ইস্কুলের গল্প
সন্দেশ পত্রিকার চতুর্থ বর্ষ প্রথম সংখ্যা থেকে দশম বধ ষষ্ঠ সংখ্যা (বৈশাখ ১৩২৩ থেকে আশ্বিন ১৩২৯) এই সাড়ে দু’বছরে প্রকাশিত সুকুমার রায়ের গল্পগুলির মধ্যে আঠারােঠি গল্প এই পর্যায়ে নির্বাচন করা হয়েছে। বিষয়বস্তুর দিকে নজর রেখেই এই পর্যায়ে নামকরণ করা হয়েছেইস্কুলের গল্প’। এই গল্পগুলি প্রকাশের সময় সুকুমারই ছিলেন সন্দেশের সম্পাদক।
১৯৪০ সালের ২২ নভেম্বর এম. সি. সরকার এ্যাণ্ড সন্স কলকাতা- পাগলা দাশু ও অন্যান্য কয়েকটি গল্প নিয়ে পাগলা দাশু’ শিরােনামে সুকুমার রায়ের একটি গল্প-সংকলন প্রকাশ করেন। সুপ্রভা রায়ের অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ এই বইয়ের একটি ভূমিকা লিখে দেন। পরবর্তী পৃষ্ঠায় রবীন্দ্র-হস্তাক্ষরে ভমিকাটি মুদ্রিত হল। এই সংকনের মােট বাইশটি গল্পের মধ্যে চোদ্দোটি গল্প ‘ইস্কুলের গল্প’ পর্যায়ে দেওয়া হল। এ ছাড়া দ্রিঘাংচু, সবজান্তা দাদা, হিংসুটি, বাজে গল্প ১ ও ২ (বাজে গল্প ৩ এই সংস্করণে মুদ্রিত হয় নি) যতীনের জুতো, পেটুক হাসির গল্প এই সাতটি গল্প আমাদের প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি বর্তমান খণ্ডে অন্যান্য গল্প’ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
১৯৪৬ সালের ২১ জুন ‘পাগলা দাশু’র সিগনেট প্রেস, কলকাতা, প্রকাশিত সংস্করণে—দ্রিঘাংচু, হিংসুঠি, বাজেগল্প ১ ও ২, হাসির গল্প ও হেশােরাম হুশিয়ারের ডায়েরি এই পাঁচটি গল্প বজিত হয় এবং কালাচাঁদের ছবি, গোপালের পড়া ও ভুল গল্প এই তিনটি গল্প যুক্ত হয়ে মােট কুড়িটি গল্প নিয়ে ‘পাগলা দাশু’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। ঐ সংস্করণে গল্পের সঙ্গে যে ছবিগুলি অঙ্কিত তা অধিকাংশ শ্রীসত্যজিৎ রায়ের আঁকা (দুটিমাত্র সুকুমার রায়ের)। সিগনেট সংস্করণে রবীন্দ্রনাথের লেখা ভূমিকাটি বজিত হয়।
আনন্দ পাবলিশার্স প্রকাশিত সুকুমার সাহিত্য সমগ্রতে ‘পাগলা দাশু পর্যায়ে মূলত সিগনেট সংস্করণকেই অনুসরণ করা হয়েছে। তবে শ্রীসত্যজিৎ রায়ের আঁকা ছবিগুলি বর্জন করে লেখকব আঁকা ছবিগুলিই ছাপা হয়েছে। এম, সি, সরকার প্রকাশিত সংস্করণের দ্রিঘাংচু ও হিংসুটি গল্প দুটি ‘বহুরূপী’র এবং বাজে গল্প ১ ও ২, হাসির গল্প ও হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি এই গল্পগুলি অন্যান্য গল্প’ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
‘পাগলা দাশুর প্রথম সংস্করণের চোদ্দোটি গল্পের সঙ্গে কালাচাদের ছবি (প্রথম সংস্করণে নেই, সিগনেট সংস্করণে আছে) গল্পটি আমরা বর্তমান পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত করেছি। বাকি তিনটি গল্পের—পালােয়ান ও বিষ্ণুবাহনের দিবিজয় এই দুটি প্রথম সংস্করণে বা সিগনেট সংস্করণে ছিল না। আনন্দ পাবলিশার্সের সুকুমার সাহিত্য সমগ্রতে এই দুটি গল্প অন্যান্য গল্প” পর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে। ইস্কুলের গল্প’ পর্যায়ের প্রথম গল্প ধােড়া সুধীর সন্দেশে প্রকাশিত হওয়ার পর আর কোনো সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয় নি। গল্পগুলির বিন্যাসে সন্দেশে প্রকাশিত কালানুকমই অনুসৃত হয়েছে। গল্পের সঙ্গে আঁকা ছবিগুলিও স্বয়ং লেখকের।
গল্পগুলির ‘পাঠ’-এ প্রায় অবিকৃত ভাবে সন্দেশ’-এ মুদ্রিত পাঠকেই অনুসরণ করা হয়েছে প্রচলিত পাঠের সঙ্গে তার অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর পার্থক্য আছে। এ সম্পর্কে বিস্তৃত আলােচনা ভুমিকায় দ্রষ্টব্য।