(বিষ্ণু দে; শ্রদ্ধাস্পদেষু)
আমার উজ্জ্বল ভালবাসায় অবশেষে আপনাকেই জড়িয়েছি।
চৈতন্যের নির্জন প্রকোষ্ঠে যখন নিহত মানুষের ঘণ্টাধ্বনি বাজে –
পুনর্বার ফিরে যাই আপনার কবিতায়। কি পেয়েছি
বলতে চান? গোল চাঁদের স্নিগ্ধতায় বৃক্ষের সজীবতায় নক্ষত্রের নিপুণ
কারুকাজে
আমার ব্যাকুল যৌবন বাধা পড়েছে; য্যানো মধ্যরাতে রাজার দুলালী তার
সমস্ত অন্তর্বাস খুলে দেয়–দাঁড়ায় শস্যহীন দগ্ধপ্রান্তরে!
কুয়াশার পাংশুপটে যে বালক মিশে গেছে; তাকে আমার
কুশল বলিনি কখনো। নষ্ট মৃত্তিকার সোণামণি; যার শরীরে
বারুদের প্রবল ঘ্ৰাণ পাওয়া যাবে; তাকেও ভালবাসা আশীর্বাদ
দেইনি। সম্পন্ন প্রেমিকের মতো সকল অস্থিরতা পলাতক। ভীষণ আঁধারে
নীলাভ বাহু, নেচেছে দিনরাত। কোথাও পারিনি যেতে। সম্রাটের নিখাদ
আত্মহত্যা অর্থাৎ আমাকে দিয়েছে প্রাণ। সন্ন্যাসীর মতো ঘরে বসে তারে
আমি খুঁজি; খুঁজি এখানে ওখানে; মানুষের সরলতা শান্তি প্রেম
মমতা অপার বিশ্বাসে
পাওয়া যাবে? আমিতো সঠিক পেয়েছি আমার আত্মীয়ের হৃদয়ে!
বিশাল বিষাদ নেই; য্যানো এক মহান প্রেমিক আমাদের আশেপাশে
ঘুরছেন অলৌকিক ক্রাচে-নিজস্ব ভঙ্গিতে। বিষণ্ণ প্রাঙ্গণ এখন হয়ে
যাচ্ছে সবুজ শ্যামল–শ্যামলতায় ঢাকছে গৃহাঙ্গন; হলদে তজনী খেলে
বুকের নিভাঁজ অঙ্গনে। আমার লোকালয় বহুদূরে; শহরতলীর শেষ
প্রান্তে। তব, আমি বৃষ্টির মতোন সঙ্গীহীন চলে আসি; ফেলে
আসি বিধ্বস্ত জনপদ। হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়; এইতো বেশ
চলেছেন আজীবন সঙ্গী আমার! মাঝে মাঝে বড় বেশী খেয়ালী;
বুঝি তাই
টেনে নেই বূকের গভীরে। আমার ভালবাসা
শুধুমাত্র স্মৃতি সত্তায় নয়; সমগ্র নিবিড়তায়। এখন যেখানেই যাই
সঙ্গে যায় মহান প্রেমিক–তাকে বলি “তুমিই আমার জীবন; তুমিই
আমার আশা”
২৫/৩/৭২