বিরল তোমার ভবনখানি পুষ্পকাননমাঝে , হে কল্যাণী নিত্য আছ আপন গৃহকাজে । বাইরে তোমার আম্রশাখে স্নিগ্ধরবে কোকিল ডাকে , ঘরে শিশুর কলধ্বনি আকুল হর্ষভরে । সর্বশেষের গানটি আমার আছে তোমার তরে । প্রভাত আসে তোমার দ্বারে , পূজার সাজি ভরি , সন্ধ্যা আসে সন্ধ্যারতির বরণডালা ধরি । সদা তোমার ঘরের মাঝে নীরব একটি শঙ্খ বাজে , কাঁকন - দুটির মঙ্গলগীত উঠে মধুর স্বরে । সর্বশেষের গানটি আমার আছে তোমার তরে । রূপসীরা তোমার পায়ে রাখে পূজার থালা , বিদুষীরা তোমার গলায় পরায় বরমালা ! ভালে তোমার আছে লেখা পুণ্যধামের রশ্মিরেখা , সুধাস্নিগ্ধ হৃদয়খানি হাসে চোখের ' পরে । সর্বশেষের গানটি আমার আছে তোমার তরে । তোমার নাহি শীত বসন্ত , জরা কি যৌবন— সর্বঋতু সর্বকালে তোমার সিংহাসন । নিবে নাকো প্রদীপ তব , পুষ্প তোমার নিত্য নব , অচলা শ্রী তোমায় ঘে রি চির বিরাজ করে । সর্বশেষের গানটি আমার আছে তোমার তরে । নদীর মতো এসেছিলে গিরিশিখর হতে , নদীর মতো সাগর - পানে চল অবাধ স্রোতে । একটি গৃহে পড়ছে লেখা সেই প্রবাহের গভীর রেখা , দীপ্ত শিরে পুণ্যশীতল তীর্থসলিল ঝরে । সর্বশেষের গানটি আমার আছে তোমার তরে । তোমার শান্তি পান্থজনে ডাকে গৃহের পানে , তোমার প্রীতি ছিন্ন জীবন গেঁথে গেঁথে আনে । আমার কাব্যকুঞ্জবনে কত অধীর সমীরণে কত যে ফুল কত আকুল মুকুল খসে পড়ে— সর্বশেষের শ্রেষ্ঠ যে গান আছে তোমার তরে ।