আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা – মৃত্যুঞ্জয় সেন
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা। ১৯৮৬ সালের ১ মার্চ চব্বিশ পরগনা জেলা দু-ভাগ হয়ে নাম হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং উত্তর চব্বিশ পরগনা। আলিপুর সদর, ডায়মন্ডহারবার, ক্যানিং, বারুইপুর এবং কাকদ্বীপ। এই পাঁচ মহকুমা নিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা।
আয়তন : ৯৬০০ বর্গ কিলোমিটার।
দ্বীপের সংখ্যা : ৩৭।
থানার সংখ্যা : ৩১।
ফলতা, কুলপি, সাগর, ডায়মন্ডহারবার, মন্দিরবাজার, মগরাহাট, উস্তি, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, নামখানা, বারুইপুর, জয়নগর, মথুরাপুর, সোনারপুর, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, ভাঙড়, বেহালা, বিষ্ণুপুর, বজবজ, যাদবপুর, কসবা, মহেশতলা, মেটিয়াবুরুজ, নোদাখালি, পূর্ব যাদবপুর, রিজেন্ট পার্ক, ঠাকুরপুকুর, তিলজলা।
পুরসভা : বারুইপুর (১৮৬৯), বজবজ (১৯০০), ডায়মন্ডহারবার
(প্রতিষ্ঠা বছর) (১৯৮২), জয়নগর-মজিলপুর (১৮৬৯), রাজপুর-সোনারপুর (১৮৭৬), মহেশতলা (১৯৯৩)।
লোকসভা আসন : চার। জয়নগর [SC], মথুরাপুর [SC], ডায়মন্ডহারবার, যাদবপুর।
বিধানসভা আসন : ২৮—গোসাবা [SC], বাসন্তি [SC], কুলতলি [SC], জয়নগর, ক্যানিং পশ্চিম [SC], ক্যানিং পূর্ব, মগরাহাট পূর্ব, মগরাহাট পশ্চিম, মন্দিরবাজার [SC], মথুরাপুর, কুলপি [SC], কাকদ্বীপ, সাগর, বিষ্ণুপুর পশ্চিম, বিষ্ণুপুর পূর্ব [SC], গার্ডেনরিচ, মহেশতলা, বজবজ, সাতগাছিয়া, ফলতা, ডায়মন্ডহারবার, ভাঙড়, বারুইপুর, যাদবপুর, বেহালা পূর্ব [SC], বেহালা পশ্চিম, সোনারপুর [SC], পাথরপ্রতিমা।
গ্রাম পঞ্চায়েত : ৩১২।
পঞ্চায়েত সমিতি : ২৯।
জনসংখ্যা (২০০১) : ৬৯০৯০১৫ (পুরুষ ৩৫৬৪২৪১ স্ত্রী ৩৩৪৪৭৭৪)
শিক্ষিতের হার (২০০১) : ৭০.১৬ (পুরুষ ৭৯.৮৯ স্ত্রী ৫৯.৭৩)
এই জেলার দক্ষিণে সুন্দরবন অঞ্চল। ৯৩০০ বর্গ কিলোমিটার নিয়ে গঠিত। আর বিস্তৃত ২১°৩০´ ও ২২°৩´ উত্তর অক্ষরেখা এবং ৮৮°২´ ও ৮৯°০´ পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত। জেলার উত্তরে উত্তর চব্বিশ পরগনা ও পশ্চিমে হুগলি নদী।
আদি গঙ্গা, বিদ্যাধরী, সরস্বতী, মাতলা, ঠাকুরান, মড়িগঙ্গা, কালনাগিনী, পিয়ালী, হাড়িয়াভাঙ্গা, সপ্তমুখী, বিদ্যা, গোসাবা প্রভৃতি নদী রয়েছে এ জেলাকে ঘিরে।
নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বালি, কাঁকর, পলি মাটি দিয়ে গঠিত এই ভূভাগের ওপরের অংশ। বার বার ভূমি অবনমনের ফলে নানা পরিবর্তন এসেছে। মৃত্তিকার স্তরবিন্যাসে সুস্থিতি নেই। নিম্ন গাঙ্গেয় সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এই জেলার এক বড়ো অংশ লবণাক্ত ও আদ্র। উত্তরাংশ অপেক্ষাকৃত লবণমুক্ত, পলি ও কাদা মাটির প্রাধান্য থাকায় সব ধরনের কৃষিকাজ ও ফল চাষের উপযোগী। তুলনায় লবণাক্ত হওয়ায় দক্ষিণাংশ চাষের কাজের জন্য ততটা উপযোগী নয়। জলা, নদীনালা ও খাড়িতে ভরা। জলবায়ু আদ্র, লবণাক্ত ও নাতিশীতোষ্ণ। উপকূলীয় বৈশিষ্ট্যে ভরপুর এবং ঘন ঘন নিম্নচাপ ও প্রচন্ড সাইক্লোন ও ঝড়-বৃষ্টি আধিক্য অঞ্চল। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় (জুন—সেপ্টেম্বর)। এ ছাড়াও কালবৈশাখী এবং আশ্বিনে ঝড় বৃষ্টি, শীতকালেও কিছু বৃষ্টিপাত হয়। জেলার আলিপুরে অত্যাধুনিক আবহাওয়া অফিস রয়েছে। গরমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৮২°-৮৮° সেঃ এবং শীতে ১১° সে. সর্বনিম্ন ৭° সে. পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকে।
দক্ষিণ চব্বিশ জেলায় ১,৬০,৪০৭ একর জমি ভেস্ট হয়ে আছে। তার মধ্যে চাষযোগ্য জমি ৯২,২৬৩ একর। ১,৪৫,৫৫৬ জন ভূমিহীনের মধ্যে জমি বিলি হয়েছে ৬৬, ৮৪৭ একর জমি। রেকর্ড হয়েছে ২,১২,৫০৭ জন ভাগচাষির নাম। এবং ১২,৭৫২ জন বাস্তু জমি পেয়েছেন বাস করার জন্য।’ [তথ্যসূত্র : পশ্চিমবঙ্গ : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ইতিবৃত্ত ও বর্তমান : শিবদাস ভট্টাচার্য]
চব্বিশ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় এখন জনবসতি ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার মধ্যে ১৩টি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ৪২৬৪ ব.কিমি। স্বাপদসঙ্কুল ম্যানগ্রোভ অঞ্চল। এর মধ্যে ৪৮টি দ্বীপ। যার মধ্যে মানুষ বাস করে না। জনবসতি এলাকা ১৯টি ব্লকের ৫৪টি দ্বীপে নদীবাঁধ দিয়ে জমি রক্ষা করতে হয়। ঝড়ে জোয়ারে দুর্বল নদীবাঁধ ভেঙে প্রায়শই এলাকায় নোনা জল ঢুকে চাষবাস নষ্ট করে। সুন্দরবনের নদীবাঁধের দৈর্ঘ ৪৩৫০ কিমি।
সুন্দরবনের ১৩ পঞ্চায়েত সমিতি লবণাক্ত নদী পরিবেষ্টিত। কলকাতার ময়লাবেষ্টিত ভাঙড়। মাটির তলায় অনেক গভীরে মিষ্টিB জল, ওপরের স্তরে নোনা আবার কোথাও আর্সেনিক। চাষ ও পানীয় জলের পক্ষে গুরুতর সমস্যা। খালবিল ফিশারি, বিভিন্ন ধরনের মাটি এ জেলার বৈচিত্র্য।
জল নিকাশির জন্য ভালো ব্যবস্থা নেই। অপ্রতুল সেচ ব্যবস্থা। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাষ হয় না। সুন্দরবনের লবণাক্ততা একাধিক ফসল চাষে প্রধান অন্তরায়। এই কারণেই প্রধানত এই জেলা একফসলি।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ইতিহাস বহুদিনের। এই জেলা কৃষক আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। স্বাধীনতা, সমাজ সংস্কার ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জেলার অনেক মনীষীর নাম আমাদের স্মরণ করতে হয়। কোম্পানি আমলে নীলচাষকে কেন্দ্র করে এক দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের সৃষ্টি হয়। বারুইপুর অঞ্চলে ছিল বেশ কয়েকটি নীল কুঠি। দাদনি প্রথা এবং বল প্রয়োগে নীল চাষ করা নিয়ে কৃষক মহলে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। সেরা জমিতে বাধ্য করা হত নীল চাষ করার জন্য।
জেলার আর একটি সম্পদ ছিল লবণ। বেশিরভাগ লবণ উৎপাদনকেন্দ্রগুলো ছিল দক্ষিণের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে বা নদী মোহনায়। কোম্পানি একচেটিয়া লবণ ব্যবসা চালায় ১৭৬৮ সাল পর্যন্ত। ১৭৭২ সালে হেস্টিংসের আদেশে এই ব্যবসা নতুন করে আবার কোম্পানির অধিকারে আসে। মাঝে এই ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। একটি বড়ো আকারের লবণ তৈরির কারখানা ছিল রায়মঙ্গলে।
কোম্পানি আমলে চব্বিশ পরগনায় তিনটি সামরিক ঘাটি গড়ে তোলা হয়। ১৭৭২ সালে ব্যারাকপুরে, ১৭৮৩ সালে দমদমে এবং একটি বারাসাতে। ১৮১১ সালে বারাসাতের সামরিক শিক্ষার স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়।
ঐতিহাসিক পটভূমি
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রাচীন ইতিহাস আজও গবেষণা সাপেক্ষ। তবে এ জেলায় প্রাচীনকাল থেকে মানুষ বসবাস করত—তার প্রমাণ পাওয়া যায় বহুভাবেই। প্রস্তর যুগের মানুষের ব্যবহৃত নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায় বহুভাবেই। প্রস্তর যুগের মানুষের ব্যবহৃত নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে এই জেলার ডায়মন্ডহারবার মহকুমার দু-জায়গায়। দেউলপোতা ও হরিনারায়ণপুর। এ ছাড়াও প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে পরবর্তী বিভিন্ন যুগের বহু পুরাবস্তু এই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া গেছে।
রামায়ণের আদিকান্ডে পূর্ব সমুদ্রতীরে সাগরদ্বীপ বা সমুদ্র আশ্রিত নিম্নবঙ্গের উল্লেখ রয়েছে পাতাল বা রসাতল বলে। সাংখ্যদর্শন প্রণেতা কপিলমুণির সাধনাস্থল গঙ্গাসাগর সঙ্গম—অনেক গবেষক মনে করেন।
রামায়ণ মহাভারত পুরাণকে বাদ দিলে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতক পর্যন্ত সম্ভবত এই নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলের জনবসতির উল্লেখ পাওয়া যায়। গ্রিক ও রোমান লেখকদের রচনায়। প্রসিদ্ধ গ্রিক ঐতিহাসিক ডিওডোরাসের লেখায় গঙ্গারিডি জাতির উল্লেখ পাওয়া যায়। যদুনাথ সরকারের মতে গঙ্গা থেকে গঙ্গারিদ শব্দের উৎপত্তি। সুপন্ডিত ঐতিহাসিক বিনয়চন্দ্র সেন তাঁর Some Historical Aspects of Inscription of Bengal, Calcutta, 1942 গ্রন্থে লিখেছেন :
By the quarter of the 4th Century B.C. lower and western Bengal had been formed into a united compact kingdom [Gangaidae].”
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রাচীন ইতিহাসের কথা ভাবলে আমাদের বিস্মিত করে তোলে। গবেষণার কাজ হয়ে চলেছে এবং আরও হবে। প্রাচীন ইতিহাসের যে জায়গাটুকু নিয়ে এখনও সন্দিহান একদিন সেই দলিল পুর্ণাবয়ব পাবে।
চব্বিশ পরগনা জেলার জন্ম হয় ১৭৫৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। মীরজাফর বাংলার মসনদে বসে কৃতজ্ঞতার পুরস্কার হিসাবে সপ্তগ্রামের অধীন চব্বিশটি পরগনা ক্লাইভকে জমিদারি দেন। সেই সময় থেকে চব্বিশ পরগনা জেলার সূচনা হয়।
সেই সময় জেলার আয়তন ছিল ৮৮২ বর্গমাইল। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৬৩৯ বর্গমাইল। মোট চব্বিশটি পরগনা ছিল এই অঞ্চলে : আকবরপুর, আমিরপুর, খড়িজুড়ি, খাসপুর, কলিকাতা, পৈখান, আজিমাবাদ, বালিয়া, বারিদহাটি, বসনধোয়াব, দক্ষিণ সাগর, গড়, হাতিয়াগড়, ইখতিয়ারপুর, মেদনমল্ল, মাগুরা, মানপুর, ময়দা, মড়াগাছা, পাটকুলি, সাতাল শাহনগর, শাহপুর ও উত্তর পরগনা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলের অধিকাংশ সময় সুন্দরবনের এক বিস্তৃত অংশ চব্বিশ পরগনার মধ্যে ১৭৭০-এ সর্বপ্রথম জঙ্গল কেটে সুন্দরবন অঞ্চলে বসতি ও চাষ আবাদের শুরু।
মেলাং মহল অর্থাৎ নুন মহল। নবাবের পরোয়ানা সমর্থনে প্রকাশিত ফার্দ সাওয়ালে পরগনা ২৪টির জায়গায় ২৭টি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত ৩টি হল হাবেলি শহর বা হালিশহর ও বালিয়াজুড়ি এবং দু-টি আবহাওয়ার ফৌজদারি মহল। এখানে বালিয়া ও বাসুন্দিকে একটা পরগনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংরেজ এই জেলার জন্য নবাবকে খাজনা দিত।
১৭৯৩-এ লর্ড কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর উন্নয়নের পর উন্নয়নের স্বার্থে সুন্দরবনকে চব্বিশ পরগনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। কলকাতাকে বাদ দেওয়া হয় চব্বিশ পরগনা থেকে ১৮৭১ সালে। সেই সময় থেকে কলকাতা আলাদা জেলা।
সুন্দরবনকে লট ও প্লটে ভাগ করা হয় ১৮২২-২৩ সালে বসতি ও চাষ-আবাদের জন্য। সুন্দরবনের উত্তরাংশের এলাকাগুলো ১, ২, ৩ ইত্যাদি ক্রমানুসারে মোট ১৬৯টি লট বা স্থানীয় ভাষায় লাট ও দক্ষিণ সমুদ্রের দিকের এলাকাগুলো A, B, C থেকে শুরু করে ১২টি প্লটে চিহ্নিত করা হয়।
১৮৪৬-৫২ সালে চব্বিশ পরগনা জেলা জরিপ করেন ক্যাপ্টেন আর. স্মিথ। স্মিথের মানচিত্রের পরগনাগুলো হল :
পুরোনো জরিপে যেসব নাম ছিল তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নাম। অনেক পরগনা ভাগ হয়েছে। এইভাবে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২টি। কিছু পরগনা অন্য কোনো পরগনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন নামকরণ হয়েছে। এই পরগনাগুলো ভাগ হওয়ার অন্যতম কারণ—জমিদারের খাজনা দিতে না পারা। অনেকে পরগনার অংশ-বিশেষ বিক্রি করে খাজনার টাকা পরিশোধ করতেন। ফলে পরগনাগুলো ক্রমে ভাগ হয়ে যেতে থাকে।
চব্বিশ পরগনা তৈরি হবার আগে এই অঞ্চল মুসলমানপূর্ব যুগে একটি বিশেষ সরকারি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেন আমলে বাংলার ৫টি বিভাগ ছিল, রাঢ়, বাগড়ী (ব্যাঘ্রতটী অর্থাৎ যে তটে বাঘ বাস করে), বরেন্দ্র, বঙ্গ ও মিথিলা। বঙ্গের ছিল তিনটে ভাগ লক্ষ্ণৌতি, সাতগাঁ ও সোনার গাঁ। বাংলার প্রথম জরিপ হয় ১৮৫২ খ্রী. আকবর ও আকবরের অর্থ সচিব টোডরমলের আমলে। এই জরিপে বাংলাকে ১৯টি রাজস্ব অঞ্চল বা সরকারে এবং ৫৩টি মহলে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে একটি বিভাগ ছিল সরকার সাতগাঁ বা সপ্তগ্রাম সরকার। এর সীমা উত্তরে পলাশী থেকে দক্ষিণে সাগরদ্বীপের হাতিয়াগড় এবং কপোতাক্ষ থেকে পশ্চিমে হুগলি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। চব্বিশ পরগনা ছিল এই সাতগাঁ সরকারের একটি অংশ। ১৭২২ সালে মুর্শিদকুলী খাঁর সময়ে মোগল আমলের শেষ জরিপে ওই পরগনাগুলোকে চাকলা হুগলির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ১৮৫৫ সালে মহকুমার ধারণাকে নিয়ে আসা হয়। পরে সমগ্র জেলাকে ৮টি মহকুমায় ভাগ করা হয়। নতুন মহকুমার সৃষ্টি বা অদলবদল ঘটে এরপর।
বর্তমানে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য চব্বিশ পরগনাকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়—উত্তর এবং দক্ষিণ।