কন্যাটির কথা
কন্যাটিকে ফেলে আসতে হয়েছে কলকাতায়,
নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে বসেছিল দীর্ঘদিন,
এখনও মলিন মুখে জানালায় বসে থাকে, দিন গোনে।
শীত কাটাতে হল একা একা,
নরম লেপের তলায় আমার উষ্ণতা পেতে পেতে
এ বছর আর ঘুমোনো হল না ওর।
আমার অপেক্ষা করে ওর শীত গেল, ছুটির গরমকাল
যেন না যায়, যে-করেই হোক আমাকে ও চায়,
ফিরে পেতে চায় নিশ্চিন্তির দিন।
গড়িয়াহাট থেকে তুলে আনা শিশুটি কয়েকবছরে
ধীরে ধীরে বুকের ধন হয়ে উঠেছিল,
স্বজন বলতে এক আমিই ছিলাম ওর,
জগত বলতে এক আমিই।
আমার কিশোরী
কন্যাটি তার ঘর বাড়ি, তার বিছানা বালিশ ছেড়ে
রোদ্দুরে ভেসে যাওয়া
প্রিয় বারান্দাটি ছেড়ে, খেলনা-ইঁদুর ছেড়ে
মন-মরা বসে আছে স্যাঁতসেতে অন্ধকারে,
দিন-শেষে চোখ ভেসে যেতে থাকে চোখের জলে।
কলকাতা, আমাকে দাওনি, আমার নিরাশ্রয় কন্যাটিকে আশ্রয় দিও,
আমাকে রাখোনি,
আমার অনাথ কন্যাটিকে দেখে রেখো।
১৭.০২.০৮
(কলকাতায় ফেলে আসা পোষা বেড়াল মিনুকে মনে করে)