আমাবস্যার রাত – সুচন্দ্রা চক্রবর্তী

অমাবস্যার রাত – সুচন্দ্রা চক্রবর্তী

– ‘সুমি তাড়তাড়ি করো।লেট হচ্ছে কিন্তু এবার!’

– ‘এই তো অভ্র,আর যাস্ট পাঁচ মিনিট ওয়েট করো প্লিজ,আমার হয়ে গেছে।’

– ‘আসলে বুঝতেই তো পারছ গ্রামের রাস্তা,তাই বেশি রাত করতে চাইছি না।এমনিতেই এখন চারটে বাজে,গ্রামে ঢুকতে ঢুকতে ন’টা বাজবে।’

অভ্রদীপ আর সুমনার বিয়ে হয়েছে মাসদুয়েক হল।কর্মসূত্রে অভ্রদীপ কলকাতায় থাকে মা বাবাকে সাথে নিয়ে।ওদের দেশের বাড়ি বর্ধমানের এক অখ্যাত গ্রাম চন্দ্রপুরে।বিয়ের পর থেকেই অভ্রদীপের বাবা মা পলাশবাবু আর শিলাদেবী বারবার ছেলেকে বলছেন সে যেন নতুন বৌকে নিয়ে দেশের বাড়ি থেকে ঘুরে আসে,কিন্তু কাজের ব্যস্ততায় অভ্রের সময় হয়ে উঠছিল না।এতদিন পর অফিসে ছুটি পেয়েছে অভ্র,তাই রওনা দিচ্ছে চন্দ্রপুরের দিকে,সুমনাকে সঙ্গে নিয়ে।এমনিতেই গ্রামের কাঁচা রাস্তা,সেভাবে আলো নেই,তার ওপর পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে,তাই অভ্র তাড়া দিচ্ছে সুমনাকে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই রেডি হয়ে বেরোলো অভ্র-সুমনা বাড়ির গাড়ি নিয়ে।ড্রাইভার যদিও আছে,তবু অভ্রের ইচ্ছা ও নিজেই ড্রাইভ করে নিয়ে যাবে সুমনাকে।

গাড়ি চলতে লাগল।মহানগরীর ব্যস্ত রাস্তার ওপর দিয়ে চলতে লাগল গাড়ি,আর গুনগুন করে গল্প করতে লাগল সদ্য বিবাহিত দুই যুবক-যুবতী।ধীরে ধীরে আলোকজ্জ্বল সরণি পেরিয়ে কাঁচা লালচে রাস্তা ধরল গাড়ি।আজ অমাবস্যা।এতক্ষণ আলোর দাপটে অমাবস্যার মায়াজাল চোখে পড়েনি ওদের,কিন্ত লালচে কাঁচা রাস্তা ধরতেই অমাবস্যার মোহময়ী রূপ হাতছানি দিতে লাগল ওদের।সুমনার হঠাৎ মনে হল,এ যেন রাত নয়,অপার রহস্যময়ী এক নারী,যে কেবলই আহ্বান করছে তাকে নিজের দিকে,এক অজানা শক্তিতে আকর্ষণ করছে নিজের দিকে।

– ‘ওভাবে কি দেখছ সুমি?জানলার বাইরে?’ অভ্র হাসিমুখে প্রশ্ন করল তাকে।

– ‘জানো অভ্র,শহরে বড়ো হয়েছি তো ছোট থেকে,অমাবস্যার অন্ধকার কথাটা শুনেছি,কিন্তু নিজের চোখে দেখার সুযোগ হয়নি সেভাবে।কে বলে যে শুধু জ্যোৎস্নার রাতই সুন্দরী?অমাবস্যার অন্ধকারের সৌন্দর্যও কি কম?’

