৩
মাঝরাত থেকেই বৃষ্টি পড়ছে ঝমঝমিয়ে, বাতাস বইছে শনশনিয়ে। শীত পড়েছে জবর। এইসব রাতে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোতেই মজা লাগে। অনেকেই ঘুমোয় বটে, কিন্তু সকলের পক্ষে সেই আরাম জোটে না। কারাগারের রক্ষীদের সারারাত জেগে থাকতে হয়। কখনও একটু ফাঁকি দিয়ে যে ঝিমিয়ে নেবে, তারও উপায় নেই। রক্ষীদের ওপরেও পাহারা দেবার জন্য থাকে অন্য রক্ষী।
রাজকুমার দৃঢ়কে যে-কক্ষটিতে রাখা হয়েছে, সেখানে পৌঁছতে হলে তিনজন প্রহরীকে পার হয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া দু’জন প্রহরী একসঙ্গে পায়ের শব্দে পাথর কাঁপিয়ে সমস্ত দুর্গটা ঘুরে বেড়ায়। অন্য প্রহরীরা এই দু’জনের নাম দিয়েছে শুম্ভ-নিশুম্ভ, এদের গায়ে যেমন জোর, হাতিয়ারেরও তেমন শক্তি। কোনও রক্ষীকে সামান্য ফাঁকি দিতে দেখলেই এই শুম্ভ-নিশুম্ভ কঠিন শাস্তি দেয়। শীত কিংবা গ্রীষ্ম কোনও সময়েই এই শুম্ভ-নিশুম্ভের ক্লান্তি নেই।
পাহাড়ের ওপর এই দুর্ভেদ্য দুর্গের মধ্যে রোদ বা বৃষ্টি আসতে পারে না বটে, কিন্তু শীতের বাতাস কোনও বাধা মানে না।
প্রত্যেক প্রহরীর সামনে দাউ দাউ করে মশাল জ্বলছে। তারা সেই আগুনে হাত সেঁকছে বসে বসে। সারারাত তো আর কোনও কাজ নেই, শুধু জেগে বসে থাকা।
একজন প্রহরী হঠাৎ একটা শব্দ পেয়ে সচকিত হয়ে সামনের দিকে তাকাল। দূরে একটা ছায়ামূর্তি দেখে সে তুলে নিল বশাটা।
ক্রমে ছায়ামূর্তিটা কাছে এলে চিনতে পারল সে। এও আর একজন রক্ষী, এর নাম বজ্রপাণি। সে একটা পা টেনে টেনে হাঁটছে। গায়ে একটা কম্বল জড়ানো। প্রহরীটি একটু অবাক হল, বজ্রপাণির তো এই সময়ে ঘুরে বেড়াবার কথা নয়। সে আজ থেকে বন্দীদের ঘরে খাবার দেবার ভার পেয়েছে। সে কাজ হয়ে গেছে অনেক আগে, এখন তো তার নাকে তেল দিয়ে ঘুমোবার সময়।
রক্ষীটি জিজ্ঞেস করল, “কী হে, বজ্রপাণি, অসময়ে এখানে এলে কী মনে করে?”
বজ্রপাণি ছদ্মনামে জয়পাল বলল, “এত শীত, কিছুতেই ঘুম আসছে না। মনে হয় যেন বিছানার নীচে বরফের চাঁই! তবু হেঁটে বেড়ালে গা গরম হয়!”
রক্ষীটি বলল, “যা বলেছ ভাই! এরকম শীত সারা জন্মে দেখিনি! আঙুলের ডগাগুলো যেন ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে।”
জয়পাল বলল, “তবু তো তোমার এখানে মশালের আগুন আছে, একটুখানি হাত সেঁকেনি, কী বলো?”
রক্ষীটি বলল, “হ্যাঁ, বোসো, বোসো, একটু গল্প করা যাক!”
জয়পালের ডান পায়ের পাতায় একটা ন্যাকড়া বাঁধা। সে বেশ কষ্ট করে বসল। আগুনের ওপর হাত রেখে বলল, “একে পায়ে ব্যথা, তার ওপর এমন শীত, এর মধ্যে কি আর ঘুমোবার উপায় আছে?”
রক্ষীটি জিজ্ঞেস করল, “পায়ে কিসের ব্যথা? চোট লাগল কোথায়?” জয়পাল বলল, “চোট লাগাইনি। কিন্তু কী যে একটা পোকা কামড়াল কে জানে! পা-টা অনেকখানি ফুলে গেছে। অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে!”
রক্ষীটি বলল, “সে কী হে, বজ্রপাণি, কিসে কামড়াল, দেখি, দেখি, ন্যাকড়াটা খোলো তো, জায়গাটা দেখি একবার।”
জয়পাল ন্যাকড়াটা খুলে পা-টা ছড়িয়ে দিল সামনের দিকে।
রক্ষীটি ঝুঁকে দেখতে যেতেই জয়পাল দু’হাতে চেপে ধরল তার গলা। রক্ষীটি ছটফট করতে লাগল, কিন্তু টু শব্দটি বার করতে পারল না। জয়পাল তাকে বজ্রআঁটুনি দিয়ে ধরে রাখল। এক সময় রক্ষীটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলতেই জয়পাল তাকে শুইয়ে দিল এক অন্ধকার কোণে।
পায়ে আবার ন্যাকড়া জড়িয়ে জয়পাল এবার গেল আরও খানিকটা দূরে দ্বিতীয় প্রহরীটির দিকে। তাকেও ওই একই ভাবে অজ্ঞান করে ফেলতে বেশি সময় লাগল না।
তৃতীয় প্রহরীটিকে নিয়ে খানিকটা মুশকিল হল।
সে একটু গম্ভীর ধরনের, গল্প করতে চায় না। জয়পালের পায়ের ব্যথা সম্পর্কেও সে কোনও আগ্রহ দেখাল না।
জয়পাল চায় নিঃশব্দে কাজ সারতে। প্রহরীটিকে একেবারে মেরে ফেলতেও চায় না। কিন্তু লোকটি একটু অসাবধানী না হলে সে তার গলা টিপে ধরবে কী করে? বেশি সময়ও নষ্ট করা যাবে না।
সুতরাং বাধ্য হয়েই সে চলে যাবার ভান করে, হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজের তলোয়ারের উল্টো পিঠ দিয়ে তৃতীয় প্রহরীটির মাথায় একটা আঘাত করল। সেই এক আঘাতেই লুটিয়ে পড়ল প্রহরীটি। তার আর জ্ঞান ফিরবে কি না কে জানে!
সেই প্রহরীর কোমর থেকে তার তলোয়ারটি খুলে নিয়ে জয়পাল এগিয়ে গেল রাজকুমার দৃঢ়র ঘরের দিকে।
সন্ধের সময় এই রাজকুমারের সঙ্গে খানিকটা কথা হয়েছিল।
জয়পাল আত্মপরিচয় দিয়ে রাজকুমারকে তার মায়ের বার্তা জানিয়েছিল।
এখন সে ভিতরে এসেই বলল, “রাজকুমার, চলুন!”
দৃঢ় ঘুমিয়ে ছিল, আচমকা জেগে উঠে সে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারল না। সব যেন সে ভুলে গেছে। সে অবিশ্বাসের সুরে জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যাব!”
জয়পাল বলল, “চলুন, দেরি করার সময় নেই। আপনি মুক্তি পেতে চান না? এখন কেউ আমাদের বাধা দিতে পারবে না!”
দৃঢ় যেন খানিকটা ভয় পাওয়া গলায় বলল, “এই দুর্গে অনেক প্রহরী, আমি চক্ষে দেখতে পাই না। বাইরে বেরিয়ে তাদের সঙ্গে লড়াই করব কী করে! তোমার সঙ্গে গেলে আমরা দু’জনেই মরব।”
জয়পাল বলল, “আপনি ভয় পাচ্ছেন কুমার? এখন গভীর রাত, বাইরে অন্ধকার। আপনি তো অন্ধকারের মধ্যে ঠিকই দেখতে পান। আপনি লড়তে পারবেন না? সিংহের বাচ্চা সিংহই হয়। আপনি কার ছেলে সেটা ভেবে দেখুন। আপনার মাকে উদ্ধার করবেন না? আপনার বাবার হত্যার শোধ নেবেন না?”
দৃঢ় বলল, “এখন গভীর রাত? অন্ধকার? আমি যে এখানে দিন আর রাতের কোনও তফাতই দেখতে পাই না। হ্যাঁ, আমি অন্ধকারের মধ্যে যেতে পারব। কিন্তু জয়পাল, দিনের আলো ফুটলে কী হবে? তখন যে আমার চোখে খুব ব্যথা করবে?”
জয়পাল বলল, “দিনের আলোয় আমি আপনার চোখ বেঁধে দেব। আমি আপনার হাত ধরে নিয়ে যাব। আর দেরি করবেন না, চলুন।”
দু’জন দুটি খোলা তলোয়ার হাতে নিয়ে সাবধানে বাইরেটা একবার দেখে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল ঘর থেকে। কোথাও কোনও শব্দ নেই। জয়পাল মনে মনে হিসেব করে নিয়েছে যে শুম্ভ-নিশুম্ভর সারা দুর্গটা একবার ঘুরে এখানে আসতে এখনও খানিকটা দেরি আছে, তার আগেই প্রবেশদ্বারের কাছে পৌঁছতে হবে।
রাজকুমার দৃঢ় অন্ধকারের মধ্যে বেশ সাবলীলভাবে এগিয়ে যেতে লাগল। জয়পাল তার হাত টেনে বলল, “অত তাড়াতাড়ি নয়, কুমার। হঠাৎ কেউ এসে পড়লে বিপদ হবে।”
দৃঢ় বলল, “আমার মা কোন দিকে আছেন? আমি শীঘ্র সেদিকে যেতে চাই। কতদিন মাকে দেখিনি। আমি আর ধৈর্য ধরতে পারছি না।”
জয়পাল বলল, “আপনার মায়ের কাছে যাওয়া এখনই কি ঠিক হবে? ওদিকে পাহারা অনেক বেশি। আমরা ধরা পড়ে যেতে পারি।”
দৃঢ় বলল, “মাকে উদ্ধার না করে আমি একা পালাব? তুমি বলছ কী জয়পাল?”
জয়পাল বলল, “আমার মনে হয়, আগে আপনার একা চলে যাওয়াই ভাল, আপনি বাইরে গিয়ে দলবল জুটিয়ে একটা সৈন্যবাহিনী তৈরি করবেন। তারপর উদ্ধার করবেন আপনার মাকে। সেটাই ভাল হবে।”
দৃঢ় বলল, “মাকে ছেড়ে আমি একা কিছুতেই যাব না। একবার অন্তত মায়ের সঙ্গে দেখা করতেই হবে!”
জয়পাল বলল, “চলুন, ওদিকটায় কিছুটা এগিয়ে দেখা যাক।”
তৃতীয় প্রহরী এখনও উপুড় হয়ে পড়ে আছে। কোনও সাড়াশব্দ নেই। জয়পাল আর দৃঢ় তাকে পার হয়ে চলে এল
দ্বিতীয় প্রহরীটিকে জয়পাল চিত করে ফেলে গিয়েছিল, এখন সে উপুড় হয়ে আছে। জয়পাল আবার তার গলা চেপে ধরে একটা ঝাঁকুনি দিল। ওর এক্ষুনি জ্ঞান ফেরার সম্ভাবনা নেই।
প্রথম প্রহরীটির কাছে আসতেই দূরে পাওয়া গেল এক জোড়া ভারী জুতোর শব্দ। জয়পাল বলল, “সর্বনাশ! শুম্ভ-নিশুম্ভ এর মধ্যে এদিকে এসে গেছে।” শুম্ভ-নিশুম্ভ প্রত্যেকটি প্রহরীর কাছে এসে দেখে যে, তারা জেগে আছে কি না। সুতরাং ওরা দু’জন এখানে আসবেই। জয়পাল মুহূর্তে একটা উপায় ভেবে নিল।
পাশেই দুর্গের একেবারে ওপরের গম্বুজে ওঠার সিঁড়ি। রাজকুমার দৃঢ়কে সে টেনে এনে দাঁড় করিয়ে দিল সেই সিডির পাশে। তারপর নিজে সে মশালটার কাছে বসে গেল প্রহরী সেজে। কম্বলটা দিয়ে মাথা ঢেকে রাখল অনেকখানি। শুম্ভ-নিশুম্ভ এসে তাকেই এখানকার প্রহরী মনে করবে।
দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে সে গুনগুনিয়ে একটা গান গাইতে লাগল।
জুতো খটখটিয়ে শুম্ভ-নিশুম্ভ নামের সেই দৈত্যের মতন দুই প্রহরী এসে দাঁড়াল জয়পালের পাশে। জয়পাল যেন ওদের দেখতেই পায়নি এমনভাবে গান গেয়েই চলল।
শুম্ভ হেঁড়ে গলায় হেসে বলল, “কী হে, খুব শীত করছে বুঝি? গান গাইলে শীত কমে?”
জয়গাল তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে নমস্কার জানিয়ে বলল, “আজ্ঞে না, তবে গান গাইলে ঘুম আসে না।”
নিশুম্ভ বলল, “ভাল, ভাল, গানের চর্চা করা ভাল, তবে আগে কোনওদিন তোমাকে গান গাইতে শুনিনি!”
শুম্ভ বলল, “এদিককার অন্য দু’জন প্রহরীর খবর কী? তাদের কোনও সাড়াশব্দ নেই কেন! তারা বুঝি ঘুমিয়েছে?”
জয়পাল উত্তর দিল, “না, না, তাদের সঙ্গে এই তো একটু আগেই আমার কথা হল। আমরা তিনজনেই মাঝে-মাঝে জায়গা বদলাবদলি করছি, তাতে গা গরম হয়!”
নিশুম্ভ বলল, “ভাল, ভাল, শীতের মধ্যে গা গরম করা ভাল। ওরা জেগে আছে, তা হলে আর ওদিকে গিয়ে কী হবে?”
শুম্ভ বলল, “তা ঠিক, তা হলে ওদিকে আর যাবার দরকার নেই। আর একটা চক্কর দিয়ে আসি, তারপর না হয় ওদের সঙ্গে বসা যাবে। ওহে, তুমি গান করো, আমরা চলি।”
শুম্ভ আর নিশুম্ভ পেছন ফিরে কয়েক পা মাত্র গেছে, এমন সময় অজ্ঞান প্রথম প্রহরীটি জ্ঞান ফিরে পেয়ে উঃ উঃ শব্দ করে উঠল।
সঙ্গে সঙ্গে শুম্ভ আর নিশুম্ভ আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, “কিসের শব্দ হল, কে উঃ বলল?”
জয়পাল মরিয়াভাবে বলল, “আজ্ঞে আমি। হঠাৎ আমার পেটটা ব্যথা করে উঠল, আমার অম্লশূল আছে কি না। তাই যখন তখন পেট ব্যথা করে।”
শুভ বলল, “অম্লশূল? বেশি করে তেতো খাবে। উচ্ছে আর করলা।”
জয়পাল বলল, “নিশ্চয়ই খাব। আপনি বলছেন যখন।”
শুম্ভনিশুম্ভ দ্বিতীয়বার যাবার জন্য পা তুলতেই প্রথম প্রহরী আবার চেঁচিয়ে উঠল, “উঃ, মরে গেলাম! এক বিশ্বাসঘাতক আমার গলা টিপে ধরেছিল!”
শুম্ভ আর নিশুম্ভ সঙ্গে সঙ্গে তলোয়ার উঁচিয়ে ধরল।
জয়পাল বুঝতে পারল যে আর উপায় নেই। সে এক লাফে চলে এল গম্বুজের সিঁড়ির পথে। রাজকুমার দৃঢ়র হাত ধরে দ্রুত উঠতে লাগল ওপরের দিকে।
এই সিঁড়িটা উঠে গেছে গম্বুজের মাথায়। সেখানে ছোট্ট একটা গোল ছাদ। তারপর আর কিছু নেই। একদিকে খাড়া দেওয়াল নেমে গেছে, অনেক নীচে বয়ে যাচ্ছে একটা নদী। এখান থেকে পালাবার কোনও পথ নেই, শুম্ভ আর নিশুম্ভ ধেয়ে এলে তাদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই করতে হবে। বাঁচার একমাত্র পথ শুম্ভ আর নিশুম্ভকে হত্যা করা।
জয়পাল বলল, “কুমার, আমরা কিছুতেই ধরা দেব না, যদি মরতে হয়, যুদ্ধ করেই মরব।”
রাজকুমার দৃঢ় বলল, “ওরা তো মোটে দু’জন। তবে ভয় কিসের?”
শুম্ভ প্রথমে উঠে এসে জয়পালকে বলল, “ওরে শয়তান, তুই আমাদের চোখে ধুলো দিবি ভেবেছিস!”
জয়পাল তার তলোয়ার তুলে শুম্ভকে বাধা দিয়ে বলল, “ইনি আমাদের যুবরাজ। আমাদের প্রিয় মহারাজ মহাচূড়ামণির পুত্র। যুবরাজকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে।”
শুম্ভ হা-হা করে হেসে উঠে বলল, “এখন আবার মিথ্যে কথা বলে আমাদের ভোলাতে চাস! আমাদের যুবরাজের নাম তীক্ষ্ণ, তা কে না জানে!”
নিশুম্ভ এই সময় এসে আক্রমণ করল দৃঢ়কে। চারজনে লড়ে যেতে লাগল সেই ছোট্ট ছাদে। তলোয়ারের ওপর তলোয়ারের আঘাতে ছিটকাতে লাগল আগুনের স্ফুলিঙ্গ। শুম্ভ আর নিশুম্ভ খুব সাহসী আর অভিজ্ঞ যোদ্ধা। রাজকুমার দৃঢ় বহুদিন হাতে তলোয়ার ধরেনি। জয়পাল প্রাণপণে লড়ে গিয়েও সামলাতে পারছে না। এ-পক্ষের পরাজয় নিশ্চিত।
আরও দু’জন প্রহরী উঠে এল গম্বুজের চূড়ায়।
জয়পাল জানে, ধরা দিলে তাদের চরম অত্যাচার ও অপমান সহ্য করতে হবে। তারপর মৃত্যু। মরতে যদি হয়ই তা হলে শুধু শুধু এদের হাতে ধরা দেওয়া কেন?
সে চিৎকার করে বলে উঠল, “রাজকুমার, আমরা জিততে পারব না। নদীতে লাফ দাও!”
সে আগে ঠেলে দিল রাজকুমার দৃঢ়কে, তারপর নিজে ঝাঁপিয়ে পড়ল অন্ধকার অতলে।
শুম্ভু আর নিশুম্ভ দৌড়ে এসেও তাদের ধরতে পারল না। প্রাচীর ধরে ঝুঁকে ও দেখা গেল না সেই দু’জনকে।