলল রানা। ‘কারও গায়ে তো খামচি দিতে পারছে না। একই কারণে লাখ লাখ কপি বিক্রি হবে না বইটা। সেক্ষেত্রে এত ঝুঁকি নিল কেন? নিশ্চয়ই ধরে নিয়েছিল, বই বেরোলেও গায়ে আঁচ লাগবে না তার।’
‘ভুল ধারণা ছিল তার,’ বলল ফক্স। ‘জানত না ভাড়া করা হবে দক্ষ খুনি। প্রথম থেকেই চোখে চোখে রাখা হয়েছে তাকে। তারপর বই লেখা প্রায় শেষ হয়ে এলে, তখন খতম করে দিয়েছে।’
‘আমার মনে হয় না সে লিটারারি এজেন্সিতে তার মূল কপি জমা দিয়েছে, বলল রানা। ‘আসলটা ছিল নিজের কাছে। ওটাতে আছে প্রত্যেকের নাম ও পরিচয়। হ্যারিস মূল লেখা কপি করে নাম-ঠিকানা বদলে তারপর পাঠিয়ে দিয়েছে ম্যাণ্ডক আর কার্কের কাছে। তাতে খুব বেশি খাটতেও হয়নি তাকে।’
‘এটা সম্ভব,’ ধীরে ধীরে মাথা দোলাল ডিলান।
‘যেহেতু প্রতিশোধ নিতে চেয়েছে, তাই পরে লিটারারি এজেন্সিতে জমা দিত সবার সত্যিকারের নামসহ বইটা, ‘ বলল রানা। ‘আর সেটা বুঝে গিয়েছিল ম্যাণ্ডক আর কার্ক। সেজন্যেই ভয় পেয়ে বই প্রকাশের ব্যাপারে মানা করে দিয়েছে।’
‘তবে তাতে আমাদের কী লাভ,’ বিরক্ত হয়ে বলল ডিলান।
‘ভুলে গেছেন, হ্যারিসের ল্যাপটপ এখন আমাদের হাতে?’ বলল রানা। ‘পাসওয়ার্ড-প্রটেক্টেড ফাইল খুলতে পারলে সবই জানতে পারব।’ ডিলানের দিকে তাকাল ও। ‘এখন কথা হচ্ছে, আপনি ফাইলটা খুলতে পারবেন কি না।’
‘সহজেই পারব,’ বলল ডিলান। ‘বড় কোন ব্যাপার নয়।’
‘তা হলে দেরি না করে কাজে নেমে পড়ুন,’ বলল রানা। বেঞ্চি ছেড়ে উঠল ডিলান। বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। মিনিট তিনেক পর ফিরল হ্যারিসের ল্যাপটপ হাতে। ওটা রাখল অগোছাল ডেস্কে। মেশিনটা অন করে ওটার পোর্টে দিল নিজের কমপিউটারের ইন্টারফেস কেবল। ডুবে গেল নিজের কাজে। টাইপ করছে ঝড়ের বেগে। মাঝে মাঝে মুচকি মুচকি হাসছে। কিছুক্ষণ পর বলল, ‘সময় লাগবে। ডিক্রিপশন অ্যাপলিকেশন দেখবে মিলিয়ন মিলিয়ন ডিজিট কম্বিনেশন।’
‘তাতে কতক্ষণ লাগতে পারে?’ জানতে চাইল রানা।
‘হয়তো দশ মিনিট,’ বলল ডিলান। ‘পুরনো প্রোগ্রাম। পরে ডেটা কোড রিম্যাপ করব। আপাতত নয়।’ একটু পর তার মেইন স্ক্রিনে ভেসে উঠল ডায়লগ: ‘ওঅর্কিং অন ইট।’
পাসওয়ার্ড কম্বিনেশন খুঁজছে কমপিউটার।
পাশের ডেস্কের চেয়ার টেনে নিয়ে বসল রানা ও ফক্স।
বারো মিনিট পর মৃদু শব্দ এল ডিলানের কমপিউটারের স্পিকার থেকে।
‘পাসওয়ার্ড,’ বলল ডিলান, ‘খুব নোংরা একটা গালি।’
‘বইটা খুলুন,’ বলল রানা।
ল্যাপটপের স্ক্রিনের প্রম্পট্ বক্সে এন্ট্রি কোড দিল ডিলান। ‘নিয়ম জানা থাকলে এসব আসলে খুব সহজ কাজ।’
ল্যাপটপের স্ক্রিনে খুলে গেছে বই-লেখকের শেষবার সেভ করা পৃষ্ঠা। ফাইলের ওপরে লেখা: দ্য হ্যাভোক ক্লাব, বাই জর্জ কানিংহ্যাম আকা স্টিভ হ্যারিস।
চেয়ার ছেড়ে ডিলানের ঘাড়ের কাছে হাজির হলো রানা। পাশেই ফক্স। ম্যাণ্ডক অ্যাণ্ড কার্ক লিটারারি এজেন্সিতে আংশিক বই দেয়ার পর আরও কয়েক শ’ পৃষ্ঠা লিখেছে হ্যারিস।
‘ব্যাটা ছিল ব্যস্ত শয়তান,’ নিচু গলায় বলল ফক্স।
‘চার শ’ পৃষ্ঠার বেশি, বলল ডিলান, ‘পড়তে গেলে কয়েক ঘণ্টা লাগবে।’
‘পরে পড়বেন,’ বলল রানা। ‘স্পেসিফিক কি ফ্রেয ব্যবহার করে গোটা বই সার্চ করতে পারবেন?’
‘আপনিও কি কমপিউটার বিশেষজ্ঞ?’ জানতে চাইল ডিলান। ‘সহজেই পারব।’ ব্যস্ত হয়ে উঠল কিবোর্ডে। কয়েক মুহূর্ত পর বলল, ‘তো দিন এবার সার্চ ওয়ার্ড?’
‘ক্রিস্টোফার গান,’ বলল রানা।
এক সেকেণ্ড পেরোবার আগেই হাজার হাজার অক্ষর থেকে ওই নাম খুঁজে নিল কমপিউটার।
‘পাওয়া গেছে,’ নিচু গলায় বলল ফক্স।
ঊনপঞ্চাশবার লেখা হয়েছে পাণ্ডুলিপিতে লোকটার নাম।
‘এখনই খুশি হবেন না,’ বলল ডিলান। ‘রাজনৈতিক নেতার স্মৃতিচারণা। হয়তো সেজন্যে এতবার এসেছে নামটা।’
‘শয়তানের পক্ষের উকিল হলেন কবে?’ বলল ফক্স।
‘মূল বইয়ে ছদ্মনাম ব্যবহার করেনি,’ বলল রানা।
‘বই লিখেইছে তো একদল বেইমানকে শায়েস্তা করতে,’ মন্তব্য করল ডিলান।
‘এক এক করে ক্রিস্টোফার গানের নাম সার্চ করুন, বলল রানা।
পরবর্তী নামে গেল ডিলান। সেখানে লেখা: ‘ডিসেম্বরের শীতের রাতে প্রচুর কুয়াশা। মুখোশ ও আলখেল্লা পরে আমাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে চলল প্রাইভি কাউন্সিলের সদস্য ক্রিস্টোফার গান।’
সোনার দাঁত খিঁচাল ফক্স। চাপা স্বরে বলল, ‘শালা তো তা হলে এদের সঙ্গে নাক পর্যন্ত ডুবে আছে!’
‘তাতে সন্দেহ নেই,’ বলল রানা, ‘সে তাদেরই একজন।’