অশ্ব ছুটিল। হোসেনের অশ্ব বিকট চিৎকার করিতে করিতে সীমারের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটিল। আবদুল্লাহ্ জেয়াদ্, অলীদ প্রভৃতি অশ্বলক্ষ্যে অবিশ্রান্ত শরনিক্ষেপ করিতে লাগিল। সুতীক্ষ্ণ তীর অশ্বশরীর ভেদ করিয়া পার হইল না, কিন্তু শোণিতের ধারা ছুটিল। কে বলে পশুহৃদয়ে বেদনা নাই? কে বলে মানুষের জন্য পশুপ্রাণ কাঁদিয়া আকুল হয় না?-মানুষের ন্যায় পশুর প্রাণ ফাটিয়া যায় না?-বাহির হয় না? অশ্ব ফিরিল। কিছুদূর যাইয়া শরসংযুক্ত শরীরে হোসেনের দুল্দুল্ (অশ্বের নাম) সীমারের পশ্চাদ্গগমন হইতে ফিরিল।
তীর চলিতেছে! এখন অশ্বের বক্ষে, গ্রীবাদেশে তীক্ষ্ণতর তীর ক্রমাগত বিঁধিতেছে; কিন্তু অশ্বের গতি মুহূর্তের জন্য থামিতেছে না। মহাবেগে প্রভু হোসেনের শিরশূন্য দেহ-সন্নিধানে আসিয়া পদ হইতে স্কন্ধ, স্কন্ধ হইতে পদ পর্যন্ত নাসিকা দ্বারা ঘ্রাণ লইয়া আবার মস্তকলক্ষ্যে ছুটিবার উদ্যোগ করিতেই বিপক্ষগণে নানা কৌশলে অশ্বকে ধরিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। অশ্বশ্রেষ্ঠ দুল্দুল্ সকলই দেখিতেছে, বোধ হয় অনেক বুঝিতেও পারিতেছে। ধরা পড়িলে তাহার পরিণামদশা যে কী হইবে তাহাও বোধ হয় ভাবিতেছে। প্রভু হোসেন যে পৃষ্ঠে আরোহণ করিতেন, সেই পৃষ্ঠে প্রভুহন্তা কাফেরগণকে লইয়া আজীবন পাপের বোঝা বহন করিতে হইবে, এ-কথা কি সেই প্রভুভক্ত বাক্শক্তিবিহীন পশুর অন্তরে উদয় হইয়াছিল? সীমারের দিকে আর ছুটিল না। হোসেনের মৃত শরীরের নিকটেও আর রহিল না। বাধা, কৌশল অতিক্রম করিয়া-মহাবেগে হোসেনের শিবিরাভিমুখে দৌড়িয়া চলিল। সকলেই দেখিল, দুল্দুলের চক্ষু জলে পরিপূর্ণ।
আবদুল্লাহ্ জেয়াদ, মারওয়ান, ওমর এবং আর-আর যোধগণ অশ্বের পশ্চাৎ পশ্চাৎ হোসেনশিবিরাভিমুখে বেগে ছুটিল। শিবিরমধ্যে বীর বলিতে আর কেহ নাই। একমাত্র জয়নাল আবেদীন। হোসেনের উপদেশক্রমে পরিজনেরা জয়নালকে বিশেষ সাবধানে গোপনভাবে রাখিয়াছেন। হাসনেবানু কাসেমদেহ বক্ষে ধারণ করিয়া শোকসন্তপ্তহৃদয়ের জ্বলন্ত হুতাশনে শোণিতের আহুতি দিতেছেন। সখিনা মৃত পতির পদপ্রান্তে ধুলায় লুটাইয়া অচেতনভাবে পড়িয়া রহিয়াছে! যিনি যেখানে যেভাবে ছিলেন, তিনি সেইখানে সেইভাবেই আছেন। কাহারো মুখে কোন কথা নাই। নীরব!-চতুর্দিক নীরব! কিন্তু আকাশ, পাতাল, বায়ু ভেদ করিয়া যে একটি রব হইতেছে, বোধ হয় শোক-তাপ-পিপাসায় কাতরতা-প্রযুক্ত এতক্ষণ কেহই সে রব শুনিতে পান নাই। সাহারবানুর মন, চক্ষু, কর্ণ, চিন্তা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে, ভিন্ন ভিন্ন দিকে। হঠাৎ শুনিলেন-অঙ্গ শিহরিয়া উঠিল। আবার শুনিলেন-স্পষ্ট শুনিলেন। বন, উপবন, গগন, বায়ু, পর্বত, প্রান্তর ভেদ করিয়া রব হইতেছে, “হায় হোসেন! হায় হোসেন!! হায় হোসেন!!!”
সাহারবানুর মোহতন্দ্রা ভাঙ্গিয়া গেল। হৃদয় কাঁপিয়া উঠিল, মুখে বলিয়া উঠিলেন, “হায়! এ কী হইল? কী ঘটিল? কে বলিতেছে? চতুর্দিক হইতে কেন রব হইতেছে? ও রব কেন হইতেছে? নাম উচ্চারণে কেন হায় হায় করিতেছে? হায়! হায়! কী নিদারুণ কথা? হায় রে আবার সেই রব! আবার সেই অন্তরভেদী হায়! হায় রব!!
“এ-কী কথা! যে সকল পবিত্র বসন, পবিত্র অস্ত্র পবিত্রভাবে ভক্তিসহকারে অঙ্গে ধারণ করিয়া গিয়াছেন, তাহাতে কী কোন সন্দেহ হইতে পারে? ঐ অশ্বপদশব্দ! কে শিবিরাভিমুখে আসিতেছে? কাহার অশ্ব? হায় রে! এ কাহার অশ্ব?” সাহারবানু শিবিরদ্বারদেশে যাইতেই রক্তমাখা শরীরে হোসেনের অশ্ব শিবিরে প্রবেশ করিল। “ভগ্নী! কপাল পুড়িয়াছে! আমাদের কপাল পুড়িয়াছে! দেখ অশ্ব দেখ, দুল্দুলের তীর-সংযুক্ত শরীর দেখ, রক্তের প্রবাহ দেখ।” বলিতে বলিতে সাহারবানু অচেতনভাবে ভূতলে পড়িয়া গেলেন। আর-আর পরিজনেরা শূন্যপৃষ্ঠ দুল্দুল্-সমস্ত শরীর রক্তে রঞ্জিত, আঘাতে-আঘাতে র্জর্জ এবং শোণিতের ধারা দেখিয়া, মর্মভেদী আর্তনাদ,-কেহ-বা হতচেতন অবস্থায় বিকট চিৎকার করিয়া, অচেতনভাবে ধরাশায়ী হইলেন। দুল্দুল্ কাঁপিতে কাঁপিতে মাটিতে পড়িয়া গেল। হোসেনের প্রিয়তম অশ্বপ্রাণ বায়ুর সহিত মিশিয়া অনন্ত আকাশে চলিয়া গেল।
এদিকে মারওয়ান, ওমর, অলীদ, জেয়াদ প্রভৃতি যোধগণ উগ্রমূর্তিতে, বিকট শব্দে “কই জয়নাল? কোথা সখিনা?” নাম উচ্চারণ করিতে করিতে শিবিরমধ্যে প্রবেশ করিল। কিন্তু দক্ষিণে, বামে, সম্মুখে কিঞ্চিৎ দূরে দৃষ্টি পড়িবামাত্র তাহাদের শরীর হঠাৎ শিহরিয়া উঠিল, বীরহৃদয় কাঁপিয়া গেল। ভয়ের সঞ্চার হইল।-কী মর্মভেদী দৃশ্য!
বীরবল আবদুল ওহাবের খণ্ডিত দেহ, কাসেমের মৃত্যুশয্যা, হোসেনের অশ্ব ও পতিপ্রাণা সখিনার পতিভক্তির চিহ্ন দেখিয়া বীরগণ স্তম্ভিতভাবে দণ্ডায়মান রহিলেন। মন্ত্রীপ্রবর মারওয়ান একদৃষ্টে সখিনার প্রতি অনেকক্ষণ পর্যন্ত চাহিয়া মৃত-কি-জীবিত কিছুই নির্ণয় করিতে পারিল না। কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া দেখিল, সখিনাবিবি স্বামী-পদ দু’খানি বক্ষোপরি স্থাপন করিয়া মন-প্রাণ যেন ঈশ্বরে ঢালিয়া দিয়া আত্মসমর্পণ করিয়াছেন। পতি-দেহ বিনির্গত পবিত্র শোণিতে পবিত্র দেহ রঞ্জিত হইয়া অপূর্ব শ্রী ধারণ করিয়াছে। মৃত দেহে চন্দন, আতর ও কর্পূরের ব্যবস্থা আছে। সখিনার অঙ্গ রক্তচন্দনে চর্চিত হইয়া জীবন্তভাবে যেন দয়াময়ের নিকট স্বামীর মঙ্গলকামনায় আত্মবিসর্জন করিয়া রহিয়াছে।
মারওয়ান আরো একটু অগ্রসর হইল। সখিনাকে ধরিয়া তুলিবে, আশা করিয়া হস্ত বিস্তার করিতেই, যেন মৃত শরীরে হঠাৎ জীবাত্মার সঞ্চার হইল। যেন স্বর্গীয় দূত জিবরাইল মর্তে আসিয়া সখিনার কানে কানে বলিয়া গেলেন, “সখিনা! তুমি না সাধ্বী, সতী? পরপুরুষ তোমার অঙ্গ স্পর্শ করিতে উদ্যত, এখনো স্বামী-চিন্তা! এখনো স্বামী-শোক! অবলা-অবয়ব পরপুরুষের চক্ষে পড়িলে মহাপাপ। নিজে ইচ্ছা করিয়া দেখাইলে আরো পাপ! তুমি বীরদুহিতা, বীরজায়া। ছি ছি, সখিনা! তোমার এতো ভ্রম! ছি ছি! সাবধান হও!”
সখিনা ত্রস্তভাবে উঠিয়া বসিলেন। সম্মুখে চাহিতেই দেখিলেন, অপরিচিত যোধ-সকল চারিদিকে ছুটোছুটি করিতেছে, যে যাহা পাইতেছে লইতেছে। হঠাৎ দুল্দুলের প্রতি দৃষ্টি পড়িল। হজরত ইমাম হোসেনের প্রিয় অশ্ব দুল্দুল্ মৃত্তিকায় শায়িত, সমুদয় অঙ্গে তীক্ষ্ণতর তীরবিদ্ধ, তীর-সকল অশ্বশরীর বিদ্ধ করিয়া কতক মৃত্তিকাসংলগ্ন কতক শরীরোপরি পড়িয়া রহিয়াছে। প্রতি শরের মুখ হইতে শোণিতধারা ছুটিয়া,-শ্বেত অশ্ব ঘোর লোহিতে র িত হইয়াছে! সখিনা একদৃষ্টে অশ্বের প্রতি চাহিয়া রহিলেন। পূর্বকথা স্মরণ হইল। চক্ষু ঊর্ধ্বে উঠিল, মুখভাব ভিন্ন ভাব ধারণ করিল। সজোরে কাসেমের কটিদেশ হইতে খঞ্জর লইয়া মহারোষে বলিতে লাগিলেন,-
“ওরে! কাফেরগণ! বুঝিয়াছি, সেই সাহসে শিবিরে আসিয়াছিস্? সেই সাহসে অত্যাচার করিতে আসিয়াছিস্? ওরে! আমরা অসহায়া হইয়াছি, সেই সাহসে? আমরা নিরাশ্রয়া, ওরে! সেই সাহসে? পুরুষ বীর আর কেহ নাই, ওরে নরাধমেরা সেই সাহসে? ভুলিলাম! ভুলিলাম! এখন প্রাণসখা কাসেমকে ভুলিলাম! ভুলিলাম কাসেম! তোমায় এখন ভুলিলাম! নারীজীবনের উদ্দেশ্য দেখাইতে তোমাকে এখন ভুলিলাম! কাসেম! ঐ পিতার অশ্ব, সমুদয় অঙ্গে তীরবিদ্ধ। রক্তে রঞ্জিত, মৃত্তিকায় শায়িত। আর কথা কী? আর আশা কী? এখন সখিনার আর আশা কি? কাসেম চাহিয়া দেখ! প্রাণাধিক কাসেম! দেখ চাহিয়া, এই দেখ সখিনার হাতে তোমার খঞ্জর!!”
মারওয়ানকে লক্ষ্য করিয়া বলিতে লাগিলেন, “রে বিধর্মী কাফের! তুই এখানে কেন? দূর হ! সখিনার সম্মুখ হইতে দূর হ! তুই কী আশায় এখানে আসিয়াছিস্? দূর হ কাফের, দূর হ! এ পবিত্র শিবির হইতে দূর হ! ঐ দেখ! যদি চক্ষু থাকে, তবে ঐ দেখ। শূন্যে চাহিয়া দেখ-সাহানা বেশ! সেই নয়নমনমুগ্ধকারী সাহানা বেশ! লোহিত রঞ্জিত সেই সাহানা বেশ! সেই সাহানা বেশ। শত্রু-অস্ত্রে ক্ষতবিক্ষত হইয়া সাহানা বেশ! ওরে নরাধম বর্বর! চণ্ডালের অমৃত আশা? শয়তানের বেহেস্তে আশা? ঘোর নারকীর জান্নাতে আশা? মহাপাতকীর হুরে আশা! দেখ! এই দেখ-যার প্রাণ তার নিকটে, যেখানে কাসেম, সেইখানে সখিনা-রক্তমাখা সুতীক্ষ্ণ খঞ্জর-কাসেমের হস্তের খড়্গ-এই বলিয়া হস্তস্থিত খঞ্জর সুকোমল বক্ষে সজোরে বসাইয়া পৃষ্ঠ পার করিয়া দিলেন। হায় রে রুধির ধারা! খঞ্জরের অগ্রভাগ বহিয়া বহিয়া শোণিতের ধারা ছুটিল। সখিনা কাসেমের মৃতদেহ পার্শ্বে অর্ধমুকুলিত ছিন্নলতার ন্যায় ধরাশায়িনী হইলেন! (সতী-সাধ্বী সখিনার আত্মঘাতিনী হওয়া সম্বন্ধে শাস্ত্রমতে অনৈক্য আছে।)
মারওয়ান নিস্তব্ধ! অন্য অন্য যোধগণ, যাহারা সখিনার-সাধ্বী সতী সখিনার কীর্তি স্বচক্ষে দেখিল, তাহারা সকলেই নিস্তব্ধ এবং স্থিরভাবে দণ্ডায়মান। পদপরিমাণ ভূমিও অগ্রসর হইতে আর সাহসী হইলেন না।
মারওয়ান বলিতে লাগিল, “ভ্রাতৃগণ! হোসেন পরিবারের প্রতি কেহ কোন প্রকার অত্যাচার করিয়ো না। সাবধান তাঁহাদিগকে লক্ষ্য করিয়া কেহ কোন কথা মুখে আনিয়ো না। প্রত্যক্ষ প্রমাণ স্বচক্ষেই তো দেখিলে? কী অসীম সাহস! কী অসীম ক্ষমতা! কী আশ্চর্য! বিশেষ লক্ষ্য করিয়া দেখ, ইঁহাদের এখনকার ভাবভঙ্গি-মনের ভাবগতিক বড় ভয়ানক! সাবধানে কথাবার্তা কহিবে। দেখ, ভাবটি সহজ ভাব নহে! দেখিলেই বোধ হয়, ইঁহারা সন্তোষসহকারে কোথায় যেন যাইতে ব্যগ্র হইয়াছেন। দুঃখের চিহ্নমাত্র নাই। বিয়োগ শোক, বেদনা, যন্ত্রণা ইঁহাদের অন্তরের বিন্দুপরিমাণ স্থানও যেন অধিকার করিতে পারে নাই। সকলের হাতেই এক-একখানি শাণিত অস্ত্র। তরবারি, খঞ্জর, কাটারি, ছোরা, যে যাহা পাইয়াছে লইয়াছে। ধন্য রে আরবীয় নারী! তোমরাই ধন্য! পতি-পুত্র বিয়োগ-বেদনা ভুলিয়া সমরসাজে শত্রুসম্মুখীন! ধন্য তোমরা! ভ্রাতাগণ! আমাদের বীরত্বে ধিক্! অস্ত্রে ধিক্! নারীহস্তে অস্ত্র দেখিয়া কি আর এ-সকল অস্ত্র ধরিতে ইচ্ছা করে? ইঁহারা আমাদের প্রতি অস্ত্র নিক্ষেপ করুন বা না-করুন, আমরা কিছুই বলিব না। ছি ছি! অবলা কুলস্ত্রীর সহিত যুদ্ধ করিতে অস্ত্রের ব্যবহার শিক্ষা করি নাই। ভ্রাতৃগণ! তোমরা আর কোন কথা বলিয়ো না, সকলেই স্ব-স্ব অস্ত্র কোষে আবদ্ধ কর। যাহা বলিবার আমিই বলিতেছি।”
