।। কলিংজর অজমেরপুর আদি বর্ণন।।
।। কলিঞ্জর অজমরপুরাদি বর্ণন।
এই অধ্যায়ে কলিজ্ঞর অজমরপুর এবং দ্বারকা নগরীতে প্রমরচপহানি তথা শুক্রোস্থিতির বর্ণন রয়েছে।
চিত্রকূটগিরেদেশে পরিহারো মহীপতিঃ। কলিংজরপুরং রম্যমক্রোশায়তনং স্মৃতম্।।১।। অধ্যাস্য বৌদ্ধহত্তা সুখিতোভবদুজিতঃ। রাজপুত্রাখ্যদেশে চ চপহানিমহীপতিঃ।। ২।। অজমেরপুরং রম্যং বিধিশো ভাসমন্বিতম্। চাতুর্বর্নযুতং দিব্যমধ্যাস্য সুখিতোহভবৎ।।৩।। শুল্কো নাম মহীপালো গত আনতহমন্ডলে। দ্বারকাং নাম নগরীমধ্যাস্য সুখিতোহভবৎ।।।। তেষামগ্ন্যুদ্ভবানাং চ যে ভূপা রাজ্যসৎকৃতাঃ। তান্মে ব্রৃহি মহাভাগে সূতো বাক্যমথাব্রবীৎ।।৫।।
শ্রীসূতজী বললেন, চিত্রকূট গিরি দেশে পরিহার নামক তাজা ছিলেন। সেখানে কলিজ্ঞরপুর নামক পরম রম্য অক্ৰোশায়তন ছিল।।১।।
সেখানে বৌদ্ধ হননকারী সেই রাজা সেখানে মহাসুখে বাস করছিলেন এবং রাজপুত্র নামক দেশে চপহানি মহীপতি হয়েছিলেন।।২।।
অজমেরপুর অত্যন্ত রমণিক ছিল যা বিধি শোভা দ্বারা পূর্ণ ছিল। সেই পুর চারবর্ণে মুক্ত এবং দিব্য ছিল। তিনি এখানে পরম সুখে বাস করছিলেন। রাজা শুক্ল অনৰ্ত্ত মন্ডলে চলে গেলেন। সেখানে দ্বারকানগরীতে বিনাস করে তিনি পরমসুখী ছিলেন।।৩-৪।।
গচ্ছধ্বং ব্রাহ্মণা সর্বে যোগনিদ্রাবশো হ্যহম্। তচ্ছু ত্বা মুনয়ঃ সর্বে বিষ্ণোর্ধ্যানং প্রচক্রিরে।।৬।। পূনেদ্বে চ সহস্রান্তে সূতো বচনমব্রবীৎ। সপ্তত্রিংশশতে বর্ষে দশাদ্বে চাধিকে কলৌ।।৭।। প্রমরো নাম ভূপাল কৃতং রাজ্যং চ ষট্সমাঃ। মহামদস্ততো জাত পিতুরধং কৃতং পদম্।।৮।। দেবাপিস্তনয়স্তস্য পিতুস্তল্যং কৃতং পদম্। দেবদূতস্তস্য সুতঃ পিতুস্তল্যং স্মৃতঃ পদম্।।৯।। তস্মাদগন্ধবসেনশ্চ পঞ্চশদদ্বভূ পদম্। কৃত্বা চ স্বসুতং শংখমভিষিচ্য বনং গতঃ।।১০।। শঙ্খেন তৎপদং প্রাপ্তং রাজ্যং ত্রিংশৎসমা কৃতম্। দেবাঙ্গনা বীরমতী শক্রেন প্রেষিতা তদা।। ১১।। গন্ধর্বসেনং সংপ্রপ্য পুত্ররত্নমজীজনেৎ। সুতস্য জন্মকালে তু নভস পুষ্পবৃষ্টয়ঃ।।১২।
শৌনক বললেন, অগ্নি থেকে সম্ভূত যে রাজা রাজ্য সংকৃত ছিলেন আপনি তার বিষয়ে বলুন। সূতজী বললেন, হে ব্রাহ্মণগণ আপনারা এখন চলে যান, আমি যোগনিদ্রা বশীভূত হয়ে গেছি। একথা শ্রবণ করে সমস্ত মুণিগণ ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করতে লাগলেন।।৫-৬।।
দুই সহস্র বৎসর পূর্ণ হলে সূতজী বললেন, সাঁইত্রিশ শত দশবর্ষ কলিযুগ অতিক্রম করলেও প্রমর নামক রাজা ছয়বৎসর রাজত্ব করেছিলেন।।৭।।
এই সময়ে তাঁর মহামহ নামক পুত্র উৎপন্ন হয়। তিনি নিজ কিতার রাজত্বকালের অর্ধভাগ সময় রাজত্ব করেছিলেন।।৮।।
তাঁর পুত্র দেবাপি পিতৃতুল্য রাজত্ব করেন। তাঁরপুত্র গন্ধর্বসেন পঞ্চাশ বৎসর রাজত্ব করেন। এরপর তিনি নিজ নিজ পুত্র শংখকে রাজ্যসনে অভিষিক্ত করে বনে প্রস্থান।।৯-১০।।
পেতুদুদুময়ো নেদুবাতি বাতা সুখপ্রদা। শিবদৃষ্টিদ্বিজো নাম শিষ্যৈ সার্দ্ধং বনং গতঃ।।১৩।। বিংশদ্ভিঃ কর্মযোগং চ সমারাধ্য শিবোহভবৎ। পূর্ণেত্রিংশচ্ছতে বর্ষে কলৌ প্রাপ্ত ভয়ঙ্করে।।১৪।। শকানাং চ বিনাশার্থমাযধর্মবিবৃদ্ধয়ে। জাতশিশবাজ্ঞয়া সোহপি কৈলাসাদগুহ্যকালয়া।।১৫।। বিক্রমাদিত্যনামানং পিতা কৃত্বা মুমোদ হ। স বালোহপি মহাপ্রাজ্ঞ পিতৃমাতৃপ্রিয়ঙ্করঃ।।১৬।।
রাজা শংখ ত্রিশ বৎসর রাজত্ব করেন। সেই সময় বীরমতী নামক এক দেবাঙ্গনা দেবরাজ ইন্দ্রের দ্বারা প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনি গন্ধর্বসেনের সংগে বাসকরে একপুত্র রত্নের জন্ম দিয়েছিলেন। পুত্রের জন্মের সময় আকাশ থেকে পুষ্প বৃষ্টি হয়েছিল। দুন্দভি বেজে উঠেছিল এবং পরমসুখদায়ক বায়ু প্রবাহিত হয়েছিল।।১১-১৩।।
তিনি বিংশ বৎসর পর্যন্ত সাধন করেছিলেন এবং শিব স্বরূপ ধারণ করেছিলেন। এই সময় তিনশত বৎসর ভয়ংকর কলিযুগপ্রাপ্ত হয়েছিল।।১৪।।
শক বংশের বিনাশার্থে এবং আর্যধর্ম বৃদ্ধির জন্য তিনি গুহ্যকালয় কৈলাশ থেকে ভগবান শিবের আজ্ঞা প্রাপ্ত করেই তিনি সমুৎপন্ন হয়েছিলেন। তাঁর পিতা তাঁর নাম বিক্রমাদিত্য রেখেছিলেন এবং তাঁর মনে আনন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি বাল্যাবস্থা থেকেই মহা বুদ্ধিমান্ পন্ডিত ছিলন এবং মাতা পিতার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন।।১৫।।
যখন তার আয়ু পাঁচ বৎসর ছিল, তখন তিনি তপস্যার জন্য বনে চলে যান। সেখানে বিক্রমাদিত্য বার বৎসর পর্যন্ত অত্যন্ত প্রযত্নের সঙ্গে তপস্যা করেছিলেন।।১৬।।
পঞ্চবর্ষে বয় প্রাপ্ত তপসোহথে বনং গতঃ। দ্বাদশাদ্বং প্রযত্নেন বিক্রমেন কৃতং তপঃ।।১৭।। পশ্চাদম্বাবতীং দিব্যাং পুরীং যাতে শ্রিয়ান্বিতঃ। দিব্যং সিংহাসনং রম্যং দ্বাত্রিংশতিসং যুতম্।।১৮।। শিবেন প্রেষিতং তস্মৈ সোপি তৎপদমগ্রহী। বৈতালস্তস্য রক্ষার্থং পার্বত্যা নির্মিতো গতঃ।।১৯।। একদ স নৃপো বীরো মহাকালেশ্বরস্থলম্। গত্বা সম্পুজয়ামাস দেবদেবং পিনাকিনম্।।২০।। সভা ধর্মময়ী তত্র নির্মিতা ব্যূহবিস্তরা। নানাধাতুকৃতস্তম্ভা নানামণিবিভূষিতা।।২১।। নানাদ্রুমলতাকীর্না পুষ্পবল্লীভিরন্বিতা।। তএ সিংহাসনং দিব্যংস্থাপিতং তেন শৌনক।।২২।। আহুয় ব্রাহ্মণান্মুখ্যান্বেদবেদাঙ্গপারগান। পূজয়িত্বা বিধানেন ধর্মগাথাহশুনোৎ।।২৩।।
এরপর তিনি শ্রীলাভ করে দিব্য অম্বাবতী পুরীতে চলে যান। এক পরম সুন্দর এবং বত্রিশ মূর্তিযুক্ত সিংহাসন ভগবান শিবজী তার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তাঁর রক্ষার জন্য পার্বতী বেতালকে নিযুক্ত করেছিলেন।।১৭-১৯।।
একবার সেই পরমবীর রাজা মহাকালেশ্বরের কাছে গিয়ে দেবাদিদেব মহাদেবকে পূজন করেছিলেন। সেখানে ব্যুহ বিস্তৃত পরম ধর্মময়ী সভা নিৰ্মাণ করেছিলেন, যেখানে অনেক ধাতু নির্মিত স্তম্ভ ছিল। সেই সভা বিভিন্ন মন্ত্রীদের দ্বারা বিভূষিত ছিল।।২০-২১।।
সেই সভা অনেক প্রকার বৃক্ষের সমাকীর্ণ ছিল এবং বিভিন্ন পুষ্পের দ্বারা সমন্বিত ছিল। হে শৌনক, সেখানে দিব্য সিংহাসন তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বেদ এবং বেদাংগ শাস্ত্রের মহা মনীষিগণ এবং পারঙ্গত পন্ডিত মুখ্য ব্রাহ্মণদের সেখানে সমাহ্বান করে তার পূজা করে বিধি বিধান দ্বারা ধর্ম এবং গাথা তিনি শ্রবণ করেছিলেন।।২২-২৩।।
এতস্মিনন্তরে তত্র বৈতালো নাম দেবতা। স কৃত্বা ব্রাহ্মণং জয়োশীভিঃ প্রশস্ত তম।।২৪।। উপবিশ্যাসনে বিপ্রোরজনমিদনব্রবীৎ। যদি তে শ্রবণে শ্রদ্ধা বিক্রমাদিত্যভূপতে।।২৫।। বর্ণয়ামি মহাখ্যানমিতি হাসসমুচ্চয়ম।।২৬।।
এর মধ্যে যেখানে বেতাল নামক দেবতা ব্রাহ্মণের রূপ ধারণ করে জয়রূপ আশীর্বাদের দ্বারা তার প্রশংসা করেছিল। সেই বিপ্র আসনে স্থিত হয়ে রাজাকে বলেছিলেন, হে বিক্রমাদিত্য নৃপ, যদি আপনি শ্রদ্ধার সংগে শ্রবণ করেন, তাহলে আমি এক ইতিহাসের সমুচ্চয় স্বরূপ এক আখ্যানের বর্ণনা দেবো।।২৪-২৬।।