আশ্চর্য চিঠি – সুকুমার রুজ
রাত দেড়টা। তবুও পল হ্যারির চোখে ঘুম নেই। অথচ অপরিমেয় ক্লান্তিতে তিনি আর চেয়ারে সোজা হয়ে বসে থাকতে পারছেন না। ঘাড় হেলিয়ে দিয়েছেন পেছনদিকে। পা দুটো টানটান করেছেন টেবিলের তলা দিয়ে। চোখ বুজে চেষ্টা করছেন ক্লান্তি দূরে সরাতে।
শরীরের আর দোষ কী! একটানা প্রায় তেরোঘন্টা ঘাড় নীচু করে বসে ব্যতিক্রমী চিঠিখানার পাঠোদ্ধারের চেষ্টা করছেন পল। প্রায় নব্বই শতাংশ উদ্ধার করেই ফেলেছেন। সামান্যই বাকি। সেটুকু উদ্ধার করতে পারলেই সারা পৃথিবী জুড়ে আলোড়ন উঠবে। এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের অংশীদার হবেন তিনি। এরকম এক উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে কি ঘুম আসে!
আজ রাতের মধ্যেই পুরো চিঠিখানির পাঠোদ্ধার করার সংকল্প নিয়েছেন পল। তাই নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, ইনফ্রা-রেড ফোটোগ্রাফির সাহায্যও নিলেন। কিন্তু তেমন ফল হল না। একে তো দু-হাজার বছর আগের চলিত-লাতিন হরফ। তার ওপর টানা স্মল লেটারে লেখা। ক্যাপিটাল লেটারের বালাই নেই, কোনো যতিচিহ্ন নেই। বেশ কয়েক জায়গায় কাটাকুটিও রয়েছে। তা ছাড়া বেশ কিছু জায়গায় কালি উঠে গিয়ে অস্পষ্ট হয়ে গেছে লেখা।
এমনটা হওয়ারই কথা। নেহাত চিঠিখানা বার্চগাছের কাঠের নরম অংশ দিয়ে তৈরি পাতের ওপর লেখা। ‘লেখা’ না-বলে ‘খোদাই করা’ বলাই ভালো। নরম কাঠের পাতে ধাতব নিব দিয়ে চেপে লেখা হয়েছে। তার ওপর সেকালের বিশেষ ধরনের আঠা মেশানো কালি দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে দাগগুলো।
এ চিঠি ধবংসস্তূপ থেকে পাওয়া গেলেও যথেষ্ট ভালো ভাবে সংরক্ষিত ছিল; তাই পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। সংরক্ষিত থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ ধবংসস্তূপটা আসলে মাটির তলায় চাপা পড়ে থাকা ভিনড়োাল্যান্ডার দুর্গ। যা ছিল সে-যুগে রোম-সাম্রাজ্যের প্রতিরক্ষার এক বড়োসড়ো ঘাঁটি। পৃথিবী বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক রবিন চার্লে মাটি খুঁড়ে ওই দুর্গ উদ্ধার করার পর তেমনটাই দাবি করেছেন।
রবিন চার্লের দাবি অমূলক নয়। কেন-না, ধবংসাবশেষ থেকে পাওয়া গেছে রোমানদের যুদ্ধাস্ত্র, ব্যালিস্টা গোলা, সামরিক কাজে ব্যবহৃত নানারকম জিনিসপত্র এবং কাঠের বাক্সে রাখা চামড়ায় মোড়া বেশ কিছু কাঠের পাতের চিঠি ও দলিল।
চিঠি ও দলিলের লিপি উদ্ধার করার জন্য ফিলোলজিস্ট পল হ্যারির আমন্ত্রণ পাওয়াটা যথেষ্ট যুক্তিসংগত। কারণ, চেস্টারহোমের ইন্টারন্যাশনাল ফিলোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির অ্যানসিয়েন্ট লাতিন স্ক্রিপ্ট বিভাগের প্রধান হলেন পল হ্যারি। এক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে যোগ্য ফিলোলজিস্ট আর কে হতে পারে! ইতিমধ্যে তিনি তেতাল্লিশখানা চিঠি ও দলিলের মধ্যে একচল্লিশখানার লিপি উদ্ধার করে ফেলেছেন। মাঝারি সাইজের একখানা চিঠি খুবই অস্পষ্ট, তাই ফেলে রেখেছেন। এখন যে চিঠিখানির লিপি উদ্ধারে উনি ব্যস্ত, সেটি সবচেয়ে ব্যতিক্রমী চিঠি। অন্যগুলির চেয়ে আয়তনে বড়ো। দু-মিলিমিটার পুরু, নয় সেন্টিমিটার চওড়া, প্রায় কুড়ি সেন্টিমিটার লম্বা কাঠের পাতে টানা চল্লিশ লাইন লেখা রয়েছে। চিঠির বিষয়ও সম্পূর্ণ আলাদা।
অন্যান্য দলিল বা চিঠিগুলি হল সামরিক নির্দেশ আদান-প্রদান সংক্রান্ত। কিন্তু এ চিঠিতে খোদাই করা রয়েছে এক অভূতপূর্ব বৈজ্ঞানিক সংকেত-সূত্র। যে সংকেত-সূত্র বাস্তবে রূপায়িত হলে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ তথা প্রাণীকুলের খাদ্য-সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ধবংসস্তূপের খনন কাজ এখনও শেষ হয়নি। আরও মাসদুয়েক চলতে পারে। তাই স্তূপের আশপাশে বেশ কয়েকখানা তাঁবু খাটানো হয়েছে। সেগুলোর একটার মধ্যে পল হ্যারি তাঁর কাজ করে চলেছেন। এই গভীর রাত্রিতে অন্যান্য তাঁবুগুলোর আলো নেভানো। সারাদিনের পরিশ্রমের পর সকলে বিশ্রাম নিচ্ছে। তাঁবুর বাইরে বার্চ, বলসম, ম্যাপল গাছগুলোও ঘুমোচ্ছে। শুধু কিছুটা দূরে দূরে উঁচু পোস্টের মাথায় সার্চলাইটগুলো প্রখর চোখে জেগে রয়েছে।
পল হ্যারি না-ঘুমোলেও, পেছনে ঘাড় হেলিয়ে, সামনে পা ছড়িয়ে চোখ বুজে চেয়ারে বসে রয়েছেন। টেবিলে ল্যাম্প জ্বলছে। সামনে অদ্ভুত চিঠিখানা। সারাদিনের ক্লান্তিতে পলের একটু ঝিমুনি এসেছিল বোধহয়! অসমান জায়গায় নড়বড়ে চেয়ারে দেহের ভার একদিকে হেলে পড়ায় চেয়ার উলটে পড়ে যাচ্ছিল আর কী! পড়ে যাওয়া রুখতে হাত-পা ছুড়লেন পল। হাঁটুর ধাক্কায় টেবিল নড়ে উঠল। নিজের পতন আটকালেও টেবিলে বসে থাকা ল্যাম্পটার পতন আটকাতে পারলেন না। ল্যাম্প ভেঙে চুরমার। অন্ধকারে ডুবে গেলেন তিনি।
এখন আর কী করা যায়। রবিন চার্লে ও তাঁর সঙ্গীসাথি এখন ঘুমিয়ে রয়েছেন অন্য তাঁবুতে। এই রাত্রিবেলা ল্যাম্পের জন্য তাঁদেরকে বিরক্ত করা উচিত হবে না। এমন ভেবে পল হ্যারি এখন তাঁর কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হলেন। তাহলে এখন একটু বিশ্রাম নেওয়া যাক। কাল সকালে উঠে আবার মাথা ঘামানো যাবে। এটাই মনস্থির করে, পল অন্ধকারের মধ্যেই পাশে ক্যাম্বিশ ঘাটে শুয়ে পড়লেন কম্বল-মুড়ি দিয়ে।
কিন্তু ঘুম আসতে চাইছে না। শুয়ে শুয়ে পল ভেবে চলেছেন চিঠিখানির কথা। চিঠির প্রথমদিকটা ও শেষাংশটা বেশ স্পষ্ট। উদ্ধার করতে কষ্ট হয়নি। চিঠিখানি লিখেছেন লুসিয়াস নামের একজন। তিনি একজন সামরিক ডাক্তার। সালপিসিয়া লেপিদিনা নামের কোনো এক মহিলাকে ‘স্যালুটেম’ সম্বোধন করে এই চিঠি।
চিঠির প্রথমদিকে সৌজন্য প্রকাশ ও দু-একটা মামুলি কথার পরেই মূল বিষয়—’ভেষজ পদ্ধতিতে প্রাণীদেহে এমন এক বৈশিষ্ট্য বা গুণ উৎপন্ন করা সম্ভব ; যাতে প্রাণীরা উদ্ভিদের মতো নিজেদের শরীরের মধ্যেই নিজের খাদ্য তৈরি করে নিতে পারে।’ সম্ভবত সবুজ উদ্ভিদের ক্লোরোফিল জাতীয় কোনও রঞ্জক পদার্থের গুণাবলির কথা বলা হয়েছে।
চিঠির মাঝামাঝি জায়গার লাইনগুলোতে রয়েছে ভেষজ উপাদানগুলির নাম ও তার প্রয়োগ পদ্ধতি। কিন্তু কয়েকটা লাইন এত অস্পষ্ট যে, ইনফ্রা-রেড ফোটোগ্রাফিও কাজে আসছে না। কাল সকালে আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবেন। পুরো চিঠিখানির ভাষা উদ্ধার করতেই হবে, এমন সংকল্প করে পল চোখ বন্ধ করলেন।
বোধহয় পল ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। কিন্তু এক খসখস শব্দে ঘুম ভেঙে গেল ওঁর। কান ও মন সজাগ হয়ে উঠল। কিন্তু চোখকে কাজে লাগাতে পারছেন না। তাঁবুর ভেতর অন্ধকার যেন আরও গাঢ় হয়েছে। পল ভাবেন—তাঁবুর ভেতর কেউ ঢুকেছে নাকি। কোনও বন্য প্রাণী ঢুকে পড়া অসম্ভব নয়। কাছেই জঙ্গল। তবে, জঙ্গলে ভয়ংকর প্রাণী নেই। তাই রক্ষে। পল ইচ্ছাকৃত কাশির শব্দ করেন। জন্তু-জানোয়ার হলে পালাবে। কিন্তু খসখস শব্দটা হয়েই চলেছে। তবে কি তাঁবুতে কোনো মানুষ ঢুকেছে! তা হলেও হতে পারে। কোনও মতলবাজ হয়তো ওই মূল্যবান চিঠি চুরি করার জন্য ঢুকেছে। কেন-না, দিনেরবেলায় চিঠিখানি প্রথম দেখে কয়েকলাইন পড়ে পল উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছিলেন। আবেগ সংযত না-করতে পেরে অন্যান্যদের সামনে বলে ফেলেছিলেন চিঠির বিষয়বস্তুর কথা। হয়তো তাদের মধ্যে কেউ লোভ সামলাতে পারেনি!
পল ভয় ও আশঙ্কায় উঠে বসেন। কান পেতে তাঁবুতে কারও অস্তিত্ব বোঝার চেষ্টা করেন। খসখস শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই।
এবার তিনি সাহসে ভর করে খাট থেকে নামেন। অনুমান করে এগোন টেবিলের কাছে। চেয়ারে একবার হোঁচট খেলেও সামলে নেন। টেবিলে হাত বাড়ান।
যাক! টেবিলের জিনিসপত্র সব ঠিকঠাক আছে। তবে, অবাক হন একটা কথা ভেবে। যদ্দুর মনে পড়ছে শোওয়ার আগে টেবিলটা অগোছালো ছিল। এখন যেন কেউ টেবিলের জিনিসপত্র গোছগাছ করে রেখেছে! তাহলে নিশ্চয় ঘরে কেউ ঢুকেছিল! একটা আলোর ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হত। এমন ভেবে তাঁবুর পর্দার কাছে এগোন। পর্দা তুলে দেখতে আগ্রহী হন অন্য কোনো তাঁবুতে আলো জ্বলছে কিনা! পর্দা তুলতেই হাড় হিম করা বাতাস ঢোকে তাঁবুর ভেতর। বাইরে প্রবল বাতাস বইছে। কোনো রাতচরা পাখি বিকট শব্দে ডেকে ওঠে। আচমকা সে শব্দে পল আঁতকে ওঠেন। তাঁবুর ভেতর মুখ ফেরাতেই চমকে ওঠেন। বাইরের ল্যাম্প পোস্ট থেকে আসা আবছা আলোয় দেখা যায় চেয়ারে বসে নিবিষ্ট মনে লিখে চলেছে একজন। শব্দ হচ্ছে খসখস খসখস। লম্বা আলখাল্লা পরা দীর্ঘদেহী একজন বৃদ্ধ মনে হল। মাথায় টাক, লম্বা দাড়ি। খুবই শীর্ণকায়।
এবার বাস্তবিকই খুব ভয় পেয়ে যান পল। ঝটিতি তাঁবুর বাইরে বেরিয়ে পড়েন। দ্রুতপায়ে একটা সার্চলাইটের তলায় গিয়ে দাঁড়ান। প্রচুর আলো ওঁর মনের ভয়কে আস্তে আস্তে শুষে নেয়। উনি ভাবতে চেষ্টা করেন—দিনেরবেলায় এধরনের কোনো বৃদ্ধকে দেখেছেন কিনা! নাহ! এমন বিদঘুটে চেহারার কাউকে দেখেছেন বলে মনে পড়ছে না। তবে কি ভুল দেখলেন! কোনো মানুষ হলে নিশ্চয় এতক্ষণ বেরিয়ে পালাত কিংবা আক্রমণ করত। কিন্তু তেমন কিছু তো…! তবে কি…! না ওসব উনি বিশ্বাস করেন না। তাহলে নিশ্চয় মনের ভুল। ঘুমের মধ্যে ওই চিঠির কথা। চিঠির লেখক ও প্রাপকের কথা অবচেতনে ভাবছিলেন বলেই হয় তো…!
এবার পল সাহস সঞ্চয় করে আবার তাঁবুর দিকে এগোন। উঁচু করা পর্দা তুলে ধরেন। ভেতরে আলো ঢোকে। না, আর তো দেখা যাচ্ছে না সেই বৃদ্ধটাকে। চেয়ার খালি। তাঁবুর ভেতর লুকোনোর মতো জায়গাও নেই! তবে কি অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে! সেটাও সহজে সম্ভব নয়। তাঁবুর চারিধার শক্তপোক্ত করে আটকানো ; যাতে বন্যপ্রাণী না-ঢুকতে পারে। তা হলে নিশ্চয় চোখের ভুল। এমন ভেবে পল ক্যাম্বিশ খাটের কাছে চলে যান। উত্তেজনা, ভয়, সন্দেহ মিলেমিশে এক অদ্ভুত অনুভূতি ওঁর মনে। একটু ইতস্তত করে খাটে উঠে আবার শুয়ে পড়েন। খসখস শব্দটা আর নেই। তবুও কান খাড়া করে চোখ বুজে শুয়ে থাকেন পল।
একসময় ভোর হয়। ঘুম ভাঙে প্রকৃতির। তাঁবুর অদূরে বার্চ ও বলসমগাছ দুটো যেন জেগে উঠেছে সকলের আগে। বার্চের ডালে কোথাও একটা রেনপাখি লুকিয়ে বসে আপন খেয়ালে প্রভাতি সংগীত গেয়ে চলেছে। বলসমগাছের পাতার ঝোপে বসে কোনো এক চিকাডিপাখি। তার কালোটুপি-পরা মাথা একটু দুলিয়ে ঠোঁট উঁচু করে টানাটানা সুরে ডেকে চলেছে চি-কা-ডি চি-কা-ডি…। যেন বলছে—ওয়েক আপ প্লিজ—ওয়েক আপ প্লিজ…।
পল উঠে বসেন। ভোরের আলো তাঁবুর ভেতরের অন্ধকারকে হঠিয়ে দিয়েছে। পলের চোখ টেবিলে। যাক সব ঠিকঠাক আছে। ওই যে অদ্ভুত চিঠিখানা। তার পাশে পেনসিল। ইরেজার, শার্পনার, লেন্স অন্যান্য যন্ত্রপাতি। শুধু চেয়ারটা টেবিল থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে একা। যেন টেবিলের সঙ্গে খুনসুটি করে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। চেয়ারখানা দেখে কাল রাতের সেই টাকমাথা দীর্ঘকায় বৃদ্ধর কথা মনে পড়ে। আপন মনেই হেসে ওঠেন পল। তিনি যে এমন ভিতু, তা আগে জানতেন না। পায়ে পায়ে উনি চেয়ারের কাছে যান। চেয়ার সরিয়ে এনে টেবিলের পাশে বসেন। স্বাভাবিকভাবেই চোখ যায় দীর্ঘ চিঠিখানার দিকে। আজ যেভাবেই হোক এ চিঠির মর্মোদ্ধার করতেই হবে। এই ভেবে টেনে নেন চিঠিখানা। চিঠিতে চোখ বুলিয়েই চমকে ওঠেন। আশ্চর্য! চিঠির অস্পষ্ট অক্ষরগুলো জ্বলজ্বল করছে। নতুন করে কেউ লিখে দিয়েছে যেন! এখন চিঠির মাঝখানের লাইনগুলোও স্পষ্ট পড়া যাচ্ছে—প্ল্যানটোনাইস অ্যামিকাস দাও ওয়াইল্ট মিহি ডোয়েস্ট ডি ভেইন অসট্রিয়া…।
হতবাক হয়ে যান পল। এ কী করে সম্ভব। দু-হাজার বছর আগে লেখা চিঠি…..। তবে কী কাল রাতের সেই বৃদ্ধটা…! চিঠির শেষে পত্রলেখকের নামটাও কেমন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যেন সদ্য খোদাই করে কালি লাগানো হয়েছে শব্দ তিনটিতে—ভেল ফ্রেটার! লুসিয়াস।
আশ্চর্য! ‘লুসিয়াস’ নামটা আগে থেকেই চিঠিতে লেখা ছিল। কিন্তু ‘ভেল ফ্রেটার!’ অর্থাৎ ‘বিদায় ভাই!’ একথাটা লেখা ছিল না তো!
পল হতবাক হয়ে চেয়ারে বসে থাকেন। এমন সময় বাইরে অ্যাসপেনগাছটাতে একঝাঁক কোয়েৎজাল পাখি উড়ে এসে বসে। তাদের লম্বা সবুজ পালকে ভোরের আলো চিকচিক করতে থাকে। পেটের দিকের টুকটুকে লাল রং যেন আরও খোলতাই হয়েছে। পাখিগুলো অকারণে কিচিরমিচির করে কত কথা বলতে থাকে।