সোঁদালের ডালের ডগায়
মাঝে মাঝে পোকাধরা পাতাগুলি
কুঁকড়ে গিয়েছে ;
বিলিতি নিমের
বাকলে লেগেছে উই;
কুরচির গুঁড়িটাতে পড়েছে ছুরির ক্ষত,
কে নিয়েছে ছাল কেটে;
চারা অশোকের
নীচেকার দুয়েকটা ডালে
শুকিয়ে পাতার আগা কালো হয়ে গেছে।
কত ক্ষত, কত ছোটো মলিন লাঞ্ছনা,
তারি মাঝে অরণ্যের অক্ষুণ্ন মর্যাদা
শ্যামল সম্পদে
তুলেছে আকাশ-পানে পরিপূর্ণ পূজার অঞ্জলি।
কদর্যের কদাঘাতে
দিয়ে যায় কালিমার মসীরেখা,
সে সকলি অধঃসাৎ ক’রে
শান্ত প্রসন্নতা
ধরণীরে ধন্য করে পূর্ণের প্রকাশে।
ফুটিয়েছে ফুল সে যে,
ফলিয়েছে ফলভার,
বিছিয়েছে ছায়া-আস্তরণ,
পাখিরে দিয়েছে বাসা,
মৌমাছিরে জুগিয়েছে মধু,
বাজিয়েছে পল্লবমর্মর।
পেয়েছে সে প্রভাতের পুণ্য আলো,
শ্রাবণের অভিষেক,
বসন্তের বাতাসের আনন্দমিতালি,–
পেয়েছে সে ধরণীর প্রাণরস,
সুগভীর সুবিপুল আয়ু,
পেয়েছে সে আকাশের নিত্য আশীর্বাদ।
পেয়েছে সে কীটের দংশন।