কথোপকথনে ইতি গঙ্গোপাধ্যায়
কথোপকথনের সঙ্গী
গল্পসরণি পত্রিকার সম্পাদক অমর দে এবং বিজলি ঘোষ
গল্পসরণি শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বিশেষ সংখ্যা
২০০৯-এ প্রকাশিত
আপনার বাবার বাড়ি কোথায়?
কুষ্ঠিয়ার ধলনগর গ্রামে।
জন্মস্থান কোথায়?
কৃষ্ণনগরে। মামার বাড়ি ঝাউদিয়া গ্রামে। আমার দাদামশাইয়ের নাম ছিল নগেন্দ্রনাথ মজুমদার। কৃষ্ণনগরে জজ কোর্টের কাছে দাদামশাইয়ের নামে নগেন্দ্রনগর আছে।
পড়াশোনা কোথায় শুরু হয়?
লেখাপড়া প্রথম শুরু হয় ঝাউদিয়া গ্রামের পাঠশালায়। সেখান থেকে কলকাতায় এসে কিছুদিন পিসিমার বাড়িতে থাকি। সেখান থেকে আপার সার্কুলার রোডের একটা বাসা বাড়িতে আমরা উঠে যাই। সেখানে ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়েছিলাম। তারপর দাদা সালকিয়ায় বাসা ভাড়া নেন। সালকিয়ায় এসে আমি ক্লাস সেভেনে ভর্তি হই। সেখান থেকেই ১৯৫২ সালে স্কুল ফাইনাল পাশ করি।
বাবা মা সম্পর্কে কিছু বলুন।
আসলে আমার চার বছর বয়সে বাবা মারা গিয়েছেন। মাকে পেয়েছি। মা ১৯৭৬ সালে মারা যান।
আপনার ভাই বোন?
আমরা পাঁচ বোন, দুই ভাই ছিলাম।
বাবা কী করতেন?
আমার বাবার নাম রমাপ্রসন্ন সান্যাল। উনি কৃষ্ণনগরে ওকালতি করতেন।
আপনাদের বিয়েটা কীভাবে হল — সে সম্পর্কে যদি কিছু বলেন—
আসলে মতি নন্দীর সঙ্গে আমার ছোটো বোনের আগে বিয়ে হয়। মতি নন্দীর বন্ধু শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়। আমার ছোটো বোন আর মতি নন্দী সম্বন্ধটা নিয়ে এসেছিল। ১৯৫৯ সালে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় একদিন এসেছিলেন। দেখা হল। ১৯৬০ সালে আমাদের বিয়ে হল।
বিয়ের পর কী দেখলেন? লেখক হিসাবে শ্যামলদা কেমন গণ্যমান্য ছিলেন?
তখন এসব কিছু ছিল না। তখনও ওঁর লেখক জীবন শুরু হয়নি। জাস্ট চাকরি করতেন। বিয়ের পরেই ‘বৃহন্নলা’ প্রকাশিত হয়। পরে যেটা ‘অর্জুনের অজ্ঞাতবাস’ নামে প্রকাশিত হয়। তারপরে ‘অনিলের পুতুল’ বেরোয়। আমাদের বিয়ের সময় উনি সবে সাব এডিটর হিসাবে আনন্দবাজার পত্রিকায় ঢুকেছেন, চাকরি জীবন শুরু হয়েছে।
বিয়ের পর প্রথম কোথায় সংসার বাঁধলেন?
টালিগঞ্জে এখন যে বাড়িটাতে থাকি, তার পাশের বাড়িতে বিয়ের পর আসি — এখন যে বাড়িতে তাপস গঙ্গোপাধ্যায় থাকেন। সেই বাড়িতে বিয়ের পর পাঁচ, সাড়ে পাঁচ বছর ছিলাম। তত দিনে আমার দুই মেয়ের জন্ম হয়েছে। তারপর ললিতাকে ( ছোটো মেয়ে) সাড়ে তিন মাসের নিয়ে চম্পাহাটিতে যাই।
চম্পাহাটিতে কেন গেলেন?
ওখানে আমাদের নিজেদের জমি হবে — এ রকম একটা ইচ্ছা নিশ্চয়ই ছিল।
চম্পাহাটিতে জমি নেওয়ার ব্যাপারে আপনার সমর্থন ছিল?
হ্যাঁ। ১৯৬৪ সাল থেকেই আমরা জমি দেখতে থাকি। আমি সঙ্গে যেতাম।
ওখানে জমি হবে, চাষবাস হবে — এরকম পরিকল্পনা ছিল?
না, চাষবাসের ব্যাপারটা বোধহয় মাথায় ছিল না তখন।
চম্পাহাটি তো তখন অজ গ্রাম—
প্রায়।
কলকাতা ছেড়ে চম্পাহাটি যেতে আপনার ভালো লেগেছিল?
প্রথমে একদমই ভালো লাগেনি। তারপর থাকতে থাকতে ভালো লেগে যায়।
শ্যামলদার এই যে নানা রকম খেয়াল আর পাগলামি — এতে আপনার সাপোর্ট ছিল? `
সাপোর্ট ছিল বলা যায় না, তবে অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হয়।
চম্পাহাটির কথা এখন কেমন মনে পড়ে?
চম্পাহাটিতে গিয়ে আমরা বাসা ভাড়া করে ছিলাম। দুটো বাড়িতে ছিলাম। প্রথম বাড়িটা ছিল স্টেশনের কাছে। দ্বিতীয়টা একটা খুনের বাড়ি। এই বাড়িতে স্ত্রী স্বামীকে খুন করেছিল। বয়স্ক স্বামী, অল্পবয়স্কা স্ত্রী। স্ত্রী একজনের সঙ্গে ইনভলড হয়ে পড়ে। তারপর যখন শোনে স্বামী রিটায়ার করে বাড়িতে থাকবে, তখন স্বামীকে খুন করে। এই নিয়ে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ‘খরার পরে’ নামে একটা গল্পও লিখেছেন। কয়েকমাস সেই খুনের বাড়িটাতে থাকার পর আমাদের বাড়ির একটা ঘর তৈরি হল। তখন আমরা সেই বাড়িতে উঠে গেলাম। বাড়িও তৈরি হচ্ছে, আমরাও থাকছি — এসব বিষয় ‘কুবেরের বিষয় আশয়’ -এ লেখা আছে। তারপর বাড়ি-ঘর তৈরি হয়, গোরু কেনা হয়, জমি কিনে চাষ করা হয় — অনেক কিছু হয়েছে।
এই জীবন আপনার ভালো লাগত?
মন্দ লাগত না। সব আমাদের নিজেদের ব্যাপার। ০৯-০৭-১৯৬৭ তারিখে চম্পাহাটির বাড়িতে আমরা গৃহপ্রবেশ করি। তখন বড়ো মেয়ে ছ’বছরের আর ছোটো মেয়ে দু’বছরের। বড়ো মেয়ে গ্রামের স্কুলে ভর্তি হল কিছুদিনের জন্য। বেশ দূরে স্কুল, অনেকটা যাতায়াত করতে হত। তারপর মেয়েকে ডায়াসেশনে ভর্তি করা হল। চম্পাহাটি থেকে মেয়েকে নিয়ে আমি ডেলি-প্যাসেঞ্জারি করতাম। গোরু, ছাগল, মুরগি এইসব নিয়ে আমরা চম্পাহাটিতে সাত-আট বছর ছিলাম। ধান চাষ হল, সব কিছু হল। আমাদের বাড়ির নিচে একটা খাল, একুশ ফুট চওড়া রাস্তা — এসব আমার স্বামী করেছিলেন। আমার বড়ো মেয়ে বেশ বড়ো-সড়ো দেখতে। পাড়ার ছেলেরা যখন ঐ রাস্তা দিয়ে ঘোরাফেরা করত, বলত — শ্যামল বাঙালের বড়ো বড়ো চোখ এই মেয়েটাকে তুলে নিয়ে যাব। এই সব শোনা যেত। বাড়ির কাজের লোকেরা বলাবলি করত। তখন আমরা বাড়ি ভাড়া করে ০২-০৮-৭২ (১৭ শ্রাবণ) তারিখে কলকাতায় চলে এলাম। মেয়ের স্কুলের (ডায়াসেশন) কাছাকাছি ল্যান্সডাউনে বাসা ভাড়া করা হয়েছিল। সেই সময় তরুণ গঙ্গোপাধ্যায় (শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাই) আমাদের সঙ্গে থাকলেন কিছু দিন। তারপর বিভিন্ন জায়গায় বাসা বাড়িতে থাকতে থাকতে আমরা প্রতাপাদিত্য রোডের বাড়িতে এলাম। সেই বাড়ি থেকেই আমার মেয়েদের পড়াশোনা, বিয়ে-থা সব কিছু হল। প্রতাপাদিত্য রোডের বাড়ি থেকে আমরা কাশীপুরে চলে গেলাম। সেখানে বাসা ভাড়া করেছিলাম। ললিতারা তখন ওর খুড়-শ্বশুরের বাড়িতে থাকত। বাড়িটা খুব ছোটো ছিল। সেই ভাড়া বাড়িতে মেয়ে থাকবে বলে আমরা দক্ষিণ কলকাতায় জুবিলি পার্কের একটা বাড়িতে চলে এলাম। সেখানে কিছুদিন থাকার পর আমরা ব্রহ্মপুর যাই।
ব্রহ্মপুর কেন গেলেন? তার কী কোনো কারণ ছিল?
কেন গেলাম ঠিক বলতে পারছি না। উনি ভাবলেন ওখানে বাড়ি ভাড়া করে থাকা যাবে, ওদিকে গিয়ে থাকব কিছু দিন। ব্রহ্মপুরে আমরা কয়েক বছর ছিলাম। তারপর সেখান থেকে এই টালিগঞ্জের বাড়িতে এলাম।
শ্যামলদার বইগুলো সব আপনার পড়া আছে?
বই আকারে সব পড়া না থাকলেও, যখন বিভিন্ন ম্যাগাজিনে লেখাগুলো বেরিয়েছে, আমি পড়েছি। এ ছাড়া যখন উনি কোনো লেখা লিখবেন বলে থীমটা ভাবছেন বা এক দুই তিন চার করে লিখে নিচ্ছেন, তখন আমাকে গল্পটা বলতেন যে — এই এই করব, এইখানে এই লিখব, এই পরিচ্ছেদে এই করব বা এই এই করেছি, এই এই হবে — এ সব বিষয় নিয়ে উনি আমার সঙ্গে আলোচনা করতেন। শিল্প-সাহিত্য সম্বন্ধে আমার বিশেষ অভিজ্ঞতা বা পড়া নেই ; তবে একটা মতামত দেওয়া বা হ্যাঁ-না বলা — সেটা আমি করেছি।
শ্যামলদা কোন সময়ে লিখতেন।
উনি ভোর সাড়ে চারটে পাঁচটার সময় উঠতেন। তারপর যখন যে পাড়ায় থাকতেন, একটা কাচের গ্লাস নিয়ে পাড়ার দোকানে গিয়ে চা খেতেন। সেখানে চা খেয়ে, তাদের সঙ্গে গল্পগুজব করে সাতটার সময় এসে আমাকে ডাকতেন। তখন বাড়িতে আবার চা খেতেন। তারপর দাড়ি কামিয়ে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে পাজামা, পাঞ্জাবি বা লুঙি পরে আগে খবরের কাগজটা পড়তেন। পড়া হলে নিজেই ঠিক করতেন কি তরকারি খাওয়া হবে, কি মাছ খাওয়া হবে, কি বাজার হবে। আগেই কাগজপত্র গুছিয়ে নিতেন বাজার থেকে ফিরে এসে কি লিখবেন না লিখবেন। বাজার করে এসে কিছু জলখাবার খেয়ে সকাল আটটা সাড়ে আটটার মধ্যে লিখতে বসতেন। বেলা বারোটা পর্যন্ত লিখলেন। তারপর স্নান করে খাওয়া-দাওয়ার পর ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট বিশ্রাম করে আবার লিখতে বসলেন। যখন অফিস ছিল, তিনটের সময় চা খেয়ে অফিস যেতেন। আর বাড়িতে থাকলে আবার একটু লিখতে বসতেন।
বিয়ের পর প্রথম দিকে কখন লেখালেখি করতেন।
বিয়ের পর টালিগঞ্জের বাসায় লেখাপড়ার অসুবিধা হচ্ছিল বোধহয়। তখন ওঁর মনে হল একটা সেপারেট জায়গা থাকলে লেখাপড়ার সুবিধা হয়। তারপর চম্পাহাটিতে গিয়ে ‘কুবেরের বিষয় আশয়’ লিখলেন।
উনি রাত্রে লিখতেন?
না। উনি রাত্রে লিখতেন না। লেখার ব্যাপারে উনি খুব সিস্টেম্যাটিক ছিলেন। সকাল আটটা সাড়ে আটটা থেকে বারোটা, আবার স্নান-খাওয়ার পর একটু বিশ্রাম করে তিনটে পর্যন্ত একটু লেখা — এ রকম ভাগ ভাগ করে উনি লিখতেন। আজ দশ পাতা লিখব বা আজ আমি এই পরিচ্ছেদটা লিখব — এভাবে লিখতেন। লিখে তারপর সেটা জেরক্স করার জন্য দেওয়া হত।
লেখার কলমের ব্যাপারেও ওঁর খুব ঝোঁক ছিল। এখনও ওঁর অনেক কলম আছে। পরে উনি সাধারণত নিউজ প্রিন্টের প্যাডে ডট পেন দিয়ে লিখতেন। লেখালেখির ব্যাপারে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন।
কী খেতে ভালোবাসতেন।
সবকিছু খেতেই উনি ভালোবাসতেন। মাছ মাংস ডিম। রিচ রান্না ভালোবাসতেন, আবার হালকা রান্নাও ভালো লাগত। ঢেকি শাক তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। সকালে ব্রেকফাস্টে হয়তো কোনোদিন আলুভাজা বা তরকারি রুটি হল, আবার হয়তো কোনোদিন মনে হল ডায়েট কন্ট্রোল করবেন — তখন নানা রকম ফট-টল খেলেন। দুপুরের খাবার ভাত, ডাল, তরকারি, সুক্তো সবকিছুই থাকত। রাত্রে রুটি, তরকারি, ডাল, মাছ বা মাংস বা মাংসের স্টু। ওঁর মধ্যে আজ আমি রোগা হব, আজ আমি মোটা হব — এই একটা ব্যাপার সব সময় থাকত।
শ্যামলদার লেখার টেবিল কোনটা?
এই টেবিলটাই (বর্তমানে যে টেবিলটা টালিগঞ্জের বাড়িতে আছে)। এই টেবিলটা আমি সাতান্ন টাকা দিয়ে চম্পাহাটিতে কিনেছিলাম।
‘কুবেরের বিষয় আশয়’ কি এই টেবিলে লেখা?
না। আমার বড়ো জায়ের বিয়ের একটি টেবিল ছিল — সেক্রেটারিয়েট টেবিল, তাতে ‘কুবেরের বিষয় আশয়’ লিখেছিলেন। চম্পাহাটিতে । প্রতাপাদিত্য রোডের বাড়িতে একটা খাওয়ার টেবিল ছিল, সেটাতেও উনি লিখেছেন।
আপনাদের সাংসারিক জীবন কেমন ছিল।
খুব সুন্দর, স্মুদলি না কাটলেও আমাদের সাংসারিক জীবনটা ঠিকই ছিল। সংসার চালাতে আমার কোনো অসুবিধে হয়নি। সবকিছু উনি নিজে দেখাশোনা করতেন। মেয়েদের লেখাপড়া, মেয়েদের জামাকাপড়, পুজোর সময় কী কেনা হবে, এমনকি মেয়েদের বিয়ের পরেও মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনিদের জন্য কী কেনা হবে — এসব কিছু উনি নিজে করতেন। সংসার চালানোর কাজটা উনি নিজেই করতেন। এ সব বিষয়ে আমার কোনো চিন্তা ছিল না, অসুবিধা ছিল না।
আপনাদের মধ্যে কখনও ঝগড়া হয়েছে?
এমন হলে আমি বেশির ভাগই সাইলেন্ট থেকেছি। ঝগড়া বা বাকযুদ্ধ — এই ব্যাপারটা আমি পছন্দ করি না বা করিনি। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের যখন মনে হয়েছে চিৎকার করেছেন, কিন্তু আমি কখনও অসহিষ্ণু ভাব দেখাইনি বা প্রতিবাদ করিনি। প্রতিবাদ না করা মানে কিন্তু মেনে নেওয়া নয়।
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাতান্ন বছর বয়সে একটি অল্প বয়সী মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয়েছিল। এ নিয়ে লেখালেখিও করেছেন। সেটা কোনো স্ত্রীর ভালো লাগা সম্ভব নয়। এ নিয়ে অসন্তোষ হতেই পারে। আমার দেওর, ননদ, শ্বশুর, ভাসুর এঁদের সকলের সঙ্গে আমার ভারী সুন্দর সম্পর্ক — এই সম্পর্কটা আমি নষ্ট হতে দিতে রাজী ছিলাম না। এই ব্যাপারটা আমি প্রতিবাদ করেছি।
মানুষ শ্যামলদাকে কেমন দেখেছেন।
দেখুন, মানুষ হিসাবে খুবই ভালো। অত্যন্ত ভালো। কিন্তু লেখকদের একটু খামখেয়ালী, একটু স্বেচ্ছাচারী ব্যাপার, নিজেদের ইচ্ছা, প্রেম-ভালোবাসার ব্যাপার থাকবে — সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমার মনে হয় এর মধ্যে নাক গলিয়ে লাভ নেই। তাঁরা এটা করবেনই। এরকম জীবন যাপন করে তাঁরা সেটা লিখবেন। এরকম প্রত্যেকটি ব্যাপার নিয়ে উনি লিখেছেন। ফলে এতে আমার বাধা দেওয়ার কিছু নেই।
এছাড়া প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান, সভা — সব জায়গায় আমি ওঁর সঙ্গে গিয়েছি। যথেষ্ট সমাদর পেয়েছি।
লেখক হিসাবে ওঁকে কী চোখে দেখেন।
উনি অবশ্যই একজন খুব সম্মানিত লেখক। না হলে সবাই ওঁর কথা এত বলছে কেন। ভাবছে কেন।
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনী নয় এই গ্রন্থটি। তাঁর স্ত্রী ইতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে যেভাবে দেখেছেন, বুঝেছেন — তার স্মৃতিকথন। শ্যামল-অনুরাগীরা তাঁদের প্রিয় লেখককে এই গ্রন্থে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পারবেন। শ্যামল-গবেষকদের কাছেও এই গ্রন্থটি অন্যতম আকরগ্রন্থ হবে, আমাদের বিশ্বাস।
ইতি গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৩-এর ২২ ডিসেম্বর নদীয়ার কৃষ্ণনগরে। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ ১৯৬০ সালে ২২ মে। হাওড়ার সালকিয়ায়। শ্যামল-ইতির দুই কন্যা — মল্লিকা ও ললিতা। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রয়াণ ২০০১-এর ২৪ সেপ্টেম্বর। ৬৮ বছর বয়সে।