একেনবাবু ও বর্মণ বাড়ি রহস্য

একেনবাবু ও বর্মণ বাড়ি রহস্য 

শমীতা দাশ দাশগুপ্ত 
সুজন দাশগুপ্ত 

.

বাপির কথা 

এই গল্পের খসড়া আমার ডায়েরিতে লেখা ছিল না। সেখান থেকেই একেনবাবুর সব রহস্য কাহিনি আমি লিখি। তাই এই গল্পে ‘আমি’ নেই, আমার বা প্রমথর ভাবনাচিন্তার কথাও নেই। এখানে একেনবাবু আছেন ঠিকই, কিন্তু কাহিনিটি শুনেছি ওঁর পিসতুতো বোন রিনিতার কাছ থেকে। গত বছরই দেশে এসে ওর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। আমার কথা ও জানত। আলাপ হতেই বলল, “কানুদার অনেক কীর্তিকলাপ আমি জেনেছি আপনার বই পড়ে।”

“কানুদা?”

“আপনাদের একেনবাবু।”

“আরে, এই নামটা তো আমাদের একেবারেই জানাননি! পরে ওঁর কোনো গল্পে কানুবাবু নামটা লাগিয়ে তাক করে দেব!” বলেই অবশ্য বললাম, “মুশকিল হল আমার স্টকে আর বিশেষ কোনো গল্প নেই। কলকাতায় যেসব তদন্ত করছেন, সেসব নিয়ে কিচ্ছু বলেন না!”

মুচকি হেসে রিনিতা বলল, “বর্মণ বাড়ির রহস্য নিয়ে কানুদা কখনো কিছু বলেছে?”

“না-আ-আ।”

“শুনবেন?”

“অবশ্যই।”

“আপনার গল্পের হিউমারগুলো কিন্তু থাকবে না।”

“কোনো দরকার নেই, ওগুলো লিখে লিখে বস্তাপচা হয়ে গেছে।”

.

রিনিতার বলা সেই গল্পই আমি লিখছি। তবে লিখতে বেশ কসরত করতে হচ্ছে যেহেতু আমি নিজে জড়িত নই। কীভাবে যে গল্পটা খাড়া করব মাথায় আসছে না। যাক গে, শুরু তো করে দিই… 

.

দিন চারেকের জন্য রিনিতা ওর বন্ধু শিখার আমন্ত্রণে বর্মণ বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। শিখার ভালো নাম শিখা বর্মণ। রিনিতার সঙ্গে ব্যাঙ্গালোরে একটা সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করে। ডিপার্টমেন্ট আলাদা শিখা ফাইনান্স সেকশনে, রিনিতা ক্লাউড কম্পিউটিং ডিভিশনে। প্রায় একই বয়সি কলকাতার দুই মেয়ে, বন্ধুত্ব হতে সময় লাগেনি। এক বছর হল ব্যাঙ্গালোরে টেকনোলজি পার্ক অঞ্চলে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে আছে। এবার দু-সপ্তাহের ছুটিতে দু-জনে যখন কলকাতায় ফিরল, শিখা ধরে বসল টালিগড়ে ওদের দেশের বাড়িতে ক’দিন কাটিয়ে যেতে হবে। ওর বাবা-মা-দাদা সবাই আজকাল ওখানেই থাকে। ইদানীং কারোর সঙ্গেই ওর বনছে না, একা একা সেখানে থাকলে পাগল হয়ে যাবে! রিনিতার মোটেই যাবার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু বন্ধু এত করে ধরেছে… 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *