অর্থ : ইহুদি ক্ষমতার মূল উৎস

অর্থ : ইহুদি ক্ষমতার মূল উৎস

যে কয়টি পরিবারের হাত ধরে ইহুদিরা আজ এতটা ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছে, তাদের মধ্যে রথচাইল্ড অন্যতম। সপ্তদশ শতাব্দীর পর থেকে বিশেষ এই জাতিগোষ্ঠীটির যে আকস্মিক উত্থান, তার পেছনে এই পরিবারটির উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তা ছাড়া ইজরাইল পুনঃপ্রতিষ্ঠা, লিগ অব নেশনস ও জাতিসংঘ গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তাদের ছিল প্রভাবশালী ভূমিকা। ইউরোপের প্রতিটি যুদ্ধে উভয় পক্ষকেই তারা ঋণ দিত। যে দেশ বিজয়ী হতো, তাদের কাছ থেকে উচ্চহারে সুদের ভিত্তিতে ঋণের অর্থ ফেরত নিত। অন্যদিকে, পরাজিত দেশটির সকল সম্পদ তাদের দায় মেটানোর কাজে ব্যবহৃত হতো। এভাবে রথচাইল্ড ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী পরিবারে পরিণত হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় (১৭৭৫-১৭৮৩) আমেরিকার বিপক্ষশক্তি ব্রিটিশ সেন্যবাহিনীকে ২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করে।

Mayer Amschel Rothschild হলেন বিখ্যাত এই পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। ১৭৪৪ সালে তিনি জার্মানির ফ্রাঙ্কফ্রুট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৬৩ সালে দুষ্প্রাপ্য মুদ্রার (Rare Coin) ব্যাবসা শুরু করেন। এর সাথে ছিল ‘Money Exchange’-এর বাণিজ্য। সেখান থেকেও প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। তার ব্যবসায়িক দক্ষতার কারণে Prince Wilhelm তাকে জার্মানির অর্থ বিভাগে নিয়োগ দেয়। যে অর্থ তিনি আমেরিকার স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বিপক্ষ শক্তিকে ঋণ দিয়েছিলেন, সেই অর্থই পরবর্তী সময়ে ফরাসি বিপ্লবে (১৭৮৯-১৭৭৯৯) বিনিয়োগ করেন।

তার ছিল পাঁচ ছেলে। এদের মধ্যে চারজনকে সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে চার দেশে প্রেরণ করেন। বড়ো ছেলে Amschel Mayer তার সাথে ফ্রাঙ্কফ্রুটে থেকে যায়। বাকিরা Solomon Mayer ভিয়েনাতে, Nathan Mayer লন্ডনে, Carl Mayer নেপোলিতে এবং James Mayer প্যারিসে পাড়ি জমায়। এবার পাঁচ ছেলে প্রত্যেকেই স্ব-স্ব দেশের একজন উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক কর্মকর্তার মেয়েকে বিয়ে করে, যা তাদের প্রতিটি দেশের প্রশাসনিক দপ্তরে প্রবেশের পথ সহজ করে দেয়।

তারপর পারিবারিক সম্পদ ব্যবহার করে তারা নিজ নিজ রাষ্ট্রকে উচ্চ সুদে ঋণ দিতে শুরু করে। যেমন : ওয়াটারলু যুদ্ধে ব্রিটেনকে ঋণ দেয় Nathan। এ ছাড়াও বিগত কয়েক শতকে ইউরোপে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে, তার প্রত্যেকটিতেই এই পরিবার প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তারা এত পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছে যে, একসময় প্রতিটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও শেয়ার বাজারগুলো সম্পূর্ণ নিজেদের করে নেয়। তারা প্রতিষ্ঠা করে ‘Red-Shield’, যা ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী আর্থিক সংগঠন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও তাদের ভয়ংকর ভূমিকা ছিল। একবিংশ শতাব্দীতে এসে রথচাইল্ড পরিবারের সম্পদের সঠিক আঙ্কিক পরিমাণ নিরূপণ করা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যে অর্থের কল্যাণে তারা এতটা সম্পদশালী হয়েছে, তার অপর নাম ‘ব্লাড মানি’। কারণ, অর্থের লোভে তারা গোটা ইউরোপকে অসংখ্যবার রক্তাক্ত করেছে। বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে অর্থ ব্যাবসার ধারা পৃথিবীর প্রতিটি দেশে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছে। যে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমকে কেন্দ্র করে আজ বিশ্বজুড়ে ডলারভিত্তিক অর্থব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, তাতেও রথচাইল্ড পরিবারের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।

১৮৩৭ সালে তাদের প্রথম প্রতিনিধি August Belmont আমেরিকায় প্রবেশ করে। গৃহযুদ্ধ চলাকালে তিনি Democratic National Committe-এর চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমান Morningside Heights চার্চে তার নামে একটি স্মৃতিসৌধ ‘Belmont Memorial’ সংরক্ষিত আছে।

১৯১৪ সালের বিশ্বযুদ্ধ আরও আগেই শুরু হওয়ার কথা ছিল। শুধু তাদের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর কল্যাণে যুদ্ধ কিছুটা বিলম্বে শুরু হয়। উল্লেখ্য, পূর্বনির্ধারিত সময়ে শুরু হলে অনেক দেশকে তারা এই যুদ্ধে সামিল পারত না; যাদের সাথে অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িয়ে আছে। যেমন : ১৯১১ সালে রথচাইল্ড পরিবারের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি চিঠি থেকে জানা যায়—তারা জার্মান সম্রাট Kaiser-কে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়।

Jewish Encyclopedia অনুযায়ী—

‘কৃষি কাজে ইহুদিরা স্বভাবত কম আগ্রহী, তবে মূল্যবান খনিজ শিল্পে তাদের যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। যেমন : Rothschild পারদ শিল্পকে, Barnato Brothers and Werner, Beit & Company faf Lewisohn Brothers and Guggenheim Sons তামা ও রূপাশিল্পকে বহু বছর যাবৎ নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে।’

Encyclopedia-তে আরও উল্লেখ আছে-

‘ঋণের সুদ প্রতিটি রাষ্ট্রের ওপর এক ক্রমবর্ধনশীল জাতীয় দায় জন্ম দেয়। আর ধীরে ধীরে তা এতটা প্রকট আকার ধারণ করে, সেখান থেকে অধিকাংশ রাষ্ট্রই বের হয়ে আসতে পারে না। ইহুদিরা আন্তর্জাতিক ঋণ- ব্যবসায়কে পুঁজি করে গড়ে তুলেছে নিজেদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। এখন অনেক জ্যান্টাইল প্রতিষ্ঠান অধিক মুনাফার লোভে একই পথ অনুসরণ করতে শুরু করেছে, যা ইহুদিদের ক্ষমত আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’

রথসচাইল্ডের একটি বাণী আছে—এক পাত্রে সব ডিম রাখতে নেই। তারা সকল রাজনৈতিক দলের পেছনে অর্থ বিনিয়োগ করে; চাই তা ক্ষমতাসীন হোক কিংবা বিরোধী দল। ফলে যুদ্ধ কিংবা নির্বাচনে যে দল যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, মূল ক্ষমতা তাদের হাতেই থেকে যায়।

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনুমান করা হচ্ছিল Kuhn, Loeb & Company খুব দ্রুতই ওয়ালস্ট্রিটকে নিজেদের করে নিতে যাচ্ছে। E. H. Harriman যখন আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে রেলপথ নির্মাণের জন্য মূলধন সন্ধান করছিলেন, তখন Kuhn, Loeb & Company তাদের শেয়ারগুলো অবলেখন করে মূলধনের ব্যবস্থা করে দেয়। আমেরিকার আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট রয়েছে, যেখানে তারা একই উপায়ে কাজ করে যাচ্ছে। পরে নিজেরাই সেই শেয়ারগুলোর মূল্য বাড়িয়ে দিয়ে জ্যান্টাইলদের নিকট বিক্রি করে দেয়।

এই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন Jacob Schiff। তিনি জার্মানির ফ্রাঙ্কফ্রুটে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন রথসচাইল্ডের একজন ব্রোকার। তার প্রধান দুই সহকারী ছিলেন Otto Khan ও Felix Warburg । Otto Khan-এর জন্ম মেইনহামে। ছোটোকাল থেকে তিনি আরেক ইহুদি ব্যাংকিং পরিবার Speyers-এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আর Felix Warburg পরিণত বয়সে Jacob Schiff পরিবারের একজন সদস্যকে বিয়ে করেন। এভাবে তারা নিজেদের মাঝে গড়ে তোলে এক শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধন, যাতে তাদের সম্পদ কোনোভাবেই জ্যান্টাইলদের হাতে চলে না যায়। Amschel Rothschild তার যে পাঁচ ছেলেকে পাঁচ দেশে প্রেরণ করেন, তাদের সন্তানরাও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নিজেদের চাচাতো ভাই-বোনদের মধ্যে বিয়ে করে নেয়।

শুধু আমেরিকাতেই নয়; যে স্থানগুলো পরবর্তী সময়ে অর্থ-বাণিজ্যের কেন্দ্র বিন্দু হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তার প্রতিটি স্থানেই তারা নিজেদের কার্যক্রম প্রসারিত করেছে। দক্ষিণ আমেরিকা, মেক্সিকো, জাপান ও রাশিয়া হলো এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

তারা মেক্সিকোতে অর্থনৈতিক উপদেষ্টারূপে হাজির হয়। জাপান-রাশিয়া যুদ্ধে Jacob Schiff প্রচুর অর্থ পাঠিয়ে জাপানকে সহযোগিতা করে, যেন এখান থেকেই রাশিয়ার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধসিয়ে দেওয়া যায়। মূলত, জাপান-রাশিয়া যুদ্ধই ইহুদিদের জন্য বলশেভিক আন্দোলনের পথ সহজ করে দেয়। জাপানের কারাগারগুলোতে যে সকল রাশিয়ান সৈন্যরা বন্দি ছিল, জার সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষেপিয়ে দেওয়াই ছিল এই অর্থ বিনিয়োগের অন্যতম উদ্দেশ্য। তারা এই সুযোগে জাপানকেও কবজা করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজা সাহেব এই জাতিগোষ্ঠীটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুব ভালো করেই জানতেন। তাই তিনি এই অর্থ সাহায্যের বিষয়টিকে একটি ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে গ্রহণ করেন এবং অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে নাক গলানো থেকে তাদের দূরে রাখেন। এ বিষয়টি তাদের ভীষণভাবে ক্ষেপিয়ে তোলে। ফলে ইহুদিরা প্রতিশোধের জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করে। আর এখান থেকেই জাপান-আমেরিকা দ্বন্দ্বের সূচনা।

তারা যেসব অন্ধকার পথ পাড়ি দিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে নিজেদের করে নিয়েছে, তার বর্ণনা দিতে গেলে অনেক নোংরা গল্প বেড়িয়ে আসবে। Robins, Lamars ও Arnsteins-এর মতো ইহুদিদের অন্যান্য সদস্যরাও যেভাবে ওয়ালস্ট্রিটে থাবা বসিয়েছে, তা কখনো ভোলার মতো নয়। বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনীতিতে তারল্য ফিরিয়ে আনতে আমেরিকান সরকার লিবার্টি বন্ড ইস্যু করেন, কিন্তু তার দুই বছর না পেরোতেই ১২ মিলিয়ন ডলারের স্টক ও বন্ড আত্মসাৎ হয়। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক হলেও অনুসন্ধানি রিপোর্টে কারও নাম প্রকাশ পায়নি।

ওয়ালস্ট্রিটের শেয়ার কেনা-বেচার কাজে তখন এক শ্রেণির ‘ম্যাসেঞ্জারবয়’ কাজ করত। তারা স্টক ও বন্ডের দলিল এক হাউজ থেকে অন্য হাউজে নিয়ে যেত এবং সঠিক ব্যক্তির নিকট মালিকানা বুঝিয়ে দিত। কোনো দলিল হারিয়ে গেলে তার মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া খুব কঠিন হতো। কারণ, জমির দলিলের মতো এসব কাগজেও হাতবদল ও জালিয়াতির সুযোগ ছিল। ফলে ম্যাসেঞ্জারবয়ের কাজটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১৯১৮ সাল। বসন্তের শুরু থেকে গ্রীষ্মের প্রথম পর্যন্ত অনেক ম্যাসেঞ্জারবয় ওয়ালস্ট্রিট বাজার থেকে গায়েব হওয়া শুরু করে। ওয়ালস্ট্রিট খুব ছোট্ট একটি জেলাশহর। এই ছোট্ট শহরের বিভিন্ন গলিতে স্টক ব্রোকাররা অফিস খুলে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করত। অনেক সময় একটি অফিস থেকে অন্য অফিসের দূরত্ব কোনো একটি ভবনের এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরের দূরত্বের সমান হতো। তাহলে এমন কী হলো, যার জন্য ছোট্ট একটি পথ পাড়ি দিতেই ম্যাসেঞ্জারবয়রা গায়েব হয়ে যাচ্ছে! ব্যাপারটা যেন এমন, মাটিই তাদের শুষে নিচ্ছে।

বিষয়টি তখনই ঘটা শুরু করে, যখন ওয়ালস্ট্রিটে প্রতিমাসে ২০ মিলিয়ন ডলারের বেশি লেনদেন হচ্ছিল। সরকারের আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ অল্প হলেও কিছু বন্ড ক্রয় করতে শুরু করে। এমনও হয়েছে, প্রতিদিন ২ মিলিয়নের বেশি শেয়ার ক্রয়- বিক্রয় হয়েছে। এমন সময় দায়িত্বশীল ম্যাসেঞ্জারবয়দের উপস্থিতি অপরিহার্য হয়ে ওঠে। যদি কোনো ব্যক্তি স্টক দলিল সময়মতো হাতে না পেত, তবে তার সব অর্থ জলে যাওয়ার মতো অবস্থা হতো।

এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মানুষ প্রতিটি স্টকের বিমা করা শুরু করে। তবে সে সময় যে পরিমাণ স্টক ও বন্ড সিকিউরিটিজ চুরি হচ্ছিল, তাতে বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে এতটা ক্ষতি বহন করা সম্ভব ছিল না। ওয়ালস্ট্রিট কমিটি আইনি তৎপরতা শুরু করে। তারা গোয়েন্দাকর্মী নিয়োগ এবং হারিয়ে যাওয়া সিকিউরিটিজগুলো উদ্ধারের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে ইতোমধ্যে শেয়ারবাজারের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা কোনো এক অজানা কারণে প্রকাশ করা হয়নি। কারণ, এতে হয়তো সাধারণ মানুষ আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে এবং স্টক ও বন্ড ক্রয়ে অনিচ্ছুক হয়ে পড়বে। কিন্তু নিউইয়র্কের এমন কোনো কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন ছিল না, যারা এই তথ্য জানত না।

১৯২০ সালের শুরুতে তাদের কিছু সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি থেকে এমন কিছু তথ্য জানা যায়, যা আমেরিকার ইতিহাসে কখনোই ঘটেনি। একটি তরুণ সংগঠনের পরিচয় পাওয়া যায়, যাদের নিউইয়র্কের প্রভাশালী ইহুদিচক্র বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ দিয়ে ওয়ালস্ট্রিটে ম্যাসেঞ্জারবয় হিসেবে চাকরির জন্য পাঠাত। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তারা খ্রিষ্টানদের নাম ব্যবহার করত। ফলে ব্রোকার হাউজগুলো তাদের চাকরি দিতে কোনো রকম দ্বিধাবোধ করত না।

আশা করি এখন আর বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না, কেন তারা সামান্য পথ পাড়ি দিতেই অদৃশ্য হয়ে যেত। ছদ্মবেশী ম্যাসেঞ্জারবয়রা শেয়ার দলিলগুলো তুলে দিত তাদের সন্ত্রাসী সংগঠনের হাতে, যার নাম ‘Confidence Men’। এটির আরও একটি নাম ছিল ‘Bank-roll Men’। কিন্তু পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পরও তাদের কোনোরূপ শাস্তি দেওয়া হয়নি। কারণ, অসংখ্য উকিল ও আইনজীবীদের দ্বারা এই সংগঠনটি সুরক্ষিত ছিল। চুরি হয়ে যাওয়া স্টক ও বন্ডগুলোকে নেওয়া হতো ক্লিভল্যান্ড, বোস্টন, ওয়াশিংটন, ফিলাডেলফিয়া ও কানাডায়। এর বিনিময়ে সংগঠন ও ম্যাসেঞ্জারবয়দের দেওয়া হতো মোটা অঙ্কের কমিশন।

একবার কোনো এক ম্যাসেঞ্জারবয় চুরি করা স্টক ও বন্ডগুলো সামান্য অর্থের বিনিময়ে তাদের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়নি। সে দলিলগুলো নিয়ে পালিয়ে যায় এবং নতুন কোনো গোষ্ঠীর নিকট উচ্চমূল্যে বিক্রির পরিকল্পনা করে। তাকে খুঁজে বের করতে গুপ্তঘাতক নিয়োগ করা হয়। অনেক কষ্টে তাকে খুঁজে পাওয়া গেলেও দলিলগুলো আর উদ্ধার করা যায়নি। ফলে তাকে তৎক্ষণাত হত্যা না করে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ছদ্মবেশে তার সাথে বন্ধুত্ব করে বেশ কিছুদিন মজা করা হয়, মদ ও সুন্দরী নারীর নেশায় ভুলিয়ে রাখা হয়। সবশেষে জানা যায়, দলিলগুলোর তার কোটের আস্তরণের নিচে সেলাই করা আছে। এর পরপরই তাকে হত্যা করা হয়। তার মৃতদেহ উদ্ধারের পর ডজনখানেক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

জ্যান্টাইল ম্যাসেঞ্জারবয়দেরও তারা বিভিন্ন প্রলোভনে নিজেদের সংগঠনে যুক্ত করার চেষ্টা করত। একবার যদি কেউ যুক্ত হয়েছে, তবে তার আর ফিরে আসার উপায় নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক জ্যান্টাইলের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, যখন সে এই সংগঠনটি থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলে, তখন তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। দলের সর্দার পরিষ্কার জানিয়ে দেয়—

‘আমি বিশ্বাসঘাতকা একদমই পছন্দ করি না। যদি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করো, তবে তোমাকে খুন করব। আর যদি আমি নিজে তোমাকে খুন না করি, তবে আমার দলের কেউ না কেউ অবশ্যই খুন করবে। কারণ, আমরা চাই না আমাদের পরিচয় প্রকাশিত হোক।’

এত সব প্রমাণ ও স্বীকারোক্তির পরও এই দলপতিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে যেসব ম্যাসেঞ্জারবয় সংগঠন থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইছে, উলটো তাদেরকেই শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। সামান্যসংখ্যক ইহুদি এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় ধরা পড়ে। কিছুদিন যেতে না যেতেই তারাও জেল থেকে মুক্তি পায়। কারণ, বড়ো বড়ো ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মাথার ওপর ছায়া হয়ে আছে।

এটাই হলো আমাদের বিচারব্যবস্থার বর্তমান রূপ। অর্থ-বিত্তের জোরে ইহুদিদের হাজারটা অপরাধও মাফ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যে জ্যান্টাইলরা অভাবের তাড়নায় তাদের ফাঁদে পা দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে, তাদেরকেই ভোগ করতে হচ্ছে অনিশ্চিত কারাজীবন।

ওয়ালস্ট্রিট দখল করা নিয়ে ইহুদিদের পরিকল্পনা

আমেরিকায় ইহুদি বিতর্ক শুরু হয়েছে মূলত একটি শহরকে কেন্দ্র করে, তা হলো ‘নিউইয়র্ক’। ইহুদিদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য হলো—যখন তারা কোথাও যাবে, তখন একত্রে যাবে এবং সেখানে নিজেদের খুঁটি প্রতিষ্ঠিত করবে। গুটিকয়েক ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছাড়া এই শহরের বাকি সব প্রতিষ্ঠান আজ তাদের দখলে। পুলিশ কমিশনার General Bingham-এর তথ্য অনুযায়ী—তৎকালীন নিউইয়র্কের প্রায় ৫০ ভাগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইহুদি জনগোষ্ঠীটিই দায়ী।

কার্যগত পার্থক্যের দিক দিয়ে ইহুদিরা যেখানে স্বল্পমেয়াদে ঋণ দেয়, সেখানে জ্যান্টাইলরা দেয় দীর্ঘমেয়াদে। ফলে অর্থের তারল্য ইহুদিদের নিকট সব সময়ই বেশি থাকে। তাই যেকোনো সংকটকালীন মুহূর্তে তারাই প্রথম অর্থ বিনিয়োগের ক্ষমতা রাখে। এজন্য দেখবেন, ইউরোপ-আমেরিকার বেশিরভাগ রাজপথ, রেলপথ ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথম ইহুদিরাই বিনিয়োগ করত। তাদের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো অল্প পরিমাণ অবিহিত মূল্যে বিভিন্ন পাবলিক প্রকল্পের শেয়ার অবলিখন করে নিত। পরে কৃত্রিম উপায়ে (স্পেকুলেশান সৃষ্টির মাধ্যমে) শেয়ারগুলোর মূল্য বাড়িয়ে দিত এবং তা বর্ধিত মূল্যে ওয়ালস্ট্রিটে বিক্রি করত। ফলে কী হতো? প্রকল্পগুলোর সকল দায়দায়িত্ব সাধারণ জনগণের কাঁধে চলে যেত। আর মাঝখান থেকে ইহুদিরা বিশাল অঙ্কের মুনাফা নিজেদের করে নিত। অন্যদিকে, জ্যান্টাইল প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগকৃত অর্থ আদৌ ব্যবহৃত হচ্ছে কি না বা সেই অর্থ ফেরত পাবে কি না, তা প্রায় সময়ই অনিশ্চিত থাকত। কারণ, ঋণ নিয়ে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে অর্থ ও সম্পদ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার নজির বাজারে কম ছিল না।

ওয়াল স্ট্রিটের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যাংকটি হলো Kuhn, Loeb & Company, যার সদস্যগণ হলেন Jacob Schiff, Mortimer, Otto H. Kahn, Paul M. ও M. Warburg। এ ছাড়াও ওয়ালস্ট্রিটের অন্যান্য প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—Speyer & Company; J. and W. Seligman & Company; Lazard Freres; Ladenburg, Thalmann & Company; Hallgarten & Company; Knauth, Nachod & Kuhne; Goldman, Sachs & Company ।

ইহুদিরা এতটাই ধূর্ত ও কৌশলী, বাজার যেন তাদের অন্ধকার অংশটুকু দেখতে না পারে, সে ব্যবস্থা পূর্বেই করে রেখেছে। শুধু ভোগ্য পণ্যের বাজার নয়; খনিজ পণ্যের ওপরও তারা একক আধিপত্য বিস্তার করেছে। যেমন : লোহা, ইস্পাত, সোনা, রুপা, তেল ইত্যাদি।

মজার বিষয় হলো—আজকের ওয়ালস্ট্রিট বাজারে যে বড়ো বড়ো ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, তার কোনোটিরই ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে এখন আর ইহুদিদের দেখা যায় না। ছোটোখাটো কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে সকল বড়ো বড়ো প্রতিষ্ঠান এখন জ্যান্টাইলদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

এই প্রভাবশালী গোষ্ঠীটি কেন ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা থেকে সরে এলো? এমনকী ইহুদিরাও আজ জ্যান্টাইল প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্থ-সম্পদ জমা করছে! হঠাৎ এমনটা হওয়ার কারণ কী?

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে যথেষ্ট দুর্নাম কামিয়েছে; Joseph G. Robin-এর ব্যাংকিং ব্যর্থতা অন্যতম উদাহরণ। তার আসল নাম হলো Robonovitch । তিনি জনগণের জমাকৃত অর্থ রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতেন। একসময় সেই প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে দেউলিয়া হওয়া শুরু করে, যা পূর্বপরিকল্পিত ছিল কি না জানা যায়নি। তবে তার এমন বিনিয়োগের জন্য অসংখ্য আমানতকারী সর্বহারা হয়ে যায়। আদালতও Dr. Robin-এর প্রতিষ্ঠানটিকে কিছু বলতে পারছে না। কারণ, দেউলিয়া তো হয়েছে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো!

এমন অসংখ্য ঘটনা তখন আমেরিকার আকাশে-বাতাসে উড়ছিল, তাই একসময় সাধারণ মানুষ ইহুদিদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্থ জমানো বন্ধ করে দেয়। সাধারণ মানুষকে ব্যাংকিং শিল্পে ফিরিয়ে আনতে ‘জ্যান্টাইল ফ্রন্ট’ বিষয়টি আবারও কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে। এ কারণে দেখা যায় ক্যাশিয়ার, ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অপারেটর, মার্কেটার ইত্যাদি পদগুলোতে যারা বসে আছে, তারা হলো খ্রিষ্টান, হিন্দু বা মুসলমান। এসব দেখে সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে, এসব জ্যান্টাইলদের প্রতিষ্ঠান!

খুব ধীর গতিতে হলেও ওয়ালস্ট্রিট শেয়ারবাজার আজ ইহুদিদের দখলে চলে গেছে, যদিও এর শুরুটা সহজ ছিল না। Sereno S. Pratt-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৭ মে, ১৭৯২ সালে ওয়ালস্ট্রিটের ২২ নম্বর গলিতে একটি ছোট্ট অফিস প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শেয়ার বাজারে তার যাত্রা শুরু। প্রতিদিন কাজের শেষে একদল ব্রোকার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে ওয়ালস্ট্রিট-এর ৬৮ নম্বার গলিতে Buttonwood গাছের নিচে জড়ো হতো। ৮ মার্চ, ১৮১৭ এরূপ ২৪ জন শেয়ার ব্রোকার নিজেদের মধ্যে আলোচনার সাপেক্ষে ওয়ালস্ট্রিট শেয়ারবাজারের একটি গঠতন্ত্র তৈরি করে; যা ‘Buttonwood Agreement’ নামে পরিচিত।

ওয়ালস্ট্রিট মূলত একটি প্রাইভেট স্টক মার্কেট। ব্রোকারগণ কমিশনের ভিত্তিতে এ বাজারে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচা করত। এর সদস্যসংখ্যা ১১০০ জনে সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ এই ১১০০ জন সদস্যই কেবল ওয়ালস্ট্রিট বাজারের ‘ফার্স্ট ফ্লোরে’ প্রথম শ্রেণির ব্রোকার হিসেবে নিজেদের এবং মক্কেল প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার কেনা-বেচার কাজ করতে পারবে। ১৯২০ সালে এই প্রতিটি সদস্যপদের মূল্য ছিল প্রায় ১ লক্ষ ডলার।

সদস্যপদ গ্রহণ ও হস্তান্তর নিয়ে ছিল যথেষ্ট কঠোরতা। মাত্র দুটি উপায়ে একজন বহিরাগত এ বাজারের সদস্যপদ লাভ করতে পারত।

এক. যদি কোনো সদস্য মারা যায়, তবে তার সদস্যপদ উত্তরাধিকারীর নিকট হস্তান্তরিত হতো।

দুই. যদি কোনো সদস্য দেউলিয়া হয়ে যায় বা ইচ্ছাকৃত অবসর গ্রহণ করতে চায়, তবে তার সদস্যপদ ক্রয়ের মাধ্যমে।

৪০ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালক কমিটি দ্বারা এই বাজার পরিচালিত হতো। এই কমিটিতে বহু বছর কোনো ইহুদি জায়গা পায়নি।

১৯১৫-১৬ সালের দিকে প্রথমবারের মতো একজন ইহুদি ব্রোকার কমিটিতে জায়গা পায়। পরিচালক কমিটির ১৫ জন সদস্য নিয়ে আরেকটি ছোটো কমিটি ছিল, যারা শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত সদস্যদের দেখভাল করত। নতুন কোনো ব্যক্তি এই বাজারের সদস্য হতে চাইলে তাকে অবশ্যই এই কমিটির নিকট আবেদন করতে হতো। যেহেতু শেয়ার বাজারেরসদস্য সংখ্যা ১১০০ এবং এর সাথে নতুন কোনো পদ সংযোজন করা হবে না, তাই কেউ ইচ্ছা করলেই এর সদস্য হতে পারত না। যদি আবেদনের মাধ্যমে নতুন কেউ সদস্যপদ লাভ করতে চায়, তবে তাকে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন পেতে হবে। আর ইহুদিদের প্রতি তো বহু আগ থেকেই জ্যান্টাইলদের মনে ক্ষোভ জমে আছে, তাই কেউ চাইত না এই বাজারে ইহুদিদের আগমন ঘটুক।

মূলত ধৈর্য ও অধ্যবসায় তাদের চরিত্রের চরম দুটি গুণ, যার দরুন তারা যা চেয়েছে তাই পেয়েছে। সেই শুরুর দিকে ওয়ালস্ট্রিটে তাদের সদস্য ছিল মাত্র পাঁচজন কী সাতজন। কিন্তু বিংশ শতাব্দী শুরু হতে না হতেই তা দুশো ছাড়িয়ে যায়। আর আজ তো এ বাজার তাদেরই দখলে। প্রশ্ন হলো—কীভাবে এত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তাদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে?

প্রথমত, ইহুদিরা তাদের সদস্যপদ কোনো জ্যান্টাইলের নিকট হস্তান্তর করত না। দ্বিতীয়ত, শেয়ারবাজারে যখন মন্দা দেখা দিত, তখন কিছু জ্যান্টাইল সদস্য দেউলিয়া হতো। ফলে তাদের পদটি নিলামে তোলা হতো। তারা এই সময়টির অপেক্ষায় ওত পেতে থাকত। তারা যে অর্থে নিলাম ডাকত, তা দ্বারা দেউলিয়া হওয়া সদস্যটি সকল ঋণ ও দায় মিটিয়ে নিজের জন্য অতিরিক্ত কিছু জমা রাখতে পারত। এই অতিরিক্ত অর্থের লোভে জ্যান্টাইল প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে ইহুদিদের কাছে সদস্যপদ বিক্রি করত।

তৃতীয়ত, ইহুদিরা নিজেদের নাম পরিবর্তন করে খ্রিষ্টানদের নাম ব্যবহার করত, যা দেখে মনে হতো তারাও অ্যাংলো-সেক্সনের জাতিভুক্ত। নাম পরিবর্তন করা ইহুদিদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। যখন কোনো সম্প্রদায় ইহুদিদের বর্জন করে, সেখানে পুনরায় প্রবেশ করতে তারা সেই সম্প্রদায়দের নাম ব্যবহার করত।

১৯০৫ সালে যখন রাশিয়া থেকে ইহুদিদের বের করে দেওয়া হয়, তখন তারা রাশিয়ান নাম ব্যবহার করে পুনরায় প্রবেশ করে। শেয়ারবাজার তাদের বর্জন করলে খ্রিষ্টানদের নাম যেমন : Smith, Adam, Robin ইত্যাদি ব্যবহার করে সদস্যপদ লাভের আবেদন করতে শুরু করে। কেউ বুঝতেও পারে না, তার পাশে যে লোকটি দাঁড়িয়ে আছে বা একটু আগে সে যার সাথে কথা বলল, সে একজন ইহুদি। সময়ের সাথে সাথে শেয়ারবাজারে তাদের সদস্যসংখ্যা কীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, নিচে ছকটিতে দেখানো হলো।

বছরশেয়ারবাজারের মোট সদস্য সংখ্যাইহুদিদের সদস্য সংখ্যা
১৮৭২১,০০৯৬০
১৮৭৩১,০০৬৪৯
১৮৯০১,১০০৮৭
১৮৯৩১,১০০১০৬
১৯১৯১,১০০২৭৬

লক্ষ করলে বুঝবেন, শেষের কয়েক বছরে তাদের সদস্যসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মূল কারণ, তাদের ছদ্মনাম কৌশল। স্পেকুলেশান ও গেম্বলিং মানে বোঝায়, অধিক ঝুঁকি আছে জেনেও অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আসায় ঝুঁকিযুক্ত শেয়ারগুলোতে অর্থ বিনিয়োগ করা। এই শেয়ারগুলোর বিক্রয়মূল্য অভিহিত মূল্যের চেয়ে অনেক কম থাকে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়—ইহুদিরা যতবার এই ঝুঁকিযুক্ত শেয়ারগুলো ক্রয় করেছে, ততবারই লাভবান হয়েছে। এর কারণ, তাদের নিকট প্রচুর তথ্য থাকত, যা দ্বারা বুঝে যেত কখন কোন শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি এবং হ্রাস পাবে।

ওয়ালস্ট্রিটের ৩০ নাম্বার গলিতে গড়ে উঠেছে ‘ক্লাব মার্কেট’, যেখানে তাদের ব্রোকারগণ তেল, গ্যাস, লোহা ইত্যাদি খনিজ পদার্থের বাণিজ্য করে থাকে। এ ছাড়াও এমন আরও অনেক গলি আছে, যেখানে তারা ছোটো ছোটো ক্যাম্প করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সিকিউরিটিজ লেনদেন করে যাচ্ছে। মিথ্যা ও ভুল তথ্য প্রচারের মাধ্যমে ইহুদিরা সাধারণ মানুষকে এই বাজারের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। সাধারণ মানুষও তাদের কথা প্ররোচিত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উপার্জিত অর্থ এই বাজারে বিনিয়োগ করছে।

এমন অনেকে আছে যারা নিজেদের বাড়ি, শস্যজমি ও কলকারখানা বন্ধ রেখে সামান্য কিছু মুনাফার আসায় ব্রোকারদের হাতে অর্থ তুলে দিয়েছে। তাদের তেমন কোনো ধারণাই নেই—এই বাজারে কী হচ্ছে; যে কোম্পানির শেয়ার কিনছে, তার দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।

ইহুদি ব্রোকারগণ একদিকে কমিশন খাচ্ছে, আবার যদি কোনো প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায়, তার শেয়ারগুলোও অনেক কম মূল্যে কিনে নিচ্ছে। সত্যি বলতে, এই বাজারে দয়া-মায়ার কোনো স্থান নেই। এটি শুধু চোর-ডাকাতদের বাজার। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও পত্রিকা অফিসের এমন কেউ নেই—যে ওয়ালস্ট্রিটের কালো অধ্যায় সম্পর্কে অবহিত নয়। যেভাবে আজ এই বাজারের ওপর আক্রমণ এসেছে, একইভাবে পৃথিবীর আরও অনেক শেয়ারবাজারেও আক্রমণ আসবে, হয়তো ইহুদিদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে; কোনো কিছুই নজরের বাইরে নয়।

ইহুদিদের হাজার বছরের ছদ্মনাম সংস্কৃতি

এ পর্যন্ত অনেকবার বলা হয়েছে—জ্যান্টাইলরা যখন ব্যাবসা-বাণিজ্যে ইহুদিদের অংশগ্রহণের ওপর নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ করত, তখন তারা নিজেদের পরিচয় খ্রিষ্টানদের বিভিন্ন ছদ্মনামের আড়ালে গোপন করত। তাদের এই নাম পরিবর্তনের সংস্কৃতি নতুন কিছু নয়; এটা হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতি।

সেমেটিক অঞ্চলগুলোতে আরবি নাম, ইউরোপের দেশগুলোতে অ্যাংলো-সেক্সনদের নাম ইহুদিদের হর-হামেশাই ব্যবহার করতে দেখা যেত। প্রাচীনকাল থেকে তাদের মনে একটি বিশ্বাস ছিল, নতুন নাম ভাগ্যে নতুন কিছু নিয়ে আসবে এবং হাজার অনিষ্ট থেকে মুক্তি দেবে। তারা এমনও বিশ্বাস করত, অসুস্থ্য ব্যক্তির নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখলে সে হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবে! পবিত্র বাইবেলেও এমন কিছু উদাহরণ পাওয়া যায়। যেমন : Abram হয়ে যায় Abraham এবং Jacob হয়ে যায় Israel।

Madansky ভাইয়েরা নিজেদের নাম Max, Benjamin, Solomon, Jacob-এর পর ‘May’ যোগ করে নতুন নাম রাখে। ফলে Max হয়ে যায় Max May এবং Benjamin হয়ে যায় Benjamin May। এই নামগুলো শুনে মনে হতে পারে—Madansky ভাইয়েরা অ্যাংলো-সেক্সনের জাতভুক্ত; যদিও তাদের উৎপত্তি এশিয়া মহাদেশে।

এমনও হয়েছে, রাতারাতি এক ঘোষণার মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকায় বসবাসরত ইহুদিদের বিশেষ কিছু নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে, যা তারা নিজেরাও জানত না। যেমন : লস অ্যাঞ্জেলসের বিখ্যাত অভিনেতা Elmo Lincoln একবার আইনি কোনো কাজে তার স্ত্রীকে নিয়ে আদালতে যান। গিয়ে দেখেন, তার নাম Otto Linknhelt হিসেবে লিপিবদ্ধ আছে।

এভাবে Levy হয়ে গেলেন Lytton, যিনি ছিলেন আমেরিকার একটি বিখ্যাত বিপণি বিতানের মালিক। সেকালের একজন বিখ্যাত সংগীতশিল্পীর গল্প শোনা যায়, যিনি বিয়ের আগে জানতেন, তার স্ত্রী স্পেনিশ। কিন্তু বিয়ের পর জানলেন, তার স্ত্রী ইহুদি এবং তার নাম Bergenstein। মূলত তাদের প্রতিটি নামের পেছনে বেশ ভালো কিছু ইতিহাস লুকিয়ে থাকে, যা সবার পক্ষে উদ্ঘাটন করা সম্ভব নয়। উদাহরণ হিসেবে Belmont নামটির ইতিহাস উপস্থাপন করা যাক।

যেমন : উনিশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত জার্মান ইহুদিরা নিজেদের পারিবারিক নাম ব্যবহার করত না। তারা বলত —’Joseph ben Jacob’ অর্থাৎ Jacob-এর পুত্র Joseph। বাবার নাম তারা উপাধি হিসেবে ব্যবহার করত। কিন্তু নেপোলিয়নের শাসনামলে সেনহাড্রিনের এক ঘোষণায় ইহুদিদের নাম নির্ধারণ সংস্কৃতিতে বড়ো পরিবর্তন আসে। তাদের জন্য কিছু উপনামের তালিকা তৈরি করে দেওয়া হয়। মণি-মুক্তা, পশু-পাখি, গাছপালা, কীটপতঙ্গ ইত্যাদির নামগুলো ইহুদিরা উপাধি হিসেবে ব্যবহার করত। যেমন : Goldstein, Silberberg, Mandelbaum, Lilienthal, Ochs, Wolf 3 Loewe l

কিছু জার্মান তাদের বাবার নামের সঙ্গে ‘Son’ যোগ করে নিজেদের নাম নির্ধারণ করত। যেমন : Jacobson, Isaacson। আবার অনেকে তাদের আশেপাশের শহর- বন্দর ও নদীর নাম অনুকরণে নিজেদের নাম নির্ধারণ করত। যেমন : বার্লিনের অধিবাসীরা তাদের নাম রাখে Berliner, সোহানবার্গের অধিবাসীরা রাখে Schoenberg। এর অর্থ ‘সুন্দর পাহাড়’। এই নামটিকে ফরাসি ভাষায় পরিবর্তন করলে হয় Belmont। অর্থাৎ Schoenberg ও Belmont শব্দ দুটির অর্থ ‘সুন্দর পাহাড়’।

এই Belmont পরবর্তী সময়ে Rothschilds-এর প্রতিনিধি হয়ে আমেরিকায় গমন করেন। তাহলে বিখ্যাত পরিবার Rothschilds নামের উৎস কী? সত্যি বলতে এই নামটির ইতিহাস উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। যতদূর জানা যায়, ফ্রাঙ্কফ্রুটের কোনো এক ইহুদি পরিবার তার ঘরের সামনে লাল রং-এর একটি ঢাল ঝুলিয়ে রাখত, সেখান থেকে Red Shield-কে তাদের পারিবারিক লোগো হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

বলশেভিক বিপ্লবে তারা নিজেদের নামগুলো রাশিয়ান ভাষায় পালটে ফেলে। যেমন : Leo Bronstein হয়ে যায় Leo Trotsky; জার্মান শব্দ Apfelbaum হয়ে যায় Zinoviev; হিব্রু শব্দ Cohen হয়ে যায় Volodarsky; Goldman হয়ে যায় Izgoev এবং Feldman হয়ে যায় Vladimirov। সাধারণ একটি নামের পেছনেও যে এত ইতিহাস লুকিয়ে থাকতে পারে, তা কি সাধারণ মানুষের পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব?

যদি একজন পোলিশ ইহুদির নাম হয় Zuckermandle, সে কখনো হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করবে না। কারণ, উভয় দেশের পারস্পরিক বিরোধের দরুন এই নাম যেকোনো সময় তাকে বিপদে ফেলতে পারে। তাই নাম পালটে সে হয়ে যায় Zukors, যা হাঙ্গেরিয়ান শব্দ। কিন্তু যখন সে আমেরিকায় প্রবেশ করবে, তখন Mr. Zuckermandle নামটি অপরিবর্তিত রাখলে কোনো সমস্যা নেই।

মূলত তিনটি কারণে ইহুদিদের নাম পরিবর্তন করতে দেখা যায়। এক. তারা যে অন্য দেশের নাগরিক, তা বুঝতে না দেওয়া। দুই. ব্যবসায়িক কাজে যেন কোনো বাধা না আসে। তিন. সামাজিক কারণ। তাদের একটি নাম কীভাবে বহু নামে রূপ নিয়েছে, তার কিছু উদাহরণ Jewish Encyclopedia থেকে উপস্থাপন করা হলো—

• Asher থেকে হয়েছে Archer, Ansell, Asherson.

• Baruch থেকে হয়েছে Benedict, Beniton, Berthold.

• David থেকে হয়েছে Davis, Davison, Davies, Davidson.

• Isaac থেকে হয়েছে Sachs, Saxe, Sace, Seckel.

• Jacob থেকে হয়েছে Jackson, Jacobi, Jacobus, Jacof Kaplan, Kauffmann, Marchant, Merchant.

• Jonah থেকে হয়েছে Jones, Joseph, Jonas.

• Judah থেকে হয়েছে Jewell, Leo, Leon, Lionel, Lyon, Leoni, Judith.

• Levi থেকে হয়েছে Leopold, Levine, Lewis, Loewe, Low, Lowy.

• Moses থেকে হয়েছে Mortiz, Moss, Mortimer, Max, Mack, Moskin, Mosse.

• Solomon থেকে হয়েছে Salmon, Salome, Saloman, Salmuth.

আরও অনেক নাম Jewish Encyclopedia-তে আছে, যা বিভিন্ন সময়ে তারা পরিবর্তন করেছে। যেমন : Barnett, Barnard, Beer, Hirschel, Mann, Mendel, Mandell, Mendlsohn ইত্যাদি। নতুন কোনো নাম গ্রহণের পর ইহুদিরা প্রচারণায় নেমে যেত, যেন তা সাধারণ মানুষের মনে দ্রুত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। কাজ ও ব্যবসায়ের প্রকারভেদে তাদের রয়েছে পৃথক পৃথক নামের শ্রেণি।

সামরিক রসদ বাণিজ্যে Lucile, Mme ও Grande নামগুলো প্রায়ই ব্যবহৃত হতো। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম নির্ধারণেও তারা কম কলাকৌশল জাহির করেনি। যেমন : Reuben Abraham Cohen যখন চাইল তার অস্ত্রগুলো যুদ্ধের প্রথমেই বিক্রি হয়ে যাক, তখন দোকানের নাম পালটে রাখলেন R. A. Le Can, যা অনেকটা ফরাসি ধাঁচের। একইভাবে Mr. Barondesky হয়ে গেল Barondes বা La Baron ।

অনেক সময় তারা নিজেদের চামড়ার রং-এর ওপর ভিত্তি করে নাম নির্ধারণ করে। যেমন : সাদা বর্ণের ইহুদিরা নিজেদের নামে Millers শব্দটি ব্যবহার করে। Aarons হয়ে যায় Arnold ও Allingham। আবার Cohens থেকে হয় Druce, Freeman, Montagu, Rothbury ও Cooke।

Cohens নামটি তাদের মাঝে খুব প্রচলিত। দেখা যায়—যে রাস্তা থেকে পুরাতন কাপড় সংগ্রহ করছে, তার নাম Cohen। যে পশু জবাই করছে, তার নাম Cohen। একজন আইনজীবী, তার নামও Cohens। এতসব Cohens-কে তারা নিজ পেশার নাম অনুযায়ী আলাদা করতে শুরু করে, যেমন : Attorney Cohan। একই উপায়ে Kaplan হয়ে গেল Chaplin। ফলে Charlie Kaplin হয়ে গেল Charlie Chaplin। তাদের নিকট সে একজন বড়ো অভিনেতা, কিন্তু জ্যান্টাইলদের নিকট ‘গরিব ইংলিশ বালক’। এমনি আরেকজন বিখ্যাত অভিনেতা Rev. Stephen S. Wise। তার জন্ম হাঙ্গেরিতে হওয়ায় সেখানে তার পারিবারিক নাম ছিল Weisz। কখনো এই নামটিকে জার্মান ভাষায় বলা হতো Weiss। এই নামটি আমেরিকান ভাষায় রূপান্তর করলে হয় White। তবে White অপেক্ষা Wise অধিকতর ভালো বলে নামটি হয়ে গেল Rev. Stephen S. Wise

চলচ্চিত্র জগতে Mr. Selwyn জনপ্রিয় আরেকটি নাম। তার প্রকৃত নাম Schlesinger । তবে এই নামে আরও অনেকে ছিল বলে অন্যরা তাদের নাম পরিবর্তন করে রেখেছে Sinclairs। আমেরিকান রাবাইদের অনেকে কমবেশি বিভিন্ন সময়ে নিজেদের নাম পরিবর্তন করেছে। যেমন : Rabbi Posnansky হয়ে গেলেন Rabbi Posner এবং Kalen হয়ে গেল Kalensky ।

এমনও দেখা গেছে, টাকা ধার করার সময় তারা ছদ্মনাম ব্যবহার করত, যেন টাকা নিয়ে ভেগে যাওয়া যায়। কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরি শেষে ইহুদিরা নতুন নাম গ্ৰহণ করত, যেন নতুন কর্মক্ষেত্রে পুরোনো কাজের অভিযোগ শুনতে না হয়।

আশা করি ‘Kosher’ শব্দটি মনে আছে। যে ধর্মীয় প্রক্রিয়ায় ইহুদিরা পশু জবাই করে, তাকে Kosher বলে। তবে এ প্রক্রিয়াটি সমাজে বসবাসরত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সমস্যা তাদের ধর্মীয় আইনে নয়; বরং কসাইখানাগুলোতে। কারণ, অধিকাংশ কসাইখানায় মুনাফাকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হতো। তাই পশু হত্যা বর্বর পর্যায়ে রূপ নিত। জ্যান্টাইলরা যখন Kosher সংস্কৃতি বন্ধ করতে আন্দোলন শুরু করে, তখন ইহুদিরা এই শব্দের পারিভাষা পালটে ফেলে। প্রচার করতে শুরু করে—Kosher হলো শহরের সবচেয়ে ভালো খাবারের স্থান!

ইহুদিরা যা-ই করুক না কেন, তাদের প্রতিটি কাজের মধ্যেই একটি শিল্প থাকে; এর জন্য সাধুবাদ জানানো উচিত। এ জাতীয় কূটকৌশল সাধারণত জ্যান্টাইলদের মাথায় কখনো আসে না। এজন্য ইহুদিরা সব সময় আমাদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকে। ক্ষমতা, অর্থ-সম্পদ বা প্রতিপত্তি যা-ই বলি না কেন, সবকিছুতে ইহুদিরা জ্যান্টাইলদের চেয়ে উচ্চ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এভাবে বড়ো হয়ে লাভ কী? মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সম্পদ দখল করে নিজেরটা বাড়িয়ে লাভ কী?

সত্যি বলতে যদি জ্যান্টাইলরাও ইহুদিদের পথ অবলম্বন করত, তাহলে তারাও অনুরূপ সম্পদের মালিক হতে পারত। কিন্তু এতে তো সমাজের চতুর্দিকে নোংরামি, নগ্নতা, খুন-খারাপী, অত্যাচার-অনাচারে ভরে উঠত। তখন মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকত না। শান্তিতে বেঁচে থাকতে চাইলে আমাদের মধ্যকার শয়তানদের অবশ্যই শনাক্ত করতে হবে।

প্রথমে তাদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। যদি শত চেষ্টা করেও শোধরানো সম্ভব না হয়, তবে তাদের চূড়ান্ত ভাগাড়ে নিয়ে ফেলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে এ জন্য প্রথমে নিজেদের শিক্ষিত ও বুদ্ধিমানরূপে গড়ে তুলতে হবে। না হয় বছরের পর ইহুদিদের ধোঁকার স্বীকার হয়ে যেতে হবে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *