কবিতা
তিরিশোর্ধ্ব শরীরখানা কাঁপে,
তরবারি কি আছে যুবক তরবারির খাপে।
–এই ছোট্ট কবিতাটি আমার একটি কবিতার বইয়ে ছিল। যে বছর সেই কবিতার বইটি বেরিয়েছে, সে বছর এক পাল যুবক ঢাকার বইমেলায় আমাকে দেখলেই কবিতার লাইনদুটো জোরে জোরে বলতো। যৌনতা নিয়ে কবিতা লিখলে কোনও পুরুষ-কবিকে কি কখনও অপদস্থ হতে হয়েছে কোথাও? আমি শুনিনি।
‘আমার খুব ইচ্ছে দশ পাঁচ টাকায় ছেলে কিনতে ..’– কোনও এক কবিতায় এরকম একটা লাইন ছিল। এক পাল ছেলে এসে আমাকে একদিন বললো, বইমেলার ভেতরেই, আমাকে কিনুন। যতই বলি এ কবিতা, এ কোনও ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন নয়, তারা শোনে না। কোনও পুরুষ-কবি যদি তার কোনও কবিতায় লিখতো আমার খুব ইচ্ছে দশ পাঁচ টাকায় মেয়ে কিনতে.., তাহলে কি তাকে হেনস্থা হতে হতো আমার মতো?
আমি যে কবিতাই লিখি, যে প্রবন্ধই লিখি, যে গল্প উপন্যাসই লিখি, লোকে ভাবে আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনের কথা লিখেছি। কোনও পুরুষ-কবিকে বা লেখককে তার লেখার জন্য কৈফিয়ত এভাবে দিতে হয় না, যেভাবে আমাকে এবং আরও অনেক মেয়ে-কবিকে দিতে হয়। কোনও পুরুষ যদি কোনও কবিতায় এমনও লেখে মেয়েটাকে দলামোচা করে চুমু খাবো, স্তন খামচে ধরবো, দীর্ঘ সঙ্গম করবো, তার পর শেষ রাতের দিকে মেয়েটাকে গলা টিপে মেরে ফেলবো– কেউ কিন্তু এটিকে কবিতা ছাড়া কবির ব্যক্তিগত ঘোষণা বলে ভাববে না। বরং পাঠকরা ওই ভায়োলেন্সের ভেতরেই কাব্য আবিষ্কার করবে, যে কাব্যের সঙ্গে তারা বড় কোনও ইউরোপ বা আমেরিকার কবির কবিতার সাদৃশ্য খুঁজে পাবে।