আহ্বান

আমার তরে পথের ‘পরে কোথায় তুমি থাক
           সে-কথা আমি শুধাই বারে বারে।
কোথায় জানি আসনখানি সাজিয়ে তুমি রাখ
           আমার লাগি নিভৃতে একধারে।
বাতাস বেয়ে ইশারা পেয়ে গেছি মিলন-আশে
শিশিরধোয়া আলোতে-ছোঁয়া শিউলিছাওয়া ঘাসে,
খুঁজেছি দিশা বিলোল জল-কাকলিকলভাসে
         অধীরধারা নদীর পারে পারে।
আকাশকোণে মেঘের রঙে মায়ার যেথা মেলা,
তটের তলে স্বচ্ছ জলে ছায়ার যেথা খেলা,
অশথশাখে কপোত ডাকে, সেথায় সারাবেলা
       তোমার বাঁশি শুনেছি বারে বারে।
কেমনে বুঝি আমারে খুঁজি কোথায় তুমি ডাক,
        বাজিয়া উঠে ভীষণ তব ভেরি।
শরম লাগে, মন না জাগে, ছুটিয়া চলি নাকো,
        দ্বিধার ভরে দুয়ারে করি দেরি।
ডেকেছ তুমি মানুষ যেথা পীড়িত অপমানে,
আলোক যেথা নিবিয়া আসে শঙ্কাতুর প্রাণে,
আমারে চাহি ডঙ্কা তব বেজেছে সেইখানে
       বন্দী যেথা কাঁদিছে কারাগারে।
পাষাণ ভিত টলিছে যেথা ক্ষিতির বুক ফাটি
ধুলায়-চাপা অনলশিখা কাঁপায়ে তোলে মাটি,
নিমেষ আসি বহুযুগের বাঁধন ফেলে কাটি,
       সেথায় ভেরি বাজাও বারে বারে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *