আরম্ভ
এ গল্প উত্তম বা প্রথম পুরুষে আমি লিখব না। এর মধ্যে আমি কোথাও নেই। আমি এই কাহিনির তথাকথিত কোনও চরিত্র নই। কিন্তু গল্পলেখক হিসেবে কিঞ্চিৎ ভূমিকা করার প্রয়োজন আছে।
নির্মেদ পাঠক এবং নির্মেদিনী পাঠিকাদের কাহিনির সুবিধার্থে, দুয়েকটি মোটা তথ্য নিবেদন করি। মাতাল নিয়ে গল্প, তাই মদের ব্যাপারটা অল্প বলে নিচ্ছি। কেউ যেন ভাববেন না, প্রচুর মদ্যাসক্তির জন্যে এসব জিনিস আমি ধরে ধরে জেনেছি। তা নয়, প্রথম যৌবনে অধুনালুপ্ত ঐতিহাসিক রাজস্ব পর্ষদের বিলীয়মান আবগারি শাখায় কয়েক বছর কাজ করে কিঞ্চিৎ জেনেছিলাম।
ছোট গল্পের পরিসরে বিস্তারিত বলা যাবে না। আমাদের এই আখ্যানের কুশীলবেরা বাংলা খান। বাংলা মানে দিশি মদ, এ যাত্রা দিশি মদের কথাই বলছি।
দিশি মদ, বাংলা মদ নামেই সমধিক প্রচলিত। বাংলাদেশেও শুনেছি, পশ্চিমবঙ্গেও তাই সরকারি দিশি মদের পরিচয় বাংলা বলে। অবশ্য এর বাইরে বেআইনি, বেসরকারি চোলাই দিশি মদ আছে, যাকে গ্রাহকেরা ভালবেসে চু বলে।
সরকারি দিশি মদকে যে বাংলা মদ বলা হয় এ বিষয়ে আমার মনে একটা খটকা আছে। দিশি মদ এই বাংলাতেই বাংলা মদ, বিহারে কিন্তু বিহার মদ নয়। মাদ্রাজে মাদ্রাজ মদ বা তামিল মদ নয়।
আরেকটা কথা উল্লেখ করে রাখি, আমাদের দেশে যেসব বিলিতি মদ তৈরি হয় সরকারি পরিভাষায় সেও দিশি মদ, কানট্রি মেড ফরেন লিকার, সংক্ষেপে (সি এম এফ এল) আর বাংলা মদ হল কানট্রি লিকার, দিশি মদ।
বাংলা মদের দোকানের আরেকটা বিশেষত্ব হল এসব দোকানের কোনও নাম থাকে না। সাইনবোর্ড পর্যন্ত থাকে না। কোথাও কদাচিৎ সাইনবোর্ড থাকলে তাতে দোকানের কোনও নাম দেয়া থাকে না। সেখানে লেখা থাকে, মদের দোকান, ভেন্ডার রামচন্দ্র সাউ কিংবা শ্যামনাথ সাধুখাঁ।