মারওয়ান অবনতমস্তকে বলিতে লাগিলেন, “সাধ্বী সতী দেবিগণ! আমরা মহারাজ এজিদের আজ্ঞাবহ এবং চিরানুগত দাস। মহারাজের আদেশে আমরাই কারবালা ক্ষেত্রে হোসেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিয়াছিলাম। যুদ্ধ শেষ হইয়াছে। আমরা জয়লাভ করিয়াছি। আমরাই আপনাদের সুখতরী আজ মহারাজ এজিদের আদেশাস্ত্রে খণ্ড খণ্ড করিয়া বিষাদ-সিন্ধুতে ডুবাইয়াছি। আজিকার অস্ত্রের সহিত আপনাদের স্বাধীনতা-সূর্য একেবারে চির-অস্তমিত হইয়াছে। এখন আপনারা মহারাজ এজিদ-সৈন্য-হস্তে চির-বন্দি। বন্দির প্রতি অত্যাচার-অবিচার কাপুরুষের কার্য। বরং আপনাদের জীবন রক্ষার প্রতি সর্বদা আমাদের দৃষ্টি থাকিবে। ক্ষুৎপিপাসা নিবারণহেতু যদি কোন দ্রব্যের অভাব হইয়া থাকে, বলুন, আমি সে অভাব মোচন করিতে প্রস্তুত আছি।”
সকলেই নীরব! কাষ্ঠপুত্তলিকাবৎ নীরব! স্পন্দহীন জড়বৎ নীরব! অনিমেষে নীরব! কেবল অল্পবয়স্ক বালক-বালিকারা শুষ্ককণ্ঠে বলিয়া উঠিল, “জল! জল! জল! আমরা তোমাদের নিকট জল চাহি; দয়া করিয়া এক পাত্র জল দাও-”
মারওয়ান অতি অল্প সময়মধ্যে ফোরাতজলে অনেকের তৃষ্ণা-নিবারণ করিলেন। কিন্তু যাহাদের অন্তরে পতি-পুত্র-ভ্রাতা-বিয়োগজনিত শোকাগ্নি প্রচণ্ডবেগে হু-হু শব্দে জ্বলিতেছে-শরীরের প্রতি লোমকূপ হইতে সেই মহা-অগ্নির জ্বলন্ত শিখা মহাতেজে নির্গত হইয়া জীয়ন্ত জীবন জ্বালাইতেছিল, তাহাদের নিকট জলের আদর হইল না। ফোরাতজলে সে জ্বলন্ত আগুন নির্বাণ হইল না; বরং আরো সহস্রগুণ জ্বলিয়া উঠিল!
মারওয়ান একটু উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগিলেন, “বন্দিগণ! শিবিরস্থ বন্দিগণ! প্রস্তুত হও। যুদ্ধাবসানে যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজিতপক্ষকে রাখিবার বিধি নাই। প্রস্তুত হও, তোমরা মহারাজ এজিদের বন্দি-মারওয়ানের হস্তে; শীঘ্র প্রস্তুত হও। এখনই দামেস্ক যাইতে হইবে।”
Ahhh hhh poran da guraiya galo poira
I read it when I was 13 years old.It is a great creation of Musharaf Hussain Sb.
Shahidul tui ki coment koros poran soran
poira khub moja pailam
pora khub moja pailam