বরং আরো কিছুক্ষণ এক বুক অন্ধকারে হাত দুটো রাখতে দাও
পেতে দাও ঈশ্বরের অনাবিল শান্তি
এসেছি যোজন পথ পাড়ি দিয়ে মাড়িয়ে খড়কুটে শক্ত পাথর
বড় অসহায় ক্লান্ত আমি
য্যানো অনেক অনেক দিন সুখের মুখ দেখিনি
দেখিনি আত্মীয় স্বজন, পাইনি নিবিড় সান্নিধ্য তাঁর
শুধু চোখের সামনে সারি সারি তৃষ্ণার্ত মুখের মিছিল—বলে
উন্মাদ লোকটি ম্রিয়মান ঘাসের উপর এলিয়ে সমস্ত শরীর তাকালো শূন্যে
পরম কৌতুহলী দৃষ্টিতে
নরম ফুরফুরে বাতাসে মাথার ঝাঁকড়া উস্কোখুস্কো চুলগুলো বড়বেশী
ব্যস্ত হলো বাতাসের অন্তরঙ্গ নর্তকীর মতোন
আমি সামনে দাঁড়িয়ে অবাক দটিতে গালে হাত দিয়ে
দেখছি তার নিপুণ কলা কৌশল; বলার ভঙ্গি–
সহসা সমস্ত বিস্ময় চুরমার হলো
প্রচণ্ড হাওয়ায় ট্রাউজারের পকেটে পয়সার মিউজিক বেজে গেল
অন্ধকার চারদিকে, বড় বেশী মেতেছে খেলায়; নিজেরাই খেলছেতো
খেলছেই—
লোকটি উঠে দাঁড়ালো আবার; বললে
আমার চোখ দুটো কেড়ে নিয়ে হাত দুটো সরিয়ে নাও
সহ্য হয়না এখন, সহ্য হয়না কোন কিছুই
এমন কি আজন্ম সাধের বাসন্তীকেও
ওই যে আমার রঙীন স্বপ্ন গলে এখন আর তীর্থ করেনা তার ত্রিসীমানা
কৈশোরের প্রেমগুলো ধুঁকে ধুঁকে মরছে, মরছে সবখানে
আমাকে এখন কেউ ভালবাসেনা, কাছে টানেনা, মাথায় চুলে হাত বুলোয় না
তুমি দয়া করে, দয়া করে সখা হে
যদি পারো এনে দাও একটি ভালবাসার মুখ
একটি ভালবাসার মুখ।
য্যানো বা তার কথাগুলো ঠিক তক্ষুণি শহরের বিষণ্ণ মনুমেন্ট ছুঁয়ে ছুঁয়ে
নিমেষে উধাও হলো দৃশ্যের গভীরে
বিহ্বল চেয়ে দেখি ওই অন্ধকারেই মারবেলের মতো
জ্বলজ্বল করছে তার উজ্জ্বল চোখ দুটো!
১৮/৯/৬৯