– ‘বাহ,তুমি তো বেশ প্রকৃতিপ্রেমী!’ বাঁকা হেসে বলল অভ্র।

– ‘হুম,তা তুমি বলতেই পারো!’ একগাল হাসল সুমনা।

জনবসতিহীন নিস্তব্ধ রাস্তার ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে চলেছে অভ্রদের গাড়ি,রাস্তার দুপাশে ঘন জঙ্গল।রাত তখন সবে আটটা,অথচ চারপাশের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে যেন গভীর রাত।

– ‘আর ঘন্টাখানেক,তার পরেই চন্দ্রপুর ঢুকব আমরা,’অভ্র বলল।

– ‘আচ্ছা অভ্র,দেশের বাড়িতে কে কে আছে গো?’

– ‘সে তো তুমি গেলেই দেখতে পাবে ডার্লিং,’ অভ্র মুচকি হেসে বলল,’ওটা না হয় সিক্রেট থাক!’

– ‘ধ্যাত,তোমার সবেতেই খালি ইয়ার্কি,’ সুমনা অভ্রর বাঁ হাতটা ধরে বলল,’বলোই না অভ্র!’

 অভ্র হেসে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল,হঠাৎই সাদা শাড়ি পরিহিতা এক নারী চলে এল ওদের গাড়ির সামনে।কোনোরকমে ব্রেক কষল অভ্র।

  তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নামল অভ্র আর সুমনা।সাদা শাড়ি পরিহিতা একটি যুবতী পড়ে গেছে গাড়ির ধাক্কায়।সেভাবে কিছু হয়নি তার,কেবল পড়ে গিয়ে হাত পা ছড়ে গিয়েছে।ওরা তাড়তাড়ি তুলল তাকে।

 – ‘আপনার লাগেনি তো?’ উদ্বিগ্ন সুমনা প্রশ্ন করল।

– ‘এইভাবে কেউ রাস্তা দিয়ে হাঁটে?একটু দেখে চলাফেরা করবেন তো!’ অভ্র বলল।

– ‘আপনারা এত ব্যস্ত হবেন না,’ যুবতী হেসে বলল,’আমি ঠিক আছি।’

– ‘কিন্তু এমন নির্জন রাস্তায় আপনি একা একা কি করছেন?’

– ‘ধুস,কি যে বলেন,কোথায় নির্জন!এখানে তো দিব্যি লোক বাস করে,ওই দেখুন!’ বলেই মেয়েটি আঙুল দেখাল।ওর আঙুল বরাবর ওরা তাকিয়ে দেখল,একটা ক্ষীণ আলো দেখা যাচ্ছে অনেক দূরে।স্মিত হেসে মেয়েটি বলল,’ওখানেই আমার বাড়ি।’

 – ‘আচ্ছা চলুন আমরা আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি,’ অভ্র বলল,’আপনি ইনজিওরড হয়েছেন,একা একা এতটা যেতে পারবেন না।’

– ‘আচ্ছা বেশ,চলুন তবে।’

 মেয়েটিকে অনুসরণ করতে এগোতে লাগল ওরা।প্রায় দশমিনিট হাঁটার পর ওরা পৌঁছাল।

  এক বিশাল রাজবাড়ি।চারিদিক আলোয় ঝলমল করছে।

 – ‘এই আমাদের বাড়ি,আসুন,ভেতরে আসুন আপনারা।’

 মেয়েটি বসার ঘরে নিয়ে এল ওদের দুজনকে।সেখানে এক প্রৌঢ় বসেছিলেন।

 – ‘ইনি আমার বাবা সূর্যনারায়ণ চৌধুরী।আর বাবা,এনারা হলেন অভ্র আর সুমি,’ বলেই সবটা খুলে বলল মেয়েটি।

– ‘আপনি আমাদের নাম জানলেন কিভাবে?আমরা তো আপনাকে বলিনি!’অবাক গলায় প্রশ্ন করল অভ্র।

– ‘হুম,আমায় সরাসরি বলেননি,কিন্তু রাস্তায় আসার পথে আপনারা নিজেদের একে অপরের নাম ধরে ডাকছিলেন,তাই জানতে পারলাম।’ স্মিত হাসল মেয়েটি।

– ‘আচ্ছা এই ব্যাপার,তবে আপনার একটু ভুল হয়েছে!’

– ‘কি রকম?’

– ‘আমার নাম অভ্রদীপ,আর ওর নাম সুমনা,আমরা একে অপরকে সংক্ষিপ্ত নামে ডাকি,আপনি সেটাই শুনেছেন।’

– ‘আচ্ছা বাবা,বুঝলাম।’সূর্যবাবু হেসে বললেন,’তোমরা অনেক দূর থেকে জার্নি করে এসেছ,ক্লান্ত আছ।এখন বোসো তো!আর অরু মা,তুই বা কেমন বল দিকি!ওদের জন্য কিছু খাবারের ব্যবস্থা কর!’

– ‘না না আঙ্কেল,আমাদের নিয়ে ভাববেন না,আমরা ঠিক আছি একদম।’ অভ্র বলল,’আর বাই দ্য ওয়ে,আপনার নাম কি?আপনার নামটাই তো জানা হল না!’

– ‘আমি অরুণিমা সেন।মা বাবা অরু বলে ডাকে।’

– ‘সেন?’

– ‘হ্যাঁ বাবা,আমার মেয়েটা আসলে বিবাহিত,কিন্তু আমি আমার কাছেই রেখেছি অন্য কারণে।সেসব অনেক গল্প,পরে বলা যাবে তোমাদের,কেমন?’

– ‘আচ্ছা আঙ্কেল,তাই হবে।’

– ‘হ্যাঁ গো বাবা,মা কই?এসে থেকে মা কে দেখছি না তো!’

– ‘গেস্টরুমটা পরিষ্কার করছিলাম রে,অভ্রদীপ আর সুমনা তো আজ ওই ঘরেই থাকবে,সেইজন্য!’ এক প্রৌঢ়া এসে বললেন।

– ‘তা বেশ করেছ মা!’অরুণিমা সুমনাদের দিকে ফিরে বলল,’এই হল আমার মা,সান্ত্বনা চৌধুরী।’

– ‘আচ্ছা,কিন্তু একটা জিনিস বুঝলামা না আন্টি,আপনি তো একবারও বসার ঘরে আসেন নি,তাহলে আপনি আমাদের কথা জানলেন কিভাবে?’

– ‘রান্নাঘর থেকে বাবা।রান্না করছিলাম,আর তখনই তোমরা এলে।আসলে রান্নাঘর থেকে বসার ঘরটা পুরো দেখা যায়,সব কথাও শোনা যায়।’

– ‘বাহ,এ তো চমৎকার ব্যাপার!’ সুমনা বলল।

– ‘কিন্তু আন্টি,আমরা রাতে এখানে থাকতে পারব না,এখান থেকে এখনো একঘন্টা যেতে হবে আমাদের!’

– ‘কোথায় যাবে?চন্দ্রপুর?’

– ‘হুম,আমরা চন্দ্রপুরই যাব,কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন বলুন তো?’ হতবাক হয়ে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল অভ্র-সুমনা।

 – ‘অত অবাক হোয়োনা তোমরা,’ সূর্যবাবু হেসে বললেন,এখান থেকে ঘন্টাখানেক দূরে মানুষের বাসযোগ্য জায়গা ওই চন্দ্রপুরই আছে।’

– ‘মানে?’ সুমনা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

– ‘সুমি তুমি জানোনা,আসলে চন্দ্রপুরের আশেপাশে অনেক দূর পর্যন্ত কোথাও কোনো বসতি নেই,চন্দ্রপুর একটা বিচ্ছিন্ন গ্রাম বলা যায়,সেটাই বলতে চেয়েছেন ওনারা।’

– ‘ও আচ্ছা।’

– ‘কিন্তু আঙ্কেল,আমাদের প্লিজ রাতে এখানে থাকতে বলবেন না,আসলে দেশের বাড়ির সকলে বসে আছে নতুন বৌকে দেখবে বলে…’

– ‘তা বেশ তো,কাল সকালটা হোক,তারপরেই না হয় যেও তোমার বৌকে নিয়ে,’ সান্ত্বনাদেবী বললেন।

 অভ্রদীপ কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না,কিন্তু সুমনার সে রাতে আর রাস্তায় বের হতে ইচ্ছা করছিল না,তাই সুমনার কথায় শেষমেশ রাজি হল অভ্র।

 সুমনা আর অভ্র রাতে ডিনার করার পর অরুণিমা আর সান্ত্বনাদেবী বললেন,’অভ্র,তুমি গেস্টরুমে চলে যাও বাবা,সুমনা একটু পরে যাবে।’

 – ‘কিন্তু কেন আন্টি?’

– ‘কেন আবার!তোমার বউ কি পরে আছে দেখেছ?একখানা ভারী বেনারসি!ওটা পরে ঘুমোতে পারবে ও?সেজন্যই একটা হালকা শাড়ি দিচ্ছি ওকে,যেটা পরে ও আরাম পাবে।’

 সুমনাকে একরকম জোর করেই অন্দরমহলে নিয়ে গেলেন অরুণিমা আর সান্ত্বনাদেবী।এরপর অরুণিমার ঘরে ওকে এনেই ঘরের দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিলেন মা মেয়ে।

 – ‘এ কি আপনারা হঠাৎ দরজাটা…’.

– ‘বলব মা,সবটা বলব।আগে তুমি বসো দেখি!’ বলেই সুমনাকে পালঙ্কে বসিয়ে দিলেন ওরা।এরপরেই হঠাৎ সুমনার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিল অরুণিমা,তারপরেই ফোনটা ঘাঁটতে লাগল।

– ‘ একি!কি করছেন টা কি আপনি!আপনাদের উদ্দেশ্য মোটেও সুবিধার লাগছে না কিন্তু আমার!’

– ‘আমাদের উদ্দেশ্য ভালো না খারাপ,সেটা তো একটু পরেই টের পাবে তুমি!’

– ‘মানে?দেখুন আমি কিন্তু এবার চিৎকার করব,কি চান কি আপনারা?’

– ‘বেশ,চিৎকার করবে,আগে এই ভিডিওটা দেখে নাও দিকি!’ বলেই সুমনার মোবাইলটা ওর হাতে ধরিয়ে দিল অরুণিমা।

 মোবাইলে একটা ভিডিও চলছে।ভিডিওতে অভ্র,আর অভ্রের মা বাবাকে দেখা যাচ্ছে।কিছু একটা কথোপকথন চলছে ওদের মধ্যে।সাউন্ডটা বাড়িয়ে নিল সুমনা।এরপর ভালোভাবেই স্বামী আর শ্বশুর শ্বাশুড়ির কথোপকথন শুনতে পেল সুমনা।হতবাক হয়ে গেল ও।তিরিশ মিনিটের ভিডিও ছিল সেটা।ভিডিওর কথোপকথনের সারমর্ম এটাই,যে অভ্র আর তার মা বাবা সুমনাকে খুন করতে চায়।বিয়ের পর বারবার দাবি করা সত্ত্বেও সুমনা বাপের বাড়ি থেকে মোটা অঙ্কের পণ আনতে অস্বীকার করেছে যে!সুমনা এও জানতে পারল ভিডিওটা থেকে,যে আসলে আজ অভ্র সুমনাকে চন্দ্রপুরে নিয়ে যেত না,চন্দ্রপুর আসার ঠিক আগেই একটা নদী আছে।সে নদীর দিকে সচরাচর কেউ আসেনা,কারণ সেদিকটা জনবসতিহীন।অভ্রদের প্ল্যান ছিল,সুমনাকে খুন করে সেই নদীর জলে ভাসিয়ে দেবে।

  গোটা ভিডিওটা দেখে শিউরে উঠল সুমনা।হতাশ হয়ে মেঝেতে বসে পড়ল সে।

 – ‘বোন,এটা ভেঙে পড়ার সময় নয়!যত তাড়তাড়ি সম্ভব তোমায় ওই শয়তানটার হাত থেকে পালাতে হবে,নইলে ও তোমায় ছেড়ে দেবে না!’চিন্তিত গলায় বলল অরুণিমা।

 – ‘কিন্তু একটা কথা বলুন তো,এই ভিডিওটা তো আমার মোবাইলে ছিল না,আপনারা এটা কোথায় খুঁজে পেলেন?’

– ‘আহ,এখন এসব ভাবার সময় নয় সুমনা!’ সান্ত্বনাদেবী বললেন,’এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পালাও!’

 সুমনার তখন কথা বলার মতো অবস্থা ছিল না।অরুণিমা কোনোরকমে ওকে রাজবাড়ির বাইরে নিয়ে এল।অভ্র তখন গেস্টরুমে।বাইরে একটা গাড়ি দাঁড়িয়েই ছিল,আর ড্রাইভারও ছিল,অরুণিমা সুমনাকে বলল,’ভয় নেই।এ আমাদের রাজবাড়িরই গাড়ি,আর ও শ্যামলাল,আমাদের পুরোনো ড্রাইভার।’

  ড্রাইভার সে রাতে সুমনার বাপের বাড়ির গেটেই নামিয়ে দিল তাকে।তখন রাত প্রায় শেষ হতে চলেছে।সুমনা গাড়ি থেকে নেমে বলল,’আপনি এতটা দূর কষ্ট করে এলেন আমায় পৌঁছে দিতে,ভেতরে আসুন না!’

 – ‘না দিদিমণি,আমার কাজ ছিল নিরাপদে আপনাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া।আমার কাজ শেষ।আমি আসছি।’ শ্যামলাল গাড়ি নিয়ে চলে গেল।

 পরেরদিন সকালে নিউজ চ্যানেল খুলেই চমকে উঠল সুমনা।চন্দ্রপুর থেকে ঘন্টাখানেক দূরে এক জঙ্গলে এক যুবকের মৃতদেহ  পাওয়া গেছে।তার আইডি কার্ড দেখে জানা গেছে,তার নাম অভ্রদীপ জানা।কলকাতার এক বেসরকারি অফিসে সে কর্মরত ছিল।তার মৃত্যুর কোনো সঠিক কারণ পাওয়া যায়নি,শুধু দেখা গেছে,চোখদুটো তার ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে।সম্ভবত ভয়েই তার মৃত্যু হয়েছে বলেই অনুমান করছে পুলিশ।

  এই ঘটনার অনেকদিন পর একবার সেই রাজবাড়ির খোঁজে গিয়েছিল সুমনা।কিন্তু কোথায় রাজবাড়ি!সেখানে শুধুই ভগ্নাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।চন্দ্রপুর গ্রামে সে গিয়েছিল এই রাজবাড়ির ব্যাপারে জানার জন্য।সেখানকার স্থানীয়দের মুখে মুখে সে যা জানতে পেরেছিল,তা হল আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগে সত্যিই এক রাজবাড়ি ছিল সেখানে,জনবসতিও ছিল।কিন্তু হঠাৎই ঘটে গিয়েছিল এক দুর্ঘটনা।শোনা যায়,সে বাড়ির একমাত্র মেয়ে অরুণিমা মারা যায় শ্বশুরবাড়িতে।শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই চক্রান্ত করে খুন করেছিল তাকে।একমাত্র মেয়ের অপমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি মা বাবা।শোনা যায়,তাঁরা মেয়ের চিতার আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন,আর সেই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই অরুণিমার শ্বশুরবাড়িতে এক বীভৎস অগ্নিকান্ডে সেই বাড়ির সকলে মারা যায়।

  সুমনা আজও অরুণিমা,সূর্যবাবু,সান্ত্বনাদেবীকে ভুলতে পারেনি।ভুলতে পারেনি সেই অমাবস্যার রাতকেও।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *