অ্যা কিডন্যাপিং – ৭

সাত

বাসায় ফিরে দেখলাম, জুরি রান্নাঘরে কী যেন রান্না করছে। গন্ধ শুঁকে কী রান্না করছে, তা বের করার চেষ্টা করলাম।

“ক্রিম-স্ট্যু বানানোর মতো উপকরণ ছিল বাসায়?” রান্নাঘরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

জুরি একটা শার্ট পরে কোমরে একটা টিশার্ট বেঁধে এপ্রনের কাজ চালাচ্ছিল। ঐ অবস্থায় সে চুলায় থাকা একটা পাত্রের ভেতরটা নাড়ছিল। “ফ্রিজ ঘাঁটাঘাঁটি করে সব উপকরণই পেয়েছি। সবজিগুলো আর কদিন হলেই নষ্ট হয়ে যেত। ভাগ্যিস আগেই আমার চোখে পড়েছে।”

মনে পড়ে গেল, ওগুলো কিনেছিলাম গ্রাটান বানানোর জন্য। “কারো সাথে দেখাসাক্ষাৎ বা ফোনে কথা বলোনি তো?”

“না। ভেবে দেখলাম, জোরে টিভি দেখলে হয়তো প্রতিবেশীরা টের পেতে পারে। তাই খুবই অল্প সাউন্ডে টিভি দেখেছি। এমনকি আমার চলাফেরার শব্দটাও নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছি। আর হ্যাঁ, বিকেলে ফোনটা বেশ কয়েকবার বেজেছিল। কিন্তু ধরিনি।”

আমার ফোনের কথাই বলছে বোধহয়। যাক, এখন পর্যন্ত সে কোনো গণ্ডগোল করেনি।

তার সবটুকু মনোযোগ এখন চুলার পাত্রটার ওপর। সে যে পাত্রটাতে ট্যু বানাচ্ছিল, সেটা আমি নিজেই কেবল দুবার ব্যবহার করেছি।

“তুমি যে ভালো রান্নাবান্না করতে পারো তা জানতাম না।”

“পারি। তবে অতটা ভালো না। বিরক্ত লাগছিল, তাই করতে মন চাইলো। আপনার কি খিদে পেয়েছে?”

“আমি খেয়ে এসেছি। এটা অবশ্য তোমার জন্য নিয়ে এসেছিলাম।” হাতের পেপারব্যাগটা তুলে ধরলাম।

“ভেতরে কী আছে?”

“একটা বেন্তো (বক্সড খাবার সেট)।”

সে ব্যাগের ভেতরটা দেখে আমার দিকে তাকালো। “এটা তো ইয়াসুমান এর বেন্তো! অসাধারণ! ওখানকার শেফ প্রায়ই টিভিতে রান্না করতে যান। তাহলে আমি এটাই খাবো।”

“তাহলে স্ট্যু এর কী হবে?”

“স্ট্যু গোল্লায় যাক।” জুরি চুলাটা বন্ধ করে দিল।

নিজের রুমে ঢুকে কাপড়চোপড় পালটে ফ্রেশ হয়ে লিভিং রুমে এলাম। জুরি ততক্ষণে বেন্তো খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। বেন্তোর প্রত্যেকটা অংশ কতটা সুস্বাদু, কেন সুস্বাদু সেটা নিয়ে লেকচার দিতে শুরু করলো। বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে দিতে আমি তার কথাগুলো শুনতে লাগলাম।

“আজকে তোমার বাবার সাথে আমার দেখা হয়েছে।” হঠাৎ বলে বসলাম।

জুরির হাতের চপস্টিক থেমে গেল। “কোথায়?”

“আমাদের কোম্পানিতে তিনি এসেছিলেন। তার মেয়ে কিডন্যাপ হওয়ার পরেও যে তিনি কাজে ফিরে যাবেন, ব্যাপারটা একটু অপ্রত্যাশিতই ছিল। বোধহয় পুলিশের কথামতো শান্ত থাকার জন্য কাজটা করছেন। তবে সেটা তিনি নিজের অফিসে করলেও পারতেন।”

“আমার কী হয় না হয়, তাতে তার কিছুই যায়-আসে না।” জুরি আবার খাওয়া শুরু করলো।

“তিনি যাই করুন না কেন, কিছু একটা যে হয়েছে তা টের পেয়েছেন। আমাদের মুক্তিপণের চিঠিটা তার চোখে পড়েছে। একটা জবাবও দিয়েছেন তিনি।”

“তাই? নেটে জবাব দিয়েছেন?”

কম্পিউটার চালু করে ওয়েবসাইটটাতে প্রবেশ করলাম। “ওহ, তিনি ইতোমধ্যে আরো একটা পোস্ট দিয়েছেন দেখা যাচ্ছে।”

বিকেলে যেটা দেখেছিলাম সেটা বাদেও নতুন আরেকটা পোস্ট বুলেটিন বোর্ডে শোভা পাচ্ছিল—

আমি পণ্যের মান দেখতে ইচ্ছুক (ইউজারনেম-জুলি)

আমি জুলি, গাড়ির বিষয়ে একেবারে নতুন। আরেকজনের কাছ থেকে একটা সিপিটি নিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু নিজের চোখে না দেখে তো সেটা নেওয়া যায় না, তাই না? সেটা ঠিকঠাক আছে কিনা কিংবা গাড়ির ইঞ্জিনের শব্দ শুনে ওটার অবস্থা ভালো আছে কিনা সেগুলো পরীক্ষা করে দেখতে চাই। আমার মনে হয় এসব পরীক্ষা না করে টাকাপয়সা দেওয়া উচিত নয়। আপনাদের কী মতামত?

জুরি আবার খাওয়া বন্ধ করে কম্পিউটারের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো।

“এখন তোমার কাছে কী মনে হচ্ছে জুরি?”

“এর মানে…”

“ওপরের কথাবার্তাগুলোর কেবল একটাই অর্থ হতে পারে। তারা জানতে চায় তুমি নিরাপদে আছো কিনা।” খানিকটা বিয়ার ঢোঁক দিয়ে গিলে ফেললাম। জুরি এখন আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমাদের শত্রু কেবল দুটো কারণেই এ কথাটা বলতে পারে। একটা হচ্ছে, ভিক্টিমের অবস্থা জানার জন্য। আরেকটা হলো কালপ্রিটের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। আমাদের প্রতিপক্ষ, মানে পুলিশরা যেভাবেই হোক আমাদের, মানে কিডন্যাপারদের গলার আওয়াজ শুনতে চায়। জুরিকে ফোনে রেখে সেটা ট্রেস করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি বের করার ধান্দা করছে তারা। আমি নিশ্চিত, কাতসুরাগিদের ফোনের সাথে ইতোমধ্যে একটা রেকর্ডিং যন্ত্র জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পাশেই ডিটেকটিভরা হেডসেট পরে ফোনের জন্য অপেক্ষা করছে।

যে-কোনো কিডন্যাপিং সম্পর্কিত সিনেমা, উপন্যাসের সবচেয়ে সাধারণ দৃশ্য হচ্ছে এই ফোনকল। ভিক্টিমের পরিবার বারবার ভিক্টিমের অবস্থা জানতে চায়। তখন কিডন্যাপার যতটা সম্ভব সতর্ক থেকে সেটা বাস্তবায়ন করে। সে নজর রাখে যাতে ভিক্টিমের মুখ ফসকে অন্যকিছু বের না হয়ে যায়। এটাকে অনেকটা দ্বন্দ্বযুদ্ধের শুরুর সাথে তুলনা করা যায়। একবার এমন একটা রহস্যোপন্যাস পড়েছিলাম যেখানে ভিক্টিমের কথাবার্তা টিভিতে লাইভ করা হয়েছিল।

ভেবে দেখলাম, জিনিসটা কিন্তু বেশ অদ্ভুত। ভিক্টিমের ফ্যামিলির সাথে ভিক্টিমের যোগাযোগ করানোর অনুরোধ মান্য করার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কিডন্যাপার কিন্তু চাইলে কেবল তাদের টাকার জন্য বারবার তাগাদা দিয়েই যেতে পারে। যদি কোনো কারণে কিডন্যাপার রুষ্ট হয়, তবে ক্ষতিটা কিন্তু ভিক্টিমের পরিবারেরই হবে। তাই আমিও চাইলে তাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করতে পারি। আপনি যদি অক্ষত দেহে তাকে ফিরে পেতে চান, তবে বেশি কথাবার্তা না বাড়িয়ে টাকাটা জোগাড় করুন। এটুকু বলে দিলেই আমার কাজ শেষ হয়ে যাবে। ভাবলাম, ঠিক এই লেখাগুলোই ইমেইল করে পাঠিয়ে দেই। বুলেটিন বোর্ডে ‘জুলি’ ইউজারনেমধারী যে পোস্ট দিয়েছে, তার একটা ইমেইল অ্যাড্রেস দেওয়া আছে। তারা হয়তো ভেবে নিয়েছে আমরা ওখানে তাকে ইমেইল করব।

“তাদের তো ফোন করা যাবে না, তাই না?” জুরি জিজ্ঞেস করলো।

“করলে আমাদেরই বিপদ।”

“ঠিক বলেছেন।”

“তুমি কি ফোন করতে চাও?”

সে মাথা নাড়লো, “না সেটা বলছি না।”

“আজকালকার দিনে একজন গর্দভ অপরাধীও বোধহয় এতবড়ো ভুল করবে না। অবশ্য সেটা সম্পূর্ণই আমার মতামত। কিন্তু সত্যি বলতে কী, এরকম বোকার মতো কাজ করাতে কিন্তু বেশ মজাও পাওয়া যেতে পারে।”

“মজা…”

“মনে রেখো, এটা কিন্তু একটা খেলা। আর খেলা আনন্দদায়ক না হলে কোনো লাভ আছে? তাই বলে ফট করে ফোন করা যাবে না।”

যদি ফোন করতেই হয়, তবে আমি চাই সেটা যেন আমাদের কাজে লাগে। মোটকথা, আমি তাদের তদন্তে গোলমাল লাগাতে চাচ্ছি। কীভাবে করা যায় ওটা?

“উম,” জুরির ঠোঁটটা একটু নড়ে উঠে থেমে গেল।।

‘কী হয়েছে?”

“ফোনের কথা উঠেছে দেখে আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল। আমি বোধহয় বিশাল একটা ভুল করে বসেছি।”

তার আচার-আচরণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেখাপ্পা লাগছিলো। কেন জানি শঙ্কা হতে লাগলো। তার দিকে বাকিটা শোনার জন্য তীক্ষ্মদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম।

“গতকাল আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন না, আমি বাড়ি থেকে বের হবার পর কারো সাথে যোগাযোগ করেছি কিনা?”

“হ্যাঁ। এখন কিন্তু আবার বোলো না যে, তুমি সেটা করেছো।” উত্তেজনায় সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালাম।

“আমি কথা বলিনি। কিন্তু একটা ফোন করেছিলাম।”

“মানে?”

“আমার ইউকি নামের এক বান্ধবী আছে। ভেবেছিলাম, তার বাসায় থাকতে পারব কিনা সেটা তাকে জিজ্ঞেস করা যাক। তাই ওর বাসায় ফোন করেছিলাম। আমার দিকে এভাবে তাকাবেন না। ঐ সময়ে যে এরকম কিছু হতে পারে তা মাথাতেই আসেনি।”

“আচ্ছা। পরে কী হলো?” আমার মাথাব্যথা করতে শুরু করেছে। এই কমবয়সি মেয়েরা সবসময় একটা না একটা ঝামেলা তৈরি করবেই।

“কিন্তু সে বাসায় ছিল না। তখন আমার মনে পড়ে গেল যে, এই মাসের শুরুতে ওর আমেরিকা যাওয়ার কথা। তাই কেউ ফোন ধরেনি। তাই আন্সারিং মেশিন-এর মেসেজ শোনানো শুরু করেছিল।”

“আন্সারিং মেশিনে কোনো মেসেজ রেখে দাওনি তো?”

জুরি গাল ফুলিয়ে মাথা নিচু করে রাখলো। আমি নিজের মাথাটা শক্ত করে আঁকড়ে ধরলাম।

“কী বলেছিলে মেসেজটাতে?”

“আমি জুরি বলছি। ভুলেই গিয়েছিলাম যে, তুই আমেরিকায় চলে গিয়েছিস।”

“তারপর?”

“এটুকুই। এরপর ফোন রেখে দিয়েছিলাম।”

সোফাতে আবার বসে পড়লাম। হাত পা দুদিকে প্রসারিত করতে করতে বলে উঠলাম, “এই মুহূর্তে কেন…”

“আমরা কথা বলিনি। আর এতক্ষণ পর্যন্ত আমি ওটার কথা সম্পূর্ণ ভুলেই গিয়েছিলাম।”

“শোনো, মেসেজ রেখে দিলে মেসেজটা পাঠানোর সময়ও সেটার সাথে সংরক্ষিত হয়ে যায়। যেদিন ইউকি মেয়েটা আমেরিকা থেকে ফিরে আসবে, সেদিনই সে তোমার কিডন্যাপিং সম্পর্কে জানতে পারবে। এমনকি যেহেতু সে তোমার বান্ধবী, তাই সে নিজে থেকে খোঁজখবরও নেওয়া শুরু করবে। তাহলে সে কি সন্দেহ করবে না কেন তুমি কিডন্যাপ হবার পরেও হালকা চালে তাকে ফোন দিয়েছ?”

“আমার মনে হয় না এতকিছু হবে। সে অনেক সহজ-সরল। তাই মেসেজ দেখলেও সে অতকিছু ভাববে না।”

ছটফট করে বললাম, “আমি একটা নিখুঁত খেলা খেলতে চেয়েছিলাম। তুমি কি মনে করো এরকম ফাঁকা আওয়াজের মতো কথাবার্তা আমাকে সান্ত্বনা দিতে পারবে?”

“তাহলে আমাদের কী করা উচিত?” জুরি রেগে গিয়ে বলল।

আমি তর্জনী আর বৃদ্ধাঙুলি দিয়ে নিজের চোখটা ডলতে লাগলাম। বমি বমি লাগছে খানিকটা। “কী আর করব, গোটা পরিকল্পনাটা ভেঙে দিতে হবে। এ গল্পের সমাপ্তি এখানেই।”

“কিন্তু…”

“এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। যদি কোনো কারণে ইউকি মেসেজের সময়টা দেখে সন্দেহ করে, তাহলে সে কাউকে সেটা বলে দিতেই পারে। আর সেই মানুষটা যদি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে, তবেই হয়েছে। পুলিশ বুঝে ফেলবে, গোটা কিডন্যাপিংটাই ছিল আমাদের সাজানো একটা নাটক। তখন তোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তুমি কিছু বলতে পারবে? বুঝতে পেরেছো তো গোটা ব্যাপারটা?”

“আমি কখনোই মুখ খুলব না। মরে গেলেও না।” জুরি ঘোষণা করলো। তারপর ঠোঁট দুটো শক্ত করে চাপ দিয়ে বসে থেকে সে বোঝাতে চাইলো, এই যে দেখো আমি কতটা দৃঢ়বদ্ধ।

“পুলিশের ইন্টারেগেশন খুব সহজ কিছু না। তবে ওটা সম্পর্কে আমার ধারণা কম। কিন্তু তোমার মতো ‘ছোট্ট খুকির’ বেয়াড়া আচরণ দেখে ওদের হাসিই পাবে।”

‘ছোট্ট খুকি’ বলাতে জুরি হয়তো ক্ষেপে গিয়েছিল। কিন্তু ওর মন জুগিয়ে চলতে আর ইচ্ছা করছে না। হাতের বিয়ারের ক্যানটা খতম করে চাপ দিয়ে সেটা মুচড়ে ফেললাম।

যেহেতু পরিকল্পনাটা আর বাস্তবায়িত করব না, সেহেতু তাকে যত দ্রুত বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া যায় ততই মঙ্গল। কিন্তু কিছু ঠিক না করে তাকে পাঠালে ভালো হবে না। আমরা ইতোমধ্যে তাদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছি। পুলিশ নিশ্চিতভাবেই কেসটাতে জড়িয়ে গেছে। জেলের ভাত না খেতে চাইলে আমার হাতে কেবল একটাই পথ আছে। পুলিশকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে, জুরিই আমাকে মজা করার জন্য প্ররোচিত করেছিল। এখন ভাবতে হবে কীভাবে ওকে এ ব্যাপারে রাজি করা যায়।

“শুনুন, আমার একটা প্রস্তাবনা আছে।” মেয়েটা বলে উঠল।

“তোমারটা শোনার আগে আমিও একটা প্রস্তাব দিতে চাই।”

“যদি সেটা গোটা পরিকল্পনা ভেঙে দেওয়া সম্পর্কিত কোনো প্রস্তাব হয়, তবে আগেই বলে রাখছি আমি রাজি নই।”

আমি মাথা ওপরের দিকে তুলে ঘরের ছাদের দিকে তাকালাম।

“আমি ভাবছিলাম, ওর বাসায় গিয়ে মেসেজটা মুছে দিয়ে এলেই তো হয়।” জুরি আমাকে অগ্রাহ্য করেই বলে ফেলল।

“মুছে ফেলবে? কী?”

“আন্সারিং মেশিনের মেসেজটা। ওটা মুছে ফেললেই তো সব সমাধান হয়ে যাবে, তাই না?”

“কীভাবে মুছবে? ওটা অন্য আরেকজনের ফোন।”

“সে আমাকে বলে দিয়েছিল যে, ও আমেরিকা থাকাকালীন সময়ে যখন খুশি তার রুমে যেয়ে থাকতে পারবো। সে কোথায় চাবি লুকিয়ে রেখে যায়, সেটাও আমাকে বলে গেছে।”

“ওর বাসা কোথায়?”

“ইয়োকোসুকাতে।”

“ইয়োকোসুকা? এত দূরে কেন…”

“গাড়িতে করে গেলে কেবল একঘণ্টা লাগবে। ঝটপট সেখানে গিয়ে মুছে ফিরে আসলেই তো আমাদের কাজ শেষ।”

“তোমার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে কাজটা যেন খুবই সোজা। যদি সন্দেহজনক চেহারার দুইজন মানুষ একটা অনুপস্থিত মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে, তবে আশেপাশের প্রতিবেশীরা সন্দেহ করা শুরু করবে।”

“কারো চোখে না পড়লেই তো হয়। তবে আপনি না এলেই বরং ভালো হবে। কারণ বাড়িটা কেবল মেয়েদের জন্য। মেয়েরাই ওখানে বাসা নিয়ে থাকে। আপনি চাইলে ইয়োকোসুকা বন্দরে দাঁড়িয়ে হাওয়া খেতে খেতে জাহাজ চলাচলের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।”

“অসম্ভব।” ঘোঁৎ করে উঠলাম। অকস্মাৎ শেষবার যখন আমি ইয়োকোসুকাতে গিয়েছিলাম, সেটার কথা মনে পড়ে গেল।

অপ্রত্যাশিতভাবেই আমার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *