৯
মিটিং কক্ষটি পূর্ণ। ওভাল টেবিলটির ১১টি চেয়ারের কোনটাই খালি নেই। এক্সিট দরজাগুলোর সবগুলোই বন্ধ।
ইসরাইল থেকে পালিয়ে আসা ইসরাইল সরকারের আপাতকালীন প্রবাসী মন্ত্রীসভার বৈঠক। দেয়ালে টাঙানো ইসরাইল রাষ্ট্রের মানচিত্রের নিচে বিশেষ চেয়ারটায় বসেছেন প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটন। তার ডান পাশে বসেছেন নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রজার রবিন আর বাম পাশে সিকিউরিটি ও কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের (সিনবেথ) চীফ জেনারেল শামিল এরফান। এ ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন বিদেশে গোয়েন্দা কর্মের (মোসাদ) প্রধান মেজর জেনারেল লুইস কোহেন, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের (শেরুত মোদিন) নতুন প্রধান জেনারেল দানিয়েল দোরিন এবং সশস্ত্র বাহিনীর নতুন প্রধান আইজ্যাক এ্যারন।
বৈঠক শুরু হয়ে গেছে।
বৈঠকের শুরুতে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রজার রবীন বৈঠক সম্পর্কে ব্রীফ করে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রীসভাকে ব্রীফ করবেন। ঘোষণা দেয়া হলো, মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দ, এখন ব্রীফ করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী:
আষাঢ়ের পানি ভরা মেঘের মত ভারী প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটকের মুখ। সে আগেই নড়েচড়ে বসেছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কণ্ঠ থামতেই মুখ খুলে গেল প্রধানমন্ত্রীর।
কথা শুরু করল ইসরাইল থেকে পালিয়ে আসা আপাতকালীন মন্ত্রীসভার প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক, ‘মন্ত্রীসভার সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, প্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা ইসরাইল দখলকারী ফিলিস্তিন সরকারের ঘোষণা শুনেছেন। আমাদের ইসরাইল সরকারের অধীনে বিদেশ থেকে এসে ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন করা লাখ লাখ ইহুদি রাতারাতি তাদের বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্পত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুর অধিকার হারিয়েছে। তারা যে দেশ থেকে এসেছে সে দেশে চলে যাওয়া তাদের দায়িত্ব বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এতবড় অন্যায়ের কেউ প্রতিবাদ করল না। শুধু বৃটেন উদ্বাস্তুদের জন্যে তার উদ্বেগের কথা জাতিসংঘকে জানিয়েছে। সোভিয়েট ইউনিয়ন একটি কথাও উচ্চারণ করেনি, যদিও সেখান থেকেই বেশি ইহুদি এসেছে ফিলিস্তিনে। সবচেয়ে বেদনাদায়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা। সেখানে সরকারের কেউ কেউ ইসরাইলের পক্ষ নিলেও কংগ্রেস ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মার্কিন সরকার ইসরাইলের পক্ষ নেয়ার ঘোরতর বিরোধীতা করেছে। এমনকি লাখ লাখ ইহুদি উদ্বাস্তু হওয়া এবং তাদেরকে তাদের স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানোর ভয়ংকর সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করতে তারা নারাজ। আমি সিনেট ও কংগ্রেসের সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু নেতাদের সাথে কথা বলেছি, অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা যেন রাতারাতিই পাল্টে গেছে। তারা বলেছে, ইসাইল রাষ্ট্র ও এক শ্রেণীর ইহুদির বাড়াবাড়ির কারণে আজ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা কিছু করতে অপারগ। এখানে প্রায় সব দেশপ্রেমিক আমেরিকানের মত হলো, একশ্রেণীর ইহুদিরা লাখ লাখ ফিলিস্তিনবাসিকেই শুধু অর্ধ সহস্র বছরের বেশি সময় ধরে উদ্বাস্তু করে রাখেনি, আমেরিকানদের ওপরও ছড়ি ঘুরাচ্ছে। আইনানুগ আমেরিকানরা এটা মেনে নিয়েছে আইনের প্রতি শ্রদ্ধার কারণে, কিন্তু ইসরাইলকে সহায়তা করতে তারা রাজি নয়। তাদের এই চূড়ান্ত কথা শোনার পর তাদেরকে বলার আর কিছু অবশিষ্ট নেই। আমি যোগাযোগ করেছিলাম আমেরিকায় ইহুদিদের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্সিল অব জুইস এসোসিয়েশন অব আমেরিকা’র নেতৃবৃন্দসহ ইহুদি ধর্মীয় সমিতিগুলোর নেতাদের সাথেও। কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু আমেরিকানদের যে সেন্টিমেন্ট, তাতে এই সময় কিছু করা সম্ভব নয় বলে তারা জানিয়েছে। তারা বলছে এই সময় কিছু করতে গেলে কাউন্সিল ও এসোসিয়েশনগুলো বিপদে পড়তে পারে। কিছু করা গেলেও তার জন্যে সময় চাই বলে তারা জানিয়ে দিয়েছে। ধর্মীয় সমিতির ধর্ম নেতাদের সাথে আলাপ করেছি। তারা আমেরিকানদের চেয়ে আমাদের প্রতি বেশি বিক্ষুব্ধ ও আক্রমণাত্মক। তারা নির্লজ্জের মত একথা স্পষ্ট করেই বলেছে যে, ইসরাইল ও জায়নবাদীদের রাজনৈতিক অভিলাষের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মভীরু ও নিরপরাধ ইহুদিরাও আজ বিপদের মুখে পড়েছে। ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে তারা আর বিপদ বাড়াতে চায় না। এই হলো আমাদের স্বজাতিদেরও কথা। অর্থাৎ এখন আমাদের কোন বন্ধু নেই। সামরিক সাহায্য দূরের কথা অর্থনৈতিক সাহায্যও কারও কাছ থেকে পাওয়ার আশা নেই। আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘও একথা মনে করতে চাচ্ছে যে, ইসরাইলে যা ঘটেছে সেটা ক্ষমতার ইন্টারন্যাল পরিবর্তন। ইসরাইলে ক্ষমতা দখলকারী ফিলিস্তিন সরকার ফিলিস্তিন স্থানীয় ইহুদী ও খৃষ্টানদের সমর্থন যোগাড় করে এই ইমেজই দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চাইছে। এই চালাকির প্রতি সমর্থন দিয়েই আমাদের বন্ধুরাও বলছে, ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের অভ্যুত্থানে বিদেশী সাহায্য বা বিদেশী সৈন্যের কোন অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা আরও বলছে, এই ঘটনায় আরব রাষ্ট্রগুলোও খুব উৎসাহ দেখায়নি, এমনকি তাদের কেউ স্বীকৃতিও দেয়নি ইসরাইলের ফিলিস্তিন সরকারের প্রতি। এসব যুক্তি তুলেই আমাদের বন্ধু দেশগুলো আমাদের এড়িয়ে চলতে চাচ্ছে। এই অবস্থায় যা করতে হবে আমাদেরকেই করতে হবে।
বলে থামলো আপাতকালীন ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক। থেমেই আবার বলে উঠলেন, কি করতে হবে এ সম্পর্কে আপনাদের চিন্তা আপনারা বলুন।
সবার মধ্যে একটা নড়াচড়ার ভাব পরিলক্ষিত হলো। নড়েচড়ে বসল সবাই।
কিন্তু সবাই চুপ-চাপ।
মুখ খুলল প্রথমে মন্ত্রীসভার জুনিয়র সদস্য পুনর্বাসন-পুনর্গঠন মন্ত্রী ইসরাইল আবা ইবান। বলল সে, আমরা যে যুদ্ধে জেতার কথা, সে যুদ্ধে জিতিনি, দেশকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। এখন দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। তারা আকারে ছোট শক্তি ছিল বলে অ্যাসেট্রিক ওয়ার (হিট এন্ড রান, গোপন তৎপরতা, ইত্যাদি) এর মাধ্যমে ওরা আমাদের পরাজিত করেছে। এখন আমরা ছোট শক্তি হয়ে পড়েছি, আর ওরা বড়। আমাদেরকে এখন ‘অ্যাসিমেট্রিক ওয়ার’-এর পথ গ্রহণ করতে হবে।
থামল তরুণ মন্ত্রী আবা ইবান।
প্রধানমন্ত্রী শার্লটক অন্যদের দিকে তাকাল। সকলেই ইসরাইল আবা ইবানের যুক্তি ও মত সমর্থন করল।
সবশেষে কথা বলার পালা দেশরক্ষামন্ত্রী রজার রবিনের। তিনি কোন মত প্রকাশ না করে সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলল, এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলবেন।
বলতে শুরু করল প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক, ‘ইশ্বরকে ধন্যবাদ যে, ‘আমরা সকলে এক ভাবেই ভাবছি। আপনারা শুনে খুশি হবেন, যে যুদ্ধের কথা আপনারা বলেছেন, সেই যুদ্ধ আমরা শুরু করেছি। প্রথম আক্রমণ হিসেবে ইসরাইল দখলকারী ফিলিস্তিন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ ও তার স্ত্রীকে কিডন্যাপ করার সব ব্যবস্থা আমরা সম্পন্ন করেছি। আজ জেরুসালেমে ওদের মসজিদুল আকসায় শোকরানা দিবসের সমাবেশ। সেখানে ওদের প্রধান মাহমুদ সস্ত্রীক আসবে। তাকে সস্ত্রীক কিডন্যাপ করা হবে। আমাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটা অংশ অক্ষত আছে। তারাই এগিয়ে এসেছে বড় এই দায়িত্ব পালনে। সাফল্য সম্পর্কে আমি আশাবাদী।
থামলো স্যামুয়েল শার্লটক।
ঘড়ির দিকে তাকাল। তারপর মুখ তুলে বলল, অনুষ্ঠান ঘণ্টা দুই আগে শেষ হওয়ার কথা। তার মানে আমাদের মিশন বাস্তবায়নের কাজ কমপক্ষে দু’ঘণ্টা আগে শুরু হয়েছে। কোন একটা খবর খুব শীঘ্রই আমরা পাব।
‘আমিন। জিহবা আমাদের সাহায্য করুন।’ প্রধানমন্ত্রীর কথার মধ্যেই সবাই এক বাক্যে এই প্রার্থনা বাক্য উচ্চারণ করল।
থেমে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক।
সবার প্রার্থনার কণ্ঠ থেমে যেতেই সেই তরুণ মন্ত্রী ইসরাইল আবা ইবান বলল, কিন্তু মাত্র কিডন্যাপই সাফল্য নয়, এই কিডন্যাপ দিয়ে আমরা কি করতে চাচ্ছি, এ নিয়ে আমরা নিশ্চয় কিছু ভেবেছি।
থ্যাংক ইউ ইয়ংম্যান, উপযুক্ত জিজ্ঞাসাই তোমার মনে জেগেছে।
একটু থামল প্রধানমন্ত্রী। পরমূহুর্তেই বলতে শুরু করল আবার, প্রধানমন্ত্রী দম্পতিকে জিম্মি বানিয়ে আমরা দাবি করবো: এক. ফিলিস্তিন সরকারকে ইসরাইল ত্যাগ করে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকায় সরে যেতে হবে, দুই. সকল ইহুদি উদ্বাস্তুকে অবিলম্বে ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রসের হাতে ছেড়ে দিয়ে ইসরাইলে তাদের স্ব স্ব বাড়ি ও সম্পত্তিতে ফিরে যাবার সুযোগ দিয়ে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে এবং তিন. অবৈধ দখলদার সরকারকে স্বীকৃতি না দিয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
থামল প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু এই ধরনের কিডন্যাপের ঘটনা ও এইসব শক্ত দাবি-দাওয়া করে আমরা আমাদের টিকিয়ে রাখব কেমন করে? ছোট্ট তোয়া দ্বীপ তখন সবার চোখে পড়ে যাবে। এই কিডন্যাপকে দুনিয়ার কেউ সমর্থন করবে না, আমাদের বন্ধুরাও নয়। এই অবস্থায় আমরা দাবি-দাওয়া করে আমরা আমাদের টিকিয়ে রাখব কেমন করে? ছোট্ট তোয়া দ্বীপ তখন সবার চোখে পড়ে যাবে। এই কিডন্যাপকে দুনিয়ার কেউ সমর্থন করবে না, আমাদের বন্ধুরাও নয়। এই অবস্থায় আমাদের দাবি-দাওয়া আদায় তো দূরের কথা, আমাদের অস্তিত্বও বিপন্ন হবে। স্যার নিশ্চয় এটা চিন্তা করেছেন। তাই আমি কিছু বুঝতে পারছি না স্যার। বলল অর্থ বিভাগের জন্যে দায়িত্বশীল মন্ত্রী তরুণ অর্থনীতিবিদ শিমন সুলেমান।
শিমন সুলেমান থামতেই প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক বলল, শিমন, তুমি যে পরিণতির বিষয় সামনে এনেছ, তা অবশ্যই ভাবনার বিষয় যদি কিডন্যাপের ঘটনা তোয়া থেকে আমরা ঘটাই। কিন্তু কিডন্যাপ তো আমরা করছি না। তোয়া এবং আমরা এই কিডন্যাপের সাথে জড়িত নই। কিডন্যাপের পরপরই ইসরাইলের এক ঠিকানা থেকে মিডিয়াকে জানানো হবে, ‘ইসরাইল পিপল আর্মি’ (আইপিএ) এই কিডন্যাপের ঘটনা ঘটাতে বাধ্য হয়েছে তিনটি ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে। সুতরাং কিডন্যাপের দায় ইসরাইল পিপল আর্মির ঘাড়ে গিয়ে বর্তাবে। অতএব তোয়া কিংবা আমাদের কোন পরিণতি নিয়ে ভাববার কিছু নেই।
কথা বলার জন্যে হাত তুলেছিল ইসরাইলের তরুণ মন্ত্রী আবা-ইবান।
কিন্তু দেশরক্ষা মন্ত্রীর সামনে রাখা ওয়ারলেসটা ‘বিপ’ ‘বিপ’ সংকেত দিতে শুরু করল।
‘এক্সকিউজ মি অল’ বলে দেশরক্ষা মন্ত্রী রজার রবীন ওয়ারলেসটা তুলে নিয়ে ঘরের এক পাশে সরে গেল। তার চোখে-মুখে উত্তেজনা।
ওয়ারলেসে কোন কথা বলল না। নীরবে ওপারের কথা শুনে ‘থ্যাংকস’ দিয়ে ওয়ারলেস বন্ধ করে দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর কাছে এল।
সবার দৃষ্টি দেশরক্ষা মন্ত্রীর ওপর নিবদ্ধ।
দেশরক্ষা মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে কানে কানে কিছু বলে ফিরে এসে বসল তার চেয়ারে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখটা প্রথমে কিছুটা ম্লান হয়ে গেলেও পরে স্বাভাবিক হয়ে এল।
উদ্বেগ দেখা দিল উদগ্রীবভাবে অপেক্ষমান মন্ত্রীদের মনে। মিশন কি তাহলে ব্যর্থ হয়েছে।
মন্ত্রীদের সবার চোখ এবার প্রধানমন্ত্রীর মুখের উপর নিবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী একটু নড়েচড়ে বসল।
মুখ তুলল। বলতে শুরু করল, ‘প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, আপনাদের উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছে। উদ্বেগের কিছু নেই। আমরা হানড্রেড পারসেন্ট চাই বটে, কিন্তু সবক্ষেত্রে হানড্রেড পারসেন্ট পূরণ হয় না। কিডন্যাপ মিশন আমাদের সফল হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রীকে আমরা পাইনি। সেদিন সে প্রার্থনা সভায় প্রধানমন্ত্রী হাজির থাকতে পারেননি। তবে প্রধানমন্ত্রী মাহমুদকে না পেলেও তাঁর স্ত্রী এমিলিয়া এবং বায়তুল আকসা মসজিদের খতিব ও ফিলিস্তিন আন্দোলনের সাইমুমের আধ্যাত্মিক নেতা শেখুল ইসলাম আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান দির ইয়াসিনি এই দু’জনকে কিডন্যাপ করা হয়েছে এবং এতক্ষণে তাদের ইসরাইলের বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।
লং লিভ ইসরাইল। মিশন সাকসেসফুল। প্রধানমন্ত্রী মাহমুদের দরকার নেই। তাঁর স্ত্রী এমিলিয়া কিংবা শেখুল ইসলাম আব্দুল্লাহকে হাতে পাওয়াই যথেষ্ট ছিল। জিহবাকে ধন্যবাদ যে, দু’জনকেই পাওয়া গেছে। এটা সোনায় সোহাগা। বলল কয়েকজন তরুণ মন্ত্রী সমস্বরে।
যে উদ্দেশ্যে কিডন্যাপ করা সেই চাপ যাতে কার্যকরী হয়, সেটাই এখন নিশ্চিত করতে হবে। ইউরোপ ও আমেরিকার প্রেসের সাহায্য আমরা পাব আশা করছি। কিডন্যাপের সমালোচনা হবে, কিন্তু সেই সাথে বিশ্বের দৃষ্টি ও মনোযোগের ফোকাস আমাদের ওপর কেন্দ্রীভূত হবে। এটাই আমরা চাই। বিশ্বের মনোযোগ আমরা আমাদের দিকে আকৃষ্ট করতে চাই। তার সাথে আমরা সমবেদনাও কিছু পাব। বলল প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক।
ভালো ফল নির্ভর করছে দীর্ঘদিন তাদের ধরে রাখতে পারার উপর। আমরা সেটা পারছি কিনা এটাই বড় কথা। বন্দীদের কোথায় রাখা হবে, আমরা জানতে চাইবো না। কিন্তু আমরা জানতে চাচ্ছি, যেখানেই আমরা তাদের রাখি, তারা যেন পালাতে না পারে বা উদ্ধার হতে না পারে, আবার তাদের কোন বড় ক্ষতিও না হয় সবই আমরা নিশ্চিত করতে পারছি কিনা। বলল তৃতীয় একজন তরুণ মন্ত্রী।
এসব বিষয় আমরা আগেই ভেবেছি। সব ভেবেই আমরা স্থান বাছাই করেছি যার চেয়ে কোন নিরাপদ স্থান এখন আমাদের হাতে নেই।
প্রধানমন্ত্রী থামলো।
কোন সিনিয়র মন্ত্রী কথা বলছেন না। সবাই গম্ভীর। দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় তারা জানেন এমন পরিস্থিতিতে কি করতে হয়, কি হচ্ছে। তারা ভালোভাবেই অবহিত যে, তারা কি বিপদ, কি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং তাদের সামনে সমস্যা কি, সম্ভাবনাই বা কি। এজন্যে তাদের মনে প্রশ্নের চাইতে ভাবনার ভাবটাই বেশি।
প্রধানমন্ত্রীর কথা শেষ হতেই চতুর্থ একজন তরুণ মন্ত্রী বলল, এক্সকিউজ মি স্যার, আমি জানতে চাচ্ছি কিডন্যাপের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর বাইরের দুনিয়ার চাপ থেকে আমাদের ‘তোয়া’ এবং আমরা কতটা নিরাপদ থাকব? ইসরাইল সরকার যে তার অন্তবর্তীকালীন রাজধানী তোয়া দ্বীপে স্থাপন করেছে, এটা অন্তত পাশ্চাত্যের সবাই ইতিমধ্যে জেনে গেছে। কিডন্যাপের দায় বাইরের দুনিয়া আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবে কিনা?’
জরুরি একটা বিষয় বলেছ ইয়ংম্যান, বলতে শুরু করল প্রধানমন্ত্রী, তবে এ ব্যাপারে আমাদের ভূমিকা আমরা ঠিক করেই রেখেছি। কিডন্যাপের ঘটনা প্রচার হওয়ার সাথে সাথে আমরা এ ঘটনার সাথে আমাদের সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করব। আমরা বলব, এ্যাফেকটেড হয়েছে এমন অনেক গ্রুপ আছে, তাদেরই হট হেডেড কেউ এই কাজ করেছে। কিডন্যাপাররা যে দাবি করেছে, সেসব দাবি ইসরাইল সরকার আগেই ঘোষণা করেছে। এসব দাবি অবিলম্বে পূরণ হোক, এসব দাবি পূরণে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল আমাদের সাহায্য করুন আমরা এটা চাই, কিন্তু কিডন্যাপারদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আর একটা কথা, ইউরোপ ও আমেরিকার আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো এই বিপদে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি ঠিক, কিন্তু আমাদের আশ্রয়স্থল, বর্তমান রাজ্য ও রাজধানী তোয়া দ্বীপ রক্ষায় তারা আমাদের সাহায্য করবে। তারা এ প্রতিশ্রুতি আমাদের দিয়েছে। এমনকি তোয়ার তিন পাশে আরও কয়েকটি দ্বীপ আছে, যার সর্বমোট আয়তন দুই হাজার বর্গমাইল, এ দ্বীপেও আমাদের অধিকারের তারা গ্যারান্টি দিয়েছে। এসব দ্বীপের কোনটির ওপর সাইপ্রাস, কোনটির ওপর বৃটিশ মালিকানার দাবি ছিল। তারা সে দাবি ছেড়ে দিয়েছে। তারা এও নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, প্রায় তিন হাজার বর্গমাইলের দ্বীপ এলাকা নিয়ে আমরা একটা প্রবাসী ইসরাইল রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারি। সুতরাং আমাদের পায়ের তলায় মাটি আছে, আপনারা নিশ্চিত থাকুন।
থামল প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু স্যার যে দুই হাজার বর্গমাইলের দ্বীপমালার কথা বললেন, সেখানে তো সাইপ্রিয়ট ও বৃটিশ জনবসতি আছে, তাদের কি হবে? বলল শিমন সুলেমান।
এটা সমস্যা ছিল, কিন্তু তারও সমাধান হয়ে যাচ্ছে। সাইপ্রাস ও বৃটেন উভয়েই তাদের লোক সরিয়ে নিচ্ছে বিকল্প জায়গায়। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই দ্বীপগুলো আমাদের দখলে আসবে। প্রধানমন্ত্রী বলল।
ধন্যবাদ স্যার দুঃখের মধ্যেও বড় একটা শুভ সংবাদের জন্যে। আরেকটা বিষয় স্যার, আমাদের এই তোয়া দ্বীপে কয়েকটা আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী গ্রুপ আছে যারা ইহুদি বংশোদ্ভুত হলেও জাত ক্রিমিনাল। এরা ইতিমধ্যেই কয়েকটা ঘটনা ঘটিয়েছে, যাদের দ্বারা আমাদের সরকারি লোকরা পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দরকার। বলল পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন মন্ত্রী ইসরাইল আবা ইবান।
ধন্যবাদ ইবান বিষয়টা উত্থাপন করার জন্যে। ঘটনাগুলো এবং তাদের বিষয়টা জেনারেল শামিল এরফান ইতিমধ্যেই আমার নজরে এনেছেন। আমি নির্দেশ দিয়েছি তাদের ওপর চোখ রাখা এবং তাদের ব্যাপারে সব তথ্য সংগ্রহ করতে। এ্যাকশনে যাওয়ার আগে যদি তাদের সব ব্যাপার জানা যায় তবে তাদের সমূলে উপড়ে ফেলা যায়। তবে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে আমাদের সকলকে ধৈর্যের সাথে এগোতে হবে। এখনই এই সময়ে ভাল-মন্দ সবার সহযোগিতা আমাদের দরকার।
এবার দেশরক্ষা মন্ত্রী রজার রবীনের ওয়ারলেস সংকেত দিয়ে উঠল।
‘এক্সকিউজ মি অল’ বলে ওয়ারলেস নিয়ে ঘরের এক পাশে সরে গেল।
এবারও সে ওপারের কথা শুনে কোন কথা না বলে ধন্যবাদ দিয়ে ওয়ারলেস বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরে এল। বলল কানে কানে কিছু কথা। তারপর ফিরে এসে বসল সে তার চেয়ারে।
প্রধানমন্ত্রীর চোখে আনন্দের উজ্জ্বলতা ফুটে উঠেছে।
সবার দৃষ্টি প্রধানমন্ত্রীর দিকে।
প্রধানমন্ত্রী মুখ খুলল। বলল, প্রিয় সহকর্মী বন্ধুগণ, আমাদের মিশন সব ঝুঁকি পেরিয়ে নিরাপদ অবস্থার মধ্যে এসে গেছে। মিশন এখন জিম্মিদের নিয়ে তাদের যেখানে রাখা হবে, সেদিকে এগোচ্ছে। সবাই প্রার্থনা করুন মিশনের বাকি অংশটুকুও যেন নিরাপদ হয়।
একটু থামল প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক। তার পরেই বলে উঠল, মন্ত্রীসভার সম্মানিত সদস্যবৃন্দ মন্ত্রীসভার আজকের বৈঠকের এখন মুলতবি হচ্ছে। সবাইকে ধন্যবাদ।
উঠে দাঁড়াল প্রধানমন্ত্রী স্যামুয়েল শার্লটক।
তার সাথে উঠে দাঁড়াল সবাই।
গাজায় সাইমুমের একটা আঞ্চলিক সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন আহমদ মুসা।
বক্তৃতার তখন পিক আওয়ার।
হলভর্তি সাইমুমের শ্রোতা। পিনপতন নীরবতা।
পকেটের মোবাইল আবারো বেজে ওঠল আহমদ মুসার বেসুরো আওয়াজে। আরো কয়েকবার বেজেছে এর আগে। তখন এ্যাভয়েড করেছে।
এবার আর কল রিজেক্ট করল না আহমদ মুসা।
বক্তৃতা অব্যাহত রেখেই আহমদ মুসা এক হাত দিয়ে মোবাইল বের করে স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে দেখল ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদের পিএস-এর টেলিফোন। কোন জরুরি খবর বা মেসেজ না থাকলে আহমদ মুসাকে তার টেলিফোন করার কথা নয়।
কল রিসিভিং বাটনে চাপ দিয়ে সবার উদ্দেশ্যে ‘এক্সকিউজ মি’ বলে আহমদ মুসা মোবাইল কানের কাছে তুলে নিল।
‘হ্যালো’ বলে আহমদ মুসা সাঁড়া দিতেই ওপার থেকে মাহমুদের পিএস ড. আব্দুল্লাহ আকরামের কম্পিত, ভাঙা কণ্ঠস্বর শোনা গেল। সালাম দিয়ে বলল, স্যার, ম্যাডাম এমিলিয়া কিডন্যাপড হয়েছে, তার সাথে কিডন্যাপড হয়েছে বায়তুল আকসার মহামান্য খতিব শেখুল ইসলাম শেখ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান দির ইয়াসিনি।
বলছ কি তুমি! কখন ঘটল? কি করে ঘটল? কোথায় ঘটল? মাহমুদ কোথায়? ঝড়ের মত প্রশ্নগুলো উচ্চারিত হলো আহমদ মুসার উদ্বিগ্ন কণ্ঠে।
‘স্যার, আপনি জানেন জেরুসালেমে মসজিদুল আকসায় আজ শোকরানা দিবস উপলক্ষে দোয়ার অনুষ্ঠান ছিল। দোয়ার অনুষ্ঠান শেষে মানুষ যখন ফেরার মুখে ছিল, ম্যাডামসহ খতিব সাহেবানরা যখন গাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, তখন অনেকগুলো বোমার বিস্ফোরণ হয়, গুলী-গোলাও হয়। এরই মধ্যে তারা কিডন্যাপড হন। বলল ড. আব্দুল্লাহ আকরাম।
মাহমুদের কি খবর, অনুষ্ঠানে তো তারও যাওয়ার কথা ছিল। আহমদ মুসা বলল।
স্যার, শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী স্যারকে প্রোগ্রাম চেঞ্জ করে জরুরি প্রয়োজনে তেলআবিবে আসতে হয়। ম্যাডাম যান ওখানে।
‘ইন্নালিল্লাহে……….., মাহমুদ এখন কোথায়? আহমদ মুসা বলল।
স্যার, উনি খবর পেয়েই হেলিকপ্টারে দ্রুত জেরুসালেমে চলে গেলেন। আপনাকে কয়েকবার চেষ্টা করে পাননি। আপনাকে সব জানানোর দায়িত্ব দিয়ে উনি চলে গেলেন। ড. আব্দুল্লাহ বলল।
ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ, আমি এখনি জেরুসালেম রওয়ানা হচ্ছি। বলে কল অফ করে পকেটে মোবাইল রাখতে রাখতে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলল, প্রিয় ভাইয়েরা, আপনাদের প্রিয় স্বাধীনতা, আপনার প্রিয় রাষ্ট্রের ওপর শত্রুরা আঘাত হেনেছে, প্রথম আঘাত, কাপুরুষের মত আঘাত। তারা প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী ম্যাডাম এমিলিয়া এবং মসজিদুল আকসার খতিব আমাদের সকলের উস্তাদ, নেতা শেখ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমানকে কিডন্যাপ করে জেরুসালেমের অনুষ্ঠান থেকে……..।
সম্মিলিত কণ্ঠে ইন্নালিল্লাহ উচ্চারিত হলো এবং ইহুদিবাদ বিরোধী গগণবিদারী শ্লোগান ওঠল হল থেকে আহমদ মুসার কথার মধ্যেই। আহমদ মুসা হাত তুলে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলল, সবাই ধৈর্য ধরুন, আল্লাহর ওপর ভরসা করুন। আমি আমার কথা এখানেই শেষ করছি। আসসালামু আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লা।
কথা শেষ করে আহমদ মুসা মঞ্চের দিকে চেয়ে বলল, আমাকে এখনি রওয়ানা হতে হচ্ছে জেরুসালেমে।
মঞ্চে নেতৃবৃন্দের সবার মুখই উদ্বেগে আশংকায় থমথমে। সাইমুমের গাজা এলাকার চীফ এবং গাজার গভর্নর উঠে দাঁড়ালো। গভর্নরই কথা বলল, অবশ্যই আপনাকে যেতে হবে স্যার। তবে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা একটু বিলম্ব হবে স্যার। একটাই হেলিকপ্টার গাজায়, ওটা সকালে হ্যাংগারে গেছে, এতক্ষণ ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ার কথা।
আহমদ মুসা বলল গভর্নরকে, হেলিকপ্টারের জন্যে দেরি করা যাবে না। আমার গাড়ি রেডি আছে। আমি গাড়িতেই যাচ্ছি।
গভর্নর সাইমুম চীফ যুবায়েরের দিকে চেয়ে বলল, তুমি কয়েকজনকে নিয়ে জেরুসালেমে পৌছা পর্যন্ত স্যারের সাথে থাকবে।
পেছনে বসা গাজার পুলিশ প্রধানের দিকে চেয়ে বলল, দু’জন অফিসারের নেতৃত্বে দুই গাড়ি পুলিশ দাও, তারা স্যারের গাড়ির আগে ও পেছনে থাকবে।
যুবায়ের ও গাজার পুলিশ প্রধান আব্দুল্লাহ আকিল সংগে সংগেই বেরিয়ে গেল।
‘মি. গভর্নর, আমার আগে পিছে পাহারা বসিয়ে আমাকে দেখছি দুর্বল করে ফেলতে চাচ্ছেন। এত আয়োজনের মধ্যে ভিআইপি হিসেবে আমি তো ওদের চোখে পড়ে যাব। হাসতে হাসতে বলল আহমদ মুসা।
স্যার আপনার নিরাপত্তা আমাদের টপ প্রয়োরিটি। যা করছি খুবই কম। এটুকু মিনিমাম ব্যবস্থা না করে আপনাকে আমরা ছাড়তে পারি না। জেরুসালেমের সাংঘাতিক ঘটনা ঘটার এটাই শিক্ষা। বলতে বলতে কান্নায় রুদ্ধ হয়ে গেল গভর্নরের কণ্ঠ।
আহমদ মুসা গভর্নরের পিঠে হাত রেখে সান্তনার স্বরে বলল, সব ঠিক হয়ে যাবে গভর্নর। ওদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। আল্লাহ আমাদের সহায়।
আল্লাহু আকবার। নিশ্চয় সর্বশক্তিমান আল্লাহই আমাদের সহায়। আপনাকে আল্লাহই পাঠিয়েছেন। আমাদের সবার আস্থার কেন্দ্র আপনি। তবু দুর্বল মন আমাদের, উদ্বেগ দূর করতে পারি না। ভারী কণ্ঠ গভর্নরের। চোখ মুছতে মুছতে কথাগুলো বলল সে।
আহমদ মুসা গর্ভনরের পিঠ চাপড়ে বলল, চলুন আমরা বের হই। দেখি, ওরা প্রস্তুত হলো কিনা।
চলুন স্যার। বলল গভর্নর।
দু’জনেই পা বাড়াল বাইরের দিকে।