‘আধুনিক’ কবিতা
‘সুশীল পাঠক—’
ছেলেবেলায় এ ধরনের সম্বোধন পড়ে হৃদয়ে বড় আনন্দ হত। মনে হত, কত মহান লেখক এই কালীপ্রসন্ন সিঙি, যিনি কি না মহাভারতের মতো বিরাট গ্রন্থ অনুবাদ করেছেন, তিনি আমাকেই সম্বোধন করে বলেছেন! এটা যে নিছক সাহিত্যিক ঢং, বলার একটা আড়, সেটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারতুম না। বিশেষ করে যখন আমার ধারণা হল– সেটা হয়তো। ভুল– যে দরদ-ভরা-কথা কয়ে যখন তিনি আমার সহানুভূতি আকর্ষণ করতে চান, তখনই ‘পাঠক’ বলে সম্বোধন করেন। এবং আরও বেশি করে ‘সহৃদয় পাঠক’ বলে সম্বোধন করতেন সিঙি মশাইয়ের মতো দরদী লেখককুল যখন তারা এমন কোনও অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে যেতেন, যেটার মোক্ষম মার বেশিরভাগ পাঠকই খেয়েছে। এ অধম প্রাচীনপন্থী। সে এখনও পাঁচকড়ি দে গোপনে পড়ে। এবং বটতলাতে কিছুক্ষণ হল একখানা ‘সচিত্র প্রেমপত্র’ কিনে সে বড় ভরসা পেয়েছে। যৌবনে ভাষার ওপর দখল ছিল না– এখনই-বা হল কই?– মরমিয়া প্রেমপত্র লিখতে পারত না বলে রায়ের ভাষায়, উনিশটি বার প্রেমেতে সে ঘায়েল করে থামল শেষে। আর ভয় নেই। এখন এই অমূল্য গ্রন্থ থেকে নকল করে ফিলিমস্টার থেকে মেয়ে-পুলিশ সকলেরই ‘সজল নয়নে হৃদয়-দুয়ারে ঘা’ দেওয়া যাবে। বইখানার প্রথম চার লাইন পড়লেই বুঝতে পারবেন, মাইকেল রবীন্দ্রনাথ এর থেকে কতখানি পিছিয়ে আছেন;
‘প্রিয়তমা চারুশীলা পিতৃগৃহে গিয়ে
আছে তো সুখেতে তুমি গোষ্ঠিজন নিয়ে?
তুমি মোর জীবনের সর্বোকৃষ্ট ধন।
তুমি মোর হৃদয়ের শান্তিনিকেতন।’
জানি, জানি– বাধা দেবেন না, জানি আপনারা বলবেন, এই মডার্ন যুগে এসব পণ্য অচল। কিন্তু আপনারা কি এ তত্ত্বটাও জানেন না যে, ফ্যাশন হর-হামেশা বদলায় এবং আকছারই প্রাচীন যুগে ফিরে যায়? পিকাসসো ফিরে গেছেন প্রাগৈতিহাসিক গুহাবাসীর দেয়াল-ছবিতে, অবনঠাকুর মোগলযুগে, নন্দলাল অজন্তায়, যামিনী রায় কালীঘাটের পটে। কাব্যে দেখুন, দুর্বোধ্য মালার্মে-র্যাঁবো যখন অনুবাদের মারফৎ ইংলন্ডও জয় করে বসে আছেন, তখন হাউসম্যান লিখলেন সরল প্রাঞ্জল ‘শ্ৰপশার ল্যাড’। বলা হয়, ইংলন্ডে কবির জীবিতাবস্থায় তাঁর একখানা বইয়ের এত বিক্রির অন্য উদাহরণ নেই। কোনও ভয় নেই। বাংলা দেশের মডার্ন কবিতাও একদিন ‘পাখি সব করে রবে’র অনবদ্য শাশ্বত ভঙ্গিতে লেখা হবে।
আমি মডার্ন কবিতা পছন্দ করিনে, তাই বলে মডার্ন কবিতার কোনও ‘রোজোঁ দেত্রর’ রিজন ফর এগজিসটেনস্ অর্থাৎ পুচ্ছটি তার উচ্চে তুলে নাচাবার ‘রোজোঁ রিজন’, ন্যায্যহকক নেই এ কথা কে বলবে।
প্রথমেই নিন মিলের অত্যাচার। এবং এই মিলটা আমাদের খাঁটি দিশি জিনিস নয়। সংস্কৃতের উত্তম উত্তম মহাকাব্যে, কাব্যে মিল নেই। যদিস্যাৎ থাকে, তবে সেটা আকস্মিক দুর্ঘটনা, প্রায় কবির অনিচ্ছায় ঘটেছে, সংস্কৃতে প্রথমে মিল পাই– আমার জানা মতে মোহমুগরে। এবং তিনিও সেটা বহিরাগত ভাষা থেকে নিয়েছিলেন, এমত সন্দেহ আছে। সংস্কৃতের সহোদরা ভাষা গ্রিক-লাতিনে কি মিল আছে? এ দেশেই দেখুন উর্দু তার জননী সংস্কৃত ভাষা থেকে বহু দূরে চলে গিয়েছে, জোব্বাজাব্বা পরে প্রায় মুসলমান হয়েছে (প্রায় বললুম কারণ এখনও বহু হিন্দুর মাতৃভাষা উর্দু; উর্দু কবি সম্মেলনে তারা সম্মানিত সক্রিয় অংশীদার। কিন্তু, পণ্ডিত নেহরু, তেজবাহাদুর সপ্র ইত্যাদির মাতৃভাষা ছিল উর্দু), তথাপি আজও উর্দুতে বিনা মিলে দোঁহা রচনা করা হয়, সংস্কৃত সুভাষিতের অনুকরণে। ‘মিল’ শব্দটা কি শুদ্ধ সংস্কৃত? সংস্কৃতে একে বলে ‘অন্ত্যানুপ্রাস্’-স্পষ্ট বোঝা যায়, বিপদে পড়ে মাথায় গামছা বেঁধে ম্যানুফেকচার্ড এরজাৎস মাল। অতএব যদি মডার্ন কবিরা সে বস্তু এড়িয়ে চলেন তবে পাঠক তুমি গোসসা কর ক্যান? ওঁরা তো মাইকেলেরই মতো আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য পুনর্জীবিত করছেন। এই যাবনিক ম্লেচ্ছাচারের যুগে সেটি কি চাট্টিখানি কথা!
তার পর ছন্দ? ছন্দহীন কবিতা হয় না, আপনাকে বলেছেন কোন অলঙ্কার-শাস্ত্রের গোসাই? উপনিষদ পড়েছেন? তার ছন্দটি কান পেতে শুনেছেন? ছন্দে-বাঁধা কবিতা আসতে পারে তার কাছে? বস্তুত বেদমন্ত্রে ছন্দ মেনে মেনে হয়রান হয়ে ঋষিকবি উপনিষদে পৌঁছে কি যুগপৎ তার আধ্যাত্মিক ও কাব্যিক মোক্ষ লাভ করলেন না? এ অধম অশিক্ষিত তথাপি গুণীজনের কাছে শোনা উপনিষদের একটি সামান্য সাদামাটা প্রশ্ন নিন:
‘সূর্য অস্ত গেছে, চন্দ্রও অস্ত গেছে, অগ্নি নির্বাপিত (অর্থাৎ আগুন জ্বালিয়ে যে একে অন্যকে দেখব তার উপায় নেই), কথাও বন্ধ (অর্থাৎ চিৎকার করে ডাকবারও উপায় নেই)। তখন কোন জ্যোতি নিয়ে মানুষ (বেঁচে) থাকে, বলুন তো যাজ্ঞবল্ক্য?’
এবার সংস্কৃতটা শুনুন :
‘অস্তমিতি আদিত্যে, যাজ্ঞবল্ক্য, চন্দ্রমস্যস্তমিতে, শান্তেহগ্নৌ, শান্তায়াং বাচি, কিংজ্যোতিরেবায়ং পুরুষঃ?’
প্রচলিত মন্দাক্রান্তা বা শার্দুলবিক্রীড়িত ছন্দে এই অতুলনীয় সঙ্গীত-মন্দ্রিত-স্পন্দিত ছত্র বেঁধে দিলে কি প্রভু যিশুর ভাষায়, লিলিফুলের উপর তুলি নিয়ে রঙ বোলানো হত না?
এতেও যদি আপনাদের মন না ভরে তবে পড়ুন ইংরেজি অনুবাদে বাইবেল– রাজা দায়ুদের গান, সুলেমান বাদশার গীতি (সং অব সংজ, সং অব সলোমন)। সে তো গদ্যে এবং স্বয়ং বার্নার্ড শ বলেছেন, ওই সলোমনের গীতটি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেমের কবিতা।
আবার আপনি যদি মুসলমান হন তা হলে তো কথাই নেই। আপনি জানেন প্রাক-পয়গম্বর যুগেও আরবদের ছিল বহু বিচিত্র ছন্দে, মিলের কঠোরতম আইনে বাঁধা অত্যুকৃষ্ট কাব্যসৃষ্টি। গদ্য ছিল না, কিংবা প্রায় না থাকারই মতো। তথাপি আল্লা-তালা। পয়গম্বরকে যে কুরানের বাণী পাঠালেন সে তো গদ্যে। অথচ আরবি-ভাষা নিয়ে যারা সামান্যতম চর্চা করেছেন তারাই শপথ করে বললেন, এঁর ছন্দোময় গদ্য যে কোনও বাধা কাব্যকে হার মানায়। পয়গম্বরকে যখনই তাঁর বিরুদ্ধপক্ষ কোনও মিরাকল (অলৌকিক কীর্তি) দেখাতে আহ্বান করত তখনই তিনি সবিনয়ে বলতেন, ‘আমি নিরক্ষর আরব। তৎসত্ত্বেও আল্লা-তালা আমার কণ্ঠ দিয়ে যে কুরান পাঠালেন তার কাছে কি আসতে পারে তোমাদের শ্রেষ্ঠতম কাব্য? এইটেই হল সবচেয়ে বড় মিরাকল।’
অতএব মডার্ন কবিরা যদি ছন্দ অস্বীকার করেন তবে আপনি চটেন ক্যান?
তৎসত্ত্বেও মডার্ন কবিতার দুশমনরা হয়তো বলবেন, তারা সুন্দর সুন্দর জিনিসের সঙ্গে বিকুটে সব জিনিসের তুলনা দেয়– যেমন তালগাছের ডগায় চাঁদ দেখে লিখলে, এ যেন আকাশের সুচিক্কণ সুমসৃণ তাল! কিংবা প্রিয়ার বিনুনি দেখে কবির মনে এল পানউলির দোকানে ঝোলানো অগ্নিমুখ নারকোলের পাকানো দড়ি– যার ডগায় লাগিয়ে আমি আকছারই বিড়ি ধরাই। সেই দড়ি হাওয়ায় দুলে কবির কুর্তা পুড়িয়ে দিয়ে পিঠে ছ্যাঁকা দিয়েছে, ঠিক তেমনি প্রিয়ার বিনুনি দেখা মাত্রই তাঁর বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে।
এটা পড়ে তাজ্জব মানছেন কেন?
রাজা শূদ্রকের ‘মৃৎ-শকটিকা’ পড়েননি? জর্মনরা সংস্কৃতের সমজদার এস্তেক গ্যোটে হাইনে সংস্কৃত না জেনেও ভারতীয় নাট্যের স্মরণে উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করতেন। শূদ্রকের এই নাটকটি জর্মন ভাষাতে ক’বার যে ভিন্ন ভিন্ন রসিকজন দ্বারা অনূদিত হয়েছে বলা কঠিন, ক’বার যে জর্মনিতে মঞ্চস্থ হয়েছে সেটা বলা তার চেয়েও কঠিন। সেটা নাট্যে আছে, ক্ষুধিত সূত্রধার বাড়ি ফেরার সময় গভীর দুশ্চিন্তায় মগ্ন–বাড়িতে তো চালডাল কিছুই নেই, গৃহিণী কি আদৌ রন্ধন করতে পেরেছেন? বাড়ি ঢুকেই সূত্ৰধার সানন্দে সবিস্ময়ে দেখেন, সাদা মাটির উপর লম্বা লম্বা কালো কালো আঁজি আঁজি দাগ–কালিমাখা হাঁড়ি মাটিতে ঘষে ঘষে গৃহিণী সাফসুৎরো করেছেন। অতএব ধূম দেখলে যে রকম বহ্নির উপস্থিতি স্বীকার করতেই হয়, হাঁড়ি পরিষ্কার করা হয়ে থাকলে রান্নাও যে হয়েছে সে বিষয়ে কী সন্দেহ? সূত্রধার তখন সোল্লাসে উপমা দিয়ে বললেন, ওহো! সাদা মাটির উপর এই কালো কালো আঁজি যেন তুষারধবলা গৌরীর ললাটে কৃষ্ণাঞ্জনতিলক!
কী মারাত্মক গদাময় হাঁড়িকুঁড়ি, মাটিতে সেগুলো ঘষার ফলে নোংরা কালো আঁজির সঙ্গে শিবানী গৌরীর অসিত তিলকের তুলনা! এ যে রীতিমতো হেরেসি, এ হেন তুলনা চার্বাকের বেদ-নিন্দার চেয়েও ধর্মঘ্ন কটু-ভাষণ।
এরপরও আপনি আপত্তি করে বলবেন মডার্ন কবিতা ন দেবায় ন ধর্মায়?
বুদ্ধিমান তথা না-ছোড়-বান্দা পাঠক, আমি বিলক্ষণ জানি, আপনার প্রধান আপত্তি কোনখানে ছোটখাটোগুলো উপস্থিত না হয় বাদই দিলুম। আপনি বলবেন ওদের কবিতা পড়ে মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারিনে। আমো পারিনে– ধাপ্পা না মেরে হক্ক কথাই কই। সে তো আপনার দোষ, আমার দোষ। আপনি আমি পয়সাওয়ালার ছেলে হয়ে জন্মালে সত্যকার অপটুডেট chic, dernier cri, লেটেস্ট মডেলের হাইয়ার এডুকেশন পেতুম; আপনি, আমি, আমরা নিদেন যদি অধ্যাপক হতুম, তারও নিদেন যদি আমরা তাদের শিষ্য হবার সুযোগ পেতুম, তবে তো আজ এ প্রশ্ন তুলতুম না। কিন্তু এহ বাহ্য।
‘বুঝতে পারিনে’ কথাটার অর্থ কী? আপনি ভৈরবী বা পূরবী শুনে যদি রস না পান তবে কি গায়ককে প্রশ্ন শুধান, ‘ভৈরবীর অর্থ আমায় বুঝিয়ে দাও?’ আরও সহজ দৃষ্টান্ত দিই। পদ্মাবক্ষে আপনি সূর্যোদয় দেখে মুগ্ধ হলেন, মাঝি হল না। সে যদি আপনার তন্ময় ভাব দেখে শুধোয়, ‘কত্তা, সূযযি তো উঠলেন, কিন্তু আপনি এমন বে-এক্তেয়ার হলেন কেন? এ সূযজি ওঠাতে কী আছে আমাকে বুঝিয়ে দেন’ তা হলে আপনি কী বোঝাবেন? তাজমহল দেখে হাকসলি মুগ্ধ হননি, কিন্তু তিনি তো গাইডকে এ প্রশ্ন শুধোননি,’ তাজমহলের অর্থ আমায় বুঝিয়ে বল’। কিংবা ভরতনাট্যম দেখে আপনি যদি ‘অর্থ’ বুঝতে চান, তবে হয়তো অভিনয়াংশের অর্থ আপনাকে বোঝানো যাবে কিন্তু বিশুদ্ধ নাট্যরসের (যেমন যন্ত্রসঙ্গীতের) অর্থই-বা কী, আর বোঝাবেই-বা কে? চিত্রে একদা লোকে কোনও বস্তুর সঙ্গে তার সাদৃশ্য দেখে কিছুটা অর্থ পেত কিন্তু এখন কুবিজ, দাদাইজমে কেউ সাদৃশ্য খোঁজে না, অর্থও খোঁজে না। কাঠের একটা গুঁড়ি নিয়ে বিখ্যাত ভাস্কর ছ মাস ধরে প্রাণপণ খাটলেন; প্রদর্শনীর মধ্যকক্ষে সেটি স্থাপিত করে তলায় নাম লিখলেন কাঠের একটা খুঁড়ি। কাঠের গুঁড়ি, কাঠের গুঁড়ি; ভৈরবী, ভৈরবী। তার আবার অর্থ কী?
মনে হচ্ছে আপনি তন্ত্রের কিছুই জানেন না। তন্ত্রে নিগূঢ়তম মন্ত্রের অর্থ শোধান না গুরুকে। যদি তিনি প্রকৃত শুরু হন তবে আপনার হাড় ক’খানা আর আস্ত থাকবে না। আর অত গভীরে যাবার কী প্রয়োজন? এই যে পৃথিবীর কোটি কোটি নর-নারী উপাসনা করে ভিন্ন। ভিন্ন ভাষায়, তার কটা ভাষা লোকে বোঝে? আপনি উত্তরে হয়তো বলবেন, আমরা রস নিয়ে বিচার করছি। তা হলে স্মরণে আনুন, সেই বুড়ি দাড়িওয়ালা কথকঠাকুরের কথকতা শুনে হাউহাউ করে কেঁদেছিল– কথকতার এক বর্ণ না বুঝেও। তার স্মরণে কী এসেছিল সেটা অবান্তর। তার কান্নাটা সত্য। তার রসবোধটা সত্য।
অলঙ্কার-শাস্ত্র অধ্যয়ন করে তলিয়ে দেখুন, অর্থ বোঝামাত্রই রসোৎপন্ন হয় না– অর্থ পেরিয়ে যে ব্যঞ্জনা যে ধ্বনি যে অনির্বচনীয়তার সৃষ্টি হয়, রস সেই গভীর গুহায়। উপনিষদে আছে সত্য (এবং সত্যই অনুভূতির ক্ষেত্রে রস–কারণ সৎ আনন্দ এবং চিৎ নিয়ে সচ্চিদানন্দ) আছেন সোনার পাত্রে লুকানো। সাধারণ জন সোনার পাত্র দেখেই মুগ্ধ, ভেতরে তাকিয়ে দেখে না। কাব্যে, সঙ্গীতে সর্বত্রই অর্থ জিনিসটা সুবর্ণ পাত্র, তাই দেখে লোক মুগ্ধ। রস কিন্তু ভেতরে। তার সঙ্গে পাত্রের কী সম্পর্ক? পাত্রস্থিত অমৃতরসের সঙ্গে যে ধাতু (অর্থ) দিয়ে পাত্র নির্মিত হয়েছে তার কী সম্পর্ক কিছুই না। তাই, এসব বুঝেই কবি দ্বিজেন্দ্রলাল গেয়েছিলেন,
‘জননী বঙ্গভাষা, এ জীবনে চাহি না অর্থ!’