১৫
আকাশে ঘনিয়ে এসেছে মেঘ, শনশন করে বইছে বাতাস। আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত এক ঝলক বিদ্যুৎ চোখ ধাঁধিয়ে দিয়ে গেল।
গ্রামের সব লোক ঘর ছেড়ে বাইরে এসে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
একটু আগে তারা যাঁকে ভেবেছিল বনদেবী, তিনি হয়ে গেলেন এ-রাজ্যের মহারানি। আবার সেই মহারানিকে ধরে নিয়ে যাবার জন্য এসেছে সৈন্যবাহিনী। এসব কী যে ব্যাপার হচ্ছে, তারা বুঝতেই পারছে না।
কয়েকজন সৈন্যের হাতে দাউ-দাউ করে জ্বলছে মশাল, তারা কিছু-কিছু বাড়িতে আগুন লাগাতে যাচ্ছিল, এখন সেই মশালগুলো তারা ফেলে দিল মাটিতে।
চম্পক সৈন্যদের একটু দূরে সরে যাবার হুকুম দিয়ে এগিয়ে এল তলতাদেবীর কাছে। তারপর বলল, “তোমার জন্য একটা সাদা ঘোড়া এনেছি। তুমি সাদা ঘোড়া পছন্দ করো। এখন আমার সঙ্গে রাজধানীতে চলো।”
তলতাদেবী কয়েক পলক তাকিয়ে রইলেন চম্পকের মুখের দিকে। চম্পক আগে তাঁকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করত, এখন ‘তুমি’ বলছে। তার মুখে কোনও দুশ্চিন্তার ছাপ নেই, বরং বেশ খুশি-খুশি ভাব।
তলতাদেবী জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি সত্যিই আমায় রাজধানীতে ফিরে যেতে দেবে?”
চম্পক বলল, “অবশ্যই। আমি নিজে তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাব।”
তলতাদেবী আরও বিস্মিত হয়ে বললেন, “তুমিও রাজধানীতে যাবে?”
চম্পক কৌতুক করে বলল, “হ্যাঁ। রাজধানী আমাকে ডাকছে!”
তারপর সে ব্যস্ত হয়ে বলল, “তুমি পালিয়ে গিয়ে আমাদের খুব মুশকিলে ফেলেছিলে। মহারানিকে সঙ্গে না নিয়ে তো রাজধানীতে ফেরা যায় না। অনেক সময় নষ্ট হল। যাই হোক, আর দেরি করা নয়, চলো, এখনই যাত্রা করা যাক।”
তলতাদেবী ঘোড়ায় উঠে বসলেন।
চম্পক তলোয়ারটা কুড়িয়ে নিয়ে বলল, “এটাও তোমার হাতে রাখো। তুমি তো আর বন্দিনী নও, রাজধানীতে তুমি ঢুকবে বিজয়িনীর বেশে।”
চম্পক নিজের ঘোড়ায় চেপে তলতাদেবীর পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই সৈন্যরা চেঁচিয়ে উঠল, “জয়, মহারাজ চম্পকের জয়! জয় মহারানির জয়!”
তলতাদেবী মুখ ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি এর মধ্যেই মহারাজ হয়ে গেছ নাকি?”
চম্পক কৌতুকের সুরে বলল, “সবাই তো তাই বলছে। সেই জন্যই তো রাজধানীতে গিয়ে সিংহাসনে বসতে যাচ্ছি।”
তলতাদেবী বললেন, “এক দেশে দু’জন মহারাজ কি থাকতে পারে? মহারাজ মহাচূড়ামণির কথা কি তুমি ভুলে গেছ? তিনি হয়তো এখনও ঘুমিয়ে আছেন, কিছুই জানেন না, কিন্তু কোনও একসময় তো জেগে উঠবেন!”
চম্পক বলল, “ওঃ হো, তুমি জানো না? মহাচূড়ামণি আমার নাম শুনেই ভয় পেয়ে সিংহাসন ত্যাগ করেছে!”
তলতাদেবী ভুরু তুলে বললেন, “তাই নাকি? মহারাজ ভয় পেয়েছেন?”
চম্পক বলল, “শুধু তাই নয়! সে কাপুরুষটা এখন কাকুতি-মিনতি করছে, যাতে তাকে আমি প্রাণে না মারি। ভাবছি, ওকে নিয়ে কী করা যায়!”
তলতাদেবী বললেন, “যুদ্ধ না করেই মহারাজ সিংহাসন ছেড়ে দিলেন?”
চম্পক বলল, “আমি পাহাড়ি সৈন্যদের নিয়ে রাজধানী আক্রমণ করব শুনেই তো তার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হয়ে গিয়েছিল! চেহারাটাই বিরাট। বুদ্ধি তো কিছু নেই। এবার গিয়ে ওকে দিয়ে আমার পা টেপাব।”
তলতাদেবী চুপ করে গিয়ে দ্রুত চিন্তা করতে লাগলেন। মহাচূড়ামণি মহাবীর, বিনা যুদ্ধে তিনি সিংহাসন ছেড়ে দেবেন, এটা বিশ্বাসই করা যায় না। চম্পক এসব বানাচ্ছে। কিন্তু চম্পক কোন্ সাহসে রাজধানীতে যাচ্ছে সঙ্গে এই ক’টা সামান্য সৈন্য নিয়ে? বিদ্রোহের কথা জেনেও মহাচূড়ামণি কেন ছুটে আসেননি এদিকে?
একটু পরে তলতাদেবী আবার জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি তা হলে এ-রাজ্যের মহারাজ হয়েছ! তা হলে তো আমি আর এখানকার মহারানি থাকতে পারি না!”
চম্পক বলল, “কেন থাকবে না? রাজা বদল হলেই যে রানি বদল হবে, তার কি মানে আছে? তোমার মতন রানি কি আর পাওয়া যাবে? এ-রাজ্যের রানি হিসেবে তোমাকেই মানায়। তুমিই হবে আমার রানি!”
তলতাদেবী বললেন, “এসব তুমিই নিজে-নিজে ঠিক করেছ? আমি রাজি হব কি না, তা নিয়ে তোমার মাথাব্যথা নেই!”
চম্পক বলল, “তুমি রাজি হবে না কেন? তোমার তো কোনও ক্ষতি হচ্ছে না! তুমি যেমন মহারানি ছিলে তেমনই থাকবে। শুধু তোমার স্বামী বদলে যাবে। ওই হঁতকো মহাচূড়ামণিটার চেয়ে আমাকে তোমার বেশি পছন্দ হবে না? আমি জানি, তুমি এতে রাজি হবে।”
তলতাদেবী জিজ্ঞেস করলেন, “যদি রাজি না হই?”
চম্পক বলল, “তা হলে অবশ্য তোমার খানিকটা মুশকিল হবে। তুমি রাজি না হলে প্রথমেই মেরে ফেলা হবে তোমার ছেলে দুটিকে। তোমাকে মত বদলাবার জন্য সময় দেওয়া হবে তিন মাস। ততদিন তুমি থাকবে কারাগারের অন্ধকারে। তারপর তুমি যদি আবার রাজি হও…”
তলতাদেবী মুখটা ফিরিয়ে নিলেন। ক্রোধে তাঁর দু’চোখ জ্বলছে।
তবু তিনি ভাবছেন, এখন আর চম্পককে কোনও কথা বলে লাভ নেই। আগে রাজধানীতে পৌঁছনো যাক, তখন জানা যাবে আসলে কী ঘটেছে।
তলতাদেবী আর চম্পকের পেছনে-পেছনে ধুলো উড়িয়ে আসছে পাহাড়ি সৈন্যবাহিনী। এরা ভাল করে যুদ্ধ বিদ্যা শেখেনি, এদের কাছে বেশি অস্ত্ৰ-শস্ত্রও নেই। মহাচূড়ামণির সৈন্যদের সামনে এরা দাঁড়াতেই পারত না। তবু কোন্ সাহসে চম্পক এদের নিয়ে বিদ্রোহ করেছিল?
চম্পক আরও কিছু বলবার চেষ্টা করলেও তলতাদেবী শুনলেন না। চম্পকের দিকে তাকাতেও তাঁর ঘৃণা হচ্ছে।
খানিকবাদে দেখা গেল দূরে রাজধানীর প্রাচীর। সেখানে বহু লোকের কোলাহল শোনা যাচ্ছে। নগরীর প্রধান সিংহদ্বারটি খোলা। উঁচু একটা বেদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে একজন মানুষ, স্থিরভাবে সামনের দিকে তাকিয়ে। তার গায়ে একটি রেশমের উত্তরীয় জড়ানো।
চম্পক বলল, “ওই দ্যাখো মহারানি। রাজধানীর মানুষ আমাকে রাজা হিসেবে বরণ করার জন্য অধীর ভাবে অপেক্ষা করছে।”
তলতাদেবী কোনও উত্তর দিলেন না।
চম্পক আবার বলল, “আমাদের নামে ওরা জয়ধ্বনি দিচ্ছে, শুনতে পাচ্ছ?”
তলতাদেবী তবু চুপ করে রইলেন।
চম্পক আবার বলল, “আগেকার রাজা মহাচূড়ামণিকে ওরা বন্দী করেছে!”
তলতাদেবী এবার আর কথা না বলে পারলেন না। মুখ ফিরিয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “এ খবর তুমি কোথায় পেলে? মহারাজ মহাচূড়ামণিকে যে বন্দী করা হয়েছে, তা তুমি কী করে জানলে?”
চম্পক বলল, “আজ খুব ভোরেই দূতের মুখে সব সংবাদ পেয়েছি। আগে থেকেই সব ব্যবস্থা করা ছিল। আমাকে কি কাঁচা লোক পেয়েছ। আগে থেকে সব ব্যবস্থা পাকা না করে কি আমি এমনি এমনি রাজধানীতে আসছি! ওই যে উঁচু বেদীর ওপর দাঁড়ানো মানুষটিকে কি চিনতে পারছ? উনি হচ্ছেন রাজপুরোহিত ছম্ভী। উনি আমাকে চিঠি লিখেছেন, তোমাকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রাজধানীতে চলে আসার জন্য। ছম্ভী নিজে রাজধানীর সব প্রজাদের সামনে আমার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেবেন।”
শেষের কথাটা শুনেও যেন বিশ্বাস করতে পারলেন না তলতাদেবী, তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “কী বললে? ছম্ভী কী করবেন?”
চম্পক আবার জোর দিয়ে বলল, “ছম্ভী নিজে আমার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেবেন!”
এবার তলতাদেবী অজানা আশঙ্কায় কেঁপে উঠলেন। ছম্ভী মহাবীর মহাচূড়ামণিকে বন্দী করেছেন, এও কি সম্ভব? মহাচূড়ামণিকে প্রজারা যেমন ভয় করে, তেমন ভালও বাসে। তবে সাঙ্ঘাতিক একটা কিছু অশুভ ঘটনা নিশ্চয়ই ঘটেছে। ছম্ভী চম্পককে কখনও পছন্দ করতেন না, আজ তিনিই চম্পককে সিংহাসনে বসাতে চান, এ কি সম্ভব?
তলতাদেবী বললেন, “মূর্খ, ছম্ভী তোমার মাথায় রাজমুকুট পরাবেন, তুমি এটা বিশ্বাস করেছ?”
চম্পক সারা মুখে হাসি ছড়িয়ে বলল, “ছম্ভীর সঙ্গে আমার গোপন চুক্তি হয়ে আছে অনেক আগেই। তোমরা তার কিছুই জানো না। ছম্ভীর পরামর্শেই তো আমি বিদ্রোহ করেছি। মহাচূড়ামণি ফাঁদে পড়েছে, এখন আমিই রাজা। ছম্ভী আমার মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেবেন, তার বদলে আমি ছম্ভীর ভাই দেবককে সেনাপতির পদ দেব। ছম্ভীও সারাজীবন থাকবেন মহা সুখে।”
তলতাদেবী বললেন, “মহাচূড়ামণি যদি ধরা পড়ে থাকেন, তা হলে রাজধানীতে আমি এখন কিছুতেই যাব না।”
তিনি ঘোড়ার মুখটা ফিরিয়ে খুব জোরে ছুটিয়ে দিলেন। চম্পক তাঁকে ধরতে গিয়েও কিছুটা গিয়ে ফিরে এল, অন্য কয়েকজন অশ্বারোহী ধেয়ে গেল তলতাদেবীর দিকে।
এদিকে রাজপুরোহিত ছম্ভী সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে আছেন চৌরাস্তার মাঝখানে উঁচু বেদীটার ওপর। তাঁর পাশে রয়েছে ছোট রাজকুমার তীক্ষ্ণ। এ-রাজ্যের অশ্বারোহীরা সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে বেদীটা ঘিরে। কয়েকজন সৈন্য সারা রাজধানীতে ডঙ্কা বাজিয়ে ঘুরছে। সেই ডঙ্কাধ্বনির অর্থ হল, সমস্ত প্রজাদের জমায়েত হতে বলা হচ্ছে এই চৌরাস্তায়।
দলে দলে প্রজারা এসে মিলিত হচ্ছে সেখানে। কী ব্যাপারে তাদের ডাকা হচ্ছে, তা তারা কিছুই জানে না। এখন দুর্ভিক্ষ কিংবা দাবানলের ভয় নেই। বিদেশী সৈন্যদের রাজধানী আক্রমণের কোনও আশঙ্কা নেই, কারণ বর্ষাকালে যুদ্ধ হয় না। তা হলে কিসের জন্য এই জরুরি ডাক?
প্রজারা সবাই রাজপুরোহিত ছম্ভীর দিকে উৎসুক ভাবে তাকিয়ে আছে। কিন্তু ছম্ভী কোনও কথাই বলছেন না। প্রজারা প্রথম-প্রথম ছম্ভীর প্রতি সম্ভ্রম দেখিয়ে চুপ করে ছিল। তারপর ফিসফিস করে কথাবার্তা শুরু করল। তারপর গুঞ্জন। তারপর কোলাহল।
ছম্ভী তবু চুপ করে চেয়ে আছেন। যেন তিনি ধ্যান করছেন। রাজকুমার তীক্ষ্ণও ছটফট করছে না। ওই বয়েসের অন্য যে-কোনও ছেলে এতক্ষণ এক জায়গায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকত না, কিংবা রাজবংশের ছেলেরা অতি অল্প বয়েস থেকেই অনেক কিছু শিখে যায়।
এক সময় প্রজারা দেখল, বাইরের দিক থেকে এক সৈন্যবাহিনী আসছে নগরের দিকে। এরা কারা? এদের সামনে রয়েছে দুই অশ্বপৃষ্ঠে এক পুরুষ ও এক রমণী। দূর থেকে তাদের ঠিক চেনা যাচ্ছে না।
বাইরের সৈন্যবাহিনী আর-একটু কাছে আসতেই ছম্ভী তাঁর ডান হাতটি উঁচু করে তুললেন। সঙ্গে-সঙ্গে সমস্ত কোলাহল থেমে গেল।
ছম্ভী এবার নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে উদাত্ত গলায় বললেন, “প্রিয় প্রজাগণ, তোমাদের আজ ডেকেছি এক বিশেষ কারণে। এ রাজ্যে এক মহা সঙ্কট উপস্থিত। বন্যা, দুর্ভিক্ষ, দাবানলের চেয়েও আরও বড় বিপদ।”
এবার তিনি একটু থেমে প্রজাদের মুখের দিকে তাকালেন। সবাই উদগ্রীব হয়ে আছে, অনেকের মুখে ভয়ের ছায়া পড়েছে।
ছম্ভী আবার বললেন, “এই দুঃসংবাদ দেবার ভার আমার ওপর পড়েছে। অন্য সময় এ-দেশের রাজা, পরমবীর মহাচূড়ামণিই এই বেদী থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিংবা উদ্যানবাটি থেকে তোমাদের দর্শন দেন। আজ তোমাদের মনে হতে পারে, মহারাজের পরিবর্তে আমি তোমাদের সামনে এসেছি কেন? তার কারণ,এই মুহূর্তে এই রাজ্যের কোনও রাজা নেই। এ-সংবাদ দিতে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে, আমি অতিকষ্টে চক্ষের জল আটকে রেখেছি, কারণ, আমার ওপরে এখন খুবই গুরু দায়িত্ব! তোমাদের পরমপ্রিয় মহারাজ মহাচূড়ামণি আর বেঁচে নেই। তাঁকে খুন করা হয়েছে। এক কুৎসিত ষড়যন্ত্রে তিনি নিহত হয়েছেন।”
সমস্ত প্রজারা হাহাকার করে উঠল। সেই মুহূর্তে সেখানে নেমে এল শোকের ছায়া। কেউ-কেউ বুক চাপড়ে কাঁদতে লাগল। কেউ-কেউ চিৎকার করে বলল, “মহারানি? আমাদের প্রিয় মহারানি কোথায়? তাঁর কিছু হয়নি তো?”
ছম্ভী বললেন, “মহারাজকে কারা হত্যা করেছে তা আগে শোনো। এই ষড়যন্ত্রের মূলে আছে দু’জন। তোমাদের প্রাক্তন সেনাপতি চম্পক আর মহারাজের প্রিয় মহিষী তলতাদেবী। মহারাজকে সরিয়ে তলতাদেবী সিংহাসনে বসতে চান। সেই জন্য তিনি চম্পককে দিয়ে বিদ্রোহ করিয়েছেন। ওই দ্যাখো, সেই চম্পক আর তলতাদেবী বিদ্রোহী সৈন্যদের নিয়ে রাজধানী দখল করতে আসছে। এখন তোমরাই ঠিক করো, তোমরা কি এই দুই ষড়যন্ত্রীকে ক্ষমা করবে?”
প্রজারা বজ্রকণ্ঠে চেঁচিয়ে বলল, “না, না, না!”