কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ – ১৭ (শেষ)

কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ – ১৭ (শেষ)

এক নারী, ঘন নিবিড়, তার সাথে দেখা করতে আসে, বলে, আপনাকে দেখতে চ’লে এলাম, আপনার কবিতা এতো ভালো লাগে, আমার প্রিয় কবি আপনি।

হাসান তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অ্যাড সংশোধন করতে থাকে।

নারী বলে, আমার দিকে আপনার তাকাতে ইচ্ছে করছে না?

হাসান বলে, না।

নারী বলে, আমি কি এতোই অসুন্দর?

হাসান বলে, আসার কোনো দরকার ছিলো না।

নারী স্তম্ভিত হয়ে বলে, শুনেছি কবিরা অনুরাগিণী পছন্দ করেন, রবীন্দ্রনাথ করতেন।

হাসান বলে, আমি করি না।

নারী বলে, আপনি বেশ অভদ্ৰ মনে হচ্ছে।

হাসান বলে, বেশ নয়, অতিশয়; আমার কবিতাও অভদ্র।

নারী বলে, আমি আপনার কবিতায় মুগ্ধ, আপনার অনুরাগিণী; আপনার কবিতা আপনার মতো অভদ্র নয়।

হাসান বলে, আপনি সম্ভবত কামঅতৃপ্ত।

নারী চমকে ওঠে, বলে, আপনি কী ক’রে বুঝলেন?

হাসান বলে, অনুরাগ জন্মে কামঅতৃপ্তি থেকে।

নারী বলে, হ্যাঁ, আমি অতৃপ্ত।

হাসান বলে, আমি পরিতৃপ্ত করতে পারবো না, দয়া ক’রে আপনি যান।

নারী বলে, আপনাকে দেহ দিতে আমি প্রস্তুত হয়ে এসেছিলাম, কিন্তু এখন আমি শুয়োরকেও দেহ দিতে পারি, আপনাকে না।

হাসান বলে, আমি শুয়োরেরও অধম।

ঘরে ফিরে এসে হাসান সারারাত ক্ষমা চাইতে থাকে ঘন নিবিড় নারীর কাছে; তার প্রতিটি অঙ্গের কাছে। আমাকে ক্ষমা ক’রে দাও নারী, ক্ষমা চাই আমি; তোমার যে স্তন আছে, ঠোঁট আছে, আছে এক অবর্ণনীয় স্বর্ণখনি, তাই ক্রুদ্ধ করেছে আমাকে; ওসব অপূর্ব হীরকখণ্ড আমার জন্যে নয়। স্তন, আমাকে ক্ষমা কোরো; ঠোঁট, আমাকে ক্ষমা কোরো; সোনার খনি, ক্ষমা কোরো আমাকে। কিন্তু এখনো নারী আছে কেনো? আমি চাই নারী না থাকুক পৃথিবীতে। আমাকে তুমি ক্ষমা কোরো, নারী, আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই;– শুয়োরও তোমাকে সুখী করতে পারে; আমি, কবি, পারি না।

দু-তিনটি পুরস্কার পেয়েছে এর মাঝে হাসান, পথে পথে আজকাল পুরস্কার ছড়িয়ে পড়ছে, না চাইলেও পাখির মলের মতো মাথায় জামায় এসে পড়ে। না, না, না, ক’রে ক্লান্ত হয়ে শেষে সে একটি নিতে সম্মত হয়, এবং পুরস্কার নিতে যায়।

তার ভাষণে সে বলে, এসব পুরস্কার নিরর্থক, গৌণ কবিদেরই পুরস্কার প্রাপ্য, তাদের পুরস্কার দরকার, এসব পুরস্কার সারাক্ষণ বলে তুমি যে কবিতা লিখতে ব্যর্থ হয়েছে তার সান্ত্বনা হিশেবে পাচ্ছো পুরস্কার। তোমার কবিতা হয় নি, পুরস্কারও যদি না পাও, তাহলে তুমি বাঁচবে কী নিয়ে? আজ পুরস্কার নিয়ে বুঝতে পারছি আজো আমি গৌণ কবিই রয়ে গেছি।

চারদিকে একটা হাহাকার ওঠে, সে শুনতে পায়।

প্রশ্নোত্তরপর্বে একজন জিজ্ঞেস করে, আপনি কবি কামর আবদিনের মতো জনগণের কথা বলেন না কেনো?

হাসান বলে, ভেতরে কবিতা না থাকলে জনগণের কথাই বেশি বলতে হয়, জনগণ সাধারণত নির্বোধ, রাজনীতিবিদেরা তাদের প্রতারণা করে, এ-কবিরাও প্রতারণা করে তাদের; জনগণের কথা বলা কবিতা নয়, কবিতা হচ্ছে কবিতা।

আরেকজন প্রশ্ন করে, আপনি কি মানুষকে ভালোবাসেন?

হাসান দ্বিধাহীনভাবে বলে, না।

সে জিজ্ঞেস করে, ঘৃণা করেন?

হাসান দ্বিধাহীনভাবে বলে, হ্যাঁ।

আরেকজন জিজ্ঞেস করে, আপনি নারী ভালোবাসেন?

হাসান দ্বিধাহীনভাবে বলে, না।

একজন প্রশ্ন করে, তাহলে আপনি কবিতা লেখেন কেনো?

হাসান বলে, নিরর্থকতাকে তাৎপর্যপূর্ণ করার এটা আমার ব্যর্থ চেষ্টা।

একজন প্রশ্ন করে, মনে হচ্ছে আপনি রেগে আছেন, কিন্তু আপনার কবিতা তো এমন রাগের কবিতা নয়, তা তো গভীর যন্ত্রণার।

হাসান চুপ ক’রে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে–দীর্ঘ সময় ধ’রে, নিস্তব্ধ হয়ে ওঠে চারদিক, তার মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত প্ৰান্ত থেকে মাটির ভেতর দিয়ে প্রবল রোদনের স্রোত বয়ে আসছে, ঢুকছে তার ভেতরে; তার চিৎকার ক’রে কেঁদে উঠতে ইচ্ছে করে।

সে শুধু বলে, আমি আর কথা বলতে চাই না, আমার কোনো কথা নেই।

হাসান মাইক্রোফোন থেকে আর তার আসনে ফিরে যায় না।

সে মঞ্চ থেকে নামে, চারদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, তাকে ঘিরে অনুরাগীরা দাঁড়ানোর চেষ্টা করে, স্বাক্ষরের জন্যে খাতা বাড়িয়ে ধরে; সে এই সব পেরিয়ে রাস্তায় এসে পৌঁছে, অন্যমনস্কভাবে হাঁটতে থাকে।

রাতে ঘরে ফিরে এসে হাসান মেঝের ওপর স্তব্ধ হয়ে বসে। হাসান, নিজের সাথে কথা বলতে থাকে সে, তুমি কেনো এতো ঘৃণা করছে নিজেকে, এবং ঘৃণায় ঢেকে ফেলছো। গাছপালা মেঘ সমুদ্র মাটি শিশির পাখি পুষ্প মানুষ? শুধু সম্পর্ক পাতাতে পারছো না ব’লে, শুধু তোমার শরীরটিকে ব্যবহার ক’রে সুখ সৃষ্টি করতে পারছে না ব’লে? হ্যাঁ, তাই, হ্যাঁ, তাই; মানুষ আমাকে ছিন্ন করেছে, প্রকৃতি যদি অন্ধ বধির ; বিকলাঙ্গ বৃক্কহীন ভগ্নহৃৎপিণ্ড অপুরুষ করতো আমাকে মেনে নিতাম; কিন্তু মানুষ, হিংস্র৷ মানুষ আমাকে ছিন্ন করেছে, ভয়াবহ মানুষ ছিন্ন করেছে আমাকে মানুষের সাথে সম্পর্ক থেকেই, তাকে ঘৃণা ক’রে যেতে হবে। ঘৃণা ক’রে যেতে হবে। প্রেমে নয়, ঘৃণায়ই বেঁচে থাকতে হবে; সুখে নয়। বাঁচতে হবে অনন্ত যন্ত্রণায়। শিল্পকলা আর সুখ নয়। আমার জন্যে, শিল্পকলা এক অপার যন্ত্রণা, কিন্তু তাকে নিয়ে আমি বঁচবো। শিল্পকলা যার দয়িতা, সে কবে সুখ পেয়েছে? আমিও পাবো না; কিন্তু থাকতে হবে সৃষ্টিশীল। হাসান তার ছিন্ন শিশ্নমূলের দিকে তাকায়, হো হো হাসে, বলে, আমি ভেবেছিলাম তুমিই শিল্পের সম্রাট, তোমার থেকেই উৎসারিত হয় কবিতা; কিন্তু তোমাকে ছাড়াও আমি লিখছি কবিতা। হো হো হো, প্রিয়, তোমাকে ছাড়াই যদি পারি, তাহলে কেনো পারবো না ওই হিংস্র মানুষ ছাড়া?

কয়েক সপ্তাহ ধ’রে খুবই যন্ত্রণা দিচ্ছে বালিকাটি।

প্রথম দিনই হাসান বালিকাটিকে বলেছে, তুমি আর এসো না।

আঠারো বছরের ওই তীব্র সৌন্দর্য বলেছে, আমি আসবো।

হাসান বলেছে, জানো, আমার বয়স পঁয়তাল্লিশ? তোমার পিতার সমান।

বালিকা বলেছে, কবিদের কোনো বয়স নেই।

হাসান বলেছে, আমি কবিগুরু নই যে আমার বয়স নেই, আমার বয়স আছে। তুমি আসবে না, তোমাকে আমি পছন্দ করি না।

সৌন্দর্য বলেছে, আমি আসবো, আপনাকে আমি পছন্দ করি।

বালিকা আসছে, দিনের পর দিন, হাসান তাকে তাড়িয়ে দিতে পারছে না। আমি কি সত্যিই চাই বালিকা না আসুক? তাহলে আমি ওকে বাসার টেলিফোন নম্বরটিও কেনো দিলাম? যদি সত্যিই ওকে এড়াতে চাই, ও এলে ধমক দিয়ে কেনো বিদায় করি না, এটা তো আমি পারি, অভদ্র তো আমি হ’তে পারি অবলীলায়, কিন্তু কেনো পারি না; আর বাসায় ফিরে কেনো টেলিফোনের অসহ্য অমৃত ঝংকারের জন্যে ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত নিশ্বাসার্ত হয়ে থাকি? ওকে দেখলে কি ভেতরে কোনো গভীর স্মৃতি যন্ত্রণা হয়ে দেখা দেয়, ওর মুখে কি দেখতে পাই আমি অন্য কোনো মুখ? ওরা ওই বস্ত্রের ভেতরে কি আছে আমার চেনা এক অনির্বচনীয় অবিনশ্বর শরীর? কিন্তু না, ওকে বিদায় ক’রে দিতেই হবে; ওকে দেখে আমি সুখ পেতে চাই না।

বিকেলে অফিসে আসে ইয়াসমিন; দিগদিগন্তে, পশুকবলিত বাঙলার আকাশে আকাশে রঙ আলো সোনালি মেঘ ছড়িয়ে পড়ে।

হাসান শুরুতেই বলে, তোমাকে বলেছি তুমি আসবে না।

ইয়াসমিন বলে, সে তো পুরোনো কথা, নতুন কিছু বলুন।

হাসান বলে, তুমি জানো না কি ভয়ঙ্কর বিপদ তোমার জন্যে অপেক্ষা ক’রে আছে, তুমি জানো না বালিকা।

ইয়াসমিন বলে, আত্মহত্যা করতে হবে আমাকে?

হাসান বলে, তার থেকেও ভয়াবহ।

ইয়াসমিন বলে, সেটা হবে খুব সুন্দর।

হাসান বলে, সুন্দর দেখে দেখে তুমি অসুন্দর কাকে বলে জানো না।

ইয়াসমিন বলে, আপনার সাথে আমার কোনো নদীর পারে বেড়াতে যেতে ইচ্ছে করে।

হাসান বলে, আমি নদী চিনি না।

ইয়াসমিন বলে, তাহলে চলুন আমি চিনিয়ে দেবো।

হাসান বলে, নদী আমি চিনতে চাই না।

ইয়াসমিন তার একগুচ্ছ সোনার আঙুল হাসানের দিকে বাড়িয়ে বলে, এগুলো একবার ছুঁয়ে দেখবেন? দেখুন তো এগুলো নদী কি না?

সোনার আঙুল ছোঁয়ার সুখ তার জন্যে নয়, তার জন্যে তীব্ৰ বিষ; হাসান উঠে টয়লেটে গিয়ে বসে থাকে, কমোডের ভেতরে তার লাফিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে।

বেরিয়ে বলে, তুমি যাও, তুমি আর আসবে না।

ইয়াসমিন আবার সোনার ঝিলিকগুলো তার দিকে ছড়িয়ে দেয়, বলে, ছুঁয়ে দেখুন, নদী ছুঁইয়ে দেখুন।

হাসান বলে, নদী আমার জন্যে নয়। তুমি যাও।

কিন্তু ইয়াসমিন আসে, এবং টেলিফোন করে; হাসান সুখ পায়, এবং গভীরতম নিঠুরতম যন্ত্রণা বোধ করে; না এলে বোধ করে অতল শূন্যতা, এলে তার ভেতর দাঁত বসায় যন্ত্রণা; টেলিফোন করলে নেকড়ে তার হৃৎপিণ্ড কামড়ে ছিঁড়ে নেয়, না করলে শূন্যতার শীতল তুষারপাতে সে লুপ্ত হয়ে যায়।

কিন্তু না; বিদায় ক’রে দিতে হবে ইয়াসমিনকে।

সেদিন সে বাসায় ফেরে। অনেক রাতে; ফিরেই শোনে টেলিফোন বাজছে। না, না, ধরবো না, হাসান কিছুক্ষণ ব’সে থাকে; তারপর ধরে।

ইয়াসমিন বলে, পৃথিবীর সব কাজ শেষ ক’রে অবশেষে ফিরলেন?

হাসান বলে, ফেরার ইচ্ছে ছিলো না।

ইয়াসমিন বলে, জানতেন আমি ফোন করবো, তবু দেরিতে ফিরলেন কেনো?

হাসান বলে, আমি কোনো শেকলে বাঁধা নই।

ইয়াসমিন বলে, আপনি এক গভীর অন্ধকার গর্তে প’ড়ে আছেন।

হাসান বলে, হ্যাঁ।

ইয়াসমিন বলে, আপনাকে আমি উদ্ধার করবো।

হাসান ব’লে ফেলে, কী দিয়ে?

ইয়াসমিন বলে, আমার হৃদয়, আমার প্রেম।

হাসান বলে, না, না, না।

হাসান টেলিফোন রেখে দেয়, টেলিফোন বাজতে থাকে অনন্ত যন্ত্রণার মতো।

হাসানের আর ঘরে থাকতে ইচ্ছে করে না, সে বেরিয়ে পড়ে। রাতটা কাটিয়ে দেবো আমি অন্ধ আতুর কুষ্ঠরোগী চোর পকেটমার বেশ্যা হিজড়ে সমস্ত দণ্ডিতদের সাথে, আমিও দণ্ডিত, আমিও তো হিজড়ে, কুষ্ঠরোগীদের থেকেও ঘূণ্য, অন্ধের থেকেও পতিত; হাসান হাঁটতে থাকে। পথের পাশে একবার বসে সে, ওই দিকে জটলা করছে অন্ধ আতুররা, তাদের পাশে গিয়ে বসবো, ঘুমিয়ে পড়বো? আমি তো কবি, অপুরুষ, সকলের সঙ্গী; ওদের সাথেই আমার সম্পর্ক, ওরাই আমার আত্মীয়, এই নরকবাসীরাই আমার বান্ধব। একবার সে ইটওঠা ময়লালাগা ফুটপাতে শুয়ে পড়ে; তার কষ্ট হয়, সে উঠে হাঁটতে থাকে, সারারাত হাঁটে। ভোরে তার ঘরে ফিরতে ইচ্ছে হয়; ফিরেই শোনে বানবান ক’রে বাজছে ইয়াসমিন।

ইয়াসমিন বলে, আজ উঠেই আপনাকে শুনতে ইচ্ছে হলো।

হাসান বলে, আমাকে শোনার কিছু নেই।

ইয়াসমিন বলে, আপনার স্বর থেকে মধু ঝরে, আমি পান করি।

হাসান বলে, তুমি বিষকে মধু মনে করো।

ইয়াসমিন বলে, বিষই আমার কাছে মধু।

হাসান বলে, তুমি আর ফোন করবে না।

ইয়াসমিন বলে, আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছে, এখনি, এই ভোরবেলা।

হাসান বলে, তুমি বিকেলে আমার বাসায় এসো।

ইয়াসমিন উল্লাসে ফেটে পড়ে, বাসায় আসবো আমি? কখন? ঠিকানা কি?

হাসান ঠিকানা দেয়; কীভাবে আসতে হবে, কোন দোকানের উল্টো দিকে নামতে হবে, কী-তলায় উঠতে হবে, সব বর্ণনা করে বিস্তৃতভাবে।

বিকেলে চারপাশের সমস্ত আবর্জনাকে সোনায় পরিণত ক’রে ইয়াসমিন আসে।

ঘরে ঢুকেই ইয়াসমিন বলে, কী যে সুন্দর ঘর!

হাসান বলে, এ-ঘরটা আসলে ওই দূরের আবর্জনাস্তূপের থেকেও নোংরা; এ-নোংরায় তুমি আর কোনোদিন পা ফেলতে চাইবে না।

ইয়াসমিন বলে, চিরকাল আমি এই ঘরে গড়িয়ে গড়িয়ে চলতে পারবো।

হাসান বলে, ইয়াসমিন, তোমার মুখ দেখে আমার কষ্ট হয়, তুমি যাও।

ইয়াসমিন বলে, আমি যাবো না, আমি থাকবো।

হাসান বলে, তুমি জানো না তুমি কোন নরকে এসেছে, ইয়াসমিন।

ইয়াসমিন বলে, আমি আপনাকে ভালোবাসি।

হাসান বলে, আমি ভালোবাসা চাই না।

ইয়াসমিন বলে, আমি হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি, আপনি আমার হাত ধরুন। আপনাকে আমি ভালোবাসি।

হাসান বলে, আমি কারো হাত ধরতে পারি না।

ইয়াসমিন বলে, আমার ঠোঁট দেখুন, সুন্দর, আপনি আমাকে চুমো খান। আপনাকে আমি ভালোবাসি।

হাসান বলে, আমি কাউকে চুমো খেতে পারি না।

ইয়াসমিন দাঁড়িয়ে বলে, আমার শরীরটি দেখুন, সুন্দর, আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরুন। আপনাকে আমি ভালোবাসি।

হাসান বলে, আমি কাউকে জড়িয়ে ধরতে পারি না।

ইয়াসমিন চিৎকার ক’রে ওঠে, কেনো নয়, কেনো নয়?

হাসান দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে জিন্সের বেল্ট খোলে, বোতাম খোলে, জিপার খোলে, এবং জিন্সটি খুলে দূরে ছুড়ে ফেলে বলে, দ্যাখো।

ইয়াসমিন হাসানের দুই উরুর মধ্যস্থলের দিকে তাকিয়ে চিৎকার ক’রে ওঠে, না, না, না, না, এমন হ’তে পারে না, এমন হ’তে পারে না।

সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

হাসান স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, যেনো চিরকাল দাঁড়িয়ে থাকবে।

 

(সমাপ্ত)

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *