কয়েকটি প্রশ্ন
নানা জায়গায় এই প্রশ্নগুলি পেয়েছি। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। পাঠক-পাঠিকাদের জন্য শুধু প্রশ্নগুলিই পেশ করছি।
প্রথমে একটি বিলিতি প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি।
সেই এক মার্কিন মেমসাহেব। মেম বৃদ্ধা এবং ধনবতী। তিনি বছর দশেক হল বিধবা হয়েছেন, ছেলেপিলেও কিছু নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে স্বামীর এবং শ্বশুরালয়ের অঢেল ধনসম্পত্তি পেয়েছেন।
স্বামীর পরলোকগমনের পর থেকে ভদ্রমহিলার বাতিক দেখা দিয়েছে দেশ-ভ্রমণের। বছর বছর সারা পৃথিবী চষে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু নিয়মিত আয় না থাকলে, ধনসম্পত্তিতে টান পড়ে যায়। এই মহিলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যদিও এখনও বেশ ধনী, আগের মতো সচ্ছলতা আর নেই। তা ছাড়া ওদেশে সঞ্চিত অর্থের ওপরে সুদের হার অত্যন্ত কম, আমাদের দেশের প্রায় অর্ধেক।
আন্তর্জাতিক বিমান কোম্পানিগুলি ‘রাউন্ড দি ওয়ার্ল্ড’, টিকিট বেচে। গোলাকার পৃথিবীর এক দিক দিয়ে যাত্রা শুরু করে, প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ হয়ে অবশেষে আতলান্তিক অতিক্রম করে আবার ইউরোপ থেকে আমেরিকায় প্রত্যাবর্তন।
মেমসাহেব বছর বছর বেড়াতে বেরোন। এ বছর জাপান, এ বছর চিন। এবার হংকং, ওবার সিঙ্গাপুর বা লন্ডন বা প্যারিস, আবার আমেরিকায় ফিরে আসা।
বছর বছর ‘রাউন্ড দি ওয়ার্ল্ড’ টিকিটের দাম বেড়েই চলেছে। ভদ্রমহিলা এবার বিমান কোম্পানির অফিসে স্বয়ং উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনারাই না বিজ্ঞাপন দেন পৃথিবী ক্রমশ ছোট হয়ে থাকছে?’
কোনও কোম্পানি এ রকম খদ্দেরকে চটাতে চায় না। মুখপাত্র জবাব দিলেন, ‘আজ্ঞে, ঠিক তাই।’ এবার বুড়ি মেম গর্জে উঠে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তা হলে ফি-বছর পৃথিবী ঘোরার টিকিটের দাম বাড়াচ্ছ কেন?’
এরপরে আর একটা অন্যরকম প্রশ্ন।
মহেশচন্দ্র সকালবেলায় কাগজে তাঁর নিজের মৃত্যু সংবাদ পড়ে স্তম্ভিত হয়ে বন্ধু রমেশচন্দ্রকে ফোন করলেন, ‘তুমি আজকের কাগজে আমার মৃত্যু সংবাদ পড়েছ, রমেশ?’
রমেশচন্দ্র বললেন, ‘হ্যাঁ, সংবাদটা পড়ে খুবই দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু তুমি এখন কোথা থেকে ফোন করছ?’
অতঃপর আর একটি জীবন-মরণের প্রশ্ন।
গৃহিণী একদিন তাঁর পতিদেবতাকে বললেন, ‘ওগো বাজারে আনারস পাওয়া যায় না?’
পতিদেবতা বললেন, ‘চেষ্টা করলে পাওয়া যাবে। কিন্তু কেন?’ তিনি ভেবে দেখবার চেষ্টা করলেন তাঁর ঘরনি কবে আনারস সম্পর্কে এত উৎসাহী ছিলেন।
বেশিক্ষণ ভাবতে হল না, সহধর্মিণী বললেন, ‘দেখ, কাল আমার মা আসছেন।’
গৃহলক্ষ্মীর মা, শাশুড়ি ঠাকুরানি সম্পর্কে কোনও খারাপ কথা ভাবতে কিংবা বলতে চান না গৃহস্বামী। কিন্তু এই সংসারে উক্ত প্রবীণা মহিলার প্রাক্তন উপস্থিতিগুলি সত্যি খুব সখের হয়নি। বহুবার তিনি দাম্পত্য কলহের কারণ হয়েছেন।
পতিদেবতা শঙ্কিত হলেন, ‘তোমার মা আসছেন?’
গৃহিণী বললেন, ‘সেইজন্যেই তো তোমাকে একটা আনারস আনতে বলেছি। মা যে কী ভালবাসে না আনারস। একটা আনারসের জন্য মা অর্ধেক প্রাণ দিতে পারে।’
কথাটা শুনে, সঙ্গে সঙ্গে পতিদেবতা প্রশ্ন করলেন, ‘তাই যদি হয়, দুটো আনারসই না হয় নিয়ে আসি তোমার মার জন্যে?’
গঙ্গারামের প্রশ্ন
গঙ্গারাম একবার একটি মেয়ের পাণিপ্রার্থী হয়েছিল। মেয়েটি রূপসী বা বিদুষী নয় কিন্তু খুবই বড়লোকের মেয়ে। মেয়েটির নাম করুণা। সেই ধনী ব্যক্তির কাছে গিয়ে গঙ্গারাম বিয়ের প্রস্তাব দিল। ভদ্রলোকের তিন মেয়ে। অরুণা, বরুণা, করুণা। ভদ্রলোককে যখন গঙ্গারাম বলল, ‘আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই।’ ভদ্রলোক বললেন, ‘দেখ, তুমি আমার কোন মেয়েকে বিয়ে করতে চাও জানি না। ছোটটি করুণা, তার বয়স তিরিশ বছর। তুমি যদি তাকে বিয়ে করো তোমাকে এক লক্ষ যৌতুক দেব। মেজোটি বরুণা, তার বয়স পঁয়তিরিশ, তাকে বিয়ে করলে দু’ লক্ষ টাকা যৌতুক দেব। এর ওপর আছে অরুণা, চল্লিশ-বেয়াল্লিশ হবে, তাকে যদি বিয়ে কর পাঁচ লক্ষ টাকা পাবে।’
কিছুক্ষণ চিন্তা করে, তারপর গঙ্গারাম প্রশ্ন করল, ‘স্যার, ওই অরুণার চেয়ে বড় আর কোনও মেয়ে নেই আপনার